- Title বিপিনের সংসার
- Author বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
- Publisher দে’জ পাবলিশিং (ভারত)
- Quality হার্ডকভার
- ISBN 8176123390
- Edition 4th Edition, 2009
- Number of Pages 168
- Country ভারত
- Language বাংলা।
Famous Bangla Novel Bipiner Songshar Written by Bibhutibhushan Bandopadhyay. Bibhutibhushan Bandyopadhyay (12 September 1894 – 1 November 1950) was one of the famous Bengali novelist and writer of modern Bengali literature. His best known work, is the autobiographical novel, Pather Panchali, adapted (along with Aparajito, the sequel) into the memorable Apu Trilogy films, directed by Satyajit Ray.
Bandopadhyay, before becoming a writer, took up various jobs to make ends meet. He taught school, became a secretary, managed an estate. Finally, in 1921 he published his first short story, “Upekshita,” in Probashi, one of the leading literary magazines of Bengal at that time.
However, it was not until 1928, when his first novel, Pather Panchali was published, that Bibhutibhushan got critical attention. With Pather Panchali Bibhutibhushan became, instantly, a prominent name in Bengali literature. He had a stout constitution and walked miles in the woods every day. He usually took his notebook with him and loved to write surrounded by the wilderness. Bandopadhyay died on 1 November 1950, of a heart attack while staying at Ghatshila.
For Download Your Copy Of Dui Bari Click Below
Download Link-1 Edition & Download Link-2 Edition. If You Having Any Problem You Can Comment.
Page- 109. Size- 8 MB. High Quality.
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু কালজয়ী উপন্যাস রচনার মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের হৃদয়। শুধু উপন্যাসই নয়, এর পাশাপাশি তিনি রচনা করেছেন বিভিন্ন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, দিনলিপি ইত্যাদি। প্রখ্যাত এই সাহিত্যিক ১৮৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তবে তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল যশোর জেলায়। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর প্রথম বিভাগে এনট্রান্স ও আইএ পাশ করার মাধ্যমে।
এমনকি তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাশ করেন। সাহিত্য রচনার পাশাপশি তিনি শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমূহ এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ‘পথের পাঁচালী’, যা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হওয়ার মাধ্যমে। এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় অর্জন করেছেন অশেষ সম্মাননা।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই এর মধ্যে আরো উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ‘আরণ্যক’, ‘অপরাজিত’, ‘ইছামতি’, ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’, ‘দেবযান’ ইত্যাদি উপন্যাস, এবং ‘মৌরীফুল’, ‘কিন্নর দল’, ‘মেঘমল্লার’ ইত্যাদি গল্পসংকলন। ১০ খণ্ডে সমাপ্ত ‘বিভূতি রচনাবলী’ হলো বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমগ্র, যেখানে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার পৃষ্ঠায় স্থান পেয়েছে তার যাবতীয় রচনাবলী। খ্যাতিমান এই সাহিত্যিক ১৯৫০ সালের ১ নভেম্বর বিহারের ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর ‘রবীন্দ্র পুরস্কারে’ ভূষিত হন।
