গানিতিক রহস্যময় কুরআন : আহমদ দিদাত | Mathematically Mysterious Quran

  • গানিতিক রহস্যময় কুরআন
  • লেখক : আহমদ দিদাত
  • প্রকাশনী : প্রত্যাশা প্রকাশন
  • বিষয় : ইসলামী জ্ঞান চর্চা
  • পৃষ্ঠা : 80, কভার : হার্ড কভার
  • ভাষা : বাংলা।

গানিতিক রহস্যময় কুরআন

স্মরণাতীত কাল থেকেই মানুষের সাধারন একটা বেশিষ্ট্য এই যে, মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যে সৃষ্টিকর্তার তরফ থেকে তাঁর ইচ্ছা ও পরিকল্পনা মাফিক যখনি কোন পথ প্রদর্শক আবির্ভূত হন, তখন তাঁদের সেই মূল্যবান বাণীসমূহ গ্রহণ না করে, মানুষ সেই সব প্রেরিত পুরুষদের কাছ থেকে অলৌকিক কিছু প্রমাণ চেয়ে বসে।
দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, ধর্মোপদেশ প্রদানের জন্যে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম যখন বনী ইসরাইলদেরকে শুধুমাত্র প্রচলিত ধর্মাচরণ থেকে বিরত থেকে আল্লাহ্ প্রদত্ত আইন ও নির্দেশ বিমণ্ডিত সত্যিকার নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের আহবান জানালেন, তখন তাঁর সেই প্রচারিত সত্যের প্রমাণ স্বরূপ তারা তার কাছে অলৌকিকত্ব দাবি করে বসলো। যেমন মথি লিখিত সুসমাচারের ১২ অধ্যায়ে ৩৮ ও ৩৯ নম্বর শ্লোকে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তখন কয়েকজন অধ্যাপক ও ফরীশী তাকে বলল, আমরা আপনার কাছে কোন চিহ্ন দেখতে ইচ্ছে করি।” তিনি উত্তর করে তাদের বললেন, এই কালের ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদের দেওয়া যাবে না।” আপাতদৃষ্টিতে যদিও তিনি তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কিন্তু সুসমাচারের অনেক কাহিনীতেই আমরা দেখতে পাই, প্রচুর অলৌকিকত্ব প্রদর্শক করেছেন তিনি!
প্রত্যাদিষ্ট মহাপুরুষের নিকট তাদের প্রভুর কাছ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছিল, বাইবেল সেই অলৌকিক কাহিনীতে ভরপুর। বস্তুত এই সব লক্ষণ এই সব বিস্ময়কর ঘটনা, এই সব মুযিজা বা অলৌকিকত্ব সেই মহান আল্লাহর; কিন্তু তার মনুষ্য প্রতিনিধি মারফত ঐগুলো কার্যকর হয়েছে বলে আমরা সেসব বিস্ময়কর ঘটনাকে আখ্যায়িত করে থাকি মূসা আলাইহিস সালাম বা ঈসা আলাইহিসসালাম-এর অলৌকিকত্ব বা মুজিজা বলে।
আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ঈসা আলাইহিম সাল্লা-এর প্রায় ছয়’শ বছর পরে। ৪০ বছর বয়সে তিনি দীনের প্রচার শুরু করলেন, তার স্বদেশবাসী তখন তার কাছে অলৌকিকত্ব প্রদর্শনের সেই একই প্রার্থনা জানালো, যেমনটি জানিয়েছিল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর সময়কালীন লোকেরা তাদের প্রতিশ্রুত ত্রাণকর্তার কাছ থেকে। এ সম্পর্কে কুরআনুল করীমে উল্লেখ করা হয়েছে :
وقالوا لولا أنزل عليه ايت من ربه
ওরা বলে, তার প্রতিপালকের নিকট হতে তার কাছে নিদর্শন প্রেরিত হয় না কেন ? (আল-কুরআন ২৯ : ৫০)
তাদের দাবির এটা ছিল সাধারণ একটা প্রবণতা ! সুনির্দিষ্টভাবে তাদের বক্তব্য ছিল, তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম শূণ্য আকাশে মই স্থাপন করে তাঁর প্রভুর নিকট থেকে তাদেরই চোখের সামনে নিয়ে আসুন একটা গ্রন্থ “তাহলেই আমরা বিশ্বাস করবো” অথবা অদূরে ঐ পাহাড়টা রূপান্তরিত করুন সোনায় তাহলে আমরা বিশ্বাস করবো কিম্বা – মরুর বুকে প্রবাহিত করুন ঝর্না তাহলেও আমরা বিশ্বাস করবো।
