আমার বিয়ে ভাবনা – আবদুর রহমান

সেদিন আম্মুকে বলেছি, ‘আমার বিয়েতে কোনো বরযাত্রী যাবে না। শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রথাগত কোনো উপহারও নেব না। এমনকি লেপ-তোশকের মতো সামান্য জিনিসও না।’ 

আম্মু হাসলেন। এই হাসির অর্থ ছোটবেলা থেকেই আমার জানা। সন্তানের এমন সৎ সাহস তাঁকে মুগ্ধ করেছে। কিন্তু যখন আশপাশের মানুষদের কানে গেল খবরটা, তাদের চক্ষু চড়কগাছ—এটা কোনো বিয়ে হলো!
‘কেন বিয়ে হবে না?’ এই প্রশ্ন তাদের করতে যাইনি। প্রতিবেশী ভিন্ন ধর্ম-সংস্কৃতির মানুষদের দীর্ঘদিনের প্রভাব এদের মধ্যে স্পষ্ট। এখনো এরা ব্যক্তিজীবনে গুটিকয়েক হুকুম-আহকাম মানাকেই দীনদারি মনে করে। অনেকটা সেক্যুলারিজমের মতো—জীবনের সব ক্ষেত্রে ধর্মের প্রয়োজন নেই। আমি বলি না তারা সব সময় ইচ্ছে করেই এমনটা করে। বরং তারা ইসলামকে সেভাবে জানার সুযোগ পায়নি। বাস্তব উদাহরণও খুব কম দেখেছে। আর যারা জানে, তারাও বিভিন্ন কারণে শেখানোর মতো পরিবেশ তৈরি করতে পারেননি। কেন পারেননি সে এক দীর্ঘ আলাপ। ওদিকে যাচ্ছি না আজ।
বিয়ের সময় একটা ব্যাপার মাথায় গেঁথে নেওয়া জরুরি। আমি যদি সত্যিই দীনের অনুগামী হই, তবে কুরআন-সুন্নাহ বিয়েটা কীভাবে সম্পন্ন করতে বলে শুধু সেদিকেই খেয়াল করতে হবে। কোনো সামাজিকতা কিংবা প্রথা ইসলামের সঙ্গে যায় কি না, ইসলাম সমর্থন করে কি না—এ নিয়ে বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঝামেলার সূত্রপাতই তখন হয়, যখন আমরা ‘ইসলাম কীভাবে বিয়ে সম্পন্ন করতে বলে’ ছেড়ে ভাবতে শুরু করি ‘বিয়েটাকে কীভাবে ইসলামীকরণ করা যায়!’ আরেকটু সহজ করে বললে, আমি ইচ্ছেমতো একটা বিয়ের প্রোগ্রাম সাজানোর প্ল্যান করে ভাবতে বসি এটা ইসলাম অনুযায়ী হলো কি না।
এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের। একটা উদাহরণ দিই, মেয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানের কথাই ধরুন। মেহমান খাওয়ানো সাওয়াবের কাজ, নিজেদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় হয়, তা ছাড়া নিষেধ তো নেই—এইসব অজুহাতে আজকাল মেয়ের বাড়িতে বিরাট বিরাট অনুষ্ঠান হয়। শত শত বরযাত্রী আসে। অথচ ইসলামি বিয়েতে মেয়ে বাবার কোনো খরচ নেই। কেউ কেউ আপত্তি করে বসতে পারেন, সমস্যা কী? মেয়ের বাবা তো সন্তুষ্টচিত্তেই করছে!
আমি বলি সমস্যা আছে, ভয়ংকর সমস্যা। প্রথমত মেয়ের বাবার হৃদয়ে প্রবেশ করে আপনি দেখে আসেননি, সে আসলেই সন্তুষ্ট চিত্তে করেছে না কি লোকলজ্জার ভয়ে করছে। ধরে নিলাম সন্তুষ্টচিত্তেই করেছে, তারপরও সমস্যা যাচ্ছে না। ভাবতে বসুন সমাজের আরও আট-দশটা বাবার কথা, যাদের মেয়ের বিয়েতে এরকম খরচ করার সামর্থ্য নেই। তবু তারা মুখে হাসির ভান ধরে অনুষ্ঠান করতে বাধ্য হচ্ছে। নইলে ইজ্জত থাকে না যে!
