বইয়ের নাম: যে আমলে সকল গুনাহ মাফ
লেখক: উস্তাদ আব্দুল্লাহ মাহমুদ
পৃষ্টা সংখ্যা: ৩২ (পকেট সাইজ)।
মুদ্রিত মূল্য: বিনা মূল্যে।
প্রকাশনায়: বিলিভার্স ভিশন।
যে আমলে সকল গুনাহ মাফ,
যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার জন্য যিনি সর্বদা বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং তাওবাকারীদের প্রতি সীমাহীন খুশি হন। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবী মুহাম্মাদ -এর ওপর যিনি দৈনিক একশোবারের অধিক তাওবা করতেন এবং তাওবা করার নির্দেশ দিতেন।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে কত বেশি ভালোবাসেন তা প্রকাশ করা অসম্ভব। তাঁর সীমাহীন ভালোবাসার নিদর্শন হচ্ছে, তিনি প্রতিনিয়ত অবাধ্য বান্দাদেরকে তাঁর দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানান এবং যারা ফিরে আসে তিনি তাদেরকে তাঁর রহমাতের চাদরে সাদরে জড়িয়ে নেন। পৃথিবীতে এমন কে আছে যে অপরাধীদের প্রতিনিয়ত তো দূরের কথা দুএকবার ডেকে বলে, তুমি আমার সাথে অন্যায় করেছে, আমার অবাধ্য হয়েছ, আমাকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিয়েছ, তারপরও এসব কিছুই মনে করি না, শুধু একটিবার আমার কাছে ফিরে আসো, আমি সব ক্ষমা করে দেব? এমন কে আছে যে, যার সাথে সারাজীবন অন্যায় করা হয়েছে অথচ সে অন্যায়কারীকে ডেকে বলবে, তুমি সারাজীবন অন্যায় করেছ তো কী হয়েছে, নিরাশ হয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না, একবার আমার কাছে ভুল স্বীকার করো, আমি সব মাফ করে দেব?
জানি এমন কেউ নেই। আছেন একটি মাত্র সত্তা। তিনি আমাদের রহমান রহীম গাফফার রব। তিনি শুধু বান্দাদের ডেকে ডেকে ক্ষমাই করেন না বরং তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। শুধু মাফ করেন না বরং সেগুলো নেকি দ্বারা পরিবর্তন করে দেন। সুবহানাল্লাহ! তাছাড়া মানুষ আর আমাদের রবের ক্ষমার মাঝে আরেকটি বিরাট পার্থক্য হচ্ছে, মানুষ কাউকে ক্ষমা করে দিলেও তা সাময়িক। কোনো কিছু ঘটলে সে তার সাথে ঘটে যাওয়া পূর্বের অন্যায়গুলো আবার স্মরণ করে। আবার তার মন বিষিয়ে উঠে। কিন্তু আমাদের রব এমনটা নন। বরং একবার তিনি ক্ষমা করে দিলে পূর্বের জের আর কখনো টেনে আনেন না।
আসুন না, আমরা আমাদের রবের কিছু মধুর ডাক শুনে নেই। তিনি বলেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا عَسَى رَبُّكُمْ أَنْ يُكَفِّرَ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাতুন নাসূহা তথা সত্যনিষ্ট ও খাঁটি তাওবা করো। আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের ত্রুটিবিচ্যুতি মিটিয়ে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতসমূহে যার তলদেশ দিয়ে ঝরণা প্রবাহিত। (সূরা তাহরীম, আয়াত : ০৮)
اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا
তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো। তিনি তো অত্যাধিক ক্ষমাশীল। (সূরা নূহ, আয়াত : ১০)
يَاعِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
হে আমার বান্দারা, যারা তোমরা নিজেদের নাফসের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ-ই তো সমস্ত পাপ মাফ করে দেন। তিনি অত্যাধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সূরা যুমার, আয়াত : ৫৩)
فَمَنْ تَابَ مِنْ بَعْدِ ظُلْمِهِ وَأَصْلَحَ فَإِنَّ اللَّهَ يَتُوبُ عَلَيْهِ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
যে ব্যক্তি জুলুম করার পর তাওবা করলো এবং নিজেকে সংশোধন করে নিল, নিশ্চয় আল্লাহ তার তাওবা কবুল করবেন। আল্লাহ তো অত্যাধিক ক্ষমালীল ও দয়ালু। (সূরা মায়েদাহ, আয়াত : ৩৯)
وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِمَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَى
যে ব্যক্তি তাওবা করল, ঈমান আনল, সৎকাজ করল তারপর হিদায়াতের পর অনুসরণ করল, আমি তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেব। (সূরা তহা, আয়াত : ৮২)
বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ হচ্ছে, পৃথিবীতে পাপ ও অন্যায় করার যত মাধ্যম রয়েছে, তার তুলনায় বেশি তিনি ক্ষমা করে দেওয়ার মাধ্যম প্রস্তুত করে রেখেছেন। তিনি পূর্বে সমস্ত গুনাহ মাফ করার জন্য এতটাই সংক্ষিপ্ত পদ্ধতি প্রস্তুত করে রেখেছেন যে, যার কথা একবার ভাবলে আমাদের রবের প্রতি আমাদের মস্তক নত না হয়ে পারবে না। আমরা নিম্নে এমন কিছু অতি সহজ আমলের কথা তুলে ধরব যার মাধ্যমে আমাদের রব আমাদের পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
পরিপূর্ণভাবে ওজু করা
ওজু এমন একটি আমল যার মাধ্যমে পাপ ধুয়েমুছে চলে যায়। রাসূলুল্লাহ বলেন,
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِهِ
যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ভালোভাবে ওজু করে, তার দেহ থেকে সমস্ত পাপ ঝরে যায়, এমনকি তার নখের ভিতর থেকেও ঝরে যায়। (সহীহ মুসলিম, ৪৬৬)
পরিপূর্ণভাবে ওজু করে দুই রাকাআত সালাত আদায় করা
কেউ যদি পরিপূর্ণভাবে ওজু করে দুই রাকাআত সালাত আদায় করতে পারে, তাহলে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে ব্যক্তি আমার এ ওযুর ন্যায় ওযু করবে এবং একান্ত মনোযোগের সাথে দু’ রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে ব্যক্তির পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। ( সহীহুল বুখারী, ১৫৯; সহীহ মুসলিম, ৪২৬)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ বলেন,
مَا مِنْكُمْ رَجُلٌ يُقَرِّبُ وَضُوءَهُ فَيَتَمَضْمَضُ وَيَسْتَنْشِقُ فَيَنْتَثِرُ إِلاَّ خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِهِ وَفِيهِ وَخَيَاشِيمِهِ ثُمَّ إِذَا غَسَلَ وَجْهَهُ كَمَا أَمَرَهُ اللَّهُ إِلاَّ خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِهِ مِنْ أَطْرَافِ لِحْيَتِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ يَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ إِلاَّ خَرَّتْ خَطَايَا يَدَيْهِ مِنْ أَنَامِلِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَمْسَحُ رَأْسَهُ إِلاَّ خَرَّتْ خَطَايَا رَأْسِهِ مِنْ أَطْرَافِ شَعْرِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ قَدَمَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ إِلاَّ خَرَّتْ خَطَايَا رِجْلَيْهِ مِنْ أَنَامِلِهِ مَعَ الْمَاءِ فَإِنْ هُوَ قَامَ فَصَلَّى فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَمَجَّدَهُ بِالَّذِي هُوَ لَهُ أَهْلٌ وَفَرَّغَ قَلْبَهُ لِلَّهِ إِلاَّ انْصَرَفَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ
তোমাদের যে কোনো ব্যক্তির নিকট ওজুর পানি পেশ করা হলে সে যেন কুলি করে, নাকে পানি দিয়ে তা পরিষ্কার করে। এতে তার মুখমণ্ডলের ও নাক গহ্বরের সমস্ত পাপ ঝরে যায়। অতপর যখন সে আল্লাহর নির্দেশ মতো মুখমণ্ডল ধৌত করে, তখন পানির সাথে তার মুখমণ্ডল থেকে, এমনকি দাঁড়ির আশপাশের সমস্ত পাপ ঝরে যায়। অতপর তার দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়ার সাথে সাথে তার আঙ্গুলসমূহ থেকে পানির সাথে গুনাহসমূহ ঝরে যায়। অতপর সে যখন তার পদদ্বয় ধৌত করে তখন তার আঙ্গুলসমূহ দিয়ে তার পাপসমূহ ঝরে যায়। অতঃপর সে যদি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করে, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করে, তার যথাযোগ্য মর্যাদা বর্ণনা করে এবং আল্লাহর জন্য নিজের অন্তরকে খালি করে নেয়—তাহলে সে তার জন্মদিনের মতো গুনাহমুক্ত হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম, ১৮১৫)
রুকুর পর দুআ পড়লে
যে ব্যক্তি রুকুর পর রব্বানা ওয়ালাকা হামদ পড়বে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসূলুল্লাহ বলেন,
إِذَا قَالَ الإِمَامُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ . فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
ইমাম যখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে, তোমরা তখন রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ বল। কেননা যার কথা ফিরিশতাদের কথার সাথে মিলে যাবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
