বহুভাষাবিদ ও রম্যরচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলীর আজ ❝শুভ জন্মদিন❞ ।

১৯০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি ব্রিটিশ ভারত নিয়ন্ত্রিত সিলেটের করিমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন । তার জাতীয়তা ছিল একাধারে ব্রিটিশ ভারতীয় (১৯০৪–১৯৪৭), পাকিস্তানি (১৯৪৭–১৯৪৯), ভারতীয় (১৯৪৯–১৯৭১) ও  সর্বশেষ বাংলাদেশী (১৯৭১–মৃত্যু)।

“বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।” এই বিখ্যাত উক্তির রচয়িতা-বহুভাষী সৈয়দ মুজতবা আলী  ।১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি  এই প্রথিতযশা সাহিত্যিক ইন্তেকাল করেন ।সৈয়দ মুজতবা আলীর যে প্রতিভা, যে জ্ঞান ছিল তার সিকিভাগও তিনি লিখে রেখে যেতে পারেননি বলে অনেকেই মনে করেন। ভয়ংকর অলসতার কারণে তিনি নিজকে নিজেই ঠকিয়েছেন। সুনীতি বাবু বলেছেন, “মুজতবা আলী তুলনামূলক ধর্মশাস্ত্রের  গবেষক হতে পারতেন, তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে সার্থক অন্বেষণ চালাতে পারতেন, ভারতীয় ইতিহাসের অনুদ্ঘাটিত দিক উন্মোচন করতে পারতেন, কিন্তু কিছুই করেন নি। শুধু ব্যঙ্গ রসিকতায় নির্বাসন দিয়ে নিজেকে নিঃশেষ করলেন।” ভীষণ অগোছালো ছিলেন তিনি। মুজতবা নিজেই লিখেছেন ‘হাঁড়িতে ভাত থাকলে সাঁওতাল কাজে যায় না, আর আমার ড্রয়ারে টাকা থাকলে আমি লিখি না।
সৈয়দ মুজতবা আলীর অসাধারণ ভ্রমণ কাহিনী দেশে বিদেশে ১৯৪৯ সালের এপ্রিলে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের নিউ এজ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয় । তবে দেশে বিদেশে  প্রকাশ করতে গিয়ে পারিপার্শ্বিক কিছু জটিলতার  কারণে নিউ এজ প্রকাশনার কর্ণধার জানকীনাথ সিংহরায়কে মুশকিলে পড়তে হয়েছিল। পাণ্ডুলিপি তাঁর যারপরনাই পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু দেশভাগের প্রায় পর পর কলকাতার পরিস্থিতি অত্যন্ত উতপ্ত, দাঙ্গার রক্তাক্ত স্মৃতি জনমনে তখনও টাটকা, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অশুভ ছায়া চারদিকে। 
এমন অবস্থায় বইটি ছাপার পর কলেজ স্ট্রিটের বই-ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশ এসে তাঁকে শাসিয়ে যান। তাঁর কথিত ‘দোষ’ একটিই, তিনি কেন ‘কোথাকার কোন এক মুসলমানের লেখা বই’ প্রকাশ করেছেন! তবে শত হুমকি সত্ত্বেও জানকীনাথ সিংহরায় অবিচল ছিলেন। আর ওই সময় পাশে থেকে তাঁকে ভরসা জুগিয়েছিলেন কথাশিল্পী-কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘যতদিন পৃথিবীর কোথাও বাংলা ভাষায় মানুষ বই পড়বে, ততদিন এই বইয়ের মৃত্যু নেই  । 
#অপু_মহন্ত
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?