স্বভাবতই এখানে প্রশ্ন আসে, ইসলাম তো তাদের বাধ্য করেনি, তবু কেন তারা বাধ্য হচ্ছে? শুনতে অদ্ভুত শোনালেও বাধ্য হয়েই করছে ওই সন্তুষ্টচিত্তে অনুষ্ঠান করা বাবারা! কারণ বিরাট অনুষ্ঠান তো আর লোকচক্ষুর অন্তরালে করা যায় না। করতে হয় প্রকাশ্যে। আর এভাবে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান করায় সামাজিকভাবে চাপ পড়ে প্রতিটি বাবার ওপর। অমুক এত বড় অনুষ্ঠান করেছে, আমি না করলে হয়! লোকে কী বলবে? 
এভাবেই একের পর এক ‘লোকে কী বলবে’র যাতাকলে পড়ে ইসলামের সামাজিকতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে বিয়ের সুন্নাহ। অথচ সুন্নাহর চেয়ে সহজ, সুন্দর, উত্তম আর কিছুই নেই।
একটু যদি সুন্নতি বিয়ের দিকে তাকাই। ছেলেমেয়ের পক্ষ থেকে কেউ কাউকে বিয়ের জন্য পছন্দ করল। এরপর সংবাদ জেনেই অপর পক্ষের খোঁজখবর। বিশেষ কোনো আয়োজন ছাড়াই টুক করে একদিন দেখাদেখি। পছন্দ হয়ে গেলে যথাসম্ভব দ্রুত ইজাব-কবুল (কিছু আলিমের মতে মসজিদে বিয়ে মুস্তাহাব)। ছেলের সামর্থ্যের মধ্যে মোহর, সাক্ষী। ব্যস, হয়ে গেল বিয়ে। এবার মেয়েকে ছেলের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার পালা। চাইলে বাবা নিজেই পৌঁছে দিতে পারে অথবা কোনো নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে পৌঁছাবে অথবা জামাইপক্ষ থেকে কেউ নিয়ে আসবে। হয়ে গেল মেয়ে উঠানো। কত সহজ, কত সুন্দর ইসলামি বিয়ে!
কিন্তু আজকের যুগে কল্পনা করতে পারেন এগুলো? প্রথমেই লাগবে মোহর নিয়ে ক্যাচাল। প্রশ্ন আসবে মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে। মোহর কম হলে পরে যদি মেয়েকে তালাক দেয়! সুতরাং পাহাড়সম মোহর চাপিয়ে দাও! বিশ্বাস করুন, আপনার মেয়ের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের জন্য আপনাদের এমন বাজে একটা নিয়তই যথেষ্ট। কোথাও কোথাও নাকি আবার এমনও বলা হয়, রেজিস্ট্রি খাতায় শুধু লেখার জন্যই মোহর বেশি লেখা, ছেলে সামর্থ্য অনুযায়ী পরিশোধ করলেই হবে। লজ্জা লাগে এসব ছোটলোকি কথাবার্তা শুনে। কাজটা জায়েজ হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। আরেকটা কারণে কখনো কখনো মোহর বেশি চাওয়া হয়, তা হলো বরযাত্রী৷ মেয়ের বাবা ভাবে, ছেলেপক্ষের এত মানুষ খাইয়ে মোহরই যদি বেশি না চাই, কেমন হয় তাহলে? সুতরাং কোনো ছাড় নেই!
