Title | এবং একা |
Author | আরিফুর রহমান |
Publisher | অন্যধারা |
Quality | হার্ডকভার |
ISBN | 9789849518891 |
Edition | 1st Published, 2021 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
সুখের লাগি চাহে প্রেম,প্রেম মিলে না
———রবী ঠাকুর
আধুনিক সমাজের একটা ভয়ংকর রুপ কি সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন এই বই’য়ে।
ভালোবেসে বিয়ে করার পরোও,এমন পরিনতি,কি করে সম্ভব রিভিউ পড়েই বইটি পড়ার জন্য উতলা ছিলাম।
বইটি’তে,চরিত্র গুলো যেনো জ্বলজ্বল করে পড়ার সময়।বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার কি সুনিপুণ কারুকার্য শোভিত হয়েছে লেখায়। লেখকের জন্য শুভকামনা নিরন্তর।
এবং একা
লেখক: আরিফুর রহমান
প্রথমেই বইটির প্রচ্ছদ আমার মন কেড়েছে। প্রচ্ছদটি করেছেন চিত্রশিল্পী চারু পিন্টু।
অর্থ-সম্পদ মানসিক সুখ দিতে পারে না; তাঁর নিদারুণ উদাহরণ হলো এবং একা উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র জয়ীতা।
শুরুরদিকে লেখক সামাজিক অনেক দিকও তুলে ধরেছেন, যা থেকে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
উপন্যাসে, শাহেদের সাথে জয়ীতার পরিচয় না হলে, হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো। হয়তো এমন ঝড়ে ঝরতে হতো না তাঁকে। যেই ঝড় তনুতার সব কেড়ে নিয়েছে। সুখী মেয়েটাকে কাবু করেছে এক পৃথিবী দুঃখ। করেছে বিষন্ন এবং একা!
বাকি জীবনটা কীভাবে কাটিয়েছে তনু! তা জানতে হলে অবশ্যই উপন্যাসটি পড়তে হবে আপনাদের।
খলিল সাহেব এবং দ্বিতীয় খলিল সাহেব এর কথোপকথন খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। আমার কাছে এই অংশটুকু বেশ ভালো লেগেছে। খলিল সাহেবের মৃত্যুর আগেকার কথাগুলো শুনে আমি আর অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। চোখ ভিজে গেছে। লেখকেরও কী চোখ ভিজেছিল এমন বেদনাদায়ক মুহূর্ত শব্দবন্দি করতে?
তনুতা, শাহেদ এবং জয়ীতা। উপন্যাসের এই তিনটি চরিত্রকে আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। এ-ও জানি এটা কখনোই সম্ভব না। কিন্তু বই পড়ার মজাটাই এখানে।
সীমাহীন সুখ নিয়ে যাত্রা করা উপন্যাসটি শেষপর্যন্ত তাঁর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। কাঁদিয়েছে খুব। দুঃখের সাগরে ভাসিয়েছে। সুখ আসলে এমনই হয়। খুব বেশিদিন মানুষকে তাঁর ভালো লাগে না। একটা সময় পর সে মানুষকে দুঃখের হাতে তুলে দেয়। আর দুঃখ বড়ো নির্দয়। সাতার না জানা মানুষটিকেও কি নিদারুণভাবে তাঁর সাগরে ভাসায়!
ফ্ল্যাপে দেওয়া লেখকের কথা অনুযায়ী ‘এবং একা’ কাঁপিয়ে দিতে পেরেছে আমার হৃদয়ের গহীন। অন্যধারা থেকে প্রকাশিত ‘এবং একা’র প্রোডাকশন মান যথারীতি বেশ ভালো ছিল। তবে প্রুফ রিডিং-এ আরেকটু সচেতন হলে ভালো হতো। সবদিক বিবেচনায়, ‘এবং একা’ আমার ভালো লেগেছে। নিঃসংকোচে সংগ্রহ করতে পারেন বইটি। ভালো লাগবে।
কাহিনী সংক্ষেপ
শাহেদ আর তনুতা ওরফে “তনু” দম্পতির নিত্য কথোপকথন এর মাধ্যমে শুরু হয় পটভূমি। দম্পতির ভালোবাসা একে অপরের প্রতি খুব বেশি পরিলক্ষিত হয়। তারা যেনো একে অপরের পরিপূরক। এভাবে চলতে থাকে একদিন অফিসে যেয়ে একটি চিরকুট হাতে পায় শাহেদ। তাতে সুন্দর করে তার প্রিয়তমা লিখেছে, শাহেদ পিতৃত্বের স্বাদ পেতে যাচ্ছে। আর ধরে কে তারে!