💕একনজরে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্ম থেকে মৃত্যু
লেখক : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক।
জন্ম তারিখ : ১২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪; কাঁচড়াপাড়া
মৃত্যু তারিখ : ১ নভেম্বর ১৯৫০; ঘাটশিলা
প্রাপ্ত পুরস্কার : রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৫১)
উল্লেখযোগ্য কাজ: চাঁদের পাহাড়; আদর্শ হিন্দু হোটেল; আরণ্যক; ইছামতী; দেবযান ; পথের পাঁচালী।
জন্ম তারিখ : ১২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪; কাঁচড়াপাড়া
মৃত্যু তারিখ : ১ নভেম্বর ১৯৫০; ঘাটশিলা
প্রাপ্ত পুরস্কার : রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৫১)
উল্লেখযোগ্য কাজ: চাঁদের পাহাড়; আদর্শ হিন্দু হোটেল; আরণ্যক; ইছামতী; দেবযান ; পথের পাঁচালী।
বিপিনের সংসার বইয়ের কিছু অংশ
বিপিন সকালে উঠিয়া কলাই – চটা পেয়ালাটায় সবে এক পেয়ালা চা লইয়া বসিয়াছে , এমন সময়ে দেখা গেল তেঁতুলতলার পথে লাঠি হাতে লম্বা চেহারার কে যেন হন হন করিয়া উহাদের বাড়ির দিকেই চলিয়া আসিতেছে । বিপিনের স্ত্রী মনোরমা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া বলিল , দেখ তো কে একটা মিন্সে এদিকে আসছে । বিপিন বলিল , জমিদার বাড়ির দরওয়ান গো আমি বুঝতে পেরেছি – ডাকের ওপর ডাক , চিঠি দিয়ে ডাক , আবার লোক পাঠিয়ে ডাক ! মনোরমা বলিল , তা এসেছ তো ধর আজ দিন কুড়ি । ডাক দেওয়ার আর দোষ কি ? বিপিনের বড় ভ্রাতৃবধূ এই সময়ে ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন , পলাশপুর থেকে বোধ হয় লোক আসছে এগিয়ে যাও তো ঠাকুরপো ।
বিপিন বিরক্ত মুখে চায়ের পেয়ালাটায় চুমুক দিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া উঠানে গিয়া দাঁড়াইল এবং আগন্তুক লোকটির সঙ্গে দুই একটি কথা বলিয়া তাহাকে বিদায় দিয়া একখানি চিঠি – হাতে সোজা রান্নাঘরে গিয়া মাকে বলিল , এই দেখ মা , ওরা আবার চিঠি লিখেছে – দুদিন যে জিরোব তার উপায় নেই । বিপিনের মা বলিলেন , তা তো এয়েছ বাপু , কুড়ি – বাইশ দিন কি তার বেশি ! তাদের কাজের সুবিধের জন্যেই তো তোমায় রেখেছে ? এখানে তুমি ব’সে থাকলে তাদের চলে ? সকলের মুখেই ওই এক কথা । যেমনই মা , তেমনই স্ত্রী ।
কাহারও নিকটে একটু সহানুভূতি পাইবার উপায় নাই । কেবল ‘ যাও – যাও ’ শব্দ , টাকা রোজগার করিতে পার — সবাই খুশি । তোমার সুখ – দুঃখ কেহই দেখিবে না । বিরক্তির মাথায় বিপিন স্ত্রীকে বলিল , আর একটু চা দাও দিকি ! মনোরমা বলিল , চা আর হবে কি দিয়ে ? দুধ যা ছিল সবটুকু দিয়ে দিলাম । বিপিন বলিল , র চা খাব । তাই করে দাও । —চিনিও তো নেই , র চা – ই বা কেমন ক’রে খাবে । ” -মাকে বল , ওঁর গুড়ের নাগরি থেকে গুড় বের করে দিতে — তাই দিয়ে কর ।
মনোরমা ঝাঁঝের সঙ্গে বলিল , মাকে তুমি বলো গিয়ে । বুড়ো মানুষ ; দশমী আছে দোয়াদশী আছে — ঐ তো একখানা গুড়ের নাগরি , তাও চা খেয়ে খেয়ে আদ্ধেক খালি হয়ে গিয়েছে । এখনও তিন মাস চললে তবে নতুন গুড় উঠবে – ওঁর চলবে কিসে ? এদিকে তো নতুন এক নাগরি আখের গুড় কিনে দেবার কড়ি জুটবে না সংসারে । মায়ের কাছ থেকে রোজ রোজ গুড় চাইতে লজ্জা করে না ? বিপিন আর কোন কথা না বলিয়া চুপি করিয়া গেল । তাহার মনটা আজ কয়দিন হইতেই ভালো নয় । প্রথম তো সংসারে দারুন অনটন , তার উপর স্ত্রীর যা মিষ্টি বুলি ! বেশ , সে পলাশপুরই যাইবে । আজই যাইবে । আর বাড়ি থাকিয়া লাভ কি ? বাড়ির কেহই তেমন পছন্দ করে না যে সে বাড়ি থাকে ।
