অন্য রকম ভালোবাসা : তাহেরা আক্তার

বই : অন্য রকম ভালোবাসা  
লেখক : তাহেরা আক্তার
প্রথম প্রকাশ : এপ্রিল-২০২২
প্রকাশনা : ঐকতান প্রকাশন
বইয়ের ধরন : ইসলামি গল্পগ্রন্থ
পৃষ্ঠা : ৮০
মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা

লেখক পরিচিতি
লেখিকা তাহেরা আক্তার পেশায় কবি-লেখক ও সাংবাদিক, জন্ম : গাজীপুর জেলার টংগী থানায়। লেখিকার সাহিত্যের হাতেখড়ি শৈশব থেকেই। নানান প্রতিকূলতা ও বাস্তবিক জীবনের জর্জারিত ক্ষতে ছিন্ন ভিন্ন কিছু হৃদয়ে রবের বাণী গুলো পৌঁছে দিতে আপন করে নেন এই লেখা-লেখিটাকে। বাংলাদেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় তার শিক্ষা জীবনের লম্বা সফর কাটে। লেখিকারা সাহিত্যের পাশাপাশি সাংবাদিকতাতেও বেশ নেশা আর ঝোক রয়েছে। জাতীয়, আন্তর্জাতিক, অনলাইন পোর্টালসহ বিভিন্ন সাহিত্য ম্যাগাজিন ও সংবাদ পত্রের নিয়মিত লেখক তিনি। ইতোমধ্যে রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন- জাগরণ নিউজ ২৪’ ‘মিডিয়া ৭১ বাংলাদেশ বার্তা। দৈনিক কলম কথা দৈনিক আলোকিত পত্রিকায় । এছাড়াও সেচ্ছাসেবী সংগঠন “স্মাইল সিক্রেট অফ ইউর হেপিনেস গাজীপুর শাখা”র একজন সদস্য তিনি। পূর্বে প্রকাশিত তার যৌথ কাব্যগ্রন্থ সমূহ বিস্ফোরিত অক্ষর, বিজয় কেতন (অনিরুদ্ধ প্রকাশন) বইমেলা ২০১৯, ২০২১: মুক্তির সংগ্রাম (দ্বিপ্রান্তিক প্রকাশনা) বইমেলা ২০২০ অঙ্কুরিত কাব্যমালা (নীলাদ্রি প্রকাশন) ২০২০: পলাশী থেকে একাত্তর (সময়ের সুর প্রকাশন) ২০২১ । 
★বইটির সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ-
বইটিতে বিবাহিত দম্পতির এমন সব সূক্ষ্মাতিসুখ আমল আখলাক নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, যা সাধারণ দৃষ্টিতে অনেকে বোঝেই না। আর এতেই দেখা দেয় নানান সমস্যা! সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অজস্র পরিবার আজ সুখবিহীন ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে। একটু স্বস্তির আশায় দেহ-মন যেখানে হাহাকার সেখানে সামান্য এই লেখনী এনে দিতে পারে রহমতের বারিধারা। বইটি মূলত সাধারণ দীনহীন পরিবারগুলোর জন্যই বেশি কাজে আসবে ইন শা আল্লাহ। কারণে-অকারণে সংসারে লেগে থাকা কাছ থেকে মুক্তির দিশারি দিতেই এর অবতারণা। কিছু কিছু সমস্যা তাত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ের যা কেবল আমলের দরুন দূর করা সম্ভব বলে আমি মনে করি। উক্ত বইটি বিবাহিত দম্পতির জন্য একটি আমলি মেডিসিন ও অবিবাহিত যুবক যুবতীর জন্য অগ্রীম ভ্যালি। একজন স্বামীর কী করণীয় বা একজন স্ত্রীর মর্যাদা কতোটুকু তার স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি, আবার কিভাবে হালাল ভালোবাসাই কেবল পারে জীবনকে বিমোহিত করতে বইটিতে তার স্বরূপ উন্মোচন হয়েছে। যা সাহিত্যেও মোড়কে গল্পে গল্পে লেখনীতে উঠে এসেছে।
★ “হৃদয়ের বাসনা”,” অন্য রকম ভালোবাসা ” “প্রিয়তমার আঁচল মাঝে ” ফুল শয্যার উপহার”, “স্বামী-স্ত্রীর মাঝে নেক আমলের বারাকাহ”এবং “” প্রথম দেখায় ভালো লাগা” – এই ছয়টি গল্প আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর লেগেছে।
 
