বইঃ সবার জন্য Vocabulary review with pdf

‘মানুষ মাত্রই ভুল’ এই উক্তি যদি আপনি মেনে নিতে পারেন তাহলে মানুষের রচিত বইতে ভুলকে মেনে নিতে নারাজ কেন? আমরা বাজার থেকে অনেক গাইড বই কিংবা ভাষা শিক্ষার বই কিনি। সেখানে অসংখ্য বানান/শব্দ ভুল থাকে এমনকি উত্তরপত্রে অনেক ভুল থাকে। কই সেসব নিয়ে তো এত হাউ কাউ হয় না। তাহলে মুনজেরিন শহীদের ইংরেজি বইয়ে ভুল নিয়ে কেন এত হইচই! ঘন্টার পর ঘন্টা কেন তার বই নিয়ে পরে থাকতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়! নাকি মুনজেরিন এলিয়েন তার পক্ষে ভুল করা অসম্ভব?

একটি বইয়ের পিডিএফ ও হার্ড কপি লাখ খানেক বিক্রি হলো। এতদিন বইয়ের ভুল নিয়ে কোন আলোচনা সমালোচনা নাই। হটাৎ একজন রকমারি সাইট থেকে ২ পৃষ্টা পড়ে শুরু করলেন ফেসবুকে জ্ঞানগর্ব আলোচনা ‘এ বইয়ের শুরুতে এত ভুল ১ পৃষ্ঠা পড়ে আর পড়তে ইচ্ছা হলো না।’ ভাবখানা এমন তিনি বইটি সংগ্রহ করেছেন। প্রথম পৃষ্ঠায় ভুল দেখে তিনি আর পড়তে চান না। তিনি পড়বেন কোত্থেকে রকমারি তো পুরো বই ফ্রিতে পড়ার ব্যবস্থা করে নাই। প্রথম এক-দুই পৃষ্ঠা পড়া যায়। তা বইয়ের প্রচ্ছদে ক্লিক করলেই আসবে। প্রথম পৃষ্ঠায় ভুল দেখে পুরো বই ভুলে ভরা বলে চালিয়ে দেওয়া এক ধরনের ভণ্ডামি। 

তার এ লেখার পর ফেসবুকে শুরু হয়ে গেল ঝড়! যারা কোনদিন বইটি ধরেও দেখে নাই। তারাও ফেসবুকে বুলি আওড়াচ্ছে এই বই কি করে বেস্টসেলার হয়। এত এত ভুল। তাদের মনোভাব এমন তারা বইটির আগাগোড়া পড়ে শেষ করে ফেলছে। তারা সব বিষয়ে পারদর্শী। শুনেন ভাই, আর যাই হোক ফেসবুক এসব বুদ্ধিজীবী মার্কা স্ট্যাটাসে দুই-চারজন ফলোয়ার বাড়াইতে পারবেন বাস্তবিক অর্থে আর কোন কাজে আসবে না। 

 ইতোমধ্যে মুনজেরিন শহীদ ভুলের বিষয়টি অবগত হয়েছেন। এবং পরবর্তি সংস্করণে সংশোধন করে নিবেন বলেছেন। তারপরও কেন সারাদিন তার বিরুদ্ধে পরে থাকতে হবে ফেসবুকে! তার ভুল সংশোধনের করার জন্য লেখা নাকি তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য? নাকি মুনজেরিন এর বই এত এত বিক্রি আপনার সহ্য হচ্ছে না! আপনি যদি এতই পারদর্শী হোন, তো ফেসবুক বাদ দিয়ে বই লেখা শুরু করেন। সবাই আপনার নির্ভুল বই কিনতে মরিয়া হয়ে যাবে। ফেসবুক তো অনেক জ্ঞান বুদ্ধি দেন, এবার বই লেখে দেখান।

একটু ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, মুনজেরিন শহীদের বেশিরভাগ ভক্ত স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম-২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের কাছে এ সময়ে কোন নতুন কিছু জানা বা শেখার আগ্রহটা বেশি। এখন যে উৎস থেকে তারা উপকৃত হবে সেখানে ঝাঁপিয়ে পরবেন। এখন আপনি সারাদিন ফেসবুক মুনজেরিনকে বিরুদ্ধে বকবক করলেও লাভ হবে না। কারণ- আপনার জ্ঞানগর্ব স্ট্যাটাসে তাকে ইংরেজিতে প্রো করে দিবে না। সে একই সময়ে মুনজেরিনের ভিডিও কিংবা বই থেকে ন্যূনতম কিছু শিখতে পারাটা তার জন্য লাভের মনে করবে। আর অন্তত একজন শিক্ষার্থী মুনজেরিন বই হতে উপকৃত হতে পারলে এটাই মুনজেরিনের  সফলতা। 

 আপনি যখন মুনজেরিন এর বিষোদগার ছড়াতে ব্যস্ত সে সময়ে মুনজেরিন ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন কনটেন্ট কিংবা নতুন বই নিয়ে। কি করে তাদের জন্য নতুন নতুন টপিকের উপর কনটেন্ট তৈরি করা যায়, নতুন টপিক কিকরে সহজে শেখানো যায়।

মজার বিষয় হলো, মুনজেরিন শহীদের ভুল হাইলাইট করতে করে উল্টো তার বইয়ের প্রমোট করে দিলেন সারাদেশে। এতদিন যারা মুনজেরিনকে জানতো না তারাও ফেসবুকে/ ইউটিউবে গিয়ে মুনজেরিন শহীদ সার্চ দিবে। ফলো করবে। নেগেটিভিটির মাধ্যমে এ উপকার করার জন্য আমার মতে মুনজেরিন শহীদের উচিত সমালোচকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো।

আরেকটা বিষয় বলি, লেখিকার চেহারা নিয়ে এক ধরনের হিপোক্রেসি করতে দেখা যায়। সুন্দর চেহারা দেখে পোলাপাইন বই কিনছে। হাসি মুখে ছবি প্রচ্ছদে দেখে বই কিনছে। এ টাইপের কথাবার্তা। আরে ভাই, মুনজেরিন কি কাউকে জোর করে বই কিনতে বাধ্য করছে? যার ভালো লাগছে সে কিনছে। আর প্রচ্ছদে নিজের ছবি ব্যবহার করা এমন অসংখ্য বই আছে দেশ-বিদেশের। উনি প্রচ্ছদে নিজের ছবি ব্যবহার কররে আপনার সমস্যা কি? সুন্দর চেহারা এটা আবার কেমন হিপোক্রেসি। সুন্দর চেহারার কেউ বই লিখতে পারবে না!

এসব হিপোক্রেসি বাদ দিয়ে নিজের চরকায় তেল দেন।

বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?