Japan Jatri Is a most popular novel of Rabindranath Tagore, boipaw.com recently added japan Jatri PDF Format on this website. You can easily Japan Jatri Read Online Or Download Here 100% free. So Download Japan Jatri PDF & Enjoy With Remember your best author Rabindranath Tagore.
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি , ঔপন্যাসিক , সঙ্গীত-স্রষ্টা , নাট্যকার , চিত্রকর , প্রাবন্ধিক এবং দার্শনিক । বাংলা ভ্রমণ-সাহিত্যেও তিনি তাঁর স্বতন্ত্রতাকে বিকশিত করেছেন । ১৯১৬ সালে জাপান ভ্রমণকে কেন্দ্র করে তিনি শুধুমাত্র তাঁর বিচিত্র জীবনাভিজ্ঞতাকেই তুলে ধরেননি ; এর পাশাপাশি জাপানের সংস্কৃতি , রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটসহ পাশ্চাত্যের সাথে প্রাচ্যের তথা জাপানের বৈষম্যকেও তুলে ধরেছেন । এই কারণেই ‘জাপান যাত্রী’ বাংলা সাহিত্যের দরবারে বিখ্যাত ভ্রমণ-সাহিত্যমূলক রচনার জায়গা দখল করে আছে । এখানে তিনি কেবল পর্যটক হিসেবে নন , সমস্ত কাহিনি জুড়ে আছেন নানান রূপে ,নানান ভূমিকায় । কখনও তিনি প্রকৃতির উপাসক ,প্রেমিক ,কখনও কবি আবার কখনোবা দার্শনিক হিসেবে উপস্থিত ।
- বইয়ের নামঃ জাপান যাত্রী পিডিএফ ডাউনলোড
- লেখকঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- সাইজঃ ০.৪৮ এমবি
- ভাষাঃ বাংলা (Bangla/Bengali)
- পাতা সংখ্যাঃ ৩৫৭ টি
- বইয়ের ধরণঃ আত্মজীবনী
- ফরম্যাটঃ পিডিএফ (PDF)
‘জাপান যাত্রী’তে আমরা ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথকে নিতান্ত কাছ থেকে দেখতে পাই ,তাঁকে আটপৌরে সহজ এক যাত্রী রূপে আমরা আবিষ্কার করি । অথচ সহজ এই যাত্রীর আড়ালেই লুকিয়ে আছে দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ । তাঁর যে দার্শনিক সত্তা আমাদের সামনে উন্মোচিত হয় তা কিন্তু ঋষি-সদৃশ কোন ধ্যানী বা জ্ঞানীর নয় । বরং এক অতি সংবেদনশীল প্রায় ভবঘুরে কবির জীবন অভিজ্ঞতা আমাদের দৃষ্টির সম্মুখে ভেসে ওঠে ।এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহামানব ও মহাদেশের প্রতিভূ হয়ে এক শিল্পিত জীবনদর্শনকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন । দেশকে দেখেছেন বিশ্বের প্রেক্ষিতে , বিশ্বকে দেশের । এই শিল্পিত জীবনবোধ মূলত রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক এবং অধ্যাত্মবাদী জীবনদর্শনের আরেক রূপ । অর্থাৎ তিনি নিজেকেই প্রকাশ করতে চেয়েছেন ‘জাপান যাত্রী’ ভ্রমণ-সাহিত্যে । এছাড়াও লেখকের দেশ ও কবি চিন্তায় যে সর্বভারতীয় ঝোঁক দেখা যায় ,তার প্রমাণও এই ‘জাপান যাত্রী’ ।
এই গ্রন্থে তিনি জাপান ভ্রমণকে কেন্দ্র করে জাপানের ইতিবাচকতার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ত্রুটি-বিচ্যুতিকেও ইঙ্গিতবাহী করে তুলে ধরেছেন । তবে তাতে তিনি জাপানের আদর্শকেই ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস করেছেন । কলকাতা থেকে রবীন্দ্রনাথের জাপান যাত্রার সূচনায়ই তিনি ভারতীয় বাস্তবতাকে তুলে ধরেন জাহাজ দেরি করে ছাড়ার মধ্যদিয়ে । রেঙ্গুনে পৌঁছে শিল্প-বিপ্লবের করুণ বাণিজ্যিকিকরণ তাঁকে ব্যথিত করেছে । আধুনিকায়নের নামে য়ুরোপীয়দের প্রভুত্বকে তিনি মানতে নারাজ । জাহাজে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে টিকে থাকার অভিজ্ঞতাকেও তুলে ধরেছেন ।
