“বিয়ে” দুই অক্ষরের শব্দটির অর্থ যেনো স্বপ্নের ভেলা। তরুণ তরুণীদের কাছে বিয়ে মানে বহুল আকাঙ্ক্ষিত সেই জগৎ যেখানে থাকবে সীমাহীন আনন্দ। অনেক অনেক খেয়াল রাখা। ঘুরাঘুরি করা। বারান্দাবিলাস। দুজন একসাথে কফি খাওয়া। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আসলেই কী তাই!
বিয়ে মানেই ফানুস না, কোনো স্বপ্ন না। বিয়ে একটা ইবাদাত। বিয়ে হলো উত্তম সুন্নাহ। বিয়ে একটা পবিত্র বন্ধন। বিয়ে একটা পরীক্ষা। বিয়ে মানে স্বেচ্ছায় দায়িত্ব গ্রহণ করে নেওয়া। বিয়ে মানে আমি থেকে আমরা হয়ে যাওয়া। বিয়ে মানে কম্প্রোমাইজ। বিয়ে মানে মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়া।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, “এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে যাতে তোমরা তাদের সাথে শান্তিতে বাস করতে পার এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে।” [১]
বিয়ের মাধ্যমে— লজ্জাস্থানের হেফাজত করা যায়, কুদৃষ্টি থেকে, অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকা যায়। বিয়ের মধ্যেই একজন লোকের সমস্ত সুখ শান্তি নিহিত। বিয়ের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তির দ্বীন অর্ধেক পূর্ন হয়ে যায়। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “যে ব্যক্তি বিয়ে করলো তার ঈমানের অর্ধেক পূর্ণ হয়ে গেলো, বাকি অর্ধেকের জন্য যেন সে আল্লাহকে ভয় করে।” [২]
বিয়ে কোনো ফ্যান্টাসি নয় যে ইচ্ছে হলো আর বিয়ে করে ফেললাম। বিয়ের আগে রয়েছে নানারকম প্রস্তুতি। শারীরিক, মানসিক, আর্থিক। তবে বিয়ের প্রথম এবং প্রধান প্রস্তুতি হচ্ছে নিজের ঈমান, আমলকে পরিশুদ্ধ করা। যত বদভ্যাস, গুনাহের কাজ রয়েছে সেসব ছাড়তে হবে। আল্লাহর কাছে তাওবা করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। কারো বাড়ি, গাড়ি, টাকা, পয়সা থাকলেও ঈমান, আমল পরিশুদ্ধ না হলে আমরা তাকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত বলতে পারি না৷ আবার কারো ঈমান, আমল ঠিক থাকলে অন্য কিছু না থাকলেও সে বিয়ের জন্য প্রস্তুত।
তাই বিয়ের আগে ঈমান, আমল সংশোধন আবশ্যক। হতে পারে কেউ খুব করে বিয়ের জন্য দু’আ করছে। কিন্তু দু’আ কবুল হচ্ছে না। এর কারণ হতে পারে, আল্লাহ তার জন্য তার ভাগ্যে উত্তম কাউকে রেখেছেন। তার নিজের মধ্যে রয়েছে সমূহ বদভ্যাস। আর এই বদভ্যাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহ সেই উত্তম মানুষটিকে তার জীবনে এনে দিবেন না। তাই বিয়ের জন্য মনস্থির করলে নিজেকেও সংশোধন করে নিতে হবে৷ কেউ যদি উত্তম জীবনসঙ্গী চায় তাহলে আগে নিজেকেই উত্তমভাবে গড়ে নিতে হবে। অন্য সকল রিজিকের মধ্যে বিয়েও একটি উত্তম রিজিক।
ফুটনোট:
১. সূরা আল রুম, আয়াত: ২১
২. বায়হাকি, শুআবুল ঈমান
আমি থেকে আমরা