(সুনানুত তিরমিযী, ২৬৭, হাদীসটি সহীহ)
সূরা ফাতিহা শেষে আমীন বললে
কেউ যদি ইমামের সূরা ফাতিহা পড়ার পর আমীন বলে আর তার আমীন ফেরেশতাদের আমীন বলার সাথে মিলে যায়, তাহলে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
إِذَا قَالَ الإِمَامُ (غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ) فَقُولُوا آمِينَ. فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
ইমাম ‘গাইরিল মাগযূবি আলাইহিম ওয়ালায যল্লীন’ পড়লে তোমরা ‘আমীন’ বলো। কেননা, যার এ (আমীন) বলা মালাকগণের (আমীন) বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহীহুল বুখারী, ৭৮২; সহীহ মুসলিম, ৭৯৯)
খাবার শেষে দুআ পাঠ করা
কেউ খাবার শেষে বর্ণিত দুআটি পাঠ করলে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে বলেন,
مَنْ أَكَلَ طَعَامًا فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ . غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি খাবার শেষে বলল, ‘আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব‘আমানী হাযাত্ত্ব‘আমা ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম মিন্নী ওয়া লা- কুওওয়াতিন’ তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
(সুনানুত তিরমিযী, ৩৪৫৮, হাদীসটি হাসান)
পোশাক পরিধানের দুআ পাঠ করা
কেউ পোশাক পরিধানের জন্য বর্ণিত দুআটি পাঠ করলে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
وَمَنْ لَبِسَ ثَوْبًا فَقَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي هَذَا الثَّوْبَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي، وَلَا قُوَّةٍ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি পোশাক পরিধানের সময় বলে, ‘আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী কাসা-নী হাযা- ওয়া রযাক্বানীহি মিন গইরি হাওলিম মিন্নী ওয়া লা- কুওওয়াতিন’—তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সুনানু আবী দাউদ, ৪০২৩; হাদীসটি হাসান)
রমাযানের সিয়াম পালন করা
কেউ ঈমানের সাথে নেকির আশায় রমাযান মাসের সিয়াম পালন করলে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসূল বলেন,
مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় রমাযানের সিয়াম পালন করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
(সহীহুল বুখারী, ২০১৪; সহীহ মুসলিম, ৭৫৯)
রমাযানে ক্বিয়াম তথা তারাবীর সালাত আদায় করা
কেউ ঈমানের সাথে নেকির আশায় রমাযান মাসে ক্বিয়াম করলে তথা তারাবীর সালাত আদায় করলে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় রমাযানে ক্বিয়াম তথা তারাবীর সালাত আদায় করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহীহুল বুখারী, ২০০৯; সহীহ মুসলিম, ১৬৬৪)
লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করা
কেউ ঈমানের সাথে নেকির আশায় রমাযান মাসে লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করলে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেছেন,
وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি ঈমানের সাথে নেকীর আশায় লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
(সহীহুল বুখারী, ২০১৪; সহীহ মুসলিম, ৭৫৯)
হজ্ব সম্পাদন করা
কেউ যদি সঠিকভাবে হজ্ব সম্পাদন করে, তাহলে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ حَجَّ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে-ব্যক্তি হজ্ব সম্পাদন করে এবং এতে অন্যায়-অশ্লীল কথা ও কাজ করা থেকে বিরত থাকে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সুনানিত তিরমিযী, ৮১১, হাদীসটি সহীহ) অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, কেউ যথাযথভাবে হজ্ব সম্পাদন করলে তেমনভাবে সে পাপমুক্ত হয়ে যাবে, যেমনভাবে সে ভূমিষ্ঠের দিন পাপমুক্ত ছিল। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ حَجَّ هَذَا الْبَيْتَ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَمَا وَلَدَتْهُ أُمُّهُ
