বই: শহর
লেখক: ফাহাদ আল আব্দুল্লাহ
জনরা: নোয়ার থ্রিলার
প্রকাশনী: মাতব্বর কমিক্স এন্ড পাবলিকেশন
মুদ্রিত মূল্য: ২৫০/- (বইঘর ই-বুক: ৫০/-)
Review Credit 💕 Rafia Rahman
𝕰𝖛𝖊𝖗𝖞𝖔𝖓𝖊 𝖎𝖘 𝖆 𝖒𝖔𝖔𝖓, 𝖆𝖓𝖉 𝖍𝖆𝖘 𝖆 𝖉𝖆𝖗𝖐 𝖘𝖎𝖉𝖊 𝖜𝖍𝖎𝖈𝖍 𝖍𝖊 𝖓𝖊𝖛𝖊𝖗 𝖘𝖍𝖔𝖜𝖘 𝖙𝖔 𝖆𝖓𝖞𝖇𝖔𝖉𝖞.
—𝔐𝔞𝔯𝔨 𝔗𝔴𝔞𝔦𝔫
আলো-ঝলমলে এক শহর, চারিদিকে যেন রঙের বাহার। দিনদুপুরে এক ব্যস্ত শহর কিন্তু রাত যত গভীর হয় নিয়ন আলোর শহর যেন তত অপার্থিব রহস্যের হাতছানি দিয়ে ডাকে! কিন্তু কথায় আছে না, প্রদীপ বড় হলে তার অন্ধকারও বড় হয়… শহরের এই চাকচিক্যের আড়ালে লুকিয়ে নেই তো কোনো গাঢ় অন্ধকার?
ধোঁয়াটে এই শহরের উঠতি এক গোয়েন্দা মাশরুর সরকার। বিভিন্ন কেসের খবর সংগ্রহ করে কোনোরকমেই চলছিল জীবন। যেমনই হোক তার শহর, ভালোবাসত সে কিন্তু হঠাৎ ভালোবাসার শহর অসহ্য হয়ে পড়ে…
খুন হলে রহস্যের সুরতহাল করতে ডাক পড়ে গোয়েন্দার কিন্তু খুন হওয়ার আগেই যদি জানা যায় খুন হতে চলেছে তখন? আর এই খবর যদি স্বয়ং দেয় ভিক্টিম…
জীবন বাঁচানোর অনুরোধ নিয়ে আসে অপরিচিতা। নিছক সন্দেহ ভেবে কেস নিতে অস্বীকৃতি জানায় মাশরুর। যাওয়ার আগে অপরিচিতা শেষ অনুরোধ করে যায় খুন হলে যেন অপরাধীকে খুঁজে বের করা হয়। পরেরদিনই রহস্যজনকভাবে পাওয়া যায় অপরিচিতার লাশ! প্রভাবশালী বংশের পুত্রবধূর খুন! সাড়া পড়ে যায় পুরা শহরে। খুনির সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে সত্যান্বেষী মাশরুর। কিন্তু একের পর এক বাঁধা আসতেই থাকে…
নতুন ক্লাইন্ট হিসেবে আসে অপরিচিতার শ্বশুর! রহস্যের জালে জড়িয়ে পড়ে গোয়েন্দা। পরিত্রাতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে মির্জা রুমি গালিবের, দুই বন্ধু মিলে বেড়িয়ে পড়ে সত্যের সন্ধানে… সেই সাথে বের হতে থাকে আলোর শহরের পিছের অন্ধকার শহর! রহস্যের জাল কোথায় যেয়ে শেষ হবে?