আমাদের কর্তব্য মোহর সহজ করা। সহজে সম্পন্ন হওয়া বিয়েকে সর্বোত্তম বলা হয়েছে হাদিসে। আর এটা জানা কথা, সামর্থ্যবান হলে অনেক মোহর দেওয়াও সহজ। তাই সামর্থ্যবান হলে নিজেকে সাধারণের সঙ্গে তুলনা করে মোহর কম দেবেন না, এটা ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এমন সামর্থ্যবান ছেলে আমাদের দেশে খুব একটা নেই। তাই আমরা বরং সাধারণ মানুষদের বলব মোহর সহজ করুন। মেয়েকে জিজ্ঞেস করুন তার কেমন চাওয়া। সামর্থ্যের মধ্যে হলে আপত্তির দরকার নেই। কিছুটা বেশি চাইলে যদি পরে একটু সময় নিয়ে দিতে পারেন, তবে সময় নিন। কিন্তু অতিরিক্ত চাপ নিতে যাবেন না। আমি নিজের জন্য এমনটাই ভেবে রেখেছি। আর সবচেয়ে ভালো হয়, বিয়ের অনেক আগে থেকেই টুকটাক মোহর জমাতে শুরু করা, যতটুকু পারেন আর কি। আমি বছরখানেক হলো শুরু করেছি৷ স্টুডেন্ট মানুষ, তবু আল্লাহর রহমতে হাজার দশেক জমেছে। এর লাভ হচ্ছে বিয়ের সময় মোহরের চিন্তায় আপনাকে ঘুম হারাম করতে হবে না। কিছুটা হলেও এখান থেকে সাপোর্ট পাবেন। 
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, উচ্চ-মধ্যবিত্তের চাকরিজীবীদের জন্য মোহরে ফাতেমি একটা ভালো অপশন৷ যেহেতু বিয়েতে অহেতুক খরচের ইচ্ছে নেই, তাই এটা তেমন চাপ হবে বলে মনে হয় না। তবে নির্দিষ্ট করে এটাকেই সুন্নাহ মনে করা ভুল। নবিজি সা. না এটার আদেশ করেছেন, আর না সাহাবিরা এর অনুসরণ করেছেন। তা ছাড়া ফকিহরাও এটাকে সুন্নাহ বলেননি। মোহরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণই সুন্নাহ নয়।
২.
অধিকাংশ মানুষের ধারণা, মসজিদে বিয়ে হয়েছে, এটাই অনেক। বাকি কাজগুলো নিজেদের মনমতো করলেও চলে। উদাহরণ খেয়াল করুন। যদি শোনা যায়, মেয়েকে বাবার উদ্যোগে রেখে আসা হবে ছেলের বাসায়, ছি ছি! মেয়ে যেন বাবার কাঁধে বোঝা হয়ে গেছে! অথচ প্রসিদ্ধ ঘটনা, ফাতিমা রা.-কে স্বয়ং নবিজির উদ্যোগে আলি রা. এর ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আয়িশা রা.-কে আবু বকর রা. এর উদ্যোগে নবিজির ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আরেক বিখ্যাত তাবেয়ি, সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ. নিজে মেয়েকে সঙ্গে করে ছেলের ঘরে দিয়ে এসেছেন। এগুলো কী প্রমাণ করে? মেয়ের বাবার মর্যাদা নষ্ট? সম্মান কমে যাওয়া? একজন মুসলিম হিসেবে আমি অন্তত নবিজি সা. ও আবু বকর রা. এর মতো মানুষদের এমন অপবাদ দিতে পারি না। পারি না বর্তমানে এমন দায়িত্ব পালন করা বাবাদের মান-মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে। আমি বরং তাদের সাধুবাদ জানাই। কারণ সম্মান তো রয়েছে শুধু নবিজির শেখানো কাজের মধ্যেই।
