বইঃ হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের ইতিহাস।

Post ID 111576

বইঃ হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের ইতিহাস
লেখক : ড. জিয়াউর রাহমান আজমি
অনুবাদক : মহিউদ্দিন কাসেমী 
মহিউদ্দিন কাশেমী।
কালান্তর প্রকাশনী
review credit:-💞Mizanur Rahman.

ভারতবর্ষ হলো হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের উৎপত্তিস্থল। এই চারটি ধর্ম একত্রে ভারতীয় ধর্ম নামে পরিচিত। বর্তমানে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্ম যথাক্রমে বিশ্বের তৃতীয় ও চতুর্থ বৃহত্তম ধর্মবিশ্বাস। এই ধর্মগুলোর প্রতিটির মধ্যেই রয়েছে প্রগাঢ় সম্পর্ক। ভারতীয় সমাজে এসব ধর্মের প্রভাব ছিল অপরিসীম।
হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের ইতিহাস গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে ভারতবর্ষের ধর্মসমূহের উপাখ্যান। আর এগুলোর রেফারেন্স আনা হয়েছে সেসব ধর্মের লেখকদের লেখা থেকেই। গ্রন্থটিতে দেখানো হয়েছে সেখানের অসংখ্য মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে গাছ-পাথর, মানুষ-জিন ও প্রাকৃতিক শক্তিগুলোকে উপাস্যরূপে কীভাবে গ্রহণ করেছে।
গ্রন্থটি অধ্যয়নে পাঠক হয়তো সৌভাগ্যের পরশে সিজদাবনত হবেন দয়াময় রবের দরবারে। অনুধাবন করবেন, আল্লাহর দরবারের একটি সিজদা কীভাবে আপনাকে মুক্তি দিয়েছে অসংখ্য সৃষ্টির সামনে মাথা ঝোঁকানো থেকে। আলহামদুলিল্লাহি আলা নিমািতল ইসলাম।
হিন্দু বৌদ্ধ জৈন ও শিখ ধর্মের ইতিহাস। কালান্তর প্রকাশনী থেকে আজই প্রকাশিত হয়েছে বইটি। অনেকের মত আমার জন্যও ব্যাপারটা ছিল চমকপ্রদ। ইনবক্সে বই সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে কেউ কেউ জানতে চেয়েছেন। প্রথমটি হলো, বইটি লেখকের স্বতন্ত্র রচনা নাকি অন্য কোন বইয়ের অংশ? আসুন, এব্যাপারে বইটির মুখবন্ধ থেকে স্বয়ং লেখকের ভাষ্য দেখে আসি।

//১৪০৯ হিজরিতে আমার রচিত আল- ইয়াহুদিয়া ওয়াল মাসিহিয়া বা ইয়াহুদি ও খ্রিষ্টধর্মের ইতিবৃত্ত প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির ভূমিকায় আমি ভারতবর্ষের ধর্মগুলাের ইতিবৃত্ত নিয়ে কলম ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসেছে, যখন আমি সেই প্রতিশ্রুত গ্রন্থটির সংকলন সমাপ্ত করতে পেরেছি।//

অবশ্য, একই ধারাবাহিকতার সংকলনের কারণে যদি কেউ আলোচ্য গ্রন্থটিকে অন্য কোন বইয়ের পরের অংশ বা পরিশিষ্ট দাবী করেন- তারা কি ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী প্রনীত ‘সেলজুক সম্রাজ্যের ইতিহাস’ বইটিকে তারই সিরাত ও খলিফা সিরিজের সম্পূরক অংশ মনে করেন? যেখানে লেখক ‘সেলজুক সম্রাজ্যের ইতিহাস’ বইটির ভূমিকায় বলেছেন – 
‘হামদ ও সালাতের পর, বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি আমার প্রকাশিত রচনা— নববি যুগ ও খিলাফতে রাশিদারই ধারাবাহিক অংশ। এ – সংক্রান্ত গ্রন্থসমূহের মধ্যে সিরাতুন নবি ( বিশুদ্ধ ঘটনার আলােকে বিশ্লেষণধর্মী পূর্ণাঙ্গ নবিজীবনী),  আবু বকর সিদ্দিক, উমর ইবনুল খাত্তাব, উসমান ইবনু আফফান, আলি ইবনু আবি তালিব, হাসান ইবনু আলি রাজিআল্লাহু আনহুম ও উমাইয়া শাসনামলের ইতিহাস প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির নাম রেখেছি সেলজুক সাম্রাজ্য : বাতিনি ফিতনা ও ক্রুসেড মােকাবিলায় ইসলামি জাগরণের সূচনা।’

আশা করছি লেখকের বক্তব্য থেকেই এ সংক্রান্ত বিভ্রান্তির নিরসন হবে। 

আর আরেকটি বিষয় হলো, আরেকটি প্রকাশনী থেকে একই বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যাজনিত ঘোষনাকে কেন্দ্র করে এই বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যার তফাতের কারণ নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন। এব্যাপারে আমি বলব, ২১৫ পৃষ্ঠার আরবি মূল বইটির পৃষ্ঠাসাইজ বেশ ছোট। একেক পৃষ্ঠার অনুবাদ বাংলা বইয়ের  এক পৃষ্ঠার চাইতেও কিছুটা কম হয়। যারা আরবী অনুবাদের সাথে যুক্ত তারা বইটির পৃষ্ঠা সাইজ দেখলেই সহজে অনুমান করতে পারবেন। তারপরও আমি অনূদিত যেই ফাইলটি জমা দিয়েছিলাম তা দুইশ পৃষ্ঠার ছিল। কিন্তু প্রকাশক মহোদয় যে ১৭৬ পৃষ্ঠায় এর সেটিংস করে আমাকে ঠকিয়েছেন, তার বিচার আমি পাঠকের আদালতে দিয়ে রাখলাম। টাকা তো পাঠকের পকেট থেকেও যেতো!
তারপরেও বলবো, আলহামদুলিল্লাহ, বইটির অনুবাদে কোনরকম কাঁটছাট করা হয়নি, কোন অংশ বাদ দেয়া হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে অনুবাদক ও সম্পাদকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কিছু টিকা সংযোজন করা হয়েছে। আমি মনে করি একই বইয়ের একাধিক অনুবাদ থাকা পাঠকদের জন্য উপভোগ্য ও উপকারী। একেক প্রকাশনীর একেক রকম পলিসি থাকে। একজন অনুবাদক হিসেবে আমি সব প্রকাশনীর বইয়েরই বহুল প্রচার কামনা করি।
 
আমাদের বইটি এখন বাজারে আপনাদের হাতের নাগালেই আছে, আশা করছি বইটি সবার জন্যই উপভোগ্য হবে।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?