Title | দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার |
Author | অসীম হিমেল |
Publisher | শব্দশৈলী |
Quality | হার্ডকভার with short pdf |
ISBN | 9789849574354 |
Edition | 1st published 2022 |
Number of Pages | 192 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
![]() |
Cover Image : Durbine Backbencher |
দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার, ৯০ দশকের কাজিনদের আড্ডায়,, কিংবা বন্ধু মহলের বিকাল গুলো মেতে উঠতো যে গান গুলোই,, ব্যাকব্যঞ্চার, জ্যাক,আইয়ুব বাচ্চু,,আর্ক,,হাসান,মাইলস,,এলবি,জেমস,ফিলিংস,,এর মত বড় বড় গায়ক ও ব্যান্ডের গান গুলো যে সোনালি বিকেল ও সোনালি যুগের সৃষ্টি করেছিলো সেই সময়কার এক প্রজন্মের গল্প নিয়েই “দূরবীনে ব্যাকব্যঞ্চার,,
নবীন বরণ কিংবা বিদাই অনুষ্ঠানের মঞ্চ মাতানো সেই গান,, কলেজ আর ভার্সিটির ক্যাম্পাসে ভেসে আসা বন্ধুদের সেই সুর.. হ্যাঁ.. এই মিউজিক নিয়েই দূরবীনে ব্যাকব্যঞ্চার.. এক নতুন সৃষ্টি,, অসীম হিমেল এর মিউজিক্যাল উপন্যাস “দূরবীনে ব্যাকব্যঞ্চার ”
🍁নাম- নাম শুনেই মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে এটা কি সেই মিউজিক ব্যান্ড ব্যাকব্যঞ্চার এর কোন গল্প..?? বইটির নাম যতটা না আকর্ষনীয় বইটি পড়ার পর তার চেয়ে বেশি তৃপ্ত হবে পাঠক… বুঝতে পারবে নামের যথার্থতা,,
🍁প্রচ্ছদ- বইটির নাম, কাহিনী সংক্ষেপ, চরিত্র, প্রেক্ষাপট, সব কিছুই যেন ফুটে উঠেছে বইটির প্রচ্ছদে,, কনসার্ট কাপানো এক শিল্পি কে ঘিরেই প্রচ্ছদ যা বইটার শেষ টার যথার্থতা ফুটিয়ে তোলে.. সব মিলিয়ে বইটার প্রচ্ছদ যেন এর চেয়ে ভালো কিছু হতেই পারতোনা..
🍁চরিত্র বিশ্লেষন- বইটির কেন্দ্রীয় চরিত্র শুভ্র কে নিয়ে.. এছাড়াও উপন্যাসের বড় একটা অংশ জুড়ে ছিলো রাশেদ,কমল,সুইটি,মালিহা,হ্যারি,মালিহার বাবা.. বইটিতে আমার প্রিয় চরিত্র শুভ্র, যার মাঝে আমি কখনো দেখেছি খুব প্রাণবন্ত একটা মানুষ,কখনো দেখছি খুব জ্ঞানী একটা বন্ধু,কখনো দেখছি দুঃখে ভেসে যাওয়া হতাশ এক তরুন,,কখনো দেখছি দাপটের সাথে চলা সাহসী কে,, কখনো দেখেছি বিশ্বাসী দুটো চোখ,কখনো দেখছি দায়িত্বশীল কাঁধ,আবার কখনো দেখেছি সাহায্যে বাড়ানো হাত..
এছাড়াও রাশেদ আমার অন্যতম ভালো লাগার চরিত্র,,যার মাঝে বন্ধুত্বের ভালোবাসা টা খুজে পেয়েছি.. এবং খুব অল্প সময়ের জন্য থাকা মিঠু ভাইয়ের চরিত্রটাও আমায় খুব বিমোহিত করেছে,,
🍁পারম্ভিকা – পৃথিবী প্রতি নিয়তই হেরে যাওয়ার গল্প বুনছে,, মানুষ হেরে গিয়েও মাথা তুলে দাড়াচ্ছে.. আর অনেক অপ্রাপ্তির মাঝেও বেঁচে থাকে দিব্বি.. কিন্তু কতটা আরামদায়ক সেই বেঁচে থাকা..???