এ কারণে আমি চাইব, স্ত্রীর বাবা নিজে মেয়েকে বাসায় দিয়ে যাক, না হলে কোনো আত্মীয়। তা-ও না হলে আপুকে সঙ্গে করে একদিন হুট করে গিয়ে নিয়ে আসব। আরেকটা কাজও করতে পারি, হয়তো একদিন শ্বশুরবাড়ির আশপাশে গিয়ে স্ত্রীকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাইরে বেরোতে বললাম। তারপরই একটা সিএনজি নিয়ে ফুড়ুৎ করে বাসায়! ঝামেলা শেষ।
উলামায়ে কেরাম অবশ্য মেয়ের বাবার স্বেচ্ছা-আবদার থাকলে কয়েকজন যাওয়ার অনুমতি দেন। আমরা প্রয়োজনে এটা করতে পারি। বরযাত্রী নিয়ে মেয়ের বাসায় না, মেহমান খাওয়াব নিজের বাসায়, ওলিমার দাওয়াতে। ওলিমাও সাধ্যের ভেতর। কোনো ঋণ নেই, লৌকিকতা নেই, নিজেকে নিঃশেষ করা নেই। যতটুকু পারি ততটুকু করব। অনেক আইটেমের দরকার নেই। প্রয়োজনে দূরের আত্মীয়দের কাছে ফোনে দোয়া চেয়ে নেব। বেশি সমস্যা হলে তারও দরকার নেই। সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আওফ ও জাবির রা. এর বিয়ের কথা কাছাকাছি থেকেও নবিজি সা. পরে জেনেছেন। অথ্যাৎ তাঁরা বিয়ের আগে নবিজিকে জানানইনি! তাই বলে নবিজি সা. রাগ করেছেন? নাহ, রাগ করেননি। উল্টো খুশিমনে উভয়ের বরকতের জন্য দোয়া করেছেন।
এ তো গেল বিয়ে। বিয়েপরবর্তী উপহার আদান-প্রদানের পরীক্ষায় পড়তে হয় আবার অনেককে। কিছু চেয়ে নেওয়া একেবারে নিষেধ, সবাই জানে। এ জন্য নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে মেয়েপক্ষকে খসাতে। কিন্তু আল্লাহ্ তো সবার মনের খবর জানেন৷ আজ কিছুটা জিতলেও আখিরাতে ঠিক ধরা খেতে হবে।
 
আমি বলি না উপহার নিষিদ্ধ করা হোক। মেয়ের নতুন সংসারে সামর্থ্যবান বাবা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যোগান দিতে পারেন। এটা জায়েজ, যেহেতু নবিজি সা. নিজের মেয়ে ফাতিমা রা. এর বিয়ের পর প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র উপহার দিয়েছিলেন। তবে এই উপহার দিতে মেয়ের বাবা বাধ্য নন, নির্দিষ্ট কোনো কিছু দেওয়া সুন্নাহও নয়। তাই একান্তই দিতে চাইলে আড়ালে দেওয়ার পরামর্শ থাকবে এবং অবশ্যই একই দিনে একসঙ্গে নয়। আস্তে আস্তে। দিনে দিনে। সবচেয়ে ভালো হয় বাজার থেকে কিনে জামাইয়ের মাধ্যমে বাসায় পৌঁছানো। এতে কাজের কাজ ঠিকই হলো, আবার মানুষও জানল না। এসব ব্যাপার সবাই জেনে ফেললে অন্যদের ওপর সামাজিকভাবে এর কী বাজে প্রভাব পড়ে, তা শুরুতেই স্পষ্ট করেছি। সুতরাং খুব সতর্কতা কাম্য।
৩.
