দ্য ডে অব দি জ্যাকেল – মূল : ফ্রেডারিক ফরসাইথ

দ্য ডে অব দি জ্যাকেল
মূল : ফ্রেডারিক ফরসাইথ
অনুবাদ : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ২০০৫
প্রচ্ছদ : দিলান
প্রকাশনা : বাতিঘর প্রকাশনী
জঁরা : থ্রিলার
রিভিউয়ার : ওয়াসিম হাসান মাহমুদ

ফ্রান্সের একনায়ক দ্য গলের উপর ছয়-ছয়বার ব্যর্থ আক্রমণ হয়েছে। বিদ্রোহী এক গ্রুপ ওএএসের অবস্থা খারাপ। রোমে এক হোটেলে অবস্থান করছেন তিনজন ওএএস নেতা। ফ্রান্সের এই বিদ্রোহী গ্রুপের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সকল কানেকশন নাজুক হয়ে পড়েছে।

এই অবস্থায় ওএএসের সামনে একটি‌ই পথ খোলা আছে। বিশ্বের সেরা একজন পেশাদার খুনিকে ভাড়া করা। নিজ কাজে বিশ্বসেরা নিজেকে জ্যাকেল পরিচয় দিতে পছন্দ করেন‌।

জ্যাকেল। পৃথিবীজুড়ে সেরা সব অ্যাসাসিনেশন সম্পন্ন করার পর‌ও ইন্টারপোল এবং বিভিন্ন দেশের পুলিশ ফোর্সের কাছে অপরিচিত রহস্যময় একজন। কোন রেকর্ডে না থাকা প্রায় অদৃশ্য এই গুপ্তঘাতক হয়তো পারবেন দ্য গলের জীবনের ইতি টানতে।

ক্রুর, অত্যন্ত বুদ্ধিমান, ছদ্মবেশে সিদ্ধহস্ত এবং লক্ষ্যভেদে অটল, ধীর-স্থির জ্যাকেল নেমে পড়েন তার কাজে। নিজের জিওম্যাট্রিক কল্পনা প্রতিভার সাহায্য নিয়ে এমন প্রস্তুতি জ্যাকেল বা ফরাসি ভাষায় শ্যাকেল নিয়ে ফেলেন যা তাকে গড়ে তুলে এক অদম্য প্রতিপক্ষ হিসেবে। ফ্রান্সের ইন্টেলিজেন্স বাধ্য হয়ে সহায়তা নেয়া শুরু করেন বিশ্বের বিখ্যাত সব দেশের গোয়েন্দা সংস্থার।

বিভিন্ন গুজব এবং ইনসাইড নিউজ থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে জ্যাকেল একজন সোনালী চুলের ইংরেজ। পানি গড়াতে গড়াতে চলে যায় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড পর্যন্ত। ব্রিটিশ গোয়েন্দা কর্তাব্যক্তিরা এই অতি গোপন অনুসন্ধানে সাহায্য চেয়ে বসেন এমনকি এম‌আইসিক্সের।

এদিকে ফ্রান্সের সেরা গোয়েন্দা অতি সাধারণ দেখতে কিন্তু অসাধারণ মেধাবী ক্লদ লেবেলের দারস্থ হয়। নিজের সিনিয়র বেভোয়া এবং লেবেল ফ্রান্সের পলিটিক্যাল এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোক্রেসির রোষানলে পড়তে থাকেন। বারবার হাত ছুটে যাচ্ছেন জ্যাকেল। কিভাবে আগে থেকেই জেনে যাচ্ছেন তিনি ক্লদ লেবেল এবং পুরো ফরাসি পুলিশ, স্পেশাল ফোর্স এবং গোয়েন্দাদের চাল? ফ্রান্সের ডিক্টেটরের সময় কি ফুরিয়ে আসছে? কারণ নির্দিষ্ট দিনটি ঘনিয়ে এসে যাচ্ছে। এগিয়ে আসছে দ্য ডে অব দি জ্যাকেল।

ফ্রেডারিক ফরসাইথের প্রথম কোন ব‌ই পাঠ শেষ হল মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অনুবাদে। ৬০ এর দশকে যখন বর্তমান সময়ের মত তথ্য-প্রযুক্তি সঙ্গত কারণেই ছিল না, জ্যাকেল এবং তদন্তকারি সংস্থা সমূহকে কি কি ধরণের সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে এগুতে হয়েছে তা খুব ভালোভাবে জেনে যাবেন পাঠক। তৎকালিন সময়ে এইসব লিমিটেশন কিভাবে গোয়েন্দা সংস্থা এবং জ্যাকেল যার যার অ্যাডভান্টেজে কাজে লাগিয়েছেন তাও বিস্তারিতভাবে জানা যায়। সেই সময়কার ভূরাজনৈতিক প্যাঁচগোচ‌ও বেশ কিছুটা আয়ত্বে আসতে পারে রিডারের‌।

নিজের রয়্যাল এয়ারফোর্সে কাজ করার অভিজ্ঞতার সুবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডিটেইলস ফরসাইথ যথাযথভাবে দিতে পেরেছেন এই উপন্যাসে। কারণ আপনি যা এক্সপেরিয়েন্স করেন না তা লিখবেন কিভাবে? মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের প্রাঞ্জল অনুবাদে সচেতন পাঠক যেন জ্যাকেল অথবা ক্লদ লেবেলের কোয়েস্টে বেরিয়ে পড়বেন। রিডারের মাথার ভিতর চলতে থাকবে এক ফিল্ম।