দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী PDF লেখক : আর্নেস্ট হেমিংওয়ে | The Old Man And The Sea PDF

বই : দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী – পিডিএফ ডাউনলোড
লেখক : আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
রূপান্তরঃ রওশন জামিল
অনুবাদ : সাহাদাৎ হোসেন
মুদ্রিত মূল্য : ২০০
ব্যক্তিগত রেটিং : ৭/১০

“But man is not made for defeat,” he said. “A man can be destroyed but not defeated.” 
এই লাইনটি আমাকে কতটা ভেতর থেকে মজবুত করেছে তা আমি লিখে প্রকাশ করতে পারবো না। কিশোর ক্লাসিকের জাদুই মনে হয় এটা।প্রতিটা গল্প শেষে একবুক আত্ববিশ্বাস নিয়ে নতুন শুরু করতে পারা।এই গল্পটিতেও আমি পেলাম বয়স কোন বাঁধা নয়। মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি,অধ্যবসায় আর সংকল্প নিয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই আসল ।
সান্তিয়াগো বেশ বয়স্ক। প্রায় একা বলা চলে। ভাগ্য ও সুপ্রসন্ন নয়। এই বয়সে তার বিশ্রাম নেয়ার সময়।কিন্তু বুড়োর ইচ্ছে হয়েছে সে সমুদ্রে মাছ শিকার করবে। সে তার ভাগ্যকে পরখ করতে প্রতিদিন মাছ শিকার করতে যায়। তার সাথে একটি বছর ৫ এর ছোট্ট ছেলেও যায়।ছেলেটির নাম মেনোলিন।মূলত সে মাছ শিকার শিখতে চায় পাশাপাশি সান্তিয়াগোর দেখাশোনা করে টুকটাক।
এদিকে ৪০ দিন পার হয়ে যায় বুড়ো জেলে একটি মাছও ধরতে পারে না। এটা দেখে মেনোলিনের বাবা ওকে নিয়ে চলে যায়। মেনোলিন কিন্তু বুড়োকে ছেড়ে যেতে চায় না।মেনোলিনের বাবা তাকে অন্য জেলের কাছে মাছ শিখতে দিয়ে যায়। ছোট ছেলেটার মন পড়ে থাকে বুড়োর কাছে। বুড়ো জেলে একা হয়ে যাওয়ার পরও মাছ ধরার চেষ্টা করা ছাড়েনা। এমন করে চুরাশি দিন হয়ে যায় নিজের ইচ্ছাশক্তির জোরে। প্রতিদিনই মাছ ধরতে যায় কিন্তু কোনো মাছই পায় না।
এদিকে ছোট ছেলেটি সান্তিয়াগো কে অনেক পছন্দ করতো।মেনোলিন সান্তিয়াগোর কাছে ফিরতে চাইলেও সান্তিয়াগো তাকে আর সঙ্গী করতে চায় না। কিন্তু মেনোলুন প্রায়ই বুড়োকে খাবার ধিয়ে সাহায্য করতো।মাছ ধরতে শক্তির প্রয়োজন তাই অভুক্ত বুড়ো মেনোলিন এর দেয়া খাবার খেতো। একদিন সান্তিয়াগো মাছ ধরার জন্য মহাসমুদ্রে চলে যায়। মেনোলিন যেতে চাইলেও তাকে নেয়না। যাওয়ার সময় ছেলেটির দেওয়া মাছ ধরার জিনিসপত্র নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সে একটা বিশাল বড় মার্লিন মাছ ধরে। 
 বিপত্তি ঘটে মহাসমুদ্রে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে ফেলে বুড়ো। মাছটি নিয়ে আর ফিরতে পারে না সে।হাঙরের দল অর্ধেক মাছ খেয়ে ফেলে । তারপরও মাছের বাকি অংশটুকু নিয়ে কোনোমতে কূলের দিকে ফিরে আসতে থাকে সে। কিন্তু শেষে আরেকটা হাঙর সম্পূর্ণ মাছটাই খেয়ে ফেলে, সান্তিয়াগোর কাছে রয়ে যায় শুধু মাছটির কংকাল।
কূলে ফিরে এসে ভাঙ্গা মন নিয়ে অবসন্ন শরীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে সান্তিয়াগো। মেনোলিন তাকে অনেক খুঁজেছে। তার নিজের বিশ্রামের জায়গায় যেতে যেতে অন্তত পাঁচ বার বুড়োকে জিড়িয়ে নিতে হলো।বুড়োর এমন অবস্থা দেখে বাচ্চাটি আরও ঘারড়ে গেলো।পরেরদিন সকালবেলা সবাই কূলে এসে মাছের কংকাল দেখতে পায় । মাছটি প্রায় ১৮ ফুট লম্বা ছিলো।বুড়ো সান্তিয়াগোর অসুস্থ শরীর,তারপরও একটানা হাড়ভাংগা খাটুনি খেটে মাছটি ধরেছিল সে। কূলে না নিয়ে আসতে পারায়,মন ভেঙে গেছে তার।এসব ভেবে মেনোলিনেরও খুব কষ্ট হচ্ছিলো। সে কাঁদছিলো আর সান্তিয়াগোর সেবা করছিল।সান্তিয়াগোরও সমুদ্রে থাকা অবস্থায় ভেবেছে,তার সাথে যদি ছেলেটা থাকতো,কত ভালো হতো! মেনোলিনের সাথে কেমন একটা গভীর সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায় বুড়ো সান্তিয়াগোর। মেনোলিনও সিদ্ধান্ত নেয়, বুড়ো সান্তিয়াগোর সাথেই কাজ করবে।
গল্পের শিক্ষনীয় দিকঃ
👉প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার প্রথম শর্ত হলো মনোবল অটুট রাখতে হবে সবসময়।
👉ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে কখনোই হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
👉আত্মবিশ্বাসী হওয়া অনেক জরুরী।জীবনে ব্যর্থতা থাকবেই,কিন্তু তাই বলে হতাশ হয়ে ভেঙে যাওয়া যাবে না।
Razib Ahmed স্যার বলেন কোন কাজ নিঁখুত হওয়ার চাইতে শেষ করাটা জরুরী। তাই আমি ঠিক করেছি দেরূ হলেও আগে ৫০ টা কিশোর ক্লাসিকের রিভিউ শেষ করে তারপর আবার ১০ মিনিট রাইটিং পোস্ট লেখা শুরু করবো।