🍁কাহিনী সংক্ষেপ- গল্প টা শুরু শুভ্র,,রাশেদ,,আর কমল কে নিয়ে.. তিন বন্ধু যারা এডমিশন টেস্টে কোথাও চান্স না পেয়ে বন্ধুদের থেকে এক বছর পিছিয়ে পড়ে.. আর তাদের নতুন সংগ্রামের মধ্যেই শুরু হয় গল্প টি.. পিছিয়ে পড়েও নতুন ভাবে শুরু করে বিজয়ী হওয়ার গল্প,, আর এই সংগ্রামের একটি বছরের কাটানো মূহুর্ত গুলোর গল্প,যে গল্পে মিশে ছিলো যৌবন এর প্রথম প্রেম,,বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কাটানো মুহূর্ত,, জন্মভূমির পাশে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের গল্প,, প্রতিটি আড্ডায় মাতানো জ্যাক,আইয়ুব বাচ্চুর গানের গল্প,,যে গল্পে ছিলো এক বছর পিছিয়ে পড়ার লুকোচুরি খেলা,, একটি গানের তাল,ল, সুরের মতই তাদের বহমান জীবনের সাথে মিশে যাওয়া মিউজিকের গল্প,,তারা কি তিন জন দ্বিতীয় বার সফল হয়েছেছিলো..? নাকি হাড়িয়ে গেছে সময়ের শ্রোতে,মিশে গেছে ব্যর্থদের দলে…??? প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানতে অবশ্যই পড়তে হবে বইটি
জীবনে কাটানো সুন্দর মূহুর্ত গুলোর মধ্যে সেরা অনুভুতি নিয়ে কাটানো সময় টা,, বন্ধুত্ব, প্রথম প্রেম, প্রেমে ব্যর্থতায় কত টা ইফেক্ট পড়তে পারে সেই সব ফুটে উঠেছে খুব সুন্দর ভাবে,, একই সাথে বাংলা ব্যান্ডের সাথে যেভাবে শুভ্রের জীবনকে মিলিয়েছে তাতে লেখক সার্থক.. কিন্তু এই গল্প টা শুধু একটা সময়ের না,, এই গল্প টা ১৬ বছর আগের ও বর্তমান নিয়ে.. কি হয়েছিলো ১৬ বছর আগে? এত বছরে সবার জীবনে কতটা পরিবর্তন আসে?? আর শুভ্রর জীবন কেন এলোমেলো হয়ে গেলো..? কোথাই ছিলো শুভ্র ১৬ বছর পর্যন্ত আর সে কি ১৬ বছর পরে আবার ফিরে পেয়েছিলো তার আগের জীবন টা,, তার বন্ধুত্ব??
কেমন হয় বর্তমান টা? ১৬ বছর পিছিয়ে পড়া শুভ্রের জীবন??
প্রথম প্রেমের পর শুভ্রর জীবনে কি আর কোন প্রেম আসেনি..?
যে শুভ্রের বেড়ে উঠা ও উঠতি বয়সের অনেক টা জুড়েই ছিলো ব্যান্ড মিউজিক ও ব্যাকব্যঞ্চার সে ব্যাকব্যঞ্চার কে নিয়ে দেখা স্বপ্ন কি শেষমেশ পূরণ হয়…??
জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে বইটি..