আমি নিজে যেহেতু স্টুডেন্ট এবং বর্তমানে স্টুডেন্ট অবস্থায় বিয়ে নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। তাই বিষয়টা এড়িয়ে যেতে পারছি না। ছোট্ট একটা বাস্তবতা বলি, আমরা যে শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা করে স্বাবলম্বী হতে চাই, তাতে বিয়ের বয়স আর থাকে না। আবার পুরো সিস্টেম চেঞ্জ করে ফেলাও সম্ভব না। তাই আমাদের একটা স্পেস খুঁজে বের করতে হবে কীভাবে সিস্টেমে থেকেও বিয়েটা করে ফেলা যায়।
বাবা-মার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া আর নিজের থাকার জন্য একটা রুমই বিয়ের জন্য যথেষ্ট, যেহেতু তিনজনের খাবারেই চারজনের হয়ে যাবে। আর সব সময় মেয়ে এখানে থাকবে, তা জরুরি না। মাঝেমধ্যে বাবার বাড়ি থাকুক। চাপ একটু কমবে তাতে। 
টিউশনি, পার্টটাইম জব—হতে পারে কোনো মার্কেটে সেলসম্যান হিসেবে থাকা কিংবা মেলাকেন্দ্রীক স্টলে সময় দেওয়া। এভাবে ছেলেরা হাতখরচ জোগাতে পারে। বাকিটা অভিভাবকদের দু-তিন বছর সামলে নেওয়া তেমন কষ্টের না।
বাস্তব উদাহরণ আমার সামনে অনেক আছে। দুটো কাছের ঘটনা বলি, বড় ভাইয়ার মেয়ে। চার বছর আগে বিয়ে হলো বড়টার, ছেলের তখন এক টাকাও ইনকাম ছিল না। দুই পক্ষের অভিভাবকের সহযোগিতায় ওদের সংসার শুরু। চলতি বছর ছেলে দাওরা পরীক্ষা দেবে। পাশাপাশি এই কদিনে ছোটখাটো একটা ব্যবসা দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন আল্লাহ্। ওদের একটা সন্তানও হয়েছে।
আরেক ভাই অনার্স পড়ুয়া ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। মেয়ে বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থাকে, ছেলে আসে, কখনো নিয়ে যায়। চলছে পড়াশোনা, চলছে সংসার।
স্টুডেন্ট অবস্থায় বিয়ের অনেক লাভ আছে। মোহর সহজ। চাইলেও মাথার ওপর বোঝা চাপিয়ে দেওয়া যায় না। ঘরোয়া অনুষ্ঠান। চাওয়াপাওয়া কম। সবমিলিয়ে বিয়েটা সহজেই সুন্নাহ মেনে সম্পন্ন করা যায়। আমার নিজেরও এমনটাই ইচ্ছে। বাসায় আম্মুর সঙ্গে টুকটাক আলোচনা হয় মাঝেমধ্যে। ছেলেমেয়েদের এ ব্যাপারে অভিভাবককে সহযোগিতা করা উচিত। কারণ অধিকাংশ অভিভাবক আগের প্রজন্মের হওয়ায় বর্তমানের সমস্যাগুলো তেমন বুঝে উঠতে পারেন না। একটু সাহসী হয়ে তাদের বোঝানোর উদ্যোগ নিতে হবে তরুণদের। কারণ তাদের অনুভূতি জাগ্রত হলেই বেঁচে যাব আমরা! একটু কি সাহসী হয়ে শুরু করা যায়?
লেখাটা শুরু করেছিলাম প্রথা-সামাজিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সুন্নাহ মেনে সহজ বিয়ের কথা বলে। শেষ করব একটা প্রতিজ্ঞায়! আমি জানি, প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করা আমার জন্য ভীষণ কষ্টের, কিন্তু অসম্ভব নয়। আমাকে লড়াই করতে হবে দিনশেষে চমৎকার একটা সংসার সাজাতে চাইলে। তাই আমার প্রতিজ্ঞা—আমি শুধু শুধুই অন্যদের খুশি করতে অপচয়ের মহোৎসবে নাম লিখিয়ে নিজের ভবিষ্যতের বরকত নষ্ট করতে পারব না। একজন মুসলিম হিসেবে আমার প্রথম চাওয়া তো আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং ঝলমলে একটি বরকতময় সংসার, ইন শা আল্লাহ্!
______________________
|| আমার বিয়ে ভাবনা || 
~ আবদুর রহমান – Abdur Rahman 
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?