সে তো খুশিতে আত্নহারা স্বাভাবিক-যে কোনো পুরুষের জন্য এই খবর
সে বৌ’কে সারপ্রাইজ দিতে ৮০ রকমের ফুল আর অনেক কয়েক রকমের মিষ্টি কিনে বাসায় ফিরে।
সে বাসায় ফিরলে,তনু তার কীর্তি দেখে তো পুরোপুরি হতবাক
যাই হোক, এভাবে চলতে চলতে একদিন হঠাৎ শাহেদ চাকুরীচ্যুত হয়।সে যেনো আকাশভেঙ্গে পড়ে। না পারে কাউকে জানাতে,সে ভিতর ভিতর পুড়ে মরছিলো দুশ্চিন্তায়।প্রিয়তম স্ত্রী কেও জানাতে অপারগ সে।কারন,এতো খুশির সময় তাকে কিভাবে সে বিমর্ষ করতে পারে।
কোথায় যাবে,কি করবে -অফিস সময়ে ভেবে, একদিন হঠাৎ তার প্রিয় বন্ধু মাহফুজ এর কথা মনে হয়।তারা ভার্সিটিতে একই ব্যাচমেট ও খুব ভালো বন্ধু ছিলো।যদিও তার ঠিকানা জানতোনা তবে খোঁজ করে পেয়ে যায়।
সুখ দুঃখের কত কথা হয় তাদের। কিন্তু, মাহফুজের সাথে জয়ীতা নামক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর সম্পর্ক ছিলো।যদিও পরে জয়ীতা -মাহফুজ কে পছন্দ করতো না। কিন্তু মাহফুজ একগুঁয়ে ছিলো।যেকোনো মুল্যে তাকে পেতে চাইতো।
জয়ীতার সাথে শাহেদ এর পরিচয় হয় মাহফুজের মাধ্যমে। একপর্যায়ে তারা প্রণয়ে আবদ্ধ হয়ে যায়। সময়ের ঢেউ বয়ে যায়। একপর্যায়ে শাহেদ জয়ীতার সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে নেয়।জয়ীতা তাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চায়……
একপর্যায়ে,মাহফুজ মেনে নিতে পারেনা।তাদের পরিকল্পনা করে হত্যা করে। দোষ চাপে তনুতার কাঁধে।কিন্তু আসল ক্ষুনি মাহফুজ ঠিক ই ধরা পড়ে যায়।
তনুতার জন্য খুব কষ্ট হয়। তাদের ফুটফুটে বাচ্চা হয় স্বচ্ছ কিন্তু, ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন।
পরিশেষে, বর্তমানে ৭০% দাম্পত্য জীবনে এমন ঘটনা দেখা যায়। কিন্তু কেনো?শাহেদ -তনু তো ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো একে অপরকে। তাহলে,কেনো করুন পরিনতির শিকার হলো।তাদের ভুলের কারনে একটা সন্তান এর ভবিষ্যত নষ্ট করার কি দরকার। যাকে বিয়ে করেছেন, তাকে নিত্য নতুন রুপে আগলে রাখুন, না।আমরা মানুষ। প্রেম আছে বলেই জগৎ সুন্দর। কিন্তু, তাই বলে অন্যের হক নষ্ট করে সুখ খুঁজে লাভ কি?
মনের লাগাম আসলে আমাদের নিজ হাতে।নিয়তির দোষ দিয়ে লাভ নেই বিন্দুমাত্র।নিজেকে সংযত রাখতে চেষ্টা করতে হবে। সুখে দুখে পাশের মানুষ কে বোঝার ক্ষমতা রাখতে হবে।ক্ষনিকের ভালো থাকা কে প্রশ্রয় দিয়ে আজীবন দুঃখ পাওয়ার মানে কি????
সবাই বইটি পড়েন,অনেক টুইস্ট রয়েছে বইটিতে।বিশেষ করে, যারা কিনা লাভ ম্যারেজড
অনেক অনেক শুভকামনা রইল প্রিয় বইবৃক্ষের জন্য দুর্বার শক্তিতে এগিয়ে যাও শত বাধা পদদলিত করে এই প্রত্যাশা নিরন্তর।
বিঃদ্রঃ
অনেক ধন্যবাদ @Erfan ভাইজান’কে।এতো সুন্দর একটা বই পড়তে দেয়ার জন্য। সবসময়ই শুভকামনা রইবে আপনার জন্য। আপনারা আছেন বলেই,বই পড়তে বেশ সুবিধা হয়।
Review Credit 💕
রাব্বী আলি আল আমান
সম্মান ৩য় বর্ষ(হিসাববিজ্ঞান বিভাগ)
নওগাঁ সরকারি কলেজ, নওগাঁ।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?