তোমার দেওয়া আমার কোনো নাম ছিলনা : লেখক আমিনুল ইসলাম | Tomar DEWA Amar Kono Naam Chilona

≣∣ স্পয়লার – বিহীন রিভিউ ∣≣

 𝓙𝓾𝓼𝓽  𝓫𝓮𝓪𝓬𝓪𝓾𝓼𝓮  𝓸𝓷𝓮  𝓹𝓮𝓻𝓼𝓸𝓷  𝓬𝓸𝓶𝓶𝓲𝓽𝓼  𝓪  𝓬𝓻𝓲𝓶𝓮  𝓭𝓸𝓮𝓼𝓷’𝓽  𝓶𝓮𝓪𝓷  𝔂𝓸𝓾  𝓼𝓱𝓸𝓾𝓵𝓭  𝓽𝓱𝓻𝓸𝔀  𝓽𝓱𝓮  𝔀𝓱𝓸𝓵𝓮  𝓽𝓸𝔀𝓷  𝓲𝓷  𝓳𝓪𝓲𝓵 .
                    ~ 𝓕𝓻𝓪𝓷𝓴  𝓢𝓸𝓷𝓷𝓮𝓻𝓫𝓮𝓻𝓰 .
কিছু কিছু বই আছে যা শেষ করার পর মনের ভিতর অনুভূত হয় ; ওহ্ মাই গড!  কী পড়লাম এটা! আরো কেন বড় হলো না গল্পটা।এমন টাইপের একটি বই হচ্ছে “ তোমার দেওয়া আমার কোনো নাম ছিল না”। বইটা পড়ার পর আমার হৃদয়ে দাগ কেটে যায় ; অদ্ভুত এক প্রশান্তি হানা দিতে শুরু করে আমার চোখে মুখে। 

