জীবনবিধান ইসলাম
লেখক : ড. ইউসুফ আল কারযাভী
প্রকাশনী : প্রচ্ছদ প্রকাশন
বিষয় : ইসলামী জ্ঞান চর্চা, ইসলামি দর্শন
অনুবাদক : মু. সাজ্জাদ হোসাইন খাঁন
পৃষ্ঠা : 176, কভার : হার্ড কভার
আইএসবিএন : 9789849592143, ভাষা : বাংলা
সাপ্লায়ার জানিয়েছেন এই পণ্যটি 18 January প্রকাশিত হতে পারে। প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে পণ্যটি পেতে আগেই অর্ডার করে রাখুন ।
‘জীবনবিধান ইসলাম : আমাদের দাওয়াত’ মূলত International Union of Muslim Scholars-এর ইশতেহার হিসেবে লিখিত। লিখেছেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আলিম ড. ইউসুফ আল কারযাভী। ইসলামি জীবনবিধানের একটি সামগ্রিক পরিচয় তিনি এখানে তুলে ধরেছেন– সংক্ষেপে, সহজে ও মৌলিকভাবে। . ইসলামি জীবনবিধানের ওপর সংক্ষেপে পূর্ণাঙ্গ পাঠ নিতে বইটি অনন্য উপহার হতে পারে পাঠকের জন্য। দাঈর ইলমি প্রস্তুতি কিংবা দাওয়াতি উপকরণ হিসেবেও বইটি হবে দারুণ সহায়ক। কেউ যদি জানতে চায়, ইসলামি জীবনবিধান কী? তাকে আপনি এই বইটির পাঠ দিতে পারেন। চমৎকার ভারসাম্যের সাথে সে পাঠক ইসলামি জীবনবিধানের সামগ্রিক ও মৌলিক বুঝ পেয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
আমাদের দাওয়াত = ১৫ ১. মুসলিম উম্মাহ মুসলিম উম্মাহ মধ্যমপন্থি উম্মাহ। কুরআনে হাকিম মুসলিম উম্মাহকে এ গুণে বিভূষিত করেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- وَكَذلك جعلنك أمة وسالتوئؤا شهداء على التاس . . . ۱۳ *এভাবে আমি তােমাদের মধ্যমপন্থি উম্মাহ বানিয়েছি, যেন তােমরা বিশ্ববাসীর জন্য সাক্ষীস্বরূপ হতে পারাে।" সূরা বাকারা : ১৪৩ মুসলিম উম্মাহ ওহিভিত্তিক বিশ্বাস ও বার্তাকে ধারণ করে। এ উম্মাহ এমন কোনাে বর্ণবাদী জাতিগােষ্ঠী নয়- যা নির্দিষ্ট কোনাে জাতি বা বংশের সাথে সম্পৃক্ত। এ উম্মাহ কোনাে আঞ্চলিক জাতিগােষ্ঠীও নয়- যা নির্দিষ্ট কোনাে দেশ বা ভূখণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত। এ উম্মাহ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকলকে একত্রকারী উম্মাহ। এ উম্মাহ কোনাে নির্দিষ্ট ভাষার সাথে সম্পৃক্ত ভাষাভিত্তিক জাতি বা গােষ্ঠীও নয়। মুসলিম উম্মাহ বিশ্বজনীন উম্মাহ।
এক আকিদা, এক শারিয়াহ, এক মূল্যবােধ ও এক কিবলা ইসলামের সন্তানদের একতাবদ্ধ করেছে; যদিও তাদের বংশ, দেশ, ভাষা ও বর্ণে বৈচিত্র্য রয়েছে। আরব, অনারব, সাদা, কালাে, প্রাচ্যবাসী, পাশ্চাত্যবাসী, আফ্রিকান, ইউরােপীয়, এশিয়ান, আমেরিকান ও অস্ট্রেলিয়ান সকল মুসলিমকে এ উম্মাহ একটি কালিমার ওপর ঐক্যবদ্ধ করে। এ উম্মাহ মানুষের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী সকল বিষয় সম্পূর্ণ নির্মূল করে দেয়। মানুষের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী বিষয়গুলাে হলো বংশ, বর্ণ, ভাষা, ভূখণ্ড, মর্যাদাবােধ ইত্যাদি। এ উম্মাহ ঘােষণা দেয় যে, সকল মানুষ সমান। এ উম্মাহ সকল মুসলিমের মাঝে এক গভীর ভ্রাতৃত্ববােধ তৈরি করে। এ ভ্রাতৃত্ববােধের মূল ভিত্তি হলাে এক রব, এক কিতাব, এক রাসূল ও এক পথের প্রতি বিশ্বাস। এটা তাদের ঐক্যবদ্ধ করে; তাদের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করে।
১৭ এ তিনটিই তাওহিদের মূল ভিত্তি- যা সূরা আনআমে আলােচিত হয়েছে। এ ছাড়াও উসুলুত তাওহিদ (তাওহিদের মূলনীতি) এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব আরােপ করেছে। দ্বিতীয়ত : এ উম্মাহ সত্য, কল্যাণ ও উত্তম আদর্শের দিকে আহ্বান করে। কুরআন যাকে আমর বিল মারুফ (সতকাজের আদেশ) এবং নাহি আনিল মুনকার (অসতকাজের নিষেধ) হিসেবে অভিহিত করেছে। মারুফ : মারুফ একটি ব্যাপক শব্দ। এটি আকিদার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধতা, কথার ক্ষেত্রে সত্যবাদিতা, চিন্তার ক্ষেত্রে যথার্থতা, কাজের ক্ষেত্রে উৎকৃষ্টতা এবং আচার-আচরণের ক্ষেত্রে সততা ও ন্যায়পরায়ণতাকে নির্দেশ করে। মুনকার : মুনকার মারুফের বিপরীত। এটা আকিদার ক্ষেত্রে ভ্রান্তি, কথার ক্ষেত্রে মিথ্যা, চিন্তার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য, কাজের ক্ষেত্রে নিকৃষ্টতা ও আচরণের ক্ষেত্রে ভ্রষ্টতাকে নির্দেশ করে। মুসলিম উম্মাহ সৎকাজের আদেশ ও অসতকাজের নিষেধের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা পৃথিবীতে ভ্রষ্টতা ঠিক করবে, ফাসাদ সংশােধন করবে।
ولتكن منرأم يعون إلى الخير و يأمرؤون بالتعرف ويهؤن عن المنكر أوليك هُم المفون و۰ ی তােমাদের মধ্যে এমন এক দল থাকা উচিত, যারা কল্যাণের দিকে মানুষকে আহ্বান করবে, সতকাজের আদেশ দেবে এবং অসতকাজ থেকে নিষেধ করবে। আর এরাই হবে সফলকাম।সূরা আলে ইমরান : ১০৪ রাসূল সা.-এর সাহাবিগণও এ কথা অনুধাবন করতেন যে, রাসূল সা. যে বার্তা মানবজাতির কাছে প্রচার করতে প্রেরিত হয়েছেন, তাঁরাও একই বার্তা প্রচার করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন। রাসূল সা. বলেন- فإنما بوثم مييرين، ولم بعثوا معرين *তােমরা সহজ করতে প্রেরিত হয়েছ; কঠোর করার জন্য প্রেরিত হওনি।২ ২. বুখারি : অজু [২২০], মুসনাদে আহমাদ [৭২৫৫), আবু দাউদ [৩৮০], তিরমিযি [৩৮০), নাসায়ি [৫৬]। শেষােক্ত তিনটি গ্রন্থে আবু হুরায়রা রা. থেকে তাহারাত অধ্যায়ে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে।
তারা আল্লাহর বার্তাসমূহ পৌছে দেয়, কেবল তাকেই ভয় করে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও পরােয়া করে না। আর হিসাব গ্রহণে তাে আল্লাহই যথেষ্ট। সূরা আহযাব : ৩৯ আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে, এ সংস্থা সফলভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে এবং কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে। সংস্থাটি বিভিন্ন বিষয়ে তার ভাষ্য ও মতামতও প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এ ছাড়া, সংস্থাটি আরও বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ সংস্থার সম্পাদক পরিষদ মনে করেছে- সংস্থার একটি সনদ থাকা দরকার, যা উম্মাহর প্রধান প্রধান বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরবে। এ ছাড়াও যারা এ সংস্থায় যােগদান করতে চাইবেন, তারা যেন এ সনদটিকে সংস্থার মূলনীতি হিসেবে বিবােচনা করেই যোগদান করেন। আর সেই লক্ষ্যে আল ইক্তিহাদুল উলামা তার ফতােয়া ও গবেষণা পরিষদ, নির্বাহী পরিষদ ও সম্পাদক পরিষদ'-এর মাধ্যমে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সনদটির খসড়া নিয়ে কাজ করেছে। অসংখ্য বড়াে বড়াে আলিম ও গবেষকের সাথে পরামর্শের পরে, সংস্থাটি তার সনদ প্রকাশ করতে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, এ সনদটি মৌলিক ও সামসময়িক ইসলামি চিন্তাধারায় নতুন একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা আরও আশা করছি, এ সনদটি সামসময়িক ইসলামি চিন্তার পুনর্বিন্যাসে সাহায্য করবে- যাতে এ চিন্তা বুদ্ধিবৃত্তি ও সভ্যতার আলাপে যথার্থ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বিশেষত, এ সনদটি আমরা সকল মুসলিমের সম্মুখে পেশ করছি, যাতে তারা এই মূলনীতির আলােকে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং সকল প্রকার বিভক্তি, প্রান্তিকতা ও জড়তার আহ্বানকে উপেক্ষা করতে পারে। আমরা এ সনদ সমগ্র বিশ্ববাসীর সম্মুখেও উপস্থাপন করছি, যাতে বর্তমান যুগের প্রধান প্রধান ইস্যুগুলােতে সর্বশেষ আসমানি রিসালাত ও সুমহান আদর্শ ইসলামের রূপরেখা কী- তা তাদের জানাতে পারি। পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখণ্ডে বসবাসকারী আমাদের আলিম ভাইগণ, যারা প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সহনশীল, তাদের সম্মুখে আমরা এ মূলনীতিগুলাে রাখছি। এ মূলনীতি সমূহ আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করে দেবে। এ মূলনীতিগুলাে পরিষ্কার করে দেবে- আকিদা, আমল ও চিন্তার ক্ষেত্রে এবং সামষ্টিক বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।
মুসলিম উম্মাহ মধ্যমপন্থি উম্মাহ। কুরআনে হাকিম মুসলিম উম্মাহকে এ গুণে বিভূষিত করেছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- وَكَذلك جعلنك أمة وسالتوئؤا شهداء على التاس . . . ۱۳ *এভাবে আমি তােমাদের মধ্যমপন্থি উম্মাহ বানিয়েছি, যেন তােমরা বিশ্ববাসীর জন্য সাক্ষীস্বরূপ হতে পারাে। সূরা বাকারা : ১৪৩
মুসলিম উম্মাহ ওহিভিত্তিক বিশ্বাস ও বার্তাকে ধারণ করে। এ উম্মাহ এমন কোনাে বর্ণবাদী জাতিগােষ্ঠী নয়- যা নির্দিষ্ট কোনাে জাতি বা বংশের সাথে সম্পৃক্ত। এ উম্মাহ কোনাে আঞ্চলিক জাতিগােষ্ঠীও নয়- যা নির্দিষ্ট কোনাে দেশ বা ভূখণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত। এ উম্মাহ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকলকে একত্রকারী উম্মাহ। এ উম্মাহ কোনাে নির্দিষ্ট ভাষার সাথে সম্পৃক্ত ভাষাভিত্তিক জাতি বা গােষ্ঠীও নয়। মুসলিম উম্মাহ বিশ্বজনীন উম্মাহ। এক আকিদা, এক শারিয়াহ, এক মূল্যবােধ ও এক কিবলা ইসলামের সন্তানদের একতাবদ্ধ করেছে; যদিও তাদের বংশ, দেশ, ভাষা ও বর্ণে বৈচিত্র্য রয়েছে। আরব, অনারব, সাদা, কালাে, প্রাচ্যবাসী, পাশ্চাত্যবাসী, আফ্রিকান, ইউরােপীয়, এশিয়ান, আমেরিকান ও অস্ট্রেলিয়ান সকল মুসলিমকে এ উম্মাহ একটি কালিমার ওপর ঐক্যবদ্ধ করে।
এ উম্মাহ মানুষের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী সকল বিষয় সম্পূর্ণ নির্মূল করে দেয়। মানুষের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী বিষয়গুলাে হলো বংশ, বর্ণ, ভাষা, ভূখণ্ড, মর্যাদাবােধ ইত্যাদি। এ উম্মাহ ঘােষণা দেয় যে, সকল মানুষ সমান। এ উম্মাহ সকল মুসলিমের মাঝে এক গভীর ভ্রাতৃত্ববােধ তৈরি করে। এ ভ্রাতৃত্ববােধের মূল ভিত্তি হলাে এক রব, এক কিতাব, এক রাসূল ও এক পথের প্রতি বিশ্বাস। এটা তাদের ঐক্যবদ্ধ করে; তাদের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন- وأن هذا صراطى مستقيما قاتيعوه ولا ت بعوا الشبل فتفق بكم عن سيله . . . ۵۳ ک *এটাই আমার নির্দেশিত সরল পথ। অতএব, তােমরা এর অনুসরণ করাে; ভিন্ন ভিন্ন পথের অনুসরী হয়াে না। নাহয় সেগুলো তাঁর পথ থেকে তােমাদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।" সূরা আনআম : ১৫৩ এ উম্মাহর কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হলেন রাসূল সা.। আল্লাহ তায়ালা এ উম্মাহর গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন- گنتم خ أمة أخرجث إلا;তােমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মাহ; মানবজাতির জন্য তােমাদের আবির্ভাব করা হয়েছে। সূরা আলে ইমরান : ১১০ এ উম্মাহ নিজের স্বার্থের জন্য পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়নি। এ উম্মাহ মানবতার কল্যাণ সাধনে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছে। মানবজাতির পথপ্রদর্শনের জন্য পৃথিবীতে এসেছে এ উম্মাহ। মানবজাতির জীবনকে সমৃদ্ধ ও কল্যাণময় করতে এ উম্মাহ পৃথিবীতে এসেছে।
এ উম্মাহর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ ও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- . تأمرون بالتعرف وتنهؤن عن النگر و ؤمنون باله . . . ۱۰ک *তােমরা সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং অসতকাজে নিষেধ করাে।
আর আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করাে।" সূরা আলে ইমরান : ১১০ অতএব, এ উম্মাহ সর্বজনীন, মানবিক ও ঐিশী বার্তা বহনকারী উম্মাহ। এ বার্তার সারকথা দুটি- প্রথমত : এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। এ বিশ্বাস তিনটি মৌলিক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। যথা : ১. আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করবে না। ২. আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ওলি তথা বন্ধু ও সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করবে না। ৩. আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে শাসক ও বিধানদাতা হিসেবে গ্রহণ করবে না। জীবনবিধান ইসলাম
PDF Short Link
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?