কলরব শিল্পী আবু রায়হানের নির্বাচনী ইশতেহার

কষ্ট হলেও পড়ার অনুরোধ করছি।
নির্বাচনী ইশতেহার
 
পদ : নির্বাহী পরিচালক, কলরব
প্রার্থী : আবু রায়হান

 
পটভূমি :
সংস্কৃতি একটা বৃহৎ অর্থবোধক শব্দ। যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন ও সংযোজন-বিয়োজন হয়ে থাকে নিয়মিত। মানুষের সামগ্রিক জীবনের আচার-কর্ম বা আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক নানা অনুসঙ্গ মিলে সংস্কৃতির ব্যাপ্তি। সংগীত তার-ই একটি মূখ্য উপাদান। সংগীত মূলত সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান প্রচারমাধ্যম। পৃথিবীর প্রত্যেকটা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব, ভাষা, বিশ্বাস, ধর্ম, জীবনযাপন, সামাজিক সম্পর্ক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব বহন করে। সবকিছুর প্রকাশমধ্যম হিসেবে সবথেকে শক্তিশালী রূপ হিসেবে কাজ করে সংগীত। সংগীত সাহিত্যেরও প্রধানতম একটি শাখা। সাহিত্যের আদিশাখা বা মাতৃশাখা হলো ছন্দ। এই ছন্দের-ই বর্ধিত সংস্করণ সংগীত। সংগীতের মাধ্যমে মানুষ সবথেকে সহজ, সাবলীল এবং আকর্ষণীয়ভাবে নিজেদের জীবনাচার, কৃষ্টি-কালচার, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিশ্বাসের কথা বলতে পারে। তাই আমরা সংগীতকে বলতে পারি সংস্কৃতির ‘মুখপাত্র’। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের রয়েছে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। বিভিন্ন জাতি উপজাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা বৈচিত্র্যতা আমাদের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধ করেছে। দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ায় ইসলামী রীতিশুদ্ধ সংস্কৃতি বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে অনেক বেশি পরিশীলিত এবং পরিশুদ্ধ করেছে। তথাপিও আমরা যদি অশালীন এবং বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সামাজিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংস্কৃতির অন্তর্দৃষ্টি করি তাহলে দেখতে পাই পশ্চিমা অপসংস্কৃতি এবং শুদ্ধ সংস্কৃতির একটা লড়াই যুগ যুগ ধরে চলছে। আমরা এটাকে ইসলামী এবং ইসলাম বিরোধী অপসংস্কৃতি হিসেবে চিত্রায়িত করতে চাই না। আমরা বলতে চাই অপসংস্কৃতি এবং শুদ্ধ সংস্কৃতির লড়াই। বাংলাদেশে শুদ্ধ সংস্কৃতির মুখপাত্র হিসেবে সংগীতের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন কলরব বর্তমানের গোটা দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করছে, আলহামদুলিল্লাহ। শুদ্ধ সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারে শুদ্ধ সংগীতকে মাধ্যম হিসেবে নিয়েছে জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব। ২০০৪ সালে কলরব এর প্রতিষ্ঠা করেছেন আমাদের নায়ক, ইসলামী সংগীতের কিংবদন্তি মরহুম আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ.। আমাদের এই মহিরুহ’র চিন্তা, শ্রম, ঘাম, স্মৃতির মিশ্রণ আজকের কলরব। ২০১০ সালে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আজাদ রহ. এর শাহাদাত বরণের পর তার-ই পরিশ্রমকে পুঁজি করে কলরব আজকের অবস্থানে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে দেশের শুদ্ধ সংস্কৃতি, শুদ্ধসংগীত প্রিয় মানুষের আস্থার প্রতিবিম্ব হয়ে। জাতীয় পর্যায়ে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বোধ-বিশ্বাস লালন করে পরিচালিত একটি সংগঠনের একটি সুনির্দিষ্ট সাংগঠনিক কাঠামো, নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা থাকা, সুস্পষ্ট ভিশন ও মিশন থাকা প্রাসঙ্গিক একটি আবশ্যিক দাবি। দীর্ঘদিন ধরেই কলরব ভক্ত, শ্রোতা, প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য, উপদেষ্টা, নেতৃত্বসহ সকল পর্যায়ে এই দাবি সুপ্ত ছিলো। একেবারেই যে, অনুচ্চারিত ছিলো তা নয়। হয়ত, আমরা অনেকে বিক্ষিপ্ত এবং বিচ্ছিন্নভাবে এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলাম কিন্তু সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘসময় পর হলেও সেই যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে। ইতিমধ্যে কলরব পরিচালনার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও সাংগঠনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে যে একেবারেই ছিলো না তা নয়। ছিলো তবে কিছুটা গতানুগতিক, অপূর্ণাঙ্গ এবং অপরিশুদ্ধ। যার কারণে আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ. এর সেই বিপ্লবী চেতনা, সুর ও স্মৃতি অনেকটা অনালোচিত ছিলো। যার কারণে সময়ে সময়ে কলরব ভক্তরা প্রায়শই অভিযোগ, অনুযোগ জানাতো বিভিন্ন মাধ্যমে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের সেই আক্ষেপের ক্ষতগুলো সারাতে কলরব পরিবারের আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। তারই ধারাবাহিকতায় সদ্য প্রণিত সাংগঠনিক নীতিমালার আলোকে স্থায়ী পরিষদের সুপারিশে কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাহী পরিচালক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৭ অক্টোবর ২২’ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাহী পরিচালক পদে প্রার্থী হিসেবে আমি আবু রায়হান নিজের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি।
 
