বই— “তারাফুল”
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
“যেই চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখার স্বপ্ন দেখি, সেই চোখ দিয়ে কি হারাম কিছু দেখা যায়, বলো, ভাই?”—তারাফুল বইথেকে নেয়া একটি উদ্ধৃতি ।
–
কিছু কিছু বই অাছে, যেখানে দ্বীনের গভীর কোনো বিষয় আলোচিত হয় না । কিন্তু যা আলোচিত হয়, সেগুলোকেও কোনো অংশে কম বলা যায় না । তেমনই একটি বই– “তারাফুল” । বইটি লিখেছেন তরুন কবি ও সাহিত্যিক “আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীব” ।
–
■ কি নিয়ে বইটি ?
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
বইটিতে জীবনের নানা পরতে পরতে ঘটে যাওয়া ছোট-বড় কিছু অনুভব-কে এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে । নিজের জীবনবোধ এবং জীবনদর্শন থেকে কিছু পাঠ তুলে আনা হয়েছে । অবশ্যই সেই জীবনদর্শন ইসলামের চাঁদরে মোড়া । আল্লাহর সান্নিধ্যে আসতে যে উপায় আর দর্শন প্রয়োজন সেগুলোই বই থেকে একজন পাঠক পেতে যাচ্ছে । আছে প্যারেন্টিং নিয়ে কিছু কথা, কুরআনকে নিয়ে তাদাব্বুর, দুআ করার প্রয়োজনীয়তা, গুনাহমুক্ত জীবনযাপন করার উপায় নিয়ে চমৎকার সব আলোচনা । বইটির শেষ অধ্যায় এসে চিনতে পারবেন, একজন শিক্ষককে । যার কাছে রয়েছে অগণিত শিক্ষনীয় বিষয় । কে সেই শিক্ষক ? জানতে হলে পড়তে হবে বইটি ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে “রোল মডেল” হিসেবে গ্রহন করার বোধটুকু উদ্বোধন করিয়ে দেয়ার প্রয়াসও দেখা গেছে । কোথাও কোথাও লেখকের শৈশবস্মৃতি, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কিছু টুকরো কথাও সংযুক্ত হয়েছে । জীবনের প্রতিটি পর্বে সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরার বীজ বোনা হয়েছে ।
–
■ ভাল লাগা—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
বইয়ের সবথেকে ভাললাগার বিষয় হচ্ছে, লেখকের শব্দ গাঁথুনি । যেন সাহিত্যের পশরা সাজানো হয়েছে । আর বইটি হার্ডকভার । হার্ডকভার বই পড়তে কিযে ভাললাগে তা আলাদা করে বোঝানোর কিছু নেই । পৃষ্ঠামান, সাজসজ্জা, প্রচ্ছদ সবকিছুই প্রশংসনীয় । জীবনদর্শনের এই ক্লাশে যখনই কুরআন ও হাদিসের কোনো প্রসঙ্গ এসেছে, তখনই সেটার প্রামান্যগ্রন্থ ও নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে ।
–
■ বইটি কাদের জন্য—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
যারা দ্বীনের পথে নতুন, দ্বীন পালন করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খান- এই বইটা তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরী । দ্বীনকে আঁকড়ে ধরতে চাইলে, দ্বীনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলোকে আপ্রানভাবে পালন করতে চাইলে এই বইটা আপনার জন্য হতে পারে একটা রিমাইন্ডার ।
–
■ লেখক সম্পর্কে কিছু কথা—
▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔▔
লেখক আমার সমবয়সী । যখনই তার বই হাতে নেই, ভাবি আমার বয়সী একটা ছেলে দ্বীনের খেদমতে কতদূর এগিয়ে গিয়েছে । আসলে আল্লাহ্ সবাইকে দিয়ে তাঁর দ্বীনের খেদমত করান না । আমার বয়সী একটা ছেলে কিভাবে এত চমৎকার করে লেখে সেটাই মাঝেমধ্যে ভাবি । তার শৈশবটাও আমার কাছে ঈর্ষনীয় । মৌলিক লেখকদের মধ্যে নজীব ভাই আমার সবচেয়ে প্রিয় একজন । আমার সমবয়সী হওয়ার কারনেই হয়তো তার লেখাগুলো আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে । এর দুইটা কারন হতে পারে—
(১) আমার সমবয়সী কোনো বন্ধুকে এতো সুন্দর করে ভাবতে দেখিনি । তাই তার প্রতিটা বই আমার কাছে দ্বীনি বন্ধুর সোহবত বলে মনে হয় । আর….
(২) যেহেতু সে আমার বয়সী তরুন । তাই আমার সমস্যাগুলোর সমাধান, আমার মনের ভাবনাগুলো তার লেখায় হুবহু খুঁজে পাই ।
সে তার প্রতিটা বইতেই আমাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছে । জান্নাতের স্বপ্ন । তার লেখাগুলো পড়লে খুব ভাল হয়ে যেতে ইচ্ছে করে । খুব ভাল । খুব পড়াশুনো করতে ইচ্ছে করে । নবিজীর পছন্দ-অপছন্দকে নিজের দৈনন্দিন জীবনে আবশ্যিক করে নিতে ইচ্ছে করে ।
–
■ শেষ কথা
▔▔▔▔▔▔▔▔
গোটা বইটাই একটা রিমাইন্ডার । নিখুঁত কিছু কথামালার দ্বারা পাঠক ভাবতে থাকবে তার নিজের জীবন নিয়ে । বিশ্বাসকে চাঙা করতে ও জীবন গঠনের কিছু উপাদান ও উপকরণ খুঁজে পাবে এ বইয়ে । বুক শেলফে অবশ্যই রাখার মতো একটা বই ।
–
═════════════════════════
বইটি প্রকাশিত হয়েছে “সমকালীন প্রকাশন” থেকে ।
পৃষ্ঠা সংখ্যা— ১৬২ ।
প্রচ্ছদ মূল্য— ২৭২ টাকা ।