- বই : আব্বাসি খিলাফাহ
- ধরন : ইতিহাস
- লেখক : ইমরান রাইহান
- প্রকাশক : ইত্তিহাদ
- পৃষ্ঠা : ৪৫৬
- বাঁধাই : হার্ডকভার ডায়েরি বাঁধাই
- মুদ্রিত মূল্য : ৮০০/-
আব্বাসি খিলাফাহ মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। খিলাফাতে রাশেদার পর একশো বছরের মতো টিকে ছিল প্রবল ক্ষমতাধর উমাইয়া খিলাফাহ। সমগ্র পৃথিবীতে রাজত্ব করে একশো বছরের মধ্যে উমাইয়া খিলাফাহ এগিয়ে যায় পতনের দিকে। হিশাম বিন আব্দুল মালিকের সময় থেকেই শুরু হয় আব্বাসি আন্দোলন। যা পরিণতি পায় ১৩২ হিজরির জিলহজ মাসে। উমাইয়া খলিফা মারওয়ান বিন মুহাম্মদকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে উমাইয়া-শাসনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। সূচনা হয় আব্বাসি-শাসনের।
১৩২ হিজরিতে আবু মুসলিম খোরাসানির তরবারির জোরে আবুল আব্বাস সাফফাহ খিলাফাহর মসনদে আরোহনের মধ্য দিয়ে যে আব্বাসি শাসনের সূচনা, তার পতন ঘটে ৬৫৬ হিজরিতে, হালাকু খানের হাতে। ভোগ-বিলাসে মত্ত মুসতাসিম বিল্লাহর তখন করার কিছুই ছিল না।
এই ৫০০ বছরের শাসনামলে আব্বাসি খলিফাদেরকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। শক্তিশালী আব্বাসি খলিফা এবং দুর্বল ও পুতুল খলিফা। এই সুদীর্ঘ শাসনামলে আব্বাসিরা ইলমচর্চা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য-সংস্কৃতির বিপুল উন্নতি সাধন করেছে। উমাইয়া খলিফারা খিলাফাহর সীমানা বৃদ্ধি করেছে, আর আব্বাসি খলিফারা স্থিতিশীল সেই সাম্রাজ্যে বসে ইলমচর্চা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির সয়লাব ঘটিয়েছে। বাইতুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা করে বিভিন্ন ভাষা থেকে সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ও অন্যান্য ধর্মশাস্ত্র আরবিতে অনুবাদ করিয়েছে। এককথায় বলতে গেলে—আব্বাসিদের যা-কিছু কর্ম ও কৃতিত্ব, তার সবটাই জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকেন্দ্রিক।
এই ৫০০ বছরের শাসনামলে কেমন ছিল আব্বাসি খিলাফাহর রূপরেখা? কারা-কারা শাসন করেছিলেন এই সুদীর্ঘ সময়? কেমন ছিল তাদের শাসনকাল? কী ছিল তাদের উন্নতি কিংবা অবনতি? শরয়ি রূপরেখা কতটা মেনেছেন তারা? প্রত্যেকের শাসনামলে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধগুলো কী? এই সুদীর্ঘ সময়ে খিলাফাহ ও খলিফাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব কারা? কী ছিল তাদের ভূমিকা? আলিমদেরইবা কী ভূমিকা ছিল?
“আব্বাসি খিলাফাহ” বইয়ের বড় একটা অংশজুড়ে ইতিহাসবিদ ইমরান রাইহান এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তুলে ধরেছেন। প্রতিজন শাসকের সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং তাদের শাসনকাল তুলে ধরেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির বিশ্লেষণ করে ইতিহাসের প্রয়োজনীয় শিক্ষা বের করে এনেছেন। এরপর আব্বাসিদের পতনকালের বিবরণ এনে একটি অনুসন্ধানী বিশ্লেষণ যুক্ত করেছেন।
কোন শাসক কতটুকু দোষী ছিলেন? ইতিহাসের এই সুদীর্ঘ সময়ে কারা আব্বাসি খিলাফাহর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন? লেখক ওরিয়েন্টালিস্টদের বিভ্রান্তিকর বিবরণ এড়িয়ে গিয়ে ইতিহাসের গোড়ার তথ্যপঞ্জি ঘেঁটে এগুলোর নির্মোহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন।
আব্বাসি খিলাফাহর উন্নতির জায়গা ছিল ইলমচর্চা, শিক্ষা-দীক্ষা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি। রাজনৈতিক ইতিহাসের বিবরণ শেষ করে বাকি অংশজুড়ে লেখক এসব বিবরণ তুলে এনেছেন। আব্বাসি যুগের যুদ্ধ-বিগ্রহ, সমাজব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, পাঠাগার সংস্কৃতি রাষ্ট্রব্যবস্থা, চারুকলা, স্থাপত্যবিদ্যা ও লিপিকলা—কোনোকিছু বাদ রাখেননি। আব্বাসি শাসনামলে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রগতির পাশাপাশি সমকালীন অন্যান্য সাম্রাজ্যের সাথে সম্পর্কের প্রতিও আলোকপাত করেছেন।
এককথায় বললে—আব্বাসি খিলাফাহর রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সমগ্র হলো বক্ষ্যমাণ “আব্বাসি খিলাফাহ” বইটি। __ Tazmin Nisa : Review Credit
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?