গণিতের কলকব্জা (ক্যালকুলাস, ভেক্টর, টেন্সর)
লেখক: Nayeem Hossain Faruque
প্রকাশনী: তাম্রলিপি
রেটিং: ৭/১০ (বেশ ভালো)
রিভিউ ক্রেডিট : 💕 সোহানুর রহমান সোহান (fb profile)
Cover Image : গণিতের কল কব্জা |
গণিত-বিজ্ঞান লেখক নাঈম ভাইয়ের বইটা কিনেছি মূলত; ইন্টারের ভেক্টর চ্যাপ্টার ও টেনসরের ম্যাকানিজম সম্পর্কে জানতে। বইটাতে আবার ক্যালকুলাসের একদম বেসিক লেভেলে আলোচনা করা আছে, এটাও কিন্তু বইটার ভালো একটা দিক বলা যায়।
তো, রিভিউটা তিনটি অংশে ভাগ করে লিখলাম…
ক্যালকুলাস
পাঠের শুরুতেই ডিফারেন্সিয়েশনের মূল ধারণা এবং ডিফারেন্সিয়েশন কিভাবে কাজ করে এই ব্যাপারগুলো একেবারে ভেঙে ভেঙে ব্যাখ্যা করেছেন, লেখক নাঈম হোসেন ফারুকী।
ইন্টারের শুরুতে যেসব স্টুডেন্ট ক্যালকুলাসের মিনিং-এর তোয়াক্কা না করে, না বুঝেই গটগট করে হিসেব করে ফেলত। তাদের জন্য একেবারে টিনি-মিনি লেভেলের আলোচনা রয়েছে বইটাতে।
‘ডিফারেন্সিয়েশনের ডিপে ঢোকা’ অধ্যায়ে সবচেয়ে ভালো লেগেছে, এসো কিছু সূত্র শিখি অংশটা। এখানে উদাহরণগুলো অনেক কাজের হয়েছে।
আমি (রিভিউয়ার) তো স্টুডেন্ট পড়াই। সেক্ষেত্রে এই উদাহরণগুলো আমার জন্য অনেক দরকারি। বিশেষ করে, ‘কেস ২’ ও ‘কেস ৩’ এর ব্যাখ্যা এক কথায় অসাধারণ।
এরপরে ‘চিহ্নগুলো নিয়ে খেলি’ অংশে, ডিফারেন্সিয়েশনে যে রাশিগুলো ব্যাবহার করি সে রাশিগুলোর কোনটার কাজ কী তার ব্যাখ্যার পাশাপাশি উদাহরণ দিয়ে বুঝানো হয়েছে।
‘ইন্টিগ্রেশনের ইন্টুইশন’ অধ্যায়ে ক্ষেত্রফল আর ইন্টিগ্রেশন অংশের বিস্তারিত আলোচনা ভালো লেগেছে। এখান থেকে বেশ কিছু জিনিষ আগের তুলনায় অনেক ক্লিয়ার বুঝতে পেরেছি।
#দ্বিতীয়_অংশ: ভেক্টর
ভেক্টরের আলোচনায় স্কেলার রাশি ও ভেক্টর রাশির উদাহরণ উপস্থাপনা ভালো হয়েছে।
এরপর উপাংশ, ডট ও ক্রস প্রোডাক্ট-এর আলোচনা বিস্তারিতই করা হয়েছে কিন্তু উদাহরণের দিক থেকে এই আলোচনাগুলো কিছুটা বোরিং লেগেছে।
‘ভেক্টর ক্যালকুলাস’ অধ্যায়ের, ডাইভার্জেন্সে ডাইভ অংশটা ভালো লেগেছে। তবে, এই অধ্যায়ে উদাহরণগুলো আরেকটু সহজ করা উচিত ছিল।
#তৃতীয়_অংশ: টেনসর
এই অধ্যায়টা আমার কাছে নতুন। এখানে Array থেকে শুরু করে; অ্যারে ও টেনসরের সম্পর্ক, ভেক্টর ও টেনসরের সম্পর্ক খুব ইন-ডিটেইলস আলোচনা করা হয়েছে।
টেনসরের র্যাঙ্ক, টেনসরের প্রকারভেদ ইত্যাদি আলোচনার পাশাপাশি চিত্র সংযোজন ও উদাহরণ অনেক অনেক ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে বলবো যে, বইটার এন্ডিং খুবই ভালো হয়েছে।
#সমালোচনা:
বইটার নাম দেখে ভেবেছিলাম, বইটাতে; ক্যালকুলাস, ভেক্টর ও টেনসরের প্রয়োগিক দিকগুলো নিয়েও আলোচনা থাকবে। এইদিক থেকে নিরাস। এক্ষেত্রে, লেখকের প্রতি আশা থাকবে পরবর্তী বইয়ে ক্যালকুলাস, ভেক্টর ও টেনসরের প্রয়োগিক দিকগুলো তুলে ধরা।
ভেক্টরের আলোচনা আরেকটু বিস্তারিত আশা করেছিলাম। টপিকগুলোতে আরও উদাহরণ যোগ করার সুযোগ ছিল। সময় নিয়ে কাজ করলে বইটা থেকে আরও ভালো কিছু পেতাম।
তবে, নাঈম ভাইয়ের পরবর্তী বইয়ে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত পরিসরে লেখা দেখতে চাচ্ছি।
#রিভিউয়ের_শেষ_পর্যায়ে:
মূলত বইটি এস.এস.সি ও ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের শিক্ষার্থীদের জন্য। তবে, ইন্টারমিডিয়েট শুরুর আগে এই বইটা ছাত্র-ছাত্রীদের সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে।
বলতে গেলে, আমরা অধিকাংশ স্টুডেন্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে গণিত ও বিজ্ঞানের বেসিক ব্যাপারগুলো গ্যাপ দিয়ে আসি। পরবর্তীতে ওই গ্যাপগুলো এক্সট্রা বই পড়ে পুষিয়ে নেই। এক্ষেত্রে, ‘গণিতের কলকব্জা’ বইটা অনেকাংশেই হেল্পফুল ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি।
সব মিলিয়ে, বইটা সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে ‘গণিতের কলকব্জা’ বইটার একটা সিরিজ অর্থাৎ দ্বিতীয় পার্ট দেখতে চাই।
তো, গণিতপ্রিয় পাঠকদের ‘গণিতের কলকব্জা’ বইটি পড়ার জন্য নিমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
আজ এ পর্যন্তই! সবাই ভালো থাকবেন।
“গণিতের নিয়মিত চর্চায়, মস্তিষ্ককে শাণিত রাখুন।”
#আরও_তথ্য:
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১১ টি।
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০২২
লিখিত মূল্য: ২৭০ টাকা
রকমারিতে বইটি পেয়ে যাবেন ২৫% ছাড়ে ২০৩ টাকায়।
বইটির রকমারির Link:
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?