তিনি বলেছেন,” কিন্তু মানুষ পরাজয়ের জন্য তৈরি হয় না,”একজন মানুষ ধ্বংস হতে পারে তবে পরাজিত হতে পারে না”।

“দ্য ওল্ড ম্যান অ্্যান্ড দ্যা সী ” আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ১৯৫১ সালের একটি খ্যাতিমান উপন্যাস।
যা উৎসর্গ করা হয়েছে সকল স্বপ্নবাজ মানুষকে।আপনি যদি নিজেকে এক জন স্বপ্ন বলে ভেবে থাকেন বইটি আপনাকেও উৎসর্গ করা হয়েছে।
বইটি আমাদের একজন বৃদ্ধ জেলে সান্টিয়াগো,একটি ছোট ছেলে ও সুন্দর এবং সাহসী মাছের গল্প বলে।
বৃদ্ধ জেলে সান্টিয়াগো যখন যুবক ছিলেন তিনি একজন সাহসী এবং দক্ষ জেলে ছিলেন।তিনি অনেক বড় বড় মাছ শিকার করেছেন।তার যৌবন ছিলো রোমাঞ্চকর। 
একটি মানুষ চির তরুণ থাকতে পারে না।তাকে বাদ্ধকে উপনিত হতে হয়।সান্টিয়াগো যখন বৃদ্ধ চোখ দুটো ছাড়া তার সব কিছুই ছিল জরাজীর্ণ। তার চোখ আর সমুদ্রের রঙ ছিলো এক রকম,আর সে চোখ ছিলো উৎফুল্ল আর অপরাজিত।
বৃদ্ধ সান্টিয়াগোর নিত্ত সঙ্গি ছিলো ছোট ছেলে মনোলিন।বৃদ্ধের কাছে সে মাছ ধরা শিখতো।
এক সময় দেয়ালে তার স্ত্রীর একটা রঙ করা ফোটোও ছিল কিন্তু ওটা দেখলে তার নিঃসঙ্গতাবোধ আরো বেড়ে যেত,তাই সে ওটা নামিয়ে কোণায় দিকের তাকে তার পরিষ্কার সার্টের নিচে রেখে দিয়েছে।
আজ ৮৪ দিন হয়ে গেছে বৃদ্ধ কোনো মাছ পায়নি।তাকে এখন স্থানীয় লোকেরা “সালাও” হিসাবে অভিহিত করেছে,যার অর্থ হল যে তিনি সবচেয়ে খারাপ ভাবে অভিশপ্ত। 
কিন্তু আশার ব্যাপার হচ্ছে লোকটি ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞবন্ধ এবং সাহসী। তিনি ৮৫ দিনের, দিন একই ভাবে সমুদ্রের দিকে যাত্রা শুরু করেন এবং উপসাগরীয় স্টিমের বাইরে চলে যান।
সেখানে শ্রীঘ্রই বৃদ্ধ সামনাসামনি হোন বিশাল এক মার্লিন মাছের সাথে। এখান থেকেই বৃদ্ধে এবং মার্লিন মাছ উভয়ের সাহসী ও দৃঢ় প্রত্যয়ী রুপ ফুটেওঠে।
“দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি” বইটির যে বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে সেটি হচ্ছে,এক জন মানুষের জীবনের যত প্রতিকূলতা থাক না কেনো তার নিঃসঙ্গতাবোধ,দুর্বল শরীর,আশেপাশে মানুষের তুচ্ছতাচ্ছিল্য সব কিছুর উর্ধ্বে তার নিজের বিশ্বাস,দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া নিজের স্বপ্ন এবং নিজের অর্জনের ক্ষতা সম্পর্কে।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?