জাপানে ছেলেমেয়েরা ভীষণ কর্মঠ , তারা মিলেমিশে একসাথে কাজ করে যা প্রাচ্যে খুব কমই দেখা যায় ।তাই রবীন্দ্রনাথ এদেশের জটিলতা ও জড়তার কথা উল্লেখ করেছেন এভাবে —-
”চারিদিকে কেবলই জাতির সঙ্গে জাতির বিচ্ছেদ , নিয়মের সঙ্গে কাজের বিরোধ , আচারধর্মের সঙ্গে কালধর্মের বিরোধ ।”
জাপানের রাস্তাঘাটে সাধারণভাবেই লোকের ভীড় চোখে পড়ে , কিন্তু কোন গোলমাল-কলহ নেই । এরা যেন চেঁচাতে পারে না । লোকে বলে জাপানের শিশুরা পর্যন্ত কাঁদে না । লেখক পথে মোটরে চড়ে যাবার সময় মাঝে মাঝে ঠেলাগাড়ির বা অন্য কিছুর বাধা আসে তখন দেখতেন চালক শান্তভাবে অপেক্ষা করে ,গাল দেয় না , হাঁকাহাকি করে না । এদের গালাগালি অভিধানের একটি মাত্র শব্দ হলো ‘বোকা’ । অর্থাৎ তিনি তাদের শান্তি এবং সহিষ্ণুতাকেই প্রকাশ করতে চেয়েছেন । তবে তিনি এ-ও বলেছেন যে এরা ঝগড়া করে না ঠিক, কিন্তু প্রয়োজনের সময়ে প্রাণ দিতে এবং নিতে পিছ পা হয়না । সকল বিষয়েই তাদের যেমন শক্তি , তেমন ধৈর্য ,তেমন নৈপুণ্য ,তেমনই সৌন্দর্যবোধ ।
জাপানি কবিতা সাধারণত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত হয় । তাতে মিলের কোন লক্ষণ থাকে না । অত্যন্ত সরল মাত্রায় নিয়ম আছে । কাব্য চর্চায় তারা ছিলে প্রাচ্য থেকে অনেকাংশেই দূর্বল । জাপানির নিজেদের সৌন্দর্য-অনুভূতিকে শৌখিন জিনিস বলে মনে করে না । সেখানকার ধনী পরিবারে চা পানের অনুষ্ঠানকে লেখক ধর্মানুষ্ঠানের তুল্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন । এ তাদের একটা জাতীয় সাধনা । তাদের চা-পানের প্রত্যেক সরঞ্জাম দুর্লভ এবং সুন্দর । অতিথির কর্তব্য হলো এই পাত্রগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখা । প্রত্যেক পাত্রের স্বাতন্ত্র্য নাম এবং ইতিহাস আছে । মূলত সৌন্দর্যর গভীরতায় নিজেকে সমাহিত করে দেয়াই হলো এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ।
এক পর্যায়ে আমরা দেখি রবীন্দ্রনাথ টোকিওতে এসে চিত্রকর বন্ধু য়োকোয়ামা টাইক্কনের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেন । সেখানে তিনি অবলোকন করেন যে জাপানিরা কেবলমাত্রা শিল্পকলায় অষ্টাদশ নয় , জীবনযাত্রাকেও তারা একটা কলাবিদ্যার মতো আয়ত্ব করে নিয়েছে ।
জাপানিদের নাচ সৌন্দর্যবোধেরই বহিঃপ্রকাশ , এ যেন দেহভঙ্গির সঙ্গীত । সমস্ত দেহ পুষ্পিত লতার মতো একসঙ্গে দুলতে দুলতে সৌন্দর্যর পুষ্পবৃষ্টি করছে । এটা আসলে খাঁটি ইউরোপীয় নাচের মতো উশৃংখল নয় । এ নাচ একেবারেই পরিপূর্ণ নাচ । তবে তিনি জাপানিদের সঙ্গীতে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারেননি ।
তবে তিনি জাপানের আদর্শকে তুলে ধরার পাশাপাশি সমালোচনাও করেছেন । নৌযুদ্ধে জাপান চীনের সঙ্গে জয়লাভ করেছিল এবং সেই জয়ের চিহ্নগুলো কাঁটার মতো দেশের চারিদিকে পুঁতে রাখা যে বর্বরতা , তা হয়তো জাপানিরা বোঝেনি । তাইতো লেখক বলেছেন :
”প্রয়োজনের খাতিরে অনেক ক্রূর কর্ম মানুষকে করতে হয় , কিন্তু সেগুলোকে ভুলতে পারাই মনুষ্যত্ব । ”
