- বইঃ আনন্দ বর্ষণ
- লেখকঃ জিনিয়া জেনিস
- প্রচ্ছদঃ রাজীব দত্ত
- প্রকাশনীঃ পেন্সিল পাবলিকেশনস
- ঘরানারঃ রোমান্টিক, গল্প সংকলন
- পৃষ্ঠাঃ ১০৪ পৃষ্ঠা
- প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০২২
- মলাট মূল্যঃ ২৭৫ টাকা
- রিভিউ লিখেছেন এবং আনন্দ বর্ষণের ছবি তুলেছেন Zakaria Suman ভাই।
এবারের একুশে বইমেলা ২০২২ এর শেষ দিনে Shahidul Islam ভাইয়ের একটি পোস্ট থেকে আমি জিনিয়া জেনিসে’র বইটির কথা জানতে পারি। সেই কৌতুহল থেকেই বইমেলার শেষ দিন বিকেলে বইটা আমি পেন্সিল স্টোর থেকে সংগ্রহ করি। ভাগ্যক্রমে ওই সময়ে লেখিকাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তাই শুভেচ্ছা বাক্যসহ অটোগ্রাফ নিতে ভুল করিনি কিন্তু!
ক’দিন আগেই বইটি পড়া শেষ করলাম। এবং শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের সাথে আমিও একমত যে, এই লেখিকা বয়সে নবীন হলেও যথেষ্ট পরিপক্কতার সাথেই কাহিনীগুলো লিখেছেন। বইটির নামের মতোই বইটি পড়ে আনন্দ বর্ষণে সিক্ত হয়েছি। প্রতিটি কাহিনীই আলাদা আলাদা স্বাদের আর এক একটি গল্প ভিন্ন ভিন্ন ভাবে মনে দোলা দিয়ে যায়। লেখিকা তার গল্পগুলোতে আমাদের পারিবারিক-সামাজিক চিরাচরিত ভালোবাসার সম্পর্কগুলো বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে খুব সুন্দর করে ফুঁটিয়ে তুলেছেন!
বইটির একটি কাহিনীর শেষে মান্না দে’র কণ্ঠের একটি গানের কলির সাথে নতুন কথার সংযোজনা ভালো লেগেছে।
বইটি পড়তে গিয়ে আমার মনে হয়েছে যে, প্রথম কাহিনী থেকে যতোই বইয়ের শেষের দিকে এগিয়েছি, ততোই লেখিকার লেখায় পরিপক্কতার ছাপ পরিষ্কার হয়েছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু এত্তো সুন্দর একটা বই পড়ার সুযোগ করে দেয়ায়, সাথে একরাশ শুভেচ্ছা আর ভবিষ্যতের জন্য আন্তরিক শুভকামনা!
বইঃ আনন্দ বর্ষণ
লেখকঃ জিনিয়া জেনিস
প্রকাশকঃ পেন্সিল পাবলিকেশন্স
পেন্সিলের দেয়ালে লেখিকার লেখা পড়া হয় আমার আনুমানিক ২০১৯ এর শুরু থেকেই। তার লেখার মাধুর্য বরাবরই আকর্ষণ করে। তাই এবার তার প্রথম একক বই প্রকাশিত হয়েছে জেনে মিস করিনি। বইটি পড়ে আমার অনুভূতি লেখিকা যেন তার নিজেকেই ছাড়িয়ে গিয়েছেন।
মোট চৌদ্দটি গল্পে লেখিকা বিভিন্ন আঙ্গিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটকে সুনিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। কী নেই এই চৌদ্দটি গল্পে! আছে পারিবারিক ঘটনাবলি, সামাজিক প্রেক্ষাপট, রোমান্স, সাহসিকতা, ভালোবাসা হারানোর এবং কিছুটা থ্রিলার টাইপ গল্পও। কিন্তুু এই বইয়ের মুল আকর্ষণ হলো গল্প লেখায় লেখিকার নিজস্ব মুন্সিয়ানা। তাঁর শব্দ চয়ন, ঘটনাবলির সাবলীল উপস্থাপন এমন অনুভূতি দেয় যেন আমার চারপাশে ঘটে চলেছে। তাই তাঁর লেখার প্রশংসা না করে পারলাম না।
এর মধ্যে কয়েকটি গল্পের কথা না বললেই না।