 
 
 
 
ধারা : ১
 
 
শৃঙ্খলা : পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র বা সংগঠন; সর্বক্ষেত্রে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও পরিশীলিত সম্পর্ক তৈরীতে শৃঙ্খলা পূর্বশর্ত। ইনশাআল্লাহ আমরা কলরবে পূর্ণাঙ্গ শৃঙ্খলা নিশ্চিতে যা যা করা দরকার তার সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করবো।
 
 
ধারা : ২
 
সংগঠন : কলরব সর্বজন স্বীকৃত একটি শুদ্ধধারার জাতীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন। এই সংগঠনের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি সাধনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করবো। তার কিছু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো :
 
২.ক
সদস্য সংগ্রহ : কলরব এর সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিকে আরো বেগবান করার মাধ্যমে আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কাছে কলরবের আওয়াজ পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর থাকবো। এর জন্য আরো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সাংগঠনিক কাঠামোকে বড় করবো ইনশাআল্লাহ। 
 
২.খ
মান নির্ণয় : কলরব এর গর্বিত সদস্য তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট মান প্রতিষ্ঠা করা হবে। যার ভিত্তিতে শুদ্ধ সংস্কৃতির বার্তাবাহক হিসেবে কলরব এর অংশ হয়ে যোগ্য ব্যক্তিরা কলরবকে আরো সমৃদ্ধ করবে।
 
২.গ
সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা : সারাদেশে বৃহৎ পরিসরে সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ড পরিচালিত করার মাধ্যমে শিল্পী, সংগঠক এবং সুধীজন তুলে আনার জন্য আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
 
২.ঘ
রেজিস্ট্রেশন : দেশব্যাপী নির্বিঘ্নে কর্ম পরিচালনার লক্ষ্যে কলরব এর রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে আরো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
 
২.ঙ
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল : আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কলরব এর অবস্থান আরো জোরদার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে।
 
২.চ
অভ্যন্তরিণ মতবিনিময় : বছরে অন্তত একবার কলরব পরিবারের স্বশরীরে অংশগ্রহণমূলক অভ্যন্তরিণ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে।
 
২.ছ
পরামর্শ কেন্দ্র : সদস্যদের অভিযোগ, পরামর্শ গ্রহণ ও মূল্যায়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে। এই লক্ষ্যে অভিযোগ ও পরামর্শ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।
 
 
ধারা : ৩
 
অস্তিত্ব : কলরব এর অস্তিত্ব আরো জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করবো। সাংগঠনিক ভিত্তি উত্তরোত্তর মজবুত করা হবে। সে লক্ষ্যে বেশ কিছু কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা যা করবো :
 
