একজন সারেন্ডার্ড ওয়াইফের কিছু সাধারণ মূলনীতি

“সৎকাজ নিজেই নিজের শ্রেষ্ঠতম পুরস্কার।” – সিলিয়াস ইটালিকাস।

স্বামীর কাছে আত্মসমর্পণ মানে এই নয় যে, আপনাকে পঞ্চাশের দশকে ফিরে যেতে হবে অথবা নারীবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হবে। 
নিজেকে নিস্তেজ বা কাঠখোট্টা করে দেওয়া সম্পর্কিত বই এটি নয়। 
এটি অবশ্যই পরাধীনতার পক্ষে কোনোরকম সমর্থন করে না। 
বরং এই বইয়ে এমন কয়েকটি সাধারণ মূলনীতি তুলে ধরা হয়েছে, যেগুলো আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ পরিবর্তনে সাহায্য করবে। পুনরুদ্ধার হবে দাম্পত্যের অন্তরঙ্গতা। যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দাম্পত্য জীবনে দুজনেরই সেরাটা বেরিয়ে আসবে। একসাথে হবে দুজনের আত্মিক উন্নতি। আত্মসমর্পণ জিনিসটা একইসাথে প্রীতিকর ও ভীতিকর, কিন্তু এর ফলাফল—দুজনের মধ্যে ভালো লাগা, তৃপ্তি, শান্তি, আনন্দ সৃষ্টি—এ সবই একদম প্রমাণিত। 
একজন আত্মসমর্পণকারী স্ত্রী সাধারণ মূলনীতি হলো:
* তিনি স্বামীকে অযথা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা ত্যাগ করেন।
* স্বামীর চিন্তাভাবনাগুলোকে সম্মান করেন।
* তার দেওয়া উপহারগুলো আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
* স্বামীকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করেই নিজের ইচ্ছেটা খোলা মনে বলে ফেলেন।  
* আর্থিক বিষয়গুলোর জন্য স্বামীর ওপর নির্ভর করেন।
* নিজের যত্ন নেওয়া এবং সফলতার প্রতি মনোযোগ দেন।
একজন আত্মসমর্পণকারী স্ত্রী হলেন তিনি: 
* ঘ্যানঘ্যানকারী হওয়ার বদলে এখন মুখাপেক্ষী।
* নিয়ন্ত্রণপ্রবণতা ছেড়ে দিয়ে এখন আস্থাশীল।
* অপমান করার স্বভাব ছেড়ে দিয়ে এখন শ্রদ্ধাশীল। 
* অসন্তুষ্ট হওয়ার বদলে এখন কৃতজ্ঞচিত্ত।
* সন্দেহপ্রবণতা বাদ দিয়ে এখন বিশ্বাসী। 
যে স্ত্রী আত্মসমর্পণকারী, তার সংসারে সংকীর্ণতার বদলে প্রাচুর্য আসে, এবং সাধারণত সঞ্চয় বাড়ে। যৌনসম্পর্কও হয় আগের চেয়ে অনেক সন্তোষজনক ও নিবিড়।  
আমার বোন হানা চাইল্ডস বলরুম নাচের শিক্ষক। ‘সারেন্ডার্ড ওয়াইফ’ দর্শনকে নিজের এই পেশাগত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, “বিয়েতে বলরুমে নাচের সময় একজন নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন এবং অন্যজন সেটা অনুসরণ করেন। তবে এখানে উভয়ের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ। এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, যিনি অনুসরণ করার ইচ্ছেটা দমাতে পারেন।”  
ফ্রেড অ্যাস্টেয়ারের ব্যাপারে জিনজার রজার্স একবার বলেছিলেন, “সে যা করে, আমি তা-ই করি। তার পেছন পেছন, তাও হাই হিল পরে।” ফ্রেড আর জিনজার সমমানের দক্ষ ও মেধাবী নাচিয়ে। কিন্তু যদি দুজনই নেতৃত্ব দেওয়ার (বা অনুসরণ করার) চেষ্টা করতেন, তাহলে একে অপরকে বিপরীত দিকে টানতে থাকা ছাড়া আর কিছুই হতো না। ছন্দ মেলানো তো দূরের কথা, একজন আরেকজনের ওপর পাড়া পড়ে যেত একসময়। এর বদলে ফ্রেডকে নেতৃত্বদানের সুযোগ দেন জিনজার। তার প্রতি আস্থা রাখেন যে, তিনি তাকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন। দুজনে হয়ে ওঠেন পরস্পরের মেধার প্রতিবিম্ব।
আমিও চাই আমার স্বামী এভাবে আমার মধ্য থেকে সেরাটা বের করে আনুন।
বই : সারেন্ডার্ড ওয়াইফ
লেখিকা : লরা ডয়েল
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?