🍁ব্যাক্তিগত মতামত- বইটি হাতে নিয়েই অন্যরকম এক অনুভূতি হচ্ছিলো আমার,পড়া শুরু করেই এক অন্যরকম মায়া-য় পড়ে যাই,,গল্পের প্রথম অংশে যে কেউ নিজেকে খুজে পাবে.. এই বইটায় আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে বন্ধুত্ব টা,, আর বাংলাদেশের প্রকৃতি নিয়ে যে অপরূপ ব্যাখ্যা আছে তা যে কোন পাঠকের মন ছুয়ে যাবে.. নিজের দেশের সৌন্দর্য যেন পুরোটাই ছিলো বইটার মধ্যে.. বইটি পড়ার সময় আমি একবার-ও ১৬ বছর আগ ও বর্তমান কে গুলিয়ে ফেলিনি.. দুইটা সময়-ই খুব নিখুঁত ভাবে উপস্থাপন করেছেন লেখক,, এছাড়াও চরিত্র গুলো-ও খুব সুন্দর ভাবে চলেছিলো.. কোথাও মনে হয়নি খাপছাড়া
বইটি ছিলো ভালো লাগার চরম পর্যায়ে..
তবে কয়েকটা জিনিশ ছিলো একটু বিরক্তিকর যেমন বার বার নামের ব্যাবহার টা, একটা শব্দের অধিক ব্যবহার টা যেমন একটা জায়গায় ছিলো – “শুভ্র সুযোগ সবসময় আসেনা, আর সময় ও একরকম থাকবেনা, আর আমেরিকা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করবা। আর ওখান থেকেই পোস্টগ্র্যাজুশন শেষ করবা, আর আমেরিকার লাইফ তো জানোই,আর বুয়েটের প্রফেসর তোমাকে স্কলারশিপ ম্যানেজ করে দিচ্ছে এর চেয়ে বড় পাওয়া কি আছে..? “”
এই অংশ টায় “আর” শব্দ টার ব্যবহার প্রতিটা লাইনে হয়েছে যা একজন পাঠক-কে একটু বিরক্ত করবে..এছাড়াও বার বার নাম উচ্চারণ না করে সে,তার,তারা” এই শব্দ গুলোর ব্যবহার পাঠকের জন্য একটু সহজ..
বইটিতে লেখক প্রজন্মের পার্থক্য টা তুলে ধরেছেন খুব সাবলীল ভাবে এছড়াও লেখার মান,বাইন্ডিং,, ছাপা সব ছিলো খুব-ই ভালো
সবশেষ বলতে চাই যে লেখক তার সর্বোচ্চটা দিয়েছে বইটিতে, যা প্রতিটা পাঠকের মধ্যে দারুন এক এডভেঞ্চার সৃষ্টি করবে..
🍁খুব প্রিয় একটি লাইন-
দূরবীনের একদিক দিয়ে দেখলে যেমন খুব কাছের দেখা যায়,, আবার আরেক দিক দিয়ে দেখলে খুব দূরে দেখা যায়”
ব্যাক্তিগত র্যাটিং-১০/১০
Review Credit 💕 Fatima Noor
দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার কাহিনী সংক্ষেপ:
এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ জন্মায়, যারা সমস্ত হৃদয় জুড়ে ভালোবাসা বয়ে বেড়ায় সকলের জন্য। অথচ তাদের জীবন কাটে ভালোবাসাহীন অপূর্নতায়।
বুদ্ধি, ট্যালেন্ট, হৃদয় থাকার পরেও কিছু মানুষ হেরে যায় জীবনের খেলায়। সেরকম একজন মানুষ শুভ্র। যার মধ্যে ছিলো একজন ভালোমানুষের সমস্ত গুন। ছিলো একজন ভালো ছাত্র, তাও ভর্তিযুদ্ধে সে একবছর পিছিয়ে যায়। এই একবছরই কেড়ে নেয় তার ভালোবাসার মানুষ সুইটিকে।
শুভ্রের প্রানপ্রিয় বন্ধু কমল, রাশেদ। যারা একসাথে কাটিয়েছে সুখ দুঃখের সময়গুলো। ঘুরে বেড়িয়েছি গ্রামের পথে নদীর ঘাটে। গেয়েছে গলা ছেড়ে গান। সুখ দুঃখে একসাথে হেসেছে কেঁদেছে, বৃষ্টিতে ভিজেছে। তিন বন্ধুর গল্প। যারা এক বছর পরে আবারও ট্র্যাকে ফিরে আসে।
শুভ্র ভর্তি হয় বুয়েটে। হয়ে উঠে বুয়েট ক্যাম্পাসের সবার প্রিয়মুখ , বন্ধ হয় নবীনদের নিয়ে সিনিয়রদের Ragging খেলা।
সেই শুভ্র জড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের নোংরা খেলায়। রাজনীতির পাওয়ার, ভালো ছাত্রের তকমা থাকা সত্ত্বেও কেন শুভ্র রাতের নিস্তব্দতায় গলা ছেড়ে গান গেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে?
