নিষিদ্ধ ভালোবাসার ৬ ক্ষতি
বিবাহ বহিঃর্ভূত প্রেম-ভালোবাসার কারণে একজন মানুষ নিজের জীবনে অনেক ক্ষতি ডেকে আনে। যেমন:
.
১) প্রেম কখনও কখনও কুফরির দিকে টেনে নিয়ে যায়
এ ব্যাপারে ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, ‘প্রেম কয়েকটা ধরণ আছে। কখনো কখনো তা কুফরিতে গিয়েও পৌঁছে।… এমন শিরক-কুফরি প্রেমের আলামত হলো, প্রেমিক তার প্রেমিকার সন্তুষ্টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির ওপরে প্রাধান্য দেয়। যখন প্রেমিকার অধিকার ও আল্লাহর অধিকার মুখোমুখি হয়, তখন সে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি তোয়াক্কা না করে প্রেমিকাকে খুশীতে লিপ্ত হয়। এরকম ঘটনা অনেক আছে।
.
২) প্রেমিকাকে কাছে পেতে নিষিদ্ধ মাধ্যম গ্রহণ
প্রেমরোগী প্রেমিকাকে কাছে পেতে বিভিন্ন মাধ্যম গ্রহণ করে থাকে। কখনো কখনো এমন জিন শয়তানদের মাধ্যমে প্রেমিক জাদুর সাহায্য গ্রহণ করে। এমনটা আজ অহরহ ঘটছে।
.
৩) আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল হয়ে সৃষ্টির স্মরণে মশগুল হওয়া
নিষিদ্ধ প্রেমের আরেকটা কুফল হলো রবের ভালোবাসা ও যিকির থেকে সরে গিয়ে কোনো সৃষ্টির স্মরণ ও ভালোবাসায় বিভোর হওয়া। তার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস কোরবান করে প্রেমিক/প্রেমিকার জন্য। নামাজে দাঁড়ালে মনে হয় সে জ্বলন্ত অঙ্গারে পা রেখেছে, তার ওপর ভারী পাথর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে সব ইবাদত কঠিন ঠেকে। অন্যদিকে প্রেমিকার জন্য যে কোনো পাপ কাজই সে করতে পারে।
.
৪) চারিত্রিক নিষ্কলুষতা নষ্ট হয়
প্রেমরোগী তার চরিত্রকে নষ্ট করে ফেলে। মানুষের মাঝে ধীরে ধীরে সে কুখ্যাত হয়ে ওঠে। ফলে তার চরিত্রের কথা মানুষের মুখে মুখে থাকে। মানুষের কাছে রসিয়ে রসিয়ে বলতে থাকে নিষিদ্ধ প্রেমের মজার সব কাহিনী। কখনো কখনো গল্পকে আরও আকর্ষণীয়, আরও মোহনীয় করে নতুন কিছু জুড়ে দেয়। এভাবে অশ্লীলতাসহ লাগিয়ে দেয় অনেক কিছুই।
.
৫) প্রেম থেকে হত্যা এবং নানান অপরাধ
প্রেমের কারণে উভয় পক্ষের কত মানুষই না জীবন হারায়! কখনো প্রেমরোগী অপর পক্ষের প্রিয়তম বা প্রিয়তমাকে হত্যা করে ফেলে ইচ্ছা করেই। এ প্রেম কত মানুষকে সচ্ছল থেকে অসচ্ছল বানায়! ধনীকে ফকির বানায়! উচ্চ মর্যাদা থেকে নিচে নামিয়ে আনে! কত দিক থেকে যে ক্ষতি করে তার হিসেব নেই। অনেকে তো ক্ষতির কারাগারে বন্দিই হয়ে পড়ে।
.
৬) প্রেমরোগ থেকে অপমৃত্যু
সবশেষে নিষিদ্ধ প্রেমাসক্তির ক্ষতিকর দিকগুলোর একটি হলো, প্রেমের কারণে মানুষের অন্তিম পরিণতি ভালো হয় না। তবে আল্লাহ যাকে দয়া করেন অর্থাৎ, আল্লাহর অনুগ্রহে যে তাওবা করার সুযোগ পায়, সে বেঁচে যায়। বান্দা যখন সজ্ঞান থাকে, তার শক্তি থাকে; তখন সে সচেতন থাকে যে, শয়তান তাকে ধোঁকা দিচ্ছে।
অন্যদিকে কেউ যখন আল্লাহর যিকির থেকে গাফেল হয়ে পড়ে, তখন যে তার কেমন মন্দ অবস্থা হয়!? যখন তার শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়, তার মন প্রেমাস্পদ থেকে দূরে থাকার কষ্টে ভরে থাকে, ইবলিসের অপকৌশলে জর্জরিত থাকে, তখন তার মৃত্যু আসলে তা কেমন হবে? ইতিহাসে এমন অনেক উদাহরণ আছে, প্রেমরোগের ফলে খারাপ মৃত্যু হয়েছে। আল্লাহর কাছে পানাহ চাই এমন মৃত্যু থেকে, যা আমাদের সকল আমল বরবাদ করে দিতে পারে।
.
শাইখ সালেহ মুনাজ্জিদ প্রণীত ‘অন্তরের রোগ’ (২য় খণ্ড) অবলম্বনে
অন্তরের রোগ (১ম ও ২য় খণ্ড)
লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
প্রকাশনী : রুহামা পাবলিকেশন
অর্ডার করতে ভিজিট করুন: https://www.wafilife.com/?p=43396
Leave a comment