যে ব্যক্তি এ ঘরের হজ্ব সম্পাদন করল এবং স্ত্রী সহবাস করল না ও অন্যায় আচরণ করল না—সে প্রত্যাবর্তন করবে মাতৃগর্ভ হতে সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো হয়ে। (সহীহুল বুখারী, ১৮১৯; সহীহ মুসলিম, ৩১৮২)
আযানের দুআ পাঠ করা
কেউ হাদীসে বর্ণিত নিম্নের দুআটি আযানের সময় পড়লে, তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا . غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ
যে-ব্যক্তি আযানের সময় বলে, ‘আশহাদু আন লা- ইলাহা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহ, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ, রযীতু বিল্লা-হি রব্বা-, ওয়া বি মুহাম্মাদি রসূলা-, ওয়া বিল ইসলা-মি দ্বীনা-’—তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহীহ মুসলিম, ৭৩৭ )
ইস্তিগফার পাঠ করা
যে ব্যক্তি হাদীসে বর্ণিত নিম্নের দুআটি পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে আসার মতো অতি বড় পাপ করে। এ সম্পর্কে রাসূল বলেন,
مَنْ قَالَ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الْعَظِيمَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىَّ الْقَيُّومَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ . غُفِرَ لَهُ وَإِنْ كَانَ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ
যে-ব্যক্তি ‘আস্তাগ্ফিরুল্লাহাল আ‘যীমাল্লাযী লা- ইলা-হা ইল্লা- হুয়াল হায়য়ুল ক্বয়্য়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহি’ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে মাফ করে দেন; যদিও সে যুদ্ধের মাঠ থেকে পলায়ন করার মত জঘন্য পাপ করে। (সুনানুত তিরমিযী, ৩৫৭৭, হাদীসটি সহীহ)
ফরয-সালাত পরবর্তী তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করা
কেউ যদি ফরয সালাতের পর ৩৩ বার সুবহা-নাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলার পর নিম্নের দুআটি পড়লে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ سَبَّحَ اللَّهَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَحَمِدَ اللَّهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَكَبَّرَ اللَّهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ فَتِلْكَ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ وَقَالَ تَمَامَ الْمِائَةِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে-ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ৩৩ বার সুবহা-নাল্লা-হ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লা-হ, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলে—এই হলো ৯৯ বার – এবং ১০০ বার পূর্ণ করবে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহু, লাহূল মুলকু ওয়া লাহূল হামদু , ওয়া হূওয়া ‘আলা কুল্লি শায়য়িন ক্বদীর’—এর মাধ্যমে, তাহলে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়। (সহীহ মুসলিম, ১২৩৯)
১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করা
কেউ দিনে ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করলে, তার সমুদ্রের ফেনারাশির সমপরিমাণ গুনাহ হলেও আল্লাহ তাআলা তা মাফ করে দেবেন। এ সম্পর্কে রাসূল বলেন,
مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ. فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ خَطَايَاهُ، وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে-ব্যক্তি ‘সুব্হানাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি’ দিনে ১০০ (একশ) বার পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমাণ গুনাহ মাফ করে দেন। (সহীহুল বুখারী, ৬৪০৫)
‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ পাঠ করা
যে ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ পাঠ করে, তার সমুদ্রের ফেনারাশির সমপরিমাণ গুনাহ হলেও আল্লাহ তাআলা তা মাফ করে দেবেন। এ সম্পর্কে রাসূল বলেছেন,