প্রত্যাদেশে সন্ধিগ্ধ সেইসব অযৌক্তিক দাবির সামনে শুনুন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শান্ত মধুর জবার : “তোমাদের কাছে কি আমি বলি যে, প্রকৃতই আমি একজন আসমানী দূত? তোমাদের কাছে কি আমি বলি, আমার হাতেই রয়েছে আল্লাহর অফুরন্ত সম্পদ? আমার কাছে যা প্রত্যাদিষ্ট হয় শুধু তাই অনুসরণ করি আমি।” অবিশ্বাসীদের জন্য আরও শুনুন তার প্রভু নির্দেশিত জবারঃ
قل إنما الأيث عند الله وإنما إنا نذير مبين নিদর্শন আল্লাহরই ইখতিয়ারে। আমি তো একজন প্রকাশ্য বলুন, সতর্ককারী মাত্র। (আল-কুরআন ২৯ : ৫০)
বিশেষ নিদর্শন বা অলৌকিকত্ব প্রদর্শনের সেই কপট দাবি, যা তাদের নির্বোধ পৌত্তলিক মানসিকতাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, তারই সার্থক ও সমুচিত জবাব হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয়েছে কুরআনুল করীমের নিম্নোক্ত আয়াত মারফতঃ
أولم يكفهم انا انزلنا عليك الكتب يتلى عليهم إن في ذلك لرحمة وذكري لقوم يؤمنون
ইহা (আল-কুরআন) কি ওদের জন্যে যথেষ্ট নয়, যে আমি আপনার নিকট (হে মুহাম্মদ) কুরআন অবতীর্ণ করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে। সেই কওমের জন্য যারা ঈমান আনে। (আল-কুরআন ২৯ ৫১)
পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনের অনুপম সত্যতা ও অলৌকিক তাৎপর্যের প্রমাণ স্বরূপ এখানে দু’টি যুক্তি উস্থাপন করা যেতে পারে :
১.“আমরা (আল্লাহ সর্বশক্তিমান) আপনার নিকট এই মহাগ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি”। ‘আপনা র’ অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে যিনি একজন অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষ। একজন উম্মী নবী যিনি পড়তে ও লিখতে জানেন না, নিজের নাম পর্যন্ত স্বাক্ষর করতে যিনি অসমর্থ। টমাস কার্লাইল তাঁর “হিরো এ্যাণ্ড হিরো ওয়ারশিপ” বক্তৃতামালায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই শিক্ষাগত যোগ্যতার সাক্ষ্য প্রদান করেছেন বড় সুন্দরভাবেঃ “আমরা আর একটি ঘটনা নিশ্চয়ই বিস্মৃত হবো না যে, তাঁর কোন স্কুল শিক্ষা ছিলো না স্কুল শিক্ষা বলতে আমরা যা বুঝি তার একটুওনা।”
আল-কুরআন যে কখনোই রচনা করেন নি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, এই মহাগ্রন্থের রচয়িতা যে কখনোই তিনি নন তাঁর এই দাবির প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ কী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন দেখুন।
وما كنت تثلوا من قبله من كتب ولا تخطة بيمينك إذا لارتاب
المبطلونه
আপনি তো (হে মুহাম্মদ) এর আগে কোন কিতাব পাঠ করেন নি এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লেখেনও নি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে। (আল-কুরআন ২৯: ৪৮)
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি একজন বিদ্বান ব্যক্তি হতেন, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া যদি পড়তে ও লিখতে জানতেন, তাহলে “আল কুরআনই আল্লাহর বাণী, তাঁর এই স্পষ্ট উক্তিতে বাচালদের সন্দেহ করার মতে হয়তো বা একটা যুক্তি হতে পারতো। তিনি যদি শিক্ষিত ব্যাক্তি হতেন তাহলে এই মহাগ্রন্থ ইহুদী বা খৃষ্টানদের পবিত্র গ্রন্থ থেকে তিনি স্রেফ কপি করেছেন বা এরিস্টোটল ও প্লেটো পড়ে এবং “ তওরাত” “জবুর” ও “ইঞ্জিল” পাঠ করে সুন্দর ও সুললিত ভাষায় তিনি ইহা গ্রন্থনা করেছেন। তাঁর শত্রুদের এই বক্তব্যটি হয়তো বা প্রাসঙ্গিক হতো; তাহলে সেই অহংকারী মিথ্যাচারীদের উক্তির একটা সার্থকতা থাকতো। কিন্তু এটা এমনি একটা নাজুক যুক্তি যা ছিদ্রান্বেষী অবিশ্বাসীদের কাছেও অসত্য, এই এমনি খোঁড়া যুক্তি, যা সত্যিকারভাবেই অবিশ্বাসীদের কাছেও অবিশ্বাস্য! 