৩.ক
ইউটিউব চ্যানেল : যেকোনো বক্তব্য, বিবৃতি, বিশ্বাস, চিন্তা ও আদর্শের কথা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বর্তমান সময়ে সহজ এবং বৃহৎ মাধ্যম। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মাঝে ইউটিউব অন্যতম একটি উপায়। কলরব এর বক্তব্য ও চর্চা অফিসিয়ালি পৃথিবীর সর্বপ্রান্তে ছড়িয়ে দিতে ‘কলরব’ ইউটিউব চ্যানেল তৈরী এবং যথাযথ উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া হবে। যদিও কলরব এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের অস্তিত্ব থাকা আরো আগেই যুক্তিসঙ্গত ছিলো। কলরব সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবিও ছিলো। অদৃশ্য কারণে সেটা হয়ে উঠেনি। আমরা সেটা করবো ইনশাআল্লাহ।  
 
৩.খ
ফেসবুক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বহুল ব্যবহৃত আরো একটি মাধ্যম ফেসবুক। দীর্ঘদিন ধরে কলরব এর অফিসিয়াল ফেসবুক প্রোফাইল অবহেলিত হয়ে আসছে। আমরা এর সুফল প্রয়োগে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
 
৩.গ
স্টুডিও : কলরব এর তালিকাভুক্ত শিল্পীদের সংগীত নির্মাণে সহজলভ্যতা আনতে সর্বাধুনিক এবং সমৃদ্ধ স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটিও কলরব এর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিলো। সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে সেটা হয়ে উঠেনি। ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো।
 
৩.ঘ
অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম : টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইনসহ অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্মগুলোর সঠিক ব্যবহার করে কলরব এর প্রচার, পরিচিতি, কর্মসূচি আরো ব্যাপকভাবে বেগবান করা হবে।
 
 
 
 
ধারা : ৪
মানোন্নয়ন : শিল্পী, সংগঠন, সংগঠক এবং সর্বস্তরের সদস্যদের শিক্ষা, যোগ্যতা, দক্ষতা, আত্মিক, প্রায়োগিক মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করবো। এর জন্য যা যা করবো : 
 
৪.ক
সাহিত্য চর্চা : সংগীত সাহিত্যেরই একটা অংশ। একটি মানসম্মত গীত থেকেই ভালো একটি সংগীত আমরা পেয়ে থাকি। সুতরাং সংগীতের মানোন্নয়নে নিয়মিত সাহিত্য চর্চার ব্যবস্থা করবো। এরজন্য দেশসেরা লেখক-সাহিত্যকদের অংশগ্রহণে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
 
৪.খ
সংগীত চর্চা : দেশব্যাপী শুদ্ধ সংগীতচর্চা ছড়িয়ে দিতে নিয়মিত বিভিন্ন আয়োজন ও পদক্ষেপ নেয়া হবে। সংগঠনের প্রত্যকে সদস্যের উন্নতির ব্যাপারে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হবে। এজন্য নিয়মিত সিনিয়র শিল্পী এবং সংশ্লিষ্ট দক্ষ জনবল দিয়ে শিল্পীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। 
 
৪.গ
সেন্সরবোর্ড : সংগীতের মান নিশ্চিতে সেন্সরবোর্ড গঠন করা হবে। সেক্ষেত্রে সংগীতের কথা, সুর, ভিডিও নির্মাণে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সেন্সরবোর্ড গঠন করা হবে। কলরব এর ব্যানারে সেন্সরবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সংগীত কেবলমাত্র কলরব এর প্রকাশনা হিসেবে বিবেচিত হবে।
 
৪.ঘ
সম্মানি : একটি মানসম্মত সংগীত নির্মাণে গীতিকার, সুরকার, শিল্পী ও নির্মাতাদের যথাযথ সম্মানি প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
 
৪.ঙ
দেশব্যাপী : কলরব এর ব্যানারে প্রতিবছর রাজধানীসহ সারাদেশে বিভাগীয় পর্যায়ে বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
 
৪.চ
বিভিন্ন ভাষায় সংগীত নির্মাণ : আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কলরব এর পদচারণা বৃদ্ধি এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে বিভিন্ন ভাষায় সংগীত নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ।
 
৪.ছ
অ্যাওয়ার্ড : বাৎসরিক কর্মসূচির আওতায় প্রতিযোগীতা, কর্মকৌশল, যোগ্যতা, দক্ষতা ও অংশগ্রহণ বিবেচনায় পুরস্কার, সম্মাননা ও অ্যাওয়ার্ড প্রদানে পরিকল্প গ্রহণ করা।
 
