বিজ্ঞজনের অভিমত
অসুখে; অথবা কাল ও দুষ্টজনের সঙ্গদোষে আমি শিকার হয়েছি ভ্রান্তির, আমাকে ছোবল মেরেছে বিচ্যুতির সর্প। ফলে মনের অজান্তেই আমার ভেতরে বেড়ে উঠেছে মূর্খতার লতাপাতা। জেগে ওঠার নামে আমি ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছি। আনন্দ অন্বেষার নামে কেবল কুড়াচ্ছি ডালি ডালি বিষাদ, বেদনা। এর থেকে উত্তরণ ও মুক্তির কথা ভাবতে পারছি না, কারণ আমি তো জানিই না কোথায় প্রোথিত আছে সমস্যার শিকড়। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ পজিটিভ থিংকিং সমস্যার অতল থেকে শিকড় কাটা কুড়ালের ভূমিকা পালন করবে। চিন্তাচেতনা, ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের গভীরে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য প্রাচীন ভ্রান্তির অপনোদন করবে। শীতল পানি যেমন নিমিষে দপ করে নিভিয়ে দেয় আগুন, তেমনি মগজের কোষে কোষে বসে থাকা ভাইরাসগুলো বের করে দেবে শাশ্বত বিশ্বাসের সুনির্মল বয়ান। গল্পের আবেশ, উপস্থাপনার চমৎকারিতা, জুতসই শব্দ উপমা, শিল্প ও নন্দনের সুখদ পরশ আর ইতিহাসের টুকরো টুকরো জ্ঞানগর্ভ কথামালা অন্যরকম ভালো লাগা দেবে। বইটি পাঠশেষে লেখকের প্রয়াসকে পাঠক শ্রদ্ধা জানাবেন বলে বিশ্বাস করি।
রিভিউ লিখেছেন – মুহাম্মাদ শাহ জালাল, ৩য় স্থান বিজয়ী
গল্প জীবন থেকে নেওয়া কিন্তু জীবন গল্পের মতো হয় না, আবার মাঝে মাঝে জীবন গল্পের চেয়েও বেশি গল্পময়। শিল্পী তার শব্দের বুননে এঁকে যায় গল্পের রং, আর জীবনের বেলায় সাক্ষাৎ শিল্পীই যেন হয়ে ওঠেন গল্পের রং। জীবনের একটা পরম বাস্তবতা হলো জীবন ভিন্ন ভিন্ন রুপে ভেসে উঠে। জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গল্পগুলোকে লেখক ইসলামি ফুরামে তুলে এনেছেন এই বইটিতে। বইয়ের গল্পগুলো যেন জীবনের কথা বলে। সমাজের সেসব ছন্দহীন চরিত্রকে গল্পের আলোকে জীবনের ছন্দে ফিরিয়ে এনেছেন।
জীবনের হতাশা আর দুঃখ এই সব কিছুর পেছনে রয়েছে মানসিক কিছু নেগেটিভ থিংকিং। নেগেটিভ থিংকিং এমন এক বিষাক্ত জিনিষ যা মানুষের মনের সকল শান্তি নিমিষেই দূর করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। নেগেটিভ মানসিকতার মানুষ কখনো জীবনকে সহজ ভাবে নিতে পারে না। জীবন কে সেরা ভাবে উপভোগ করতে সবসময় ভালো চিন্তা বা (পজিটিভ থিংকিং) করতে হবে। পজিটিভ থিংকিং শুরু করলে তখন জীবনে ধীরে ধীরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে; ইনশাআল্লাহ।
কিন্ত জীবনের চলার পথে মাঝে মাঝে এমন কিছু মোড় আসে যেখানে পজিটিভ থিংকিং ধরে রাখা খুবই কষ্টকর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য এমন কিছু পদক্ষেপ নিন যাতে পজিটিভ থিংকিং আপনার চরিত্রের একটি অংশ হয়ে যায় এতে করে জীবনের চলার পথ অনেক বেশী সহজ হয়ে যাবে। আর জীবনের সেসব মোড় গুলোতে কিভাবে ঠিক রাখতে হবে তা ইসলামের আলোকে সুন্দর করে সাজিয়েছে লেখক।
★বইটিতে কিছু চমৎকার দিক রয়েছে-
নিজের জীবনকে বইয়ের পাতায় দেখতে পাবেন। জীবনের অনেক অজানা কিছু প্রশ্নের উত্তরও পেয়ে যাবে। বইটি একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠতে মন চাইবে না। প্রতিটি গল্পই ভাবনার দুয়ারে নতুন করে নাড়া দিয়ে যাবে। দিবে কিছু চিন্তার খোরাক। কীবনকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করবে। আর বইটিতে কুরআন, হাদিস, নবিজি (সঃ) জীবনের গল্প, এবং ইসলামের ইতিহাসের অনেক সুন্দর সুন্দর জ্ঞান বা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে।
→’শত্রু তবু বন্ধু তুমি’ শিরোনামের গল্পটিতে ও ছেলের কথোপকথনের মাধ্যমে মিথ্যা অপবাদ আরোপ ও ক্ষমার মাহাত্ম্য চমৎকার ভাবে সাজানো হয়েছে।
→ তিন বন্ধুর সিরাত অধ্যয়নের গল্প দিয়ে সাজিয়েছে ‘জীবন যাবে আজীবন তোমার জীবন জানতে’। গল্পটি পড়ে এমন কিছু উপলব্ধি হবে যা হয়তে অন্যকোনো বই পড়ার সময় হয়তো মাথায় আসে নি।
★ বইয়ের বাকি গল্প গুলো নিয়ে অনাশায়ে অনেক লাইন লেখতে পারবো। কিন্তু আমি আর লেখতে চাচ্ছি না। আমি চাই আপনি বইটি পড়ে সে-সকল অনুভুতি সাথে পরিচিত হোন।
অনুভূতি:
বইটা পড়তে গিয়ে আমি হারিয়ে গিয়েছে বইয়ের পাতায় পাতায়, প্রতিটি শব্দে শব্দে। বইয়ের পাতায় নিজের জীবনকে কাছ থেকে দেখতে পেলাম। মনে হয় যেন লেখক ‘হাসান শুয়াইব’ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অনুশীলন উপযোগী বইয়ের গল্পগুলো লিখেছেন। আমি বইটি অবশ্যই হাতে ধরে পড়তে চাইবো। আল্লাহ তায়া’লা লেখকের কলমকে কবুল করুক। ইসলামের জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার তৌফিক দান করুন।
বই: পজিটিভ থিংকিং (গল্পের আবেশে নির্মল জীবন