২. গ্রন্থখানি? হ্যাঁ এই পবিত্র গ্রন্থখানিই সুষ্পষ্ট প্রমাণ করছে যে, এটি আল্লাহরই অমোঘ বাণী! যে কোন দিক থেকে অধ্যয়ন করুন একে সুষ্পষ্টভাবে পর্যালোচনা করুন এই গ্রন্থখানি, দেখবেন সন্দেহকারীদের অমূলক সন্দেহ কী সুন্দরভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন পবিত্র গ্রন্থের গ্রন্থকার আল্লাহ জাল্লা শা’নহু নিজেই :
أفلا يتدبرون القران ولوكان من عند غير الله لوجدوا فيه اختلافا
كثيرا
তবে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে অনুধাবন করে না? এটি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বাণী হতো তবে নিশ্চয়ই এতে তারা অনেক অসঙ্গতি পেত। (আল-কুরআন- ৪ : ৮২)
কোন মানুষের পক্ষেই একটানা তেইশ বছর ধরে তার শিক্ষা ও উপদেশাবলির মাঝে অবিচল থাকতে পারে না। চরম পরষ্পর বিরোধী জীবনের উত্থান-পতনময় পথ অতিক্রমকালে একজন মানুষ কোথাও না কোথাও একটা রফা করে ফেলে, নিজের মধ্যে নিজেই প্রতিবাদী হয়ে ওঠে! কোন মানুষই ধর্মোপদেশমূলক কোন বক্তৃতা একই কেম থাকতে পারে না। যেমনটি অবিচল, সম্পূর্ণরূপে সুসমঞ্জস পবিত্র এই আল কুরআনের বাণী। হতে পারে, অবিশ্বাসীদের প্রতিবাদ কিন্তু শুধু প্রতিবাদের খাতিরেই এবং তাদের নিজেদের বিচার-চিবেচনার বিরুদ্ধেই হয়তো তর্কজনিত নিষ্ফল প্রতিবাদ!
বারবার যখন আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিদর্শন বা অলৌকিকত্ব দাবি করা হলো, তখন তাকে কুরআনুল কারীমের দিকে অঙ্গুলি নির্দেষ করতে হলো; বলা হলো ঊর্ধ্ব আকাশের বাণী। এটা এক মহান মো’যেজা অনেক মোযেজার চরম মোযেজা এটি এবং পণ্ডিত ও গুণীজন, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক পরিজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ,
যারা সত্যিকারভাবে সত্যপরায়ণ, তাঁরা আল কুরআনের একটা অকৃত্রিম মো’যেজা হিসেবেই স্বীকার করেছেন, শ্রদ্ধাভরে গ্রহণ করেছেন। কুরআনুল কারীমে দয়াময় আল্লাহ তাই ঘোষণা করেনঃ
بل هو ايت بينت في صدور الذين أوتوا العلم ط وما يجحد بالتنا إلا
القلمون
বরং যাদের জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটি এক স্পষ্ট নিদর্শন। কেবল জালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে।
(আল-কুরআন ২৯:৪৯ )

কুরআনিক প্রত্যাদেশের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ

আজকের এই পৃথিবীতে কমপক্ষে ন’শ মিলিয় মুসলমান আল কুরআনকে আল্লাহরই বানী বলে দ্বিধাহীন চিত্তে গ্রহণ করেছেন; এবং এটাই একটা “মির‍্যাকল” মুযিজা বা অলৌকিকত্ব। যেখানে ইসলামের স্বীকৃতি শত্রুরা আল্লাহর বাণী এই আল কুরআনের অলৌকিকত্বের কাছে শ্রদ্ধাবনতা, সেখানে তারা তা করবেই বা না কেন? রেভারেন্ড আর বসওয়ার্থ তাঁর “মুহাম্মেড এ্যান্ড মুহামেডানিজম” গ্রন্থে আল-কুরআনকে অলৌকিকত্বের পবিত্র, একটি প্রতীক, একটি মহৎ জ্ঞান এবং একটি মহাসত্য বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। অন্য আর একজন ইংরেজ লেখক মিঃ এ.জি, আরবেরী তার ইংরেজিতে অনূদিত আল কুরআনের ভূমিকা উল্লেখ করেছেন, “যখনি আমি আল কুরআনের বাণী শ্রবণ করেছি, তখনি আমার মনে হয়েছে, আমার অন্তর প্রদেশ হতে উৎসারিত হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দণের সাথে নিঃসৃত হচ্ছে যেন একটি সুমধুর সুর তরঙ্গ! তাঁর এই মন্তব্যের মধ্যে এবং তাঁর অনুবাদের অবতরণিকার অবশিষ্টাংশের মধ্যে একজন মুসলমানের উক্তিই ধ্বনিত হয়েছে, কিন্তু দুঃখের বিষয়, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন একজন খৃস্টান হিসেবে।
