বইয়ের নামঃ আউট অফ দ্যা ডার্ক।
লেখকের নামঃ প্যাট্রিক মোদিয়ানো।
ভাবানুবাদঃ পায়েল মন্ডল।
প্রযোজনায়ঃ নট ফর সেল ক্লাব।
বই নিয়ে কিছু কথা
‘আউট অফ দ্য ডার্ক’ লেখকের একটি প্রেমের সম্পর্ককে সুন্দরভাবে পাঠকদের মাঝে উপস্থাপন করার মতো একটা উপন্যাস যা অধিকভাবে বিস্ময়কর ব্যতিক্রমী একটি পটভূমি নিয়ে রচিত।সংক্ষিপ্ত এই কাহিনীর উপন্যাসটা যা আপনার অবসর সময়টাকে পন্ড হতে দিবেনা।উপন্যাসটির প্রতিটা পাতায় মনোনিবেশ করতে হলে অবশ্যই একটা পাঠকের অবশ্যই অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখার ক্ষমতা থাকতে হবে।
লেখক নিয়ে কিছু কথা
বিশিষ্ট ফ্রেঞ্চ ঔপন্যাসিক,প্যাট্রিক মোদিয়ানো,১৯৪৫ সালে ফ্রান্সে জন্মগ্রহন করা এই লেখক সমসাময়িক লেখকদের থেকে বহুল প্রশংসিত হয়ে উঠেন তার অসাধারণ লেখার দক্ষতার মাধ্যমে। ২০১৪ সালে ‘আউট অফ দা ডার্ক’ এর জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
বইয়ের মূলভাব
ঘোলাটে স্মৃতির শহরের অলিগলিতে উদ্দেশ্যহীনভাবে হেটে চলেছেন গল্পকথক যেখানে উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছে তার জীবনের কিছু ফেলে আশা দৃশ্য। পুরো উপন্যাসটির কোথায়ও প্রধান চরিত্রের নাম উল্লেখ করা হয়নি।৷ নিজেকে সময়ের স্রোতে ভাসিয়ে নেওয়ার জন্যে পড়াশোনা ছেড়ে পুরানো শিল্পের বই বিক্রি শুরু করে গল্পকথক।বেভর,জ্যাকুলিন ও কথক সকলেই যেন প্রভাবিত ছিল একটি ভুলে যাওয়া অতীত এবং একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সাথে বর্তমানকে নিজেদের মধ্যে আটকে রাখার মতো বৃথা চেষ্টায়।
একদিন ক্যাফে দান্তেতে এক রহস্যময় দম্পতি জ্যাকলিন এবং ভ্যান বেভারের সাথে দেখা হয় এই কথকের। আর তখনই জ্যাকুলিন এর প্রেমে পড়ে যায় কথক।শুরু হয় উপন্যাসের নতুন অধ্যায়।যখন কোনো পুরুষ জ্যাকুলিনের দিকে তাকায় তখনই সেই পুরুষ নতুন একটি সৌন্দর্যমন্ডিত মুখমন্ডলের উপস্থিতি বুঝতে পারে। জ্যাকুলিনের রুপ এতই আকর্ষণীয় ছিলো যে,যখনই কোনো পুরুষ তাকে দেখতে সেই পুরুষ তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ত।তাই কথকেরও প্রেমে পড়াটা আশ্চর্যের কিছু ছিলো না।যখন আমরা এভাবে কাউকে দেখি তখন নিজের মনের মধ্যে একটা ধারনা নিয়েই তাকে পছন্দ করতে শুরু করে দেই।ঠিক তেমনি কথকেও জ্যাকুলিনের বিষয়ে কোনো কিছু না জেনেই তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।
শীতকালীন প্যারিসের চিত্তাকর্ষক ক্যাফেগুলি যা কথকের কাছে একটি বিষণ্ণতাপূর্ণ ও বিবর্ণতার চাদরে মোড়া একটি প্রেক্ষাপট ছিলো।কাহিনীর প্রতি আপনার অন্তনির্হিত শান্তির কথা স্মরণ করতে হলে অবশ্যই বইটি আপনার জন্যে সেরা একটি বই।উপন্যাসটি পড়ে যতটা বুঝেছি তাতে বইটার অনুবাদটা করতে অনুবাদকের অনেক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
‘আউট অফ দ্য ডার্ক’ উপন্যাসটির কাহিনী,চরিত্র,প্রেক্ষাপট যে কতটা হৃদয়বিদারক হতে পারে তা জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে চোখ রাখতে হবে উপন্যাসের পাতায়।
বই নিয়ে নিজস্ব মতামত
পরিশেষে বলতে চাই,প্রথমত প্রতিটা পাঠক অবশ্যই বইটার প্রচ্ছদের প্রেমে পড়তে বাধ্য থাকবে।দ্বিতীয়ত বইটার বাইন্ডিং কোয়ালিটি সত্যিই অসাধারণ। অনুবাদের কোথাও ভাষাগত কোনো ত্রুটি পাইনি।
⭕রেটিংঃ ৯/১০
ক্লাবের উদ্দেশ্য কিছু কথা
অবশেষে বলতে চাই, কয়েক দশক পর পর এমন কিছু বই বের হয় যা পাঠকের জীবনটাকে বদলে দেয় চিরদিনের জন্য। আর এই সকল বই গুলো যখন কোনো ভালো সংস্থা বা ক্লাবের মাধ্যমে একটু পরিমার্জিত,সুরুচিসম্মতভাবে পাঠকদের হাতে এসে পৌছায় আর ঠিক তখনই ওইসকল বইগুলোর পরিপূর্ণ স্বাদ,মাহাত্ম্য এক একটা পাঠকের অন্তরকে নাড়া দেয়। আর এইসব দিক দিয়ে নট ফর সেল ক্লাবের সম্পর্কে যতই লিখবো হয়তো সেটা ক্ষুদ্র হয়ে যাবে।একটা বইকে পরিপূর্ণ ভাবে যতটা ভালো করা যায় তার সবকিছুই যেন বইটাতে উজাড় করে দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে বলতে চাই,নট ফর সেল ক্লাব কে হাজার হাজার পাঠক চিরদিন মনে রাখবে এমন কিছু বই পরিপূর্ণভাবে পাঠকের হাতে পৌছে দেওয়ার জন্যে।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
⭕বিঃদ্রঃ [ভুল ত্রুটি মার্জনীয় ]
Leave a comment