দিন বদলের গানঃ করোনাকাল আমাদের জীবন থেকে অনেক কিছু নিয়ে গেছে। আবার চিনিয়েছে বিস্তর। এই অতিমারিতে সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং ব্যক্তি জীবনে প্রভাব, সম্পর্কে টানাপোড়েন এসব কিছুই প্রজ্ঞা ও অরুন চরিত্রের মাধ্যমে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে তার সুনিপুণ দক্ষতায়।
নীড়ে ফেরার গল্পঃ এটি একটি ভিন্নধর্মী গল্প। পাখি চরিত্রটি আমাদের সমাজের অনেক মেয়ের মতই ভাগ্য-বিড়ম্বিত। আপনজনের ছায়া মাথার উপর না থাকলে শেষমেষ যাদের জায়গা হয় পতিতালয়ে। ইচ্ছে থাকলেও যাদের নীড়ে ফেরা হয় না। এমনই একজনের নীড়ে ফেরার গল্প লিখেছেন জিনিয়া জেনিস। আরেক মূল চরিত্র আবির। দুজনের কথোপকথন লিখন সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
রূপার ঝুমকাঃ প্রতিটি সম্পর্কেই কিছু সপ্ন থাকে, থাকে কিছু আকাঙ্খা। কিন্তু কেন যেন সবার সব আশা পূরন হবার নয়। যেমনটা হয়নি সীমানা-দিগন্তেরও। যাপিত জীবনের মোড়ে সেই সপ্নই আবারো হঠাৎ করে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে যখন সীমানা দেখে দিগন্ত এতকাল পরেও ভোলেনি সেই রুপার ঝুমকার কথা।
তবে আমার সবথেকে ভালো লেগেছে “গর্ভধারিণী” গল্পটি। মা’র অনুপস্থিতি বাচ্চার মনে কী প্রভাব ফেলে ও তার পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে দারুন একটা গল্প হয়ছে এটি।
তবে শুধু এই কয়টা গল্পের আলোকপাত করলে বাকি গল্পগুলোর প্রতি অন্যায় করা হবে। প্রতিটি গল্পেই লেখিকার মননশীলতা, সৃষ্টিশীলতা ও পরিপক্বতার ছাপ বিদ্যমান।এতো এতো চমৎকার গল্পগুলো, সত্যিই উপভোগ্য। আপনারাও পড়ুন, আশাকরছি ভালো লাগবে।
√ ভূমিকাঃ সীমিত বাজেটের মধ্যে আমি যাচাই বাছাই করে বই কিনি। খুব আলোচিত বইগুলোর লিস্ট করেও দেখা যায় অনেক বই কেনা বাকি থেকে যায়। “আনন্দ বর্ষণ” লেখক জিনিয়া জেনিস এর প্রথম বই। স্বাভাবিকভাবেই আমার নজর এড়িয়ে গেছে। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে বইটি আমি বিশেষ একজনের থেকে উপহার পেয়েছি। সত্যি বলতে গেলে প্রথমদিকে ভয় লাগছিলো, বইটি আদৌও কি আমার পাঠক মনের খোরাক মিটাতে পারবে? কিন্তু ভরসা ছিলো পেন্সিল পাবলিকেশনস এর উপর। পেন্সিল যেমন তেমন পান্ডুলিপি তুলে বই ছাপিয়ে দিবে না। বই পড়তে শুরু করে আমি বারংবার অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম।
√ প্রচ্ছদঃ রং-তুলির আচড়ে কয়েকটি অবয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা বইয়ের মূল বিষয়বস্তু তুলে ধরেছে। বেশ কৌতুহলপ্রবণ একটি প্রচ্ছদ।
√ নামকরণঃ বইয়ে কয়েকটি গল্প উল্লেখ থাকলেও, সর্বশেষ গল্পের নামটির মাধ্যমেই বইটির নামকরণ করা হয়েছে। নামটি অবশ্যই সার্থক হয়েছে, কারন প্রতিটি গল্পের শেষে মনে অদ্ভুত আনন্দ বর্ষণ হচ্ছিলো।
√ লেখক পরিচিতিঃ জিনিয়া জেনিস একদম নবীন লেখক। বিভিন্ন সংকলনে ছোটগল্প ও কবিতা প্রকাশিত হলেও, আনন্দ বর্ষণ লেখকের প্রথম একক বই।
√ কাহিনী সংক্ষেপঃ
