ঘরে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবেন যেভাবে!

ঘরে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবেন যেভাবে

জনপ্রিয় লেখক মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ ‘ওগো শুনছো’ বইতে ঘরে দ্বীনের আমেজ তৈরির জন্য ৩২টি টিপস। আসুন টিপসগুলো দেখুন:

.
(এক) প্রতিদিন বাড়ির কাজ শুরু হবে ফজরের নামায দিয়ে। তাহাজ্জুদ দিয়ে হলে আরও ভালো। ঘরের পরিবেশটাই যেন এমন হয়, সবাই ফজরের পর, সকালবেলার মাসনুন আমলগুলো করতে শুরু করে। একটা ঘরে সকাল-সন্ধ্যা হাদীসে বর্ণিত মাসনুন আমলের পরিবেশ থাকলে সে ঘরের সন্তান কিছুতেই বখে যেতে পারে না।
.
(দুই) বাড়িতে সব সময় ইস্তিগফারের পরিবেশ জারি রাখার চেষ্টা করা। উঠতে-বসতে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে। গুনাহ মাফ হবে। রিযিক বৃদ্ধি পাবে। ঘরে বরকত আসবে।
.
(তিন) বিভিন্ন উপলক্ষে দু’আ করার অভ্যেস গড়ে তোলা। ঘরের ছোটখাট প্রয়োজনের জন্যে প্রথমে দু’আ তারপর চেষ্টা করার অভ্যেস গড়ে তোলা। দু’আই মুক্তির পথ। সমাধানের সূত্র। সন্তান যেন প্রতিটি চাহিদা আব্বু-আম্মুকে জানানোর আগে আল্লাহকে জানাতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।
.
(চার) প্রতিটি কথা ও কাজ ফিরিশতারা লিখে রাখছেন। আল্লাহ দেখছেন। সবার মধ্যে এ অনুভূতি জাগরূক থাকা। ঘরের দেয়ালে দেয়ালে কথাটা লাগিয়ে রাখা।
.
(পাঁচ) যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক, ঘরে যেন আল্লাহর রহমতের প্রতি আশাবাদী থাকার মানসিকতা বিরাজমান করে। ঘরে চাল ভেঙে মাটির সাথে মিশে গেলেও সন্তানদের হতাশা প্রকাশ করতে না দেয়া। ভেঙে পড়ার সবক না দেয়া। তাদের সামনে নেয়ামতের কথা বলতে থাকা ।
.
(ছয়) প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়েই আল্লাহর ইবাদত করা যায়। আঙুল দিয়ে তাসবীহ গোনা যায়। যিকির গোনা যায়। কোন অঙ্গ দিয়ে কী কী ইবাদত করা যেতে পারে র সন্তানদের তা ভাবতে দেয়া। মাঝেমধ্যে তাদের প্রশ্ন করা।
.
(সাত) বিপদাপদ বেড়ে গেলে, দুঃখ-শোক আসতে থাকলে মুখে মুখে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়তে থাকা। ছোটদেরও পড়তে বলা। ঘরে খাবার না থাকলেও তাদের বলা, তোমরা যিকির করতে থাকো। খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
.
(আট) দান-খয়রাতের মাধ্যমে ফকির-মিসকিনদের দু’আ কিনতে উদ্বুদ্ধ করা। গরীব-দুঃখীদের ভালোবাসা অর্জন করার প্রতি উৎসাহী করে তোলা। আখেরাতে জাহান্নামীরা কামনা করবে : ইশ! আমি যদি আবার দুনিয়াতে ফিরে যেতে পারতাম, তা হলে বেশি বেশি সদকা করতাম! সদকা অনেক বড় এক ইবাদত।
.
(নয়) আল্লাহর দরবারে সিজদা দেয়া পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের চেয়ে উত্তম। কথাটা বার বার তাদের কানে ফেলা। বাস্তবে সবাই মিলে কাজে পরিণত করে দেখানো।
.
(দশ) প্রতিটি কথা বলার আগে ভেবে নেয়ার অভ্যেস গড়ে তোলা। আমি যা বলতে যাচ্ছি, সেটা দুনিয়া বা আখেরাতের কোনো কাজে লাগবে তো?
.
(এগারো) দুষ্টুমি করতে গিয়ে, খেলতে গিয়ে কারও প্রতি অন্যায় আচরণ হয়ে যাচ্ছে কি না সেটার প্রতি সচেতন থাকা। তার মনে গেঁথে দেয়া : মাজলুমের দু’আ আর আল্লাহর মাঝে কোনো অন্তরাল নেই। বঞ্চিতের চোখের পানি অত্যন্ত বিপজ্জনক। সাবধান! এ থেকে বেঁচে থাকা ভীষণ জরুরি।
.
(বারো) যেকোনো কিছু পড়ার আগে, সামান্য হলেও কুরআন কারীম পড়ে নেয়া। একটা আয়াত হলেও। নিজেরাই করে দেখাতে হবে। তা হলে শিশুরা দেখে দেখে শিখবে।
.
(তেরো) ইবাদতে, কাজেকর্মে, কথাবার্তায় ইস্তিকামাত (অবিচল) থাকলে, ছোটরাও দেখবে এবং শিখবে। পরিবারের কর্তাব্যক্তিই পারেন এ আদর্শ স্থাপন করতে।
.
(চৌদ্দ) মন সব সময় চাইবে মন্দটা বেছে নিতে। কারণ, কুরআনেই আছে: নিশ্চয় নফস মন্দ কাজের আদেশদানে অধিক তৎপর। এ জন্যে মনকে ভালোর দিকে জোর করে টেনে রাখতে হবে।
.
(পনেরো) নিজের বাবা-মায়ের কপালে, হাতে চুমু খেতে হবে। শিশুরাও দেখে দেখে শিখবে। বাবা-মা না থাকলে এমনিতে মুখে বলে বলে শিশুদের অভ্যস্ত করে তোলা। এতে বড় হলে দু-পক্ষের দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার কমে আসবে।
.
(ষোলো) আমার পুরোনো জামাও গরিবের কাছে নতুন জামার মতো। ধুয়েমুছে সাফসুতরো করেই তার হাতে তুলে দেব।
.
পোস্টের দৈর্ঘ বেড়ে যাওয়ায় বাকি টিপসগুলো দেখুন কমেন্টে
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?