অমরাবতী ট্রিলজির প্রথম বই ❝শহর❞। প্রাইভেট ডিটেকটিভ হিসেবে ছোটখাটো ডিভোর্স কেস নিয়ে কাজ করে মাশরুর সরকার। সাদাসিধে জীবনের হিসেব পাল্টে যায় যখন রহস্যময় এক নারী জীবনের কাকুতি নিয়ে আসে। খুনের পর আত্মগ্লানি থেকে খুনির সন্ধান শুরু হয়। কাহিনীতে উঠে এসেছে শহরের চেনাজানা রূপের পিছের অচেনা রূপ, অন্ধকার বহু কানাগলি। রাজনীতি, সম্পর্কের টানাপোড়েন, পরকীয়া, গণিকা সমাজ, ষড়যন্ত্রের মিশেলে লেখা ❝শহর❞, সাথে অবশ্য বেশ কিছু অ্যাকশন সিনও আছে।
মানব চরিত্রের দুই রূপ, অন্ধকার রূপ লুকায়িত থাকে। আর এই ডার্ক পার্ট নিয়েই ❝শহর❞। প্রতিটি চরিত্রে অন্ধকার অংশকেই ফোকাসে রেখেছেন লেখক আর তা কেন্দ্র করেই ঘটনা ঘটতে থাকে একের পর এক। অতীতের ঘটনা স্মৃতিচারণা করে লেখকের জবানিতে লেখা। মূল চরিত্র মাশরুর হলেও বন্ধু মির্জা রুমি গালিবই লাইমলাইট হিসেবে ছিল। খুনের রহস্য সন্ধানে যেয়ে বের হয়ে আসে মির্জা বংশের অজানা রক্তাক্ত অ্যাখান। রহস্য থাকলেও খুনখুনির ইন্টারএ্যাকশন বা লাশের তেমন কোনো বর্ণনা নেই। আসলে চরিত্রগুলোর ডার্ক সাইকোলজিক্যাল মাইন্ডই কাহিনীর মূল উপজীব্য। আর শেষ অংশে সেটা ভালোভাবেই ফুটে উঠেছে। যে টুইস্ট দিয়ে ইতি লেখক টেনেছেন এককথায় অদ্ভুত।
সাবলীল লেখনী তবে লেখায় কাব্যিক একটা ভাব রয়েছে। বাংলার সাথে লেখক যোগ করেছেন হিন্দি-উর্দু-ইংলিশ। এই জন্য কিছু শব্দ দূর্বোধ্য লেগেছে। সাধারণত সহজ ভাষায় থ্রিলার পড়েই অভ্যস্ত তাই প্রথমে কিছুটা কঠিন লাগলেও পরে আর অসুবিধা হয়নি। মাশরুরের মধ্যে ব্যোমকেশের আবছা একটা ছোঁয়া আছে। ব্যোমকেশ সিরিজে এমন একটা গল্প আছে যে ভিক্টিম আগেই আসে খুনের তদন্তের কথা বলতে কিন্তু নামটা এখন মনে পড়ছে না। তবে সেই গল্প আর শহরের মধ্যে এইটুকু ছাড়া আর তেমন কোনো মিল নেই।
সিরিজের দ্বিতীয় বই ❝গারদ❞ আসবে শীঘ্রই। সেইসাথে আসবে ❝শহর❞- এর পরিমার্জিত সংস্করণ। মূলত সেই কারণেই ই-বুক পড়া। বই নিবো যখন আপডেটটাই নিবো।
বইঘরের ই-বুক সিস্টেম ভালোই আপডেট তবে বেশ কিছু ত্রুটিও চোখে পড়েছে। অধ্যায় ৮- এর পর থেকে বেশ কিছু লাইন ভেঙে গেছে। কিছু শব্দ অসম্পূর্ণ; আ ন(আগুন), ছবি লো(ছবিগুলো)। আরও একটা সমস্যা হলো কোনো ই-বুক টোটাল কত পেজ তা দেখা যায় না। অনুরোধ করবো এটা যেন এড করা হয়। বই যদিও ইলাস্ট্রেটেড কিন্তু ই-বুক একদম প্লেইন, ছবিগুলো কি এড করা যায় না? ছবি দেখার সাথে পড়া, ভালো লাগে। সম্ভব হলে যেন এড করা হয়।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?