★ ‘হৃদয়ের বাসনা’ গল্পটি শুরু হয় নামাজ না পড়ার কারনে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অভিমান দিয়ে,গল্পটির শেষে অনেক সুন্দর ভাবে শেষ করা হয়েছে যেটা পাঠকরা না পড়লে বুঝতে পারবেনা,
★”অন্য রকম ভালোবাসা ’ গল্পটি ছিল  বর্তমান সময়ে আমরা ভালোবাসা বলতে কি বুঝি এবং কারো প্রতি আসক্ত হলেই আমরা তাকে ভালোবাসা বলি,মূলতো পুরো গল্পটা একজন স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসা কেমন থাকা উচিত,স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা কেমন থাকা উচিত সেই বিষয়ে লেখা।
★”প্রিয়তমার আঁচল মাঝে” গল্পটি ছিলো সদ্য বিয়ে করা দাম্পত্য জীবন নিয়ে, 
না পড়লে বুঝানো যাবেনা, তবে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে গল্পটা, 
★”ফুল শয্যার উপহার” গল্পটি ছিলো একজন মর্ডান মেয়েকে নিয়ে,সে সব কিছু ফেলে দিনের প্রতি আসক্ত হলে কিভাবে, 
এবং একজন নেককার স্বামী পারে একজন নেককার স্ত্রী করতে,
★”স্বামী -স্ত্রীর মাঝে নেক আমলের বারাকাহ” গল্পটি ছিলো স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে ছোট ছোট নেক আমলের বারাকাহ নিয়ে,
স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কেমন দিনদার হওয়া দরকার,
★”প্রথম দেখায় ভালো লাগা” গল্পটি ছিলো একটি ছেলে প্রথম দেখাতেই একজন কে পছন্দ করে এবং পরে তাকে হালাল সম্পর্ক গড়ে তোলে(বিয়ে করে)যে যাকে অনুভব করে তাকেই যেনো বিয়ে করে হাদিসে সেই ইঙ্গিত দেওয়া আছে,
সেই কাজটা ছেলেটির পরিবার সহজ করে দিয়েছে।
★বইটি পড়ে আমার অনুভূতিঃ-
 এই জগতের পিছনে আমরা ছুটি,নানা রকম হারাম রিলেশন এ জরিয়ে পরি,বইটি পড়ে অনেক কিছু জানলাম, শিখলাম,বইটি লেখিকা অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন, সবার সহজ ভাবে বুঝার জন্য,আসলে আমরা এখনো অনেকে যানি না স্বামীর
 প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসা কেমন হওয়া দরকার,
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা কেমন হওয়া দরকার,  বইটিতে এই সব বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে,এবং একজন নেককার স্ত্রী পারে তার ভালোবাসা দিয়ে স্বামীকে নেককার করতে,
একজন নেককার স্বামী পারে তার স্ত্রী কে নেককার বানাতে,
সর্বপরি,আমার ধারনা বইটি সবার পড়া উচিত।
বইয়ের সব গুলো গল্প আমার কাছে ভালো লেগেছে, 
★বইয়ের প্রিয় কিছু লাইনঃ-
★★নতুন দিনে আসবে নতুন ক্ষন;
এখন থেকেই ভালো হবো করছি মোরা পন’
★★আপনার প্রতিপালকের শপথ!আমি তাদের প্রত্যেকের জিজ্ঞাসাবাদ করব।তারা(ভালো বা মন্দ) যা কিছু করেছে সে সম্পর্কে। “
★★”প্রহর শেষের আলোয় রাঙা
সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম 
আমার সর্বনাশ!”
★★”তোমরা খাও এবং পান করো কিন্তু অপচয় করোনা,নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা অপচয় কারীকে ভালোবাসেন না”
★★”পড়ছে-“স্রষ্টা বলেছেন, তুমি যাকেই আমার চেয়ে বেশি ভালোবাসবে, আমি তাকেই তোমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবো। এবং তোমাকে একা করে রাখব।”
★★’কখনো বলবেনা আমি তাকে ছাড়া বাঁচবোনা। তাকে ছাড়াই তোমাকে বাঁচাবো। এবং পেছনের অনুগত সব আবেগ কেড়ে নিয়ে, তোমাকে দিব্যি সামনে নিয়ে যাব। তবে আমি
★★তুমি কী দেখোনা? ঋতুরাও বদলাতে থাকে। ছায়া দেয়া গাছের পাতারাও যায় শুকিয়ে। ধৈর্য হারিয়ে যায় কিন্তু তোমার স্রষ্টা ধৈর্যশীল ও পরম দয়ালু, সেই ঝরে যাওয়া পাতার ডাল থেকেই আবার সবুজ পাতা গজায়, তুমি কী দেখো না তোমার স্রষ্টার এই নিদর্শন? যে মানুষটাকে তুমি নিজের অংশ ভাবতে, সেই মানুষটাই একদিন অচেনা হয়ে যায়, তোমার মন ভেঙে যায়।
★★তোমার বন্ধুও শত্রুতে পরিণত হয় আর শত্রুও খানিক সময় পরে পরিণত হয় বন্ধুতে। যে মানুষটাকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতে সেও প্রতারণা করে। তবে তুমি কেন স্রষ্টা বিমুখ হয়ে মানুষকে ভরসা করো?
★★অদ্ভুত এই পৃথিবী!যখন তুমি ভাবো এটা হবেনা কখনো,কিন্তু পরোক্ষনে সেটাই হয়।সেটাই হবার নয় কী?
তুমি বলো, ‘আমি পড়বোনা’ অথচ তুমি পড়ো।
তুমি বলো’আমি বিস্মিত হবোনা!’
অথচ তুমি রোজ বিস্মিত হও।এবং সবচেয়ে বিচিত্র বিষয় হচ্ছে-তুমি বলতে থাকো ‘আমি মরে গেছি’অথচ তুমি বাঁচো,বেঁচে থাকো।তোমার স্রষ্টা তোমাকে বাঁচায়,তোমার স্রষ্টা তোমাকে বাঁচিয়ে রাখেন।
★★