আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও : কবি নির্মলেন্দু গুণ | Abar Akta Fue Diye Dao – Nirmolendu Gun

  • বইঃ আবার একটা ফুঁ দিয়ে দাও
  • কবিঃ নির্মলেন্দু গুণ 
  • ধরণঃ কাব্যগ্রন্থ 
  • প্রকাশনীঃ কিংবদন্তী পাবলিকেশন 
  • প্রচ্ছদঃ চারু পিন্টু
  • পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৬৪.
  • মুদ্রিত মূল্যঃ ৩০০টাকা
◾বইয়ের উৎসর্গঃ
বইটি কবি তাহার ‘বাবা ও বড়োদির স্মৃতির উদ্দেশে’ উৎসর্গ করেছেন। 
◾কবি পরিচিতিঃ
জন্ম: জুন ২১, ১৯৪৫, আষাঢ় ৭, ১৩৫২ বঙ্গাব্দ, যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত,তিনি একজন বাংলাদেশী কবি এবং চিত্রশিল্পী। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনীও লিখেছেন। তাঁর কবিতায় মূলত নারীপ্রেম, শ্রেণি-সংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধীতা, এ-বিষয়সমূহ প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এ-গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটি ব্যাপক জরপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তীতে এর উপর ভিত্তি করে তানভীর মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমী , ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।
◾ফ্লাপের কথাঃ
আমি বিষ খাচ্ছি অনন্ত, আমি বিষ খাচ্ছি। তুই একটু অপেক্ষা কর। বাইরে এমন চাঁদ, এমন জোৎস্না, তোর বুঝি ভালো লাগছে না? কী যে ভালো লাগছে আমার! অনন্ত, তুই তার কিছুই জানলি নে, কিচ্ছু জানলি নে। বড় সুখ, বড় ব্যথা। আচ্ছা, তুই যে ফিরতে বলিস, কোথা যাবি? ঘর কোথা? কোথা পাবি এরকম পল্লবিত বিষের ভান্ডার? কোথাও পাবি না। চলে যাস নে অনন্ত, শোন, এই দ‍্যাখ আর মাত্র একটি গেলাস, আর মাত্র একটি চুমুক। এ-চুমুকে নেশা হবে, তারপর, তারপর, তারপর আমরা দু’জনে মিলে ফিরে যাবো। সত্যি ফিরে যাবো। ঘরে বুঝি খুব শান্তি? খুব ভালোবাসা? সেই ভালো, একটু তাড়াতাড়ি পা চালা অনন্ত, একটু তাড়াতাড়ি চল।
◾পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
বইটিতে মোট ৫৫টি কবিতা আছে।প্রত্যেকটি কবিতাই অসাধারণ। এ বইটি কবির  এক অনবদ্য সৃষ্টি। এ বইয়ের কবিতা গুলো মন ছুয়ে যায়। 
বই থেকে প্রিয় কিছু কবিতার অংশবিশেষঃ
 “যদি বিরহকে সত্য বলে মানি,
মিথ্যে বলি কাকে? মধ্যরাতে
ভালোবাসা ঘুমন্ত পাথর হয়ে থাকে। 
বিরহ দাঁড়ায় তার ভিতে। “
এ বইয়ের আরেকটি কবিতা,  যেটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে;-
“এ পর্যন্ত তেত্রিশ কোটি বার তোমার নাম লিখেছি। তোমার নাম লিখতে লিখতে হাত ক্লান্ত হয়েছে,
চোখ তবুও ক্লান্ত হয় না। দেখতে চায় তোমার নামের শ্রী,
বানান, ব্যাকরণে এবং সম্মিলিত শব্দের চেহারায়।
যেখানে তিনটি অক্ষরের ক্রমিক আড়াল ভেঙে বেড়িয়ে আসে
তোমার হারিয়ে যাওয়া মুখ, গৌরচিক্কন কন্ঠনালী, কোঁকড়ানো
চুলের এলানো খোঁপায় জড়ানো একটুকরো লাল ফিতে।
কালো চশমার স্বপ্ন ঢাকা চোখ,
কিংবা শৈশবে হোঁচট খাওয়া ঠোঁটের আদুরে দাগে 
সুন্দরের অনাবিস্কৃত শোভা।”
আরেকটি সুন্দর কবিতা,
যে গান গাইতে পারিনি, তার সুর বেজেছে চৈতন্যে।
যে কবিতা লেখা হলো না সে-ও ছিলো
সংগঠিত সিসার ভিতরে। 
এই কররেখাগুলো সাক্ষ্য দেবে, ভালোবেসেছিলাম।” সব মিলিয়ে এটি একটা প্রেমময় বই যেখানে কবি সুন্দর ও সাবলীল ভাবে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করেছেন।অসাধারণ সব কবিতায় ভরপুর এ বইয়ে কবি যেন ভালোবাসার রঙ একে দিয়েছেন।
◾ব্যাক্তিগত অভিমতঃ 
কবি নির্মলেন্দু গুণ অসাধারণ লেখেন এটা নিয়ে বিন্ধুমাত্র সন্দেহ নেই। কবির এ বই সহ মোট তিনটি বই আমার পড়া হয়েছে। পাঠক এ বইটি সতেজ মনে পড়ে শেষ করতে পারবে বলে আশা রাখি।পাঠক মনে কবির ভালোবাসার জয়গান সঞ্চার হবে।
ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ৮/১০
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?