বইঃ কিলিং ফ্লোর(লি চাইল্ড)
অনুবাদকঃ আদনান আহমেদ রিজন
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
“অভিজ্ঞদের কাছে শিখেছি, কোন সিদ্ধান্ত নিলে দোনোমোনো করতে নেই।তাতে নিজেরই খতি।আঘাত করলে দ্রুত করো,আর তা করলে সর্বশক্তিতে করো।প্রথম আঘাতের পর যেন দ্বিতীয় আঘাত করতে না হয়।দরকার হলে প্রতারণা করো। যারা ভদ্রভাবে লড়াই করে,তারা প্রশিক্ষণ দিতে পারে না।কেননা আগেই মারা গিয়েছে সব”
প্রথমেই বলি এই বই দিয়েই “জ্যাক রিচার” নামক অসাধারণ ক্যারেকটারটির অগ্রযাত্রা হয়। আত্মবিশ্বাস আর অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ ভারসাম্যে গড়ে ওঠা একজন প্রাক্তন আর্মি সদস্য।
গল্পের গাঁথুনি অসাধারণ, পাঠককে বইয়ের পাতা উল্টাতে বাধ্য করেই যাবে। ছোট ছোট লাইনের গতিসম্পন্ন একেকটা চ্যাপ্টার পড়ার সময় মনে হবে যেন মুভি দেখছি। এখন কি হবে? সে কি করবে? সামনে কি হতে যাচ্ছে?
নিজের ভাইয়ের কাছে শোনা “অন্ধ ব্লেক” নামক এক গায়কের খোঁজে এসে পড়ে মারগ্রেভ নামক শহরে জ্যাক রিচার। আর তার শহরে প্রবেশ করতেই শান্ত শহরটিতে শুরু হয়ে যায় মৃত্যুর তান্ডব। খুনের দায়ে রিচারকে করা হয় গ্রেফতার। শক্ত এলিবাইয়ের কারনে পরের দিন ছাড়াও পেয়ে যায়।অদ্ভুতুড়ে এই শহরটি ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। কিন্তু মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তখন যখন জানতে পারে যে খুন হয়েছে তার নিজের বড় ভাই। মাথায় গুলি করে নৃশংস ভাবে লাথি দিয়ে দেহের সব হাড় ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। নিজের ভাইয়ের সাথে দেখাও হয়নি তার বহুবছর। এর মধ্যে সে কি করছিল? আর এই শহরে তার কি কাজ? ভয়ঙ্কর ক্রোধের সাথে এসব প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খায়। ভাইয়ের এমন মৃত্যুর রহস্যের সমাধান না করে শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করল সে। সঙ্গী হিসেবে জুটে গেল পুলিশ অফিসার রোস্কো আর গোয়েন্দা প্রধান ফিনলে। উদ্ধার হতে থাকল একের পর এক লাশ। রহস্য আরও গভীর হতে শুরু করল। রিচারের সন্দেহ যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা শহরের কোন এক বেআইনি কারবার সম্পর্কে জানত। মুখ বন্ধ করার জন্যই এত আয়োজন। তদন্তে নেমেছে তাই রিচারকেও ছাড় দেয়া হল না। হামলা হল তারও উপর। কিন্তু এত দিনের মিলিটারী জীবনের অভিজ্ঞতা বৃথা যায়নি। মারা পড়ল শত্রুপক্ষের কিছু লোক।খেলাও জমে উঠল।
মনেই হয়নি এটা লেখক লি চাইল্ডের প্রথম নোভেল। আর অনুবাদকও তার ভালো কাজ দেখিয়েছেন। থ্রিলার প্রেমিকদের জন্য একটা ট্রিট এটা।
Leave a comment