🌸 ভূমিকম্প রিয়া- ভূমিকম্পের মতো এক ভয়াবহ পরিস্থিতে রিয়ার সাথে নিলয়ের পরিচয়। একই বিল্ডিং এর ভিন্ন ফ্লোরে কাজের সুবাদে প্রায় কথা হতো। নিলয়ের মনে ধীরে ধীরে রিয়ার জন্য অনুভূতি জন্মালেও রিয়ার দিক থেকে কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না। নিলয় নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে মুভ অন করার সিদ্ধান্ত নিলে ঘটে যায় এক অদ্ভুত ঘটনা।
🌸 আঁধার পেরিয়ে- এই গল্পটি অন্য গল্পের থেকে ভিন্ন। শায়লা এবং ফাহিমের প্রণয় অবশেষে পূর্ণতা পেতে যাচ্ছিলো। কিন্তু শায়লার বোনের সাথে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার সূত্র ধরে সবটা কেমন বদলে যেতে থাকে।
🌸 হারিয়ে যাওয়ার আগে- ভার্সিটির জীবনের লুকিয়ে ভালোবেসে যাওয়া মানুষটির সাথে দীর্ঘদিন পর হঠাৎ দেখা। গল্পকথক জানতে পারলো ধারাও মনে মনে তাকেই চাইতো। কিন্তু ততোদিনে গল্পকথকের ঘরে আকাশী নামে একজন স্ত্রী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে।
🌸 গর্ভধারিণী- মা শব্দটির মধ্যেই মায়া, মমতা লুকানো, সেখানে মা মানুষটি আরোও শতগুন বেশি মমতাময়ী এবং মায়ায় জড়ানো। কিন্তু লাবণ্যের ক্ষেত্রে তা একদম ভিন্ন। তার ভালোবাসার সবটা জুড়ে বাবা, আর ঘৃণার অংশটুকু তার জন্মদাত্রী শ্রেয়ার নামে লেখা। কিন্তু কেনো? লাবণ্যের বিয়ের কিছুদিন আগেই লাবণ্যের বাবা হঠাৎ তাকে জানালো তার মা তার সাথে দেখা করতে চায়। লাবণ্য কি দেখা করবে?
🌸 রুপার ঝুমকা- ছায়া, দিগন্ত, সীমানা তিনটে কাঁটা-ছেঁড়া জীবনের ভালোবসার গল্প নিয়ে লেখা।
🌸 নীড়ে ফেরার গল্প- মেঘার সাথে প্রণয় সম্পর্কের সমাপ্তির পর খুব ভেঙ্গে পরেছিলো আবির। এমনি এক সময়ে পাখি নামের একটি মেয়ে তাকে নিজের খদ্দের ভেবে ভুল করে বসে। আবিরের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে?
🌸 সুখবার্তা- শায়লার চেম্বারে তার বন্ধু শ্রাবণের স্ত্রী রুপকথা বসে আছে। কম্পনরত শরীরে শোনাচ্ছে অদ্ভুত এক স্বপ্নের কথা। বাথটাবের পানি ভয়ংকর লাল রঙে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, তার তাতে ডুবে যাচ্ছে একটি নিষ্পাপ শিশু। মানসিক চাপে দিনদিন শ্রাবণের থেকে সরে যাচ্ছিলো রুপকথা। তাই অবশেষে সাইলোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হয়েছে।
🌸উপহার- পাঁচ বছরের মেয়ে সুরভির থেকে অপূর্ব জানতে পারে তার প্রাক্তন স্ত্রী বাঁধন আবার বিয়ে করছে। বিয়ের আগে বাঁধন একবার অপূর্বের সাথে দেখা করতে চায়। অপূর্ব চিন্তায় পরে যায়, বাঁধন কঠিন কিছু চেয়ে বসবে না তো!
🌸 সেফটিপিন-একটা সেফটিপিন শুধু মেয়েদের ওড়না কিংবা শাড়ি সামলে রাখার কাজেই ব্যবহার হয় না বরং রেশমি, রেহানার মতো মেয়েরা নিজেকে সামলে রাখতেও সেফটিপিনের যথাযথ ব্যবহার করে থাকে।
🌸 লাল বৃষ্টি- রেশাদের অদ্ভুত শখ হয়েছে। সে তার মেয়ের নাম রাখবে তার স্ত্রী অতসীর নামে। তারপর যখন অতসী বলে ডাকবে, তখন দুজনে ছুটে আসবে। শখটা কী অদ্ভুত, তাই না?
