- বই : অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ
- লেখক : নাঈম হাসান
- প্রকাশক : চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন
- ধরন : রম্য উপন্যাস
- মূল্য : ১৮০
বিয়ের জন্য পাত্র কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পাত্রী দেখতে, সাথে যাচ্ছে তার প্রাণপ্রিয় বন্ধুরাও। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে পাত্র নিজেও জানে না যে, তার জীবনে ঘটতে চলেছে কতো বড় অঘটনের ঘটনা!
এই গল্পে সবথেকে মজার বিষয় হচ্ছে, বিয়ের পাত্রী দেখার জন্য একটা ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু তাকে জানানো হচ্ছে না। কেননা সে বিয়ে করতে রাজি না। কারন তিনি এরমধ্যেই প্রেমের নদীতে ডুবে গেছেন কিন্তু সেটা কেউ জানে না আর ওভাবে কাউকে এখন অব্দি জানানো হয়নি।
ছেলে বিয়েতে রাজি না তবুও তাকে বিভিন্ন ফন্দি ফিকিরের আশ্রয় নিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগ শলা পরামর্শ করেই এগোনো হয়। পাত্রী দেখানো ও পাত্র কে বিয়ের পিঁড়িতে কিভাবে বসানো যায় এবং বিয়ের দিনক্ষণ পাকা কথার সুব্যাবস্থা করার সব ধরনের প্রচেষ্টা তারা করে চলেছে বাকি বন্ধুদের সহযোগিতায়।
যে বন্ধুটির পরিকল্পনায় পাত্রী দেখানোর জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয়, পাত্রী সেই বন্ধুরই প্রেমিকা, যা কিনা বন্ধুটি নিজেও জানতো না। এদিকে পাত্রের মা- বাবার মেয়ে পছন্দ হয়ে যায় এবং সবকিছু প্লান মতোই এগোতে থাকে। কিন্তু এর মাঝেও ঘটে আরো কিছু চমৎকার অঘটন! যার জন্য হয়তো কেউই সেভাবে প্রস্তুত ছিল না।
এভাবেই চলতে থাকে গল্পের কাহিনী এবং নানান ধরনের মজার সব অঘটন হর হামেশাই চলতে থাকে প্রতি মূহুর্তে। সব ঘটনা জানার পর সেই বন্ধুরাই আবার বিপদে এগিয়ে আসে এবং বিভিন্ন উপায় কলা- কৌশল প্রয়োগ করেই এক বন্ধু আরেক বন্ধুর পছন্দের প্রীয়তমা কেই পারিবারিক ভাবে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
দুই প্রেমিক যুগলের শেষ প্রণয়নের পরিনতি ঘটাতে গিয়ে কতো বাঁধা, বিপত্তি, গোলোযোগ, জটলা পাকিয়ে আবার খোলে এবং কিভাবে তা জানতে হলে পড়তে হবে “এ্যারেঞ্জ ম্যারেজ” বইটি। এই গল্পের শুরুটা এভাবে হলেও শেষটা কিন্তু অত্যান্ত চমৎকার ভাবে গুরুত্ব দিয়েই মিল বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন লেখক।
বইটি সম্পর্কে যে বিষয়টি না বললেই নয়, “অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ” বইটি না পড়া পর্যন্ত আপনি বুঝতে পারবেন না এর গভীরতা কতোখানি। এটি সত্যিই কি এ্যারেঞ্জ ম্যারেজ নাকি লাভ ম্যারেজ ? এমন প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ না থাকতে চাইলে এখনি পড়ে ফেলুন “অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ” বইটি। এরকম হাজারো রহস্যের জট খুলতে চাইলে এখনি পড়তে হবে বইটি
মাএ ৪৮ পৃষ্ঠার একটি পূর্ণাঙ্গ রম্য রচনা নির্ভর এই বইটিতে লেখক এতো সুন্দর করে উপলব্ধি গুলো একেরপর এক লিখে গেছেন সুচারুভাবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এর ছোট ছোট চরিত্র গুলো প্রতিটি মূহুর্তে চমক ছড়িয়েছে গল্পের শুরু থেকে শেষ অবধি। বইটি পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে বইয়ের পাতা গুলো যেন মূহুর্তেই শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু গল্পের রেস মনের মধ্যে রয়ে গেছে।
গল্পের কাহিনী নির্ভর অনুযায়ী বইয়ের নাম যথার্থ। “অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ” বইটি আকারে ক্ষুদ্র হলেও অসম্ভব রকম হাস্যরস ও মধুর রহস্যে ভরপুর ছিল এই গল্পের প্রতিটি চরিত্র। লেখক তার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন পাঠকের মনে হাস্যরসের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে এবং দুই প্রেমিক যুগলের সর্বশেষ পরিণতি থেকে প্রণয়নের দিকগুলো সুন্দর ভাবে প্রতিটি হুলুস্থুল কর্ম- কান্ড ও ঘটনাচক্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন এর কল্পকাহিনী।
সর্বশেষে এটাই বলবো যে, ক্ষুদ্রতার মাঝেই লুকিয়ে থাকে অভাবনীয় সাফল্য”। রম্য রসের ভান্ডার “অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ” অসম্ভব রকম হাস্যরস চমৎকার ছোট্ট একটি বই। মিস না করতে চাইলে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনা থেকে বইটি সংগ্রহ করে পড়তে পারেন। আমার তো দারুন লেগেছে! আশাকরি আপনারও ভালো লাগবে।
(বুক রিভিউ ভালো লাগলে রেটিং দিয়ে যাবেন ১০ এর মধ্যে)
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?