مَا عَلَى الأَرْضِ أَحَدٌ يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . إِلاَّ كُفِّرَتْ عَنْهُ خَطَايَاهُ وَلَوْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে-ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমান গুনাহ মাফ করে দেবেন।
(সুনানুত তিরমিযী, ৩৪৬০, হাদীসটি হাসান)
ফজরের সালাতের পর ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ১০০বার ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করা
যে ব্যক্তি ফজরের সালাতের পর ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ১০০বার ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করবে, আল্লাহ তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন, যদি তা সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ হয়। এ ব্যাপারে রাসূল বলেন,
مَنْ سَبَّحَ فِي دُبُرِ صَلاَةِ الْغَدَاةِ مِائَةَ تَسْبِيحَةٍ وَهَلَّلَ مِائَةَ تَهْلِيلَةٍ غُفِرَتْ لَهُ ذُنُوبُهُ وَلَوْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
যে-ব্যক্তি ফজরের সালাতের পর ১০০ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ১০০ বার ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।
(সুনানুন নাসায়ী, ১৩৫৭, হাদীসটি সহীহ)
বিছানায় দুআ পাঠ করা
কেউ বিছানায় হাদীসে বর্ণিত নিম্নের দুআটি পাঠ করলে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া; যদিও তা সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ হয়। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
من قال حين يأوي إلى فراشه : لا إله إلا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير لا حول ولا قوة إلا بالله سبحان الله والحمد لله ولا إله الله والله أكبر غفر الله ذنوبه ـ وإن كان مثل زبد البحر
যে-ব্যক্তি বিছানায় ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহ্দাহু লা- শারীকা লাহ, লাহূল মুলকু ওয়া লাহূল হামদু , ওয়া হূওয়া ‘আলা কুল্লি শায়্য়িন ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়া লা- কুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ, সুবহা-নাল্লা-হ, ওয়াল হামদুলিল্লা-হ, ওয়া লা- ইলা-হা ইল্লাল লাহূ, ওয়াল্লাহু আকবার’ পাঠ করে, তাঁর সমস্ত গুনাহ মাফ করা দেওয়া হয়। যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার চেয়েও বেশি হয়। (সহীহ ইবনু হিব্বান, ৫৫২৮, হাদীসটি সহীহ)
পরস্পর সাক্ষাতে সালাম দিয়ে মুসাফাহা করা
পরস্পরের সাথে সাক্ষাতের সময় সালাম ও মুসাফাহা করা সুন্নাত। এর ফযীলতও অনেক। কেউ এমনটা করলে উভয় উভয় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
مَا مِنْ مُسْلِمَيْنِ يَلْتَقِيَانِ، فَيَتَصَافَحَانِ إِلَّا غُفِرَ لَهُمَا قَبْلَ أَنْ يَفْتَرِقَا
দুজন মুসলমান পরস্পর মিলিত হয়ে মুসাফাহা করলে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়।
(সুনানু আবী দাউদ, ৫২১২, হাদীসটি সহীহ)
সুবহা-নাল্লাহ ওয়াল হামদু লিল্লাহি
ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার বলা
সুবহা-নাল্লাহ ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার বলার মাধ্যমে পাপ সেভাবে ঝরে যায়, যেভাবে গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
إِنَّ سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، تَنْفُضُ الْخَطَايَا كَمَا تَنْفُضُ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا
নিশ্চয় ‘সুবহা-নাল্লাহ ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ পাপকে ঝেড়ে ফেলে যেভাবে গাছ তার পাতা ঝেড়ে ফেলে। (মুসনাদ আহমাদ, ১২৫৩৪, হাদীসটি হাসান।)
বাইতুল মাকদিসে সালাত আদায় করা
কেউ বাইতুল মাকদিসে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে গেলে এবং তাতে সালাত আদায় করলে, আশা করা যায়, সে তেমন পাপমুক্ত হয়ে যাবে, যেমনভাবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন সে পাপমুক্ত ছিল। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
