সে রাতে মিতু বেরিয়ে এলো সাব্বিরের সাথে দেখা করতে। বাহিরে গেইটের এক কোণে বসে আছে সে। নিথর, নিষ্প্রাণ এক রাত। ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে, এক হাতের উপর আরেক হাত রেখে শক্ত করে চেপে বসে আছে সে।ভয়ে চোখের সামনে, মনের ভিতর কতো কি ঘুরছে। নির্জন রাতে এভাবে বাহিরে এসে বসে আছে এটা ভেবে তাঁর ভিতরটা ভীত হয়ে আসছে। আচমকা যদি ভয়ংকর কিছু সামনে এসে দাঁড়ায় তখন আমি কি করবো , আমার চিৎকার শোনে বাবা জেগে যাবে না তো!
ভয়ে পেয়েও সে ভঘয় পাচ্ছে না। মনটা শক্ত করে বুকে অসীম সাহস নিয়ে অপেক্ষা করছে কখন সাব্বির আসবে । হঠাৎ করে মিতুর মনে হলো ঐপাশে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর মুখে তপ্ত আগুন। তারপর আস্তে আস্তে সিগারেটের গন্ধ ভেসে আসছে। এখন মিতুর ভিতরটাতে ভয় গ্রাস করছে। ঐপাশে তাকাতে গিয়েও সে তাকাল না । এখন হাসান সাহেব হাত থেকে সিগারেটটা পায়ের নিচে ফেলে পিষে রাগান্বিত হয়ে সপাটে গালে একটা চড় বসিয়ে জিজ্ঞেস করবেন এতো রাতে বাহিরে কেন বের হয়ে এলে? এটা মিতু জানে। কিন্তু পাশের লোকটা তা করলো না সিগারেটটা ফেলে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।এবার মিতু নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে, এখানে তাঁর বাবা আসেননি। তবে কে এখানে? রাতের আঁধারে বুঝা যাচ্ছে না কে এখানে দাঁড়িয়ে আছে। এটা তো সাব্বির হওয়ার কথা না কারণ আমি আজ পর্যন্ত কখনো সাব্বিরকে সিগারেট হাতে নিতে দেখিনি।
মিতু ওড়না দিয়ে টেনেটুনে নিজের শরীরটা ঢেকে নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এতক্ষণ সময় হয়ে গেল, সাব্বির এখনও কেন আসছে না? ও কি আসবে না? রাস্তায় কি কোনো বিপদ হয়েছে? পিছনের দেয়ালের সাথে মিশে একদম স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মিতু, অন্ধকারে যেন তাকে না দেখা যায়। এভাবে চেপে দাঁড়িয়ে থাকলে কেউ বুঝতে পারবে না। আচমকা একটা,,,,,,,
বই: ভিতরে ভিন্ন কেউ
নুসরাত জাহান