এমন সময় বাহির হইতে গ্রামের কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী ডাকিয়া বলিলেন , বিপিন , বাড়ি আছ হে ? বিপিন পাশের ঘরের উদ্দেশে বলিল , কেষ্ট কাকা আসছেন , স’রে যাও । পরে অপেক্ষাকৃত সুর চড়াইয়া বলিল , আসুন কাকা আসুন , এই ঘরেই আসুন । কৃষ্ণলালের বয়স চুয়াল্লিশ বছর , কিন্তু চুল বেশি পাকিয়া যাওয়ায় ও অর্ধেক দাঁত পড়িয়া যাওয়ার দরুন দেখায় যেন ষাট বছরের বৃদ্ধ । তিনি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া বলিলেন , ও কে এসেছিল হে , তোমার বাড়ি একজন খোট্টা – মতো ? –ও পলাশপুর থেকে এসেছিল । আমায় নিয়ে যাওয়ার জন্য । —বেশ তো , যাও না ।
এখানে ব’সে মিছে কষ্ট পাওয়া – আহা , সেজন্যে না কেষ্টকাকা । পলাশপুরে বাবা যখন চাকরি করতেন , সে একদিন গিয়েছে । এখন প্রজা ঠেঙিয়ে খাজনা আদায় করার দিন নেই । অথচ টাকা না আদায় করতে পারলে জমিদারের মুখ ভার । আমি খোপাখালির কাছারিতে থাকি ; আর পলাশপুর থেকে ক্লাপ্ত লোক আসছে ; ক্লাপ্ত লোক আসছে , -ক্লাপ্ত টাকা পাঠাও , টাকা পাঠাও – এই বুলি । বলুন দিকি , আদায় না হ’লে আমি বাপের বিষয় বন্ধক দিয়ে এনে তোমাদের টাকা যোগাব মশায় ? কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলিলেন , তোমার বাবার আমলের সেই পুরোনো মনিবই আছে তো ? তারা তো জানে ? তুমি বিনোদ চাটুজ্জের ছেলে – তোমার বাপের দাপটে —জানে ব’লেই তো আরো মুশকিল । বাবা যে ভাবে খাজনা আদায় করতেন , এখনকার আমল তা চলে না কাকা , – অসম্ভব । দিনের হাওয়া বদলেছে , এখন চোখ কান ফুটেছে সবারই । সত্যি কথা বলছি , আমার ও কাজ ভালো লাগে না ।
প্রজা ঠেঙাবার জন্যেও না – তাতে আমার তত ইয়ে হয় না , কিন্তু জমিদার আর জমিদার গিন্নী ঘুণ একেবারে । কেবল ‘ দাও দাও ’ বলি না । না দিলেই মখ ভাব ।
-তা আর কি করবে বল ! পরের চাকরি করার তো কোন দরকার ছিল না তোমার , বিনোদদাদা যা ক’রে রেখে গিয়েছিলেন পায়ের ওপরে পা দিয়ে বসে খেতে পারতে — সবই যে উড়িয়ে দিলে ! বিনোদদাদাও চোখ বুঝলেন , তোমরাও ওড়াতে শুরু করলে ! এখন আর হা – হুতাশ করলে কি হবে , বল ? এ সব কথা বিপিনের তেমন ভালো লাগিতেছিল না । স্পষ্ট কথা কাহারও ভালো লাগে না । সে তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল , সে যাক কাকা , আমায় একটা শশার চারা দিতে পারেন ? আছে বাড়িতে ? এই সময় বিপিনের বিধবা বোন বীণা ঘরে ঢুকিয়া বলিল , দাদা , মা ডাকছে , একবার রান্নাঘরের দিকে শুনে যাও । ইহার অর্থ সে বোঝে ।
সংসারে হেন নাই , তেন নাই – লম্বা ফর্দ শুনিতে হইবে — মা নয় , স্ত্রীর নিকট হইতে । কৃষ্ণলাল বসিয়া থাকার দরুন মায়ের নাম দিয়া ডাক আসিতেছে । বিপিন বলিল , বসুন কাকা আসছি । কৃষ্ণলাল উঠিয়া পড়িলেন , সকালবেলা বসিয়া থাকিলে তাঁর চলিবে না , অনেক কাজ তাঁর । সিয়া পাড়া মনোরমা দালানের দোরে আসিয়া দাঁড়াইয়া ছিল । বলিল , কেষ্টকাকার সঙ্গে বসে গল্প করলে চলবে তোমার ? —ঘুরিয়ে না ব’লে সোজা ভাবেই কথাটা বল না কেন ? কি নেই ? —কিচ্ছু নেই ।
এক দানা চাল নেই , তেল নেই , ডাল নেই , একটি আলু নেই । হাঁড়ি চড়বে না এ বেলা । বিপিন ঝাঁঝের সঙ্গে বলিল , না চড়ে না চড়ুক , রোজ রোজ পারি নে । এক বেলা উপোস ক’রে সব প’ড়ে থাক । মনোরমা কড়া সুরে জবাব দিলো , লজ্জা করে না এ কথা বলতে ? আমি আমার নিজের জন্যে বলি নি । মা কাল একাদশীর উপোস ক’রে রয়েছেন , উনিও কি আজও উপোস ক’রে থাকবেন ? সব কি আমার জন্যে সংসারে আসে ? ওই বীণারও গিয়েছে কাল একাদশী- ও ছেলেমানুষ , কপালই না হয় পুড়েছে , খিদেতেষ্টা তো পালায় নি তা বলে ? – মনোরমার যুক্তি নিষ্ঠুর … অকাট্য । বিপিন বাড়ি হইতে বাহির হইয়া তেমাথার মোড়ের বড় তেঁতুলতলার ছায়ায় একখানা যে কাঠের গুঁড়ি পড়িয়া আছে , তাহারই উপর আসিয়া বসিল ।
Thanks for visiting our website boipaw dot com
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?