لَمَّا فَرَغَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ مِنْ بِنَاءِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ سَأَلَ اللَّهَ ثَلاَثًا حُكْمًا يُصَادِفُ حُكْمَهُ وَمُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِهِ وَأَلاَّ يَأْتِيَ هَذَا الْمَسْجِدَ أَحَدٌ لاَ يُرِيدُ إِلاَّ الصَّلاَةَ فِيهِ إِلاَّ خَرَجَ مِنْ ذُنُوبِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ » . فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ » أَمَّا اثْنَتَانِ فَقَدْ أُعْطِيَهُمَا وَأَرْجُو أَنْ يَكُونَ قَدْ أُعْطِيَ الثَّالِثَةَ
সুলাইমান ইবনু দাঊদ আলাইহিস সালাম বাইতুল মাকদাসের নির্মাণ কাজ শেষ করে আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেন : আল্লাহর হুকুম মতো সুবিচার, এমন রাজত্ব যা তার পরে আর কাউকে দেয়া হবে না এবং যে ব্যক্তি বাইতুল মাকদাসে কেবলমাত্র সালাত পড়ার জন্য আসবে, তার গুনাহ যেন তার থেকে বের হয়ে যায় তার মা তাকে প্রসব করার দিনের মত। এরপর নাবী বলেন: প্রথম দুটি তাঁকে দান করা হযেছে এবং আমি আশা করি তৃতীয়টিও তাঁকে দান করা হবে। (সুনানু ইবন মাজাহ, ১৪০৮, হাদীসটি সহীহ)
রোগাক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহর শোকর করা
কেউ যদি রোগাক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহর শোকর করে, তাহলে সে তেমন পাপমুক্ত হয়ে যাবে, যেমনভাবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন সে পাপমুক্ত ছিল। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
إِنَّ اللّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ إِذَا أَنَا ابْتَلَيْتُ عَبْدًا مِنْ عِبَادِىْ مُؤْمِنًا فَحَمِدَنِىْ عَلى مَا ابْتَلَيْتُه فَإِنَّه يَقُومُ مِنْ مَضْجَعِه ذلِكَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّه مِنَ الْخَطَايَا. وَيَقُولُ الرَّبُّ تَبَارَكَ وَتَعَالى: أَنَا قَيَّدْتُ عَبْدِىْ وَابْتَلَيْتُه فَأَجْرُوا لَه مَا كُنْتُمْ تُجْرُونَ لَه وَهُوَ صَحِيْحٌ.
আল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার বান্দাদের মধ্যে কোনো মুমিন বান্দাকে রোগাক্রান্ত করি। রোগগ্রস্ত করা সত্ত্বেও যে আমার শুকরিয়া আদায় করবে, সে রোগশয্যা হতে সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো সব গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে উঠবে।’ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদেরকে বলেন, আমি আমার বান্দাকে রোগ দিয়ে বন্দী করে রেখেছি। তাই তোমরা তার সুস্থ অবস্থায় তার জন্য যা লিখতে তা-ই লিখো। (মুসনাদ আহমাদ, ১৭১১৮, হাদীসটি হাসান)
সালাত আদায়ের পর মসজিদে অবস্থান করা, জামাআতের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টের সময় ভালোভাবে ওজু করা
যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পর মসজিদে অবস্থান করবে, জামাআতের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাবে এবং কষ্টের সময় ভালোভাবে ওজু করবে, সে তেমন পাপমুক্ত হয়ে যাবে, যেমনভাবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন সে পাপমুক্ত ছিল। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ বলেন,
وَالْكَفَّارَاتُ الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْىُ عَلَى الأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ وَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ
কাফফারাত হল, নামাযের পর মাসজিদে বসে থাকা, নামাযের জামাআতে উপস্থিতির জন্য হেঁটে যাওয়া এবং কষ্টকর সময়েও সুষ্ঠভাবে উযূ করা। যে ব্যক্তি এসব কাজ সম্পাদন করবে, সে কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকবে, কল্যাণের সাথে মরবে এবং তার জন্ম দিনের মত গুনাহ হতে পবিত্র হয়ে যাবে। (সুনানুত তিরমিযী, ৩২৩৩, হাদীসটি সহীহ)
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?