কেন সে দেশ ছেড়ে পাড়ি জমায় আমেরিকার পথে?
স্বপ্নের দেশ আমেরিকা কেন কেড়ে নেয় শুভ্রর জীবনের সোনালী ষোলটি বছর! কেন সে আটকা পড়ে কুখ্যাত গুয়ান্তনামো বে নামক জেলখানায়?
ষোল বছর পর দেশে ফিরে আসে শুভ্র। প্লেনে পরিচয় হয় মালিহা নামের একজন আমেরিকান মেয়ের সাথে। যে বাংলাদেশে এসেছে তার বাবার খোঁজে। ক্রমান্বয়ে জড়িয়ে পড়ে শুভ্রর সাথে। এ মালিহাকে নিয়ে গল্পের শেষে রয়েছে বিশাল টুইস্ট।
এত বছর পর দেশে ফিরে শুভ্র কি ফিরে পাবে তার পরিবার, প্রানপ্রিয় বন্ধুদের? ফিরে পাবে কি তার একসময়ের প্রিয় শহর প্রিয় স্মৃতি, প্রিয় শিল্পীর প্রিয় গানগুলো ? কেন সে কিডন্যাপ করে বসে তার একসময়ের প্রিয় শিল্পী জ্যাক কে?
সবগুলো কেন র জবাব জানতে হলে অবশ্যই অবশ্যই পড়তে হবে দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার।
আমরা যারা নব্বই দশকের সকল সুখময় স্মৃতিগুলো হৃদয়ে ধারন করে চলছি। তাদের আবারও ফিরিয়ে নিয়ে যাবে অতীতের সোনালী দিন গুলোতে।
বইয়ের প্রিয় কিছু লাইন:
*একটা জীবনের ভালো ভাবে বেঁচে থেকে সজীব নিঃশ্বাস নেয়ার প্রবণতা সেই প্রাচীন কাল থেকেই |
আত্মা শুকিয়ে মরে যাওয়ার থেকে আলাদা হয়ে বেঁচে থাকা শ্রেয় সেটা পালিয়ে হোক বা নতুন করে হোক |
*মানুষের শুরুর সৃষ্টিগুলো হয় কষ্টের বিনিময়ে। জীবনের ত্যাগের বিনিময়ে। একেকটা গানের সঙ্গে মিশে আছে একেকটা স্বপ্ন গড়া বা ভাঙার গল্প। আসলে দুঃখ থেকেই তৈরি হয় অমর সৃষ্টি।
*কারো কারো জীবন এই নদীর মতো। মাঝপথে এসে দুভাগ হয়ে যায়। সে সময় সেটার হয়তো প্রয়োজন ছিলো। এই যে, এই নদী দুভাগ হয়েছে, এটা আস্তে আস্তে অনেক দূরে গিয়ে নতুন নাম নিয়ে বয়ে চলবে। ওখানকার নদীর পাড়ের মানুষ কখনোই জানবে না কোন এক জায়গায় এই নদী ভাগ হয়েছে।
শুভ কামনা রইলো লেখকের জন্য।
এক নজরে বই পরিচিতি –
বই- দূরবীনে ব্যাকব্যঞ্চার
লেখক-অসীম হিমেল
ধরণ – উপন্যাস
প্রকাশনী- শব্দশৈলী
পৃষ্ঠা- ১১৭
মলাট মূল্য- ৩০০
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?