 
ধারা : ৫
 
আত্মোন্নয়ন : কলরব পরিবারের বিশেষত শিল্পীদের আত্ম-উন্নয়নে দক্ষতাভিত্তিক নানামুখী শিক্ষা, যোগ্যতা, কর্মক্ষেত্র তৈরী ও বিস্তৃতির চেষ্টা করা হবে। 
 
৫.ক
শিক্ষা : শিল্পীদের পড়াশোনার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। প্রচলিত কথিত যে বদনাম; শিল্পীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়, এই ধারণা পরিবর্তনে সর্বোচ্চ সচেষ্ট হবো।
 
৫.খ
থাকা-খাওয়া : শিল্পীদের সঙ্গত প্রয়োজনে মনোনীত শিল্পী ও কলরব পরিবারের সদস্যদের অফিসিয়ালি মানসম্মত থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার ব্যাপারে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
 
৫.গ
সিনিয়র শিল্পীদের সম্মাননা : সিনিয়র শিল্পীদের সম্মান ও পরিশ্রমের যথাযথ মূল্যায়নকল্পে নির্দিষ্ট সময় সাপেক্ষে সম্মানির (পেনশন) উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
 
৫.ঘ
কল্যাণ ফান্ড : সংগঠনের যেকোনো সদস্য কোনো ধরণের দুর্ঘনা, আর্থিক সমস্যা বা বিপদে পতিত হলে সাধ্যমতো সহযোগিতার লক্ষ্যে আলাদা কল্যাণ ফান্ড গঠন করা হবে।
 
৫.ঙ
কর্জে হাসানা প্রকল্প : সামর্থবানদের সাময়িক বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে কর্জে হাসানা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
 
৫.চ
প্রোগ্রাম আয় : কলরব এর অফিসিয়াল কার্যক্রমে কলরব পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হবে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজে, যেমন- সাউন্ড ডিজাইন, ভিডিও নির্মাণ, গ্রাফিক্সসহ বিভিন্ন খাতে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো হবে। এতে করে আত্মকর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে।
 
 
ধারা : ৬
 
আত্মিক উন্নয়ন : শিল্পীদের আত্মিক উন্নয়নে নিয়মিত দেশের শীর্ষ-বুজুর্গ ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত তারবিয়ত প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
 
৬.ক
ড্রেসকোড : পোশাক মানুষের রুচির বাহ্যিক প্রদর্শনী। পোশাকের মাধ্যমে ব্যক্তির রুচি ও শালীনতা প্রকাশ পায়। সুতরাং উলামায়ে কেরামের পরামর্শে কলরব এর সুনির্দিষ্ট ড্রেসকোড প্রণয়ন করা হবে।
 
৬.খ
চারিত্রিক উন্নতি : চারিত্রিক উন্নতির জন্য নিয়মিত আধ্যাত্মিক তারবিয়তের পাশাপাশি শুদ্ধতা ও শৃঙ্খলার চর্চা জোরদার করা হবে।
 
৬.গ
সামাজিক সম্পর্ক : শালীন সামাজিক সম্পর্ক ও দক্ষতা উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দক্ষ প্রশিক্ষকের মাধ্যমে কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে।
 
 
ধারা : ৭
 
আন্তঃসাংগঠনিক সম্পর্ক বৃদ্ধি : ইসলামী সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে যারা কাজ করে এমন সকল সংগঠনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হবে।
 
৭.ক
সভা : মাসিক, ষান্মাসিক, বাৎসরিকভাবে সময় ও সুযোগ সাপেক্ষে আন্তঃসাংগঠনিক সভার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
 
৭.খ
আত্মপর্যালোচনা : আত্মপর্যালোচনা, আত্মসমালোচনার অভ্যাস তৈরীর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠনের সাথে পারস্পরিক বিভিন্ন বিভেদ ঘুচিয়ে আন্তরিক সম্পর্ক তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হবে।
 
 
ধারা : ৮
 
আর্থিক স্বচ্ছতা : সর্বক্ষেত্রে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। আর্থিক ফান্ড মজবুত করতে যথাযথ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
 
৮.ক
সুষম বন্টন : সারাদেশে বিভিন্ন প্রোগ্রাম, সামাজিক মাধ্যম, স্পন্সর, ডোনেশন সহ কলরব এর সার্বিক আয়-ব্যয়ের সুষ্ঠু তদারকি, স্বচ্ছতা ও সুষমবন্টন নিশ্চিত করা হবে।
 
