তিতুনি এবং তিতুনি (পিডিএফ)
Title | তিতুনি এবং তিতুনি |
Author | মুহম্মদ জাফর ইকবাল |
Publisher | কাকলী প্রকাশনী |
ISBN | 9789849184416 |
Edition | 1st Published, 2016 |
Number of Pages | 167 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
বইটি আমার শাখার শিশু কর্ণারের। বইটি দেখে নিজে পড়ার ইচ্ছা হলো। কারণ, নিজে বইটির ব্যাপারে না জানলে শিশুদেরকে সাজেস্ট করতে পারবো না।
তিতুনি এবং তিতুনি পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ১
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর এ বইটি পড়ার সময় আমার নিজেকেই তিতুনির বয়সী মনে হচ্ছিল। সে জায়গা থেকেই বইটা পড়েছি বলে বেশ দারুণ লেগেছে আমার।
তিতুনি এবং তিতুনি কাহিনি সংক্ষেপঃ ১
তিতুনির বয়স ১২ বছর। সে, তার বড় ভাই টোটন এবং মা-বাবা নিয়েই তার পরিবার।
একদিন তাদের বাসাসহ আশেপাশে এমন বিকট শব্দ হলো ও কেঁপে উঠলো যে সবার মনে হলো, এটা ভূমিকম্প। কেবল তিতুনির মনে হলো তার বাসার পেছনের জঙ্গলে কিছু একটা ল্যান্ড করলো। তাই তিতুনি বিকেলে চুপি চুপি সেখানে গিয়ে খুঁজলো এবং একটা গর্ত দেখতে পেয়ে ভেতরে তাকালো। একটু পরেই দেখলো সেখান থেকে তার মতো চেহারার একজন বের হয়ে এলো। সে মূলত দূর গ্যালাক্সী থেকে আসা একটি এলিয়েন। সে পৃথিবীতে ঘুরতে এসেছে। এসে যেহেতু প্রথমে তিতুনিকেই প্রথম দেখেছে তাই তিতুনির চেহারাসহ মস্তিষ্কটাকেও কপি করে নিয়েছে।
সে মানুষের মস্তিষ্কের ভেতর ঢুকে নিউরন সিনাক্স কানেশন ওলট-পালট করে দিতে পারে। মানুষের স্মৃতি মুছে দিতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কে ঢুকে মানুষের চিন্তা-ভাবনা দেখে নিতে পারে নিমিষেই।
সে যেহেতু তিতুনিকে কপি করে আরেক তিতুনি হয়ে যায় তাই সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে তিতুনির বাসায়। থাকে তিতুনির সাথেই। কিন্তু কেউই এই দুই তিতুনিকে এক সাথে দেখতে পারে না। আবার দেখে ফেললেও তার স্মৃতি থেকে তা মুছে দেয়।
এ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছু অন্যায়কারী মানুষকে সে শাস্তি দেয়। যা মানুষের ভাবনায় অনেকটা ম্যাজিকের মতো।
এক সময় মহাকাশ গবেষকরা খবর পেয়ে যায় যে, এ বাসায় এলিয়েন আছে। তারা ঘেরাও করে ফেলে বাসাটা এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সেট করে রাখে। সেখানে ধরাও পরে যায় এলিয়েন। কিন্তু সে কি শেষ পর্যন্ত মানুষের হাত থেকে বেঁচে তার নিজের গ্যালাক্সিতে ফিরতে পারবে? নাকি তাকে কাটাকুটি করে গবেষণা করে পৃথিবী ধ্বংসকারী এই মানুষ নামধারী প্রাণীরা???
জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে এ বইটি।
তিতুনি এবং তিতুনি কাহিনী সংক্ষেপ ২
বারো বছর বয়সের ছোট এক মেয়ে তিতুনি। তার ভাই টোটন, বয়স চৌদ্দ। এই বয়সের বাচ্চারা যেমন হয়ে থাকে তারাও তেমন। সারাদিন দুই ভাইবোন মিলে এটা সেটা নিয়ে লেগেই থাকে। আর আমাদের চিরায়ত বাংলার নিয়ম অনুযায়ী, মা-বাবারা ছেলের পক্ষ নিয়ে মেয়েটাকে বকে দেয়। তিতুনিও তেমন এক মেয়ে, যে কিনা সামান্য একটা গ্লাস ভাঙ্গবার অপরাধে মার বকুনি খেয়ে, মন খারাপ করে বাসার ছাদে গিয়ে দাঁড়ায়। তিতুন গভীর দুঃখ নিয়ে উদাস মনে দূরে কোথায় তাকিয়ে যখন হারিয়েছে অজানায়। ঠিক তখনই প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে নড়ে উঠে পুরো বাড়ি। আর ঝট করে পাশ ফিরে তিতুনি দেখতে পায় আকাশ থেকে তীব্রবেগে কিছু একটা বাড়ির পাশে বনের মধ্যে এসে পড়ল। আর বাড়ির সবাই ভূমিকম্প ভেবে ঘর ছেড়ে বাইরে এসে তিতুনির নাম ধরে চিৎকার করে ডাকতে লাগলো। তিতুনি নিচে নেমে যায়নি বলে ভাই টোটন তারে আরও দু’চার কথা শোনাতে ছাড়ল না। আগে হলে আসল ঘটনাটা কি তিতুনি সকলে বলে দিত। এবং সাবাইকে সাথে নিয়ে জঙ্গলটাতে কি পড়েছে সেটা খুঁজতে বেরোতে। কিন্তু এখন! সেটার প্রশ্নই আসে না। যারা তিতুনির সামান্যা গ্লাস ভাঙার অপরাধটা ক্ষমা করতে পারে না, তাদেরকে এতকিছু বুঝাতে যাওয়ার কোনো দরকার নেই।
তিতুনি তাই কাউকে কিছু বললো না। সবাই যখন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল, তিতুনি আস্তে করে বেরিয়ে পড়ে ঘর থেকে। ধীর পায়ে চলে আসে বাড়ির পেছনে।
জায়গাটা আহামরি কিছু নয়। তিতুনির বেশ পরিচিত। সে প্রায় এসে এখানে ঘুরে বেড়ায়, পাখি প্রজাপতি দেখে। কিন্তু বর্ষাতে জোক বিচ্ছু থাকে, তাই তখন সে এ মুখো হয়না। ধীরেধীরে তিতুনি এগিয়ে যেতে থাকে সে জায়গা লক্ষ রেখে, যেখানে আকাশ থেকে উল্কাটুল্কা টাইপের কিছু একটা পড়েছে। যেভাবে পুরো এলাকা কেঁপে উঠেছিল, তাতে মনে হয় না তিতুনির জায়গাটা খুঁজে বের করতে কোনো সমস্যা হবে!
সত্যি সত্যি তিতুনি জায়গাটা পেয়ে গেল। মাটিতে একটা গর্ত, সেই গর্তের চারপাশে ফাটল। পুরো মাটিটা একেবারে ঝলসে গেছে। গাছ-গাছালি, লতাপাতা পুড়ে গেছে কিন্তু আগুন ধরেনি। বড়ই আশ্চর্য! এখন তিতুনির ভয় ভয় লাগছে। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই সে তা জনে। সে নিবিষ্ট মনে গর্তের দিকে তাকিয়ে রইল। ভাবতে থাকল, না জানি কোন দৈত্য দানব বেড়িয়ে আসবে গর্ত থেকে! কিন্তু তিতুনি খুব অবাক হয়ে দেখল, শুকনো পাতার উপর খসখসে শব্দ করে গর্ত থেকে বেরিয়ে এলো এক বাচ্চা মেয়ে। হুবহু তিতুনির মত! তিতুনি ভয়ে দৌড় দিতে গিয়েও থেমে গেল! এমনকি সে নিজেকে তিতুনি বলেই পরিচয় দিল।
তারপর? প্রিয় পাঠক, তিতুনি এবং তিতুনির ভয়ঙ্কর মজাদার সব গুল্প জানতে হলে পড়তে হবে জাফর ইকবালের “তিতুনি এবং তিতুনি” বইটি।
তিতুনি এবং তিতুনি পাঠ প্রতিক্রিয়া ২
জাফর ইকবাল মূলত কিশোর উপন্যাস লিখে থাকেন। তাই আমরা যখন লেখকের কোনো লেখা গল্প পড়তে যাই তখন আমাদের ব্যাপারটা মাথায় রাখা উচিত। আর সেটা যদি হয় সায়েন্স ফিকশন! তাহলে তো কথাই নেই। তিতুনি এবং তিতুনিও সেই রকম একটা গল্প। কিশোরদের জন্য লেখা সায়েন্স ফিকশন। গল্পে উল্লেখ করা আছে বাচ্চাদের মজার মজার কাণ্ডকারখানা। সেই সাথে লেখক খুব সূক্ষ্মভাবে টিনেজারদের সমস্যাবলীর দিকেও ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। বারো বছরের তিতুনি যখন গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে, মাকে জানায় টোটন ধাক্কা দেয়ায় গ্লাস পড়ে গেছে। কিন্তু তার মা তার কথা বিশ্বাস না করে উলটো বকা দেয়। শাস্তি হিসেবে ভাঙ্গা গ্লাস পরিষ্কার করার কাজটাও তিতুনিকেই করতে হয়। তারা মেয়ের কথার দিকে কর্ণপাত না করে ছেলেকে প্রাধান্য দেয়। অথচ উচিত ছিল, দুজনকেই বুঝিয়ে বলা! মা-বাবা বাচ্চাদের হাতে তুলে দিচ্ছে প্রযুক্তি। কিন্তু তারা সেটা দিয়ে কি করছে সেটার খোঁজ নিচ্ছেনা। কম্পিউটার গেমসের বিধ্বংসী প্রভাব বাচ্চাদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাদের আচরণ হয়ে উঠে আগ্রাসী। এই দিক গুলো লেখক খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাই আমি মনে করি সর্বস্তরের পাঠকই বইটা পড়তে পারেন।
Tituni Abong Tituni pdf download link
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?