🌸 দিন বদলের গান- এই গল্পটা আমার কাছে গতানুগতিক মনে হয়েছে। খুব বিশেষ কিছু না। প্রজ্ঞা এবং অরুণের বিয়ের কিছুদিন আগেই অরুণ কিছু লেইম লজিক দেখিয়ে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। বাকি গল্পটা প্রজ্ঞার ঘুরে দাঁড়ানোর।
🌸 জীবনসঙ্গী- দীর্ঘকয়েক বছর পর নোরার সাথে অমিও এর দেখা। সময়ের সাথে বদলে গেছে অনেককিছু। অনেকদিন পর আড্ডায় বসে অমিও জানতে পারে তার প্রিয় বন্ধু নোরা এখন ডিভোর্সি একজন নারী। সাথে নোরা অকপটে স্বীকার করে একসময় সে অমিও কে ভালোবাসতো, কিন্তু বুঝে উঠতে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিলো।
🌸 A murder or Death- আত্মগ্লানী থেকে নবনী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সে তার ভালোবাসার মানুষ সৌমিককে ছেড়ে প্লাবনকে বিয়ে করবে। সবার বিরুদ্ধে গিয়ে নবনী বিয়ে করে নিজের জীবনে এগিয়ে গেলোও সেখানেই আটকে থাকে সৌমিকের জীবন। নবনীর নেওয়া সিদ্ধান্ত কি আসলেই ঠিক ছিলো?
🌸আনন্দ বর্ষণ- বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়ে তার অদ্ভুত আচরণে বাঁধা পরে যায় নিলয়। কিন্তু স্নেহা কোনো এক বিশেষ কারনে বিয়েতে একদম মত নেই। এদিকে বেচারা নিলয়ের জান-প্রাণ যায় যায় অবস্থা। অমতের কারন তাকে খুঁজে বের করতেই হবে। স্নেহাকে ছাড়া তার জীবন চলছেই না।
√ বই বিশ্লেষণঃ মোট চৌদ্দটি ছোট গল্প নিয়ে লেখা বইটি। তিন থেকে চার পৃষ্ঠার মধ্যেই শুরু এবং শেষ। গল্পের মাঝে ডুব দিতে গেলেই দেখা গেলো সমাপ্তিতে পৌঁছে গিয়েছি। অসম্ভব সুন্দর প্রতিটি গল্পই। ছোট গল্পের এই এক সমস্যা, বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলেই স্পয়লার হয়ে যায়। সবগুলো গল্পের মাঝে বেশ সুপ্তভাবে নারীর জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে প্লট সাজানো হয়েছে। গল্পগুলো ভিন্ন হলেও শুধু এই এক জায়গাতেই মিল খুঁজে পেয়েছি। প্রথম গল্পটি পড়েই আমার মাথায় একটি কথা এসেছে, লেখক ছোট গল্প লেখায় বেশ পারদর্শী। এতো অল্পভাষায় এতো সুন্দরভাবে গল্প সাজিয়ে, কোথাও কোনো খাপছাড়া ভাব নেই। একবারের জন্যেও মনে হয়নি, কোনো জায়গায় অসমাপ্ত কিছু রয়ে গেলো।
√ প্রিয় গল্পঃ সবগুলো গল্পই ভালো লেগেছে, তাই প্রিয় গল্প খুঁজতে বেশ ভাবতে হলো। শেষমেষ অনেক কষ্ট করেও সবচেয়ে বেশি পছন্দের গল্পটা খুঁজে পেলাম না। A murder or Death, আনন্দ বর্ষণ দুটোকেই প্রিয় গল্পের তালিকায় স্থান দিতে হচ্ছে। যেকোনো একটা বাছাই করা মুশকিল।
√ ব্যক্তিগত রেটিংঃ বইয়ের প্রোডাকশন, নিঁখুত টাইপিং, লেখার ধরন, বর্ণনা, সবকিছুই ত্রুটিহীন। রেটিং দিতে হলে ৪.৫/৫ দিবো।
√ উপসংহারঃ বই পড়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। লেখকের ছোট গল্প লেখার ধরন প্রশংসা যোগ্য। এবার লেখকের থেকে একটি পূর্নাঙ্গ উপন্যাস আশা করছি।
– লেখনীতেঃ আরফিয়া
লেখিকার উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করি। পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় রইলাম Zinnia Jenis
রকমারি, বইপরী আরও কিছু অনলাইন বুকশপ থেকে বইটি অনলাইনে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?