৮.খ
ভাতা প্রদান : নিয়মিত শিল্পীদের চুক্তিভিত্তিক বেতনের আওতায় আনার উদ্যোগ সাপেক্ষ নির্দিষ্ঠ কাঠামোয় বেতন-ভাতা কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হবে।
 
 
 
 
ধারা : ৯
মানবকল্যাণ ফান্ড : আমরা মানুষ। মানুষকে নিয়েই যেহেতু আমাদের কাজ সেহেতু মানুষের সার্বিক মানবিক কল্যাণে কাজ করার  জন্য মানবকল্যাণ ফান্ড তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হবে। অপসংস্কৃতি থেকে ফিরিয়ে মানুষের আত্মিক উন্নয়নে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মূলত মানবকল্যাণেই কাজ করছে কলরব। সুতরাং মানুষের জাগতিক নানা বিপদ-আপদে পাশে থাকাটাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সুতরাং মানুষের বিপদে-আপদে, দূর্যোগে পাশে দাঁড়াতে নির্দিষ্ট কল্যাণ তহবিল গঠন করা হবে।
 
 
ধারা : ১০
 
১০.ক
সুস্বাস্থ : সুষ্ঠুভাবে যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সুস্বাস্থ অন্যতম নেয়ামক। সেজন্য কলরব পরিবারের শারীরিক-মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে প্রয়োজনমাফিক যথাযথ নির্দেশনা এবং উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
 
প্রশান্তি : শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তির জন্য কার্যকর প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। বিশেষ করে ভ্রমণ, পাঠাগার, শালীন বিনোদন, খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা ও করা হবে।
 
 
ধারা : ১১
 
 
আর্থিক সমৃদ্ধি : সর্বোপরি যা কিছুই করতে চাই তার জন্য প্রয়োজন হবে অর্থ। আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে নানামুখী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
 
১১.ক
পারস্পরিক যোগাযোগ : শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চাকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ। বিশেষত, প্রযোজক এবং প্রযোজন প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ উন্নীত করে প্রডাকশন বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ।
 
 
ধারা : ১২
 
কলরব কমপ্লেক্স : কলরব একটি জাতীয় সংগঠন।  সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কলরব এর অসংখ্য ভক্ত, শ্রোতা, শুভাকাঙ্ক্ষী, পরামর্শক, নির্দেশক ও আপনজন। সেই সাথে কলরব পরিবার বিস্তৃত হয়েছে বিশ্ব-পরিমণ্ডলে। সকলেরই প্রাণের দাবি বৃহৎ পরিসরে কলরব পরিবারের একটা বসার জায়গা হোক। সেই লক্ষ্যে ধীরে ধীরে কলরব কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করবো। শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার একক, মৌলিক এবং সমন্বিত উন্মুক্ত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেখান থেকে শুদ্ধ সংস্কৃতির নেতৃত্ব দেয়া হবে। তৈরী হবে আগামীর নেতৃত্ব।
 
১২.ক
আবাসন : কমপ্লেক্সে কলরব এর স্থায়ী সদস্য ও শিল্পীদের আবাসনের লক্ষ্যে কর্মপরিল্পনা গ্রহণ করা হবে।
 
১২.খ
পরিবহন : সারাদেশে অফিসিয়াল সফর ও বিভিন্ন প্রোগ্রামে যাতায়াত সহজ করার লক্ষ্যে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
 
উপসংহার : পরিশেষে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, প্রাণের মানুষ, আমার শ্রদ্ধাভাজন উস্তাদ, ইসলামী সংগীতের কিংবদন্তি, এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বিপ্লবী কন্ঠ, শুদ্ধ সংস্কৃতির অগ্রসেনানী মরহুম আঈনুদ্দীন আল আজাদ রহ.কে। তার সেই বিপ্লবী চেতনা ও আদর্শকে বুকে লালন করে সেই পথেই এগিয়ে যাবো। সর্বোপরি আমার নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তাবায়নে আন্তরিকতার সাথে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। বিশেষ করে আজাদ রহ. এর স্মৃতি, আদর্শ, তার অস্তিত্ব রক্ষায় অগ্রাধিকারভাবে প্রাণপণে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
 
বিনীত,
আবু রায়হান
সিনিয়র শিল্পী, কলরবe
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?