এবং এ ছাড়া আরও একজন বৃটেনবাসী মারমাডিউক পিকথালা, তাঁর কুরআনুল করীমের ইংরেজি অনুবাদের মুখবন্ধে বলেছেন, “কুরআনের অনুপম সুর, অত্যুৎকৃষ্ট ধ্বনি মানুষকে অশ্রু এবং আনন্দের জগতে নিয়ে যায়।” কুরআন অনুবাদের আগেই ইনি ইসলামের দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন; তাই হয়তো নিশ্চিত করে বলা যায় না যে, তাঁর এই অনুভূতি ইসলামে দীক্ষ নেবার আগে না পরে। কিন্তু যাই হোক, বন্ধু এবং শত্রু নির্বিশেষে সবাই একই ভাবে আন্তরিক শ্রদ্ধায় অভিসিক্ত করেছেন আল্লাহর এই সর্বশেষ মহান বাণী আল কুরআনকে । মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমসাময়িক ব্যাক্তিবর্গ আল কুরআনের এই সৌন্দর্য ও মহিমা প্রত্যক্ষ করেছিলেন সুমহান ইসলাম।
শ্রদ্ধামিশ্রিত এইসব প্রশংসাবাণীর মাঝে একজন সন্দেহবাদী নাস্তিক ও অবিশ্বাসী হয়তো বলবে এগুলি ছিল স্রেফ আত্মিক অনুভূতি: যে সে তো আরবি জানে না। তোমরা যা দেখো আমি তা দেখি না, তোমরা যা অনুভব করো আমি তা করি না। তাহলে কেমন করে আমি জানবো যে, আল্লাহ আছেন এবং সেই তিনিই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে প্রত্যাদেশ হিসেবে পাঠিয়েছেন তাঁর এই অনিন্দ্য বাণী! সে হয়তো বলে যাবে, এর দার্শনিক সৌন্দর্যের সাথে আমি বিরুদ্ধভাবাপন্ন নই, ব্যবহারিক নীতি তত্ত্বে এবং উন্নত নৈতিকতায় আমি পরামুখ নই! আমি স্বীকার করতে রাজী আছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সত্যিকারভাবেই একজন সৎ এবং মানুষের মঙ্গললের জন্য তিনি দিয়ে গেছেন অনেক সুন্দর সুন্দর নৈতিক শিক্ষা! কিন্তু আমি সম্মতি জ্ঞাপন করতে পারি না যে, তাঁর “সারগর্ভ বানীর” জন্যে তিনি ছিলেন অলৌকিক প্রাধিকার প্রাপ্ত “একজন রাসূল” তোমরা মুসলমানেরা যেমনটি দাবী করো!
এইসব সহানূভূতিসূচক অথচ সন্দেহাকুল মনোবৃত্তির ধারকদের সন্দেহ নিরসনের জন্য এই মহাগ্রন্থের ( আল কুরআনের) গ্রন্থকার (আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন) অনেক যুক্তিরই অবতারণা করেছেন। এইসব নাস্তিক ও অজ্ঞেয়বাদী, এইসব অবিশ্বাসী ও সন্দেহবাদী, যাদের বৈজ্ঞানিক ধ্যান ধারণা অত্যন্ত প্রখর এবং নিজেদেরকে যারা মনে করেন অসাধারণ বুদ্ধিজীবী, এই বিশেষ বিষয়টি তাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় মূল বস্তুটির দিকে, যেথানে সত্যিকারভাবেই তাঁরা যথার্থ বামনের মতো—সেই সব বামনের মতো, যারা তাঁদের শারীরবৃত্তীয় একটি বিশেষ অংশের ক্ষতি স্বীকার করে- ছোট্ট দেহের উপর বিরাট মস্তকের ন্যায়, অস্বাভাবিক উন্নতি অর্জন করেছেন। মহান সৃষ্টিকর্তা তাদেরকে প্রশ্ন করেছেন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?