Post ID 111490
বইয়ের নাম:সমুদ্র ঈগল
লেখক:আসলাম রাহি এম.এ
অনুবাদ:মাওলানা আব্দুর রশীদ তারাপাশী
প্রকাশনী:কালান্তর প্রকাশনী
সংস্করন:১ম
মুদ্রিত মূল্য:৪০০ টাকা
পৃষ্ঠা:৩৯২
আইএসবিএন নম্বর:978 984 90473 8 4
প্রাপ্তিস্থান:রকমারি সহ সকল অনলাইন শপ
প্রকাশকাল:জুলাই ২০১৭
“জানো না খাইরুদ্দিনন চিজ।
ইউরোপিয়ানরা তাকে সাগরের দানব হিসেবেই শুমার করে থাকে।
সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউয়ের ভাষা তার মুখস্থ।
সামুদ্রিক যুদ্ধে এ বিশ্বে তার জুড়ি আছে এ কথা কেউই অস্বীকার করে না।”
-সম্মিলিত খ্রিস্টান নৌ-বাহিনীর অ্যাডমিরাল আন্দ্রে ডুরিয়া
বইটি সম্পর্কে কিছু কথা:
সমুদ্র ঈগল বইটি উসমানি খিলাফতের শক্তিশালী সুলতান সুলাইমান এর নৌ-সেনাপ্রধান খাইরুদ্দিন বারবারুসার জীবনী ভিত্তিক উপন্যাস।
সুলতান সুলাইমান এবং খাইরুদ্দিন বারবারুসা-উভয়েই ছিলেন তৎকালীন খ্রীষ্ট ইউরোপীয়দের জন্য জীবন্ত আতঙ্কের নাম।
সুলতান সুলাইমান স্থলে এবং খাইরুদ্দিন বারবারুসা সাগরে ইউরোপীয়দের রীতিমতো পর্যুদস্ত করে ছাড়েন।সুলতান সুলাইমান ইউরোপের ৮০০ মাইল ভিতরে প্রবেশ করে ভেঙে দিয়েছিলেন ইউরোপীয় যৌথবাহিনীর শক্তির মেরুদন্ড।তেমনি খাইরুদ্দিন বারবারুসা মাত্র ১২০ টি যুদ্ধজাহাজ আর কিশতীর বহর নিয়ে সুলতানের কোনোরূপ সাহায্য ছাড়াই ইউরোপীয় ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী নৌ-বহরের সলিল-সমাধি ঘটিয়ে ছিলেন,যেখানে ছিল ৫ টি নব-আবিষ্কৃত বিশাল জাহাজসহ ৪ শতাধিক যুদ্ধজাহাজের বৃহৎ এক নৌ-বহর।
সেই যুদ্ধে পর্যুদস্ত হয়ে পালিয়ে যান স্পেন সম্রাট চার্লস এর নৌ-সেনপ্রধান আন্দ্রে ডুরিয়া।যুদ্ধে পরাজয়ের ব্যথা সহ্য করতে না পেরে ভেনিসের রাজা দুজে মৃত্যুবরন করেছিলেন।এমনকি তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি স্পেনের সম্রাট চার্লস অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন।
এই যুদ্ধজয়ের পর সাগর পুরোপুরি মুসলমানদের হাতে এসে যায়।এসময় সাগরে মুসলমানদের প্রতিপক্ষ বলতে কেউই ছিল না।
উপন্যাসটি মুসলমানদের এরকম অনেক শিহরণজাগানিয়া বিজয়কাহিনীর পাশাপাশি মুসলিম স্পেনের সর্বশেষ স্বাধীন ভূখন্ড আল-বাশারাত ওয়াদির স্বাধীনতা হারানোর ইতিহাস,সর্বশেষ মুসলিম সুলতান আব্দুল হামিদের ইহুদিদের বিপক্ষে বীরত্বপূর্ণ অবস্থান,ইহুদিবাদী দুগাদের মুসলিম খিলাফতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইতিহাস ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে।
যা সঠিক ইতিহাস জানতে খুবই সহায়ক।
পরতে পরতে উত্তেজনা আর রোমান্টিকতায় ভরপুর এ এক অনবদ্য রচনা।
নিজের মন্তব্য:
একসময় খাইরুদ্দিন বারবারুসা নামটাই জানতাম না।কারন,বাঙালি ইসলামিক,অনৈসলামিক কোনো ঐতিহাসিক-ই তাকে আমাদের কাছে তুলে ধরেননি।
এই বইটিতেই প্রথম তার সম্পর্কে জানতে পারি এবং এই বইতেই তার সমগ্র জীবনী জানার পরশ পাই।
যদিও বইটা উপন্যাস আকৃতিতে লেখা কিন্তু মূল ইতিহাসকেই তুলে ধরা হয়েছে।
উপন্যাসটি পড়ার পর মুসলমানদের বিশ্ব শাসনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নৌ-সেনাপ্রধান কে জানতে পারি।
যা বইটি না পড়লে হয়তো অজানাই থেকে যেতো।(আলহামদুলিল্লাহ)
ভালো/খারাপ দিক:
খাইরুদ্দিন বারবারুসা।এতবড় একজন লোককে মানুষ জানতই না।
এতবড় একজন লোককে মানুষের সামনে তুলে ধরা,এটি-ই তো সবচেয়ে বড় ভাল দিক।
বইটিতে এমন কিছু লেখা নেই যা ইসলামি আকীদার সাথে সাংঘর্ষিক।আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে তাই কোনো খারাপ দিক দেখতে পাই নি।(বাকিটা আল্লাহ ভালো জানেন।)
কেন পড়া উচিত:
খাইরুদ্দিন বারবারুসা মুসলমানদের বিশ্ব শাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌ-সেনাপ্রধান।অথচ বাংলাদেশের শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমান-ই তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানে না।
৯৫ ভাগ তো হয়তো নামটাই শুনেনি।
মুসলমানদের এত বড় একজন বীরকে জানতে,মুসলমানদের শক্তি,সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে বইটি পড়া উচিত।
এছাড়াও বইটি পড়ে তুরগুত,হাসানক্রুসু,কাকাদ,সানআন,সালেহ,হাসান আগা,মুসলমানদের তৎকালীন সেনাপ্রধান আলীপাশা সর্বোপরি তৎকালীন খলীফা সুলতান সুলাইমান সম্পর্কেও অনেক তথ্য জানা যাবে।
আহ্বান:
আমি বইটি পড়তে সকল মুসলমানদের আহ্বান জানাবো এজন্য যে, নিজেদের বীরত্বের ইতিহাস জেনে যেনো মুসলমানরা আবার পৃথিবীতে মুসলমানদের ইনসাফপূর্ন শাসন প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী হয়।আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন,আমিন।
অনুবাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
মাওলানা আব্দুর রশীদ তারাপাশী সুনামগঞ্জ জেলার ধরাই উপজেলার কুলঞ্চ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামে ১৯৬৭ ঈসায়ীতে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি তারাপাশা এবং সিলেটের গলমুকাপন মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেন।
দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর যাবৎ গলমুকাপন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন।
তার লেখালেখির শুরু কবিতা দিয়ে।পরে তার রচনাধারা স্পর্শ করেছে বহুমাত্রা।অনুবাদ,ছোটগল্প আর ইতিহাস নিয়ে লিখে যাচ্ছেন যুগের পর যুগ।
লেখকের বেশ কয়েকটি বই ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
শিঘ্রই আরো কিছু বই প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ উনাকে কবুল করুন,আমিন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?