আপনাদের কারো আলি বানাতের কথা মনে আছে?
আচ্ছা সমস্যা নেই মনে না থাকলে মনে করিয়ে দিচ্ছি- আলি বানাত ছিলেন একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক খুব অল্প বয়সেই যিনি পেয়েছিলেন সফল জীবন। সফল ব্যবসা আর অর্থ-সম্পদের মধ্যে ছিলো তার এক বিলাসবহুল জীবন। বাসায় ব্যবহারের জন্য সামান্য চপ্পল যিনি কিনতেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা দিয়ে।
অথচ ক্যান্সার ধরা পড়ার পর তার এই পুরো জীবনটাই বদলে যেতে থাকে। জীবনকে সে দেখার চেষ্টা করে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের নিচে। দেখতে পান এইসব বিলাসিতা আসলে একটা মোহ। মৃত্যুর আগে সে এমন কিছু করে যায় যেটা অসংখ্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।
আমাদের প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) ছিলেন পৃথিবীর বুকে একজন সবথেকে সম্মানিত মানুষ অথচ তার নিজের বাড়িতেও দিনের পর দিন চুলা জ্বলেনি। খিদের জ্বালা আমাদের প্রিয়নবীও সহ্য করেছেন। অথচ আজ আমরা শুধুমাত্র সন্ধ্যার পর সামান্য নাস্তা না পেলে হাসফাস করতে থাকি। নবীজি চাইলেই পারতেন বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে, পারতেন বাদশাহি হালতে থাকতে কিন্তু তিনি এমনটা নিজেই বেছে নিয়েছিলেন। যার কপালে ভাজ পড়ত তার উম্মতের কথা চিন্তা করে। মৃত্যুর আগেও যিনি এতটুকু সম্পদ নিজের অধিকারে রাখতে চাননি আর আমরা??
সম্পদের পাহাড় গড়ে চলেছি দিনের পর দিন অথচ কি হবে তার পরিণতি?
আজ আপনি ভাবছেন দেখার জন্য দুটি চোখ থাকলেই যথেষ্ট। ভুল! অসংখ্য মানুষের চোখ আছে, কিন্তু তারা তা দিয়ে দেখতে পায়না। আল্লাহই দেখার ক্ষমতা দিয়েছেন। ভাবছেন দুটো কান আছে আপনার শোনার জন্য কিন্তু ভেবে দেখুন অনেক মানুষেরই দুটো কান আছে কিন্তু তারা শুনতে পায়না। হাঁটার জন্য অনেক মানুষের পা রয়েছে সবাই কি হাঁটতে পারে?
অথচ এগুলোর ক্ষমতা আল্লাহই আপনাকে দিয়েছেন। দিয়েছেন দেখার ক্ষমতা,শোনার ক্ষমতা,হাঁটার ক্ষমতা অথচ কবার শুকুরিয়া করি সেটার?
কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হলো আল্লাহ যাদেরকে কান থাকার পরেও শোনার ক্ষমতা দেননি, চোখ থাকার পরেও দেখার ক্ষমতা দেননি তারা অনেকেই তাদের অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট কিন্তু আমরা সন্তুষ্ট নই। এই হলো মুসলমানদের অবস্থা।
এই বইটা উস্তাদ Mohammad Hoblos এর বিভিন্ন লেকচার হতে নেওয়া যিনি একজন অস্ট্রেলিয়ান দাঈ যার কাজ মানুষকে ইসলামের দিকে আহবান করা। যারা ফেসবুক বা ইউটিউবে উনার লেকচার শুনেছেন বা শুনেন তাদের কাছে এর বিভিন্ন লেখচার ই পরিচিত মনে হবে। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে এই বইটা আমাদের জন্য একটা রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে।
বইটাতে বর্তমান সময়ের অনেক বিষয়গুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেটার ফলাফল বা পরিণতি সম্পর্কেও বলা হয়েছে। নিজেদের সাথে এটা আমরা রিলেট করতে পারব। তবে প্রায় সব গল্পের মূল বিষয় হলো মৃত্যুর আগে ও পরের জীবন। আসলে আমাদের কি করা উচিত ছিল আর আমরা আমাদের মূল্যবান সময় কিসে ব্যয় করছি এগুলো নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের একবার মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়েছে মৃত্যুর পর আমাদের আবার পুনরুত্থান হবে যেখানে দুনিয়ায় আমাদের কৃতকর্মের জবাবদিহি করতে হবে।
আগেই বলেছি এটা ওস্তাদ Mohammad Hoblos এর অনলাইনে বিভিন্ন লেকচার নিয়ে লেখা যারা মোটামুটি শুনে থাকেন তাদের কাছে হয়ত এটার লেকচারগুলো পরিচিত লাগবে তবে মোটামুটি ৩০+ মত লেকচার এতে দেয়া আছে কেউ এক মলাটে চান সংগ্রহ করতে পারেন। ঐযে বললাম এটা আমাদের জন্য রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করবে।