At A Glance | বই পরিচিতি

  • বইয়ের নামঃ তোমার দেওয়া আমার কোনো নাম ছিলনা ( এক মলাটে দুই বই) 
  • লেখকঃ আমিনুল ইসলাম
  • জনরাঃ সিরিয়াল কিলার, ক্রাইম থ্রিলার
  • প্রকাশনীঃ সতীর্থ প্রকাশনা
  • প্রথম প্রকাশঃ অক্টোবর, ২০২১
  • প্রচ্ছদঃ আদনান আহমেদ রিজন 
  • সম্পাদকঃ তাহমিদ রহমান
  • পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৫২
  • নির্ধারিত মূল্যঃ ২৮০৳
  • লেখাঃ Tazmilur Rahman
আখ্যানঃ দেশ জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এক সিরিয়াল কিলার। খুন হচ্ছে প্রতি ছয় মাস পর পর; ভিক্টিম শুধুমাত্র নারী। মিডিয়া তোলপার করা এই খুনি নামকরণ হয়েছে সিক্স মান্থ কিলার নামে। 
এমন সময় ছোট্ট এক মফস্বল শহরে একের পর এক নারীর লাশ পাওয়া যেতে শুরু করল। তদন্ত কর্মকর্তা আজমল হোসেন পড়ে গেলেন মহা বিপদে। তবে কী সিক্স মান্থ কিলার তার শহরে পা রাখল?
ফিরে এলেন দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকা ইরফান খন্দকার। শহরের হতাশাগ্রস্ত ছেলে-মেয়েদের একজন রহস্যময় লোকের কাছে যেতে দেখা যাচ্ছে। 
যে নিজেকে দূত বলে দাবি করে। এদিকে প্রদীপ খোঁজ পায় কয়েক হাজার বছর আগের এক মিথের। হারিয়ে যাওয়া এক দেবতার গল্প,এক কলমের গল্প; যে কলমটা জীবন্ত হওয়ার অপেক্ষা করছে। এতসব রহস্যের মোড়া উপন্যাসিকার শেষে কে যেন বলে উঠল, তোমার দেওয়া আমার কোনো নাম ছিল না।
পাঠ–প্রতিক্রিয়াঃ বইটির প্রতিক্রিয়া শুরু করব নামলিপির মাধ্যমে। এর কারণ এই বইয়ের নামলিপিটা আমার মন কেড়ে নিতে পেরেছে।  অনেক পাঠক আছেন যারা কিনা এই বইয়ের নাম দেখেই বলে দিবে বইটির জনরা রোমান্টিক। এই ধারণাটা আমি একদম ভুল বলব না কারণ বইটিতে সিরিয়াল কিলিং,ক্রাইম থ্রিল বাদেও রয়েছে সামান্য প্রেম – বিরহের কাহিনীও। তবে এককথায় বইয়ের প্রধান জনরা থ্রিলার। 
বইটার নামলিপি নিয়ে আমি নিজেও প্রথমে কনফিউজড ছিলাম। এরপর যখন বইটা সম্পূর্ণ পড়ে শেষ করে ফেলি তখনই বুঝতে পারলাম বইয়ের এমন সুন্দর একটি নামকরণের কারণ সম্পর্কে। 
নামলিপির রহস্যের সাথে নামলিপির প্যাটার্নটাও ছিল মন ভালো করে দেয়ার মতো। সম্পূর্ণ প্রচ্ছদ জুড়ে অধিকাংশ জায়গাই দখল করে রেখেছে নামলিপিটা। বইয়ের প্রচ্ছদে একটি ডায়েরি ও একটি কলমের আকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। প্রচ্ছদের ডায়েরি এবং কলমের রহস্যটা হয়ত পাঠক বইটা পড়লেই অনুধাবন করতে পারবে। বইয়ের প্লট এর সাথে প্রচ্ছদের সম্পূর্ণ মিল পাওয়া না গেলেও, এখানে সামান্য মিল লক্ষনীয়। 
সিরিয়াল কিলিং নিয়ে জানার আগ্রহ আমার ছোট বেলা থেকেই। সেই আগ্রহ থেকেই বইটা পড়া হলো আমার। প্রতিটা সিরিয়াল কিলারই খুন করার সময় একটা প্যাটার্ন অনুসরণ করে থাকে। তেমনি এই বইটিতেও খুনি তার খুনগুলো করে যায় ছয় মাস পর পর। এ কারণে খুনির নাম দেয়া হয় ছিক্স মান্থ কিলার। সম্পূর্ণ বই জুড়ে এই সিক্স মান্থ কিলারের রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে বইটিতে এক উত্তেজনাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। এর জন্য অবশ্যই লেখক তার প্রশংসার দাবি রাখে। 
এছাড়াও বইটিতে রয়েছে একটি মিথ। যা বইটা পড়ার সময় আকর্ষন আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। মিথটা লেখক খুব সুন্দর ভাবে বইয়ে তুলে ধরতে পেরেছেন, যা বেশ ভালোই উপভোগ করতে পেরেছি। 
মিথটায় বলা ছিল যদি একটা কলম দিয়ে পাঁচজন বিশ্বাসঘাতকের নাম লিখে তাদের খুন করতে পারে তবে কলমটা জীবন্ত হয়ে উঠবে। কলমটা পন্ঞ্চদেবতা নামক এক প্রাচীন দেবতার উপহার।যেটা জেগে উঠার প্রহর গুনছে এখনও।  
সিরিয়াল কিলিং এবং মিথটা বাদেও বইটিতে রোমান্টিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন লেখন। যা বইটি জুড়ে ভালোই উপভোগ্য ছিল। 
লেখকের প্লট নির্বাচন,গল্প লেখনী, বর্ণনাভঙ্গি বরাবরের মতোই সাবলীল ও সুন্দর। পুরো বইয়ে এসবের কোনো কমতি লক্ষ করা যায়নি । 
বইটির সম্পাদনার মান মোটামুটি ভালোই। সম্পাদনায় তেমন কোনো ঝামেলা আমার চোখে ধরা পরেনি। তবে বানানে কিছু যায়গায় ভুল চোখ এড়িয়ে যেতে পারেনি। যা বইটি পড়ার সময় পড়ার গতিকে একটু হোঁচট খাইয়ে দিয়েছিল। এসবে লেখকের কোনো দোষ নেই। সাধারণত এগুলো টাইপিং মিস্টেক এরই ফল। আশা করছি পরবর্তীতে ভূলগুলো সুধরে নেয়া হবে। 
চরিত্র গঠনে লেখকের পড়া বাকী বইগুলোর চেয়ে এই বইটিকে এগিয়ে রাখব। ক্রাউন বা পকেট সাইজের বই হওয়ার পরেও তার চরিত্র সাজানোর ভঙ্গিমা আমার মন জুড়িয়ে দিয়েছে। এই বইয়ের সব চরিত্রকেই অসাধারণ ভঙ্গিমায় খুবই পারফেক্ট ভাবে উপস্থাপন করেতে পেরেছেন লেখক।
ওয়ার্নিংঃ বাটারফ্লাই ইফেক্ট বইয়ের অন্যতম প্রধান চরিত্র অর্ক এই বইয়ে থাকলেও এই বইটি পড়ার জন্য বাটারফ্লাই ইফেক্ট পড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। 
বইটির প্রোডাকশনের ব্যাপারে মলাটের অপর বই দেজা ভ্যুতে বলেছিলাম,এখনও বলছি। বইয়ের প্রোডাকশন বরাবরের মতই দূর্দান্ত। এ দিক থেকে কোনো কমতি রাখতে দেয়নি তা বইটি হাতে নিলেই বোঝা যায়। তবে বইয়ে একটা ফিতার ব্যাবস্থা থাকলে পাঠকদের পড়তে আরো সাচ্ছন্দ্যবোধ হতো বলে মনে করি। দাবি রাখি প্রকাশনী বিষয়টি দেখবে। 
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?