রবীন্দ্রনাথ মূলত ‘জাপান যাত্রী’তে দেশ দেখার নিমিত্তে ধারণ করেছেন আত্মদর্শন । তিনিই এখানে গূঢ় জীবনকে সঙ্গী করে ব্যক্তিগত চিন্তন-প্রক্রিয়ার বিকাশ ঘটিয়েছেন । তিনি শিক্ষাও নিয়েছেন প্রকৃতি ও মানুষের কাছ থেকে এবং এই গ্রন্থটি মূলত তাঁর গৃহীত অভিজ্ঞতারই ফসল । আসলে ক্ষুদ্রর মধ্যে বৃহত্তর যে দর্শন , বিশ্বের বৈপরীত্যময় কৃষ্টি এবং জীবনপ্রবাহকে সমন্বিত করার যে দার্শনিক প্রচেষ্টা সেটি ‘জাপান যাত্রী’তে চমকপ্রদরূপে ফুটে উঠেছে
জাপান যাত্রী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তথ্যমূলক আলোচনা
● উইলিয়াম পিয়ার্সন, সি এফ এন্ড্রুজ ও মুকুলচন্দ্র দে সহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতা থেকে ১মে, ১৯১৬ তারিখে জাপান যাত্রা করেন। সেখান থেকে আমেরিকা ভ্রমণ করে জাপানের পথে ১৩ই মার্চ, ১৯১৭ কলকাতায় আসেন।
● বৈশাখ, ১৩২৩ থেকে বৈশাখ,১৩২৪ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত সবুজ পত্রের বিভিন্ন সংখ্যায় রচনাগুলি ‘জাপান যাত্রীর পত্র’, ‘জাপানের পত্র’, ‘জাপানের কথা’ নামে প্রকাশিত হয়।
● ১৩৪৩ সালে শ্রাবণ মাসে জাপান পারস্যে গ্রন্থ প্রকাশকালে ‘জাপান যাত্রী’ উক্ত গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত হয়।
● ১৩২৬ সালের শ্রাবণ মাসে ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থাকারে মুদ্রিত হয়।
● ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থটি উৎসর্গ করেন – শ্রীযুক্ত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে।
● ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থের ‘সূর্যবন্দনা’র ছবিটি শিল্পী শিমোমুরার আঁকা। ‘পশ্চিম যাত্রীর ডায়েরি’তে দ্বিতীয় পত্রে ছবিটির পুনরুল্লেখ হয়েছে।
● গ্রন্থের ১২নং প্রবন্ধের শেষে ‘মহিলা বিদ্যাপীঠে রবীন্দ্রনাথ’ নামে একটি ছবি আছে যার স্থান কারুইজাওয়া, জাপান, ১৯১৬।
● ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থটিতে মোট ১৫টি প্রবন্ধ আছে।
● ‘জাপান যাত্রী’ গ্রন্থটির ইংরাজি তর্জমা করেন –
ইন্দিরা দেবী ১৯৩৮ খ্রি:।
শকুন্তলা রাও শাস্ত্রী – “A Visit to Japan”.(1961)
● ‘জাপানযাত্রী’ প্রবন্ধে উল্লেখিত জাহাজটির নাম – তোসামারু।
● ‘জাপানযাত্রী’ প্রবন্ধে উল্লেখিত মাসের নাম – বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, ভাদ্র।
● ‘জাপানযাত্রী’ প্রবন্ধে উল্লেখিত ঋতুর নাম –
শরৎ, বসন্ত, শীত।
তারিখ ঘটনা
২০শে বৈশাখ প্রথম চিঠি লেখা
২৪শে বৈশাখ রেঙ্গুনে পৌঁছানো
২রা জ্যৈষ্ঠ সিঙ্গাপুরে পৌঁছানো
২৯শে বৈশাখ পিনাঙ বন্দরে পৌঁছানো
৩রা জ্যৈষ্ঠ সিঙ্গাপুর থেকে
জাহাজ ছাড়া
১৬ই জ্যৈষ্ঠ কোবে পৌঁছান
২৩শে জ্যৈষ্ঠ টোকিও যাত্রা
ব্যক্তি পরিচয়
মুকুল দে যাত্রাকালে বালক সঙ্গী
টাইক্কন জাপানি চিত্রকর,
টোকিও তে যার বাড়ি ছিলেন
তানজান জাপানি চিত্রকর
শিমুমোরা সূর্যবন্দনার ছবি এঁকেছিলেন
সানো শান্তিনিকেতনে জুজুৎসু
ব্যায়ামের শিক্ষক
মোরারাজি গুজরাটি ব্যবসায়ী
কোবেতে যার বাড়িতে ছিলেন
কাটাসটাক চিত্রকর বন্ধু
হারাসন ধনী ও রসজ্ঞ,
য়োকোয়ামায় যার আতিথ্য
গ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?