বোবায় ধরা’ বা ‘ঘুমের পক্ষাঘাত’ যাকে Sleep Paralysis বলা হয়।

 এটি স্বপ্নে জ্বিনের আক্রমন, যাকে আমরা বোবায় ধরা বলে থাকি। যা আমাদেরকে ঘুমের মধ্যে আক্রমণ করে।
হাদীসে এসেছে: শয়তান স্বপ্নের মধ্যে ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। [সুনান আত তিরমিজী, হা/২২৯১]
কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ বলেন: ইবলিশ শয়তান জ্বিন সম্প্রদায়ভূক্ত [আল-কুরআন, সূরা কাহাফ (১৮), আয়াত-৫০]
 আক্রমণের লক্ষণসমূহ:
যখন আমরা ঘুমে থাকি জ্বিন তখন বুকের উপর ভারী চাপ সৃষ্টি করে আমাদের শ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়, তখন কথা বলা বা নড়াচড়া করা যায় না। চিৎকার-চেচামেচি করেও কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব হয় না। নিজেকে কন্ট্রোল করতে গিয়ে তাদের কাছে বাধাগ্রস্ত হতে হয়। টায়ার্ড হয়ে, শরীর ঘেমে আসে।
জ্বিন চলে গেলে, আতংকিত হয়ে আমরা জেগে উঠি, তখনও অস্বস্তি উপলব্দি করা যায়। পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা এটাকে “ঘুমের পক্ষাঘাত” বলে অভিহিত করেন। কিন্তু ইসলাম আমাদেরকে জানাচ্ছে যে, জ্বিন আমাদের ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে আক্রমন করে।
আমরা কিভাবে জ্বিনের এই আক্রমন থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করবো?
 ঘুমানোর পূর্বে মূহুর্তে করণীয়:
 ঘরের বা রুমের সদর বা প্রধান দরজা ‘বিসমিল্লাহ’ বলে বন্ধ করা।
 সূরা মূলক তেলাওয়াত করা।
 অজু করে ঘুমাবো।
 শোবার পূর্বে বিছানা ভালো করে ঝেড়ে নেয়া।
• সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পাঠ।
 আয়াতুল কুরসী পাঠ। {সূরা বাকারাহ এর ২৫৫নং আয়াত}
 শরীর বন্ধ করা। [তিন কুল (সূরা এখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস) পাঠ করে হাতের তালুতে ফুক দিয়ে শরীরের সামনের অংশের যতটুকু সম্ভব হাত বুলাবেন] এভাবে তিনবার করতে হয়।
 সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করা।
 আল্লাহর কাছে বেশী বেশী করে ইস্তেগফার করা।
 ঘুমানোর পূর্বের দু‘আ পাঠ ও ডান কাতে ঘুমানো।
 বোবায় ধরলে বা দুঃস্বপ্ন দেখলে করণীয়:
 ঘুমের মধ্যে বোবায় ধরলে, খারাপ বা দুঃস্বপ্ন দেখলে ‘আউযুবিল্লাহিমিনাশ শাইত্বানির রাযীম’ পাঠ করে বাম দিকে তিনবার ড্রাই বা শুকনা থুতু নিক্ষেপ করবেন এবং পাশ চেইঞ্জ করে ঘুমাবেন।
উপরের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার পরেও বোবায় ধরা, খারাপ বা দুঃস্বপ্ন দেখা চলতে থাকে, তবে এক্ষেত্রে আধ্যত্নিক, মানসিক বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে খারাপ জ্বিনের আক্রমন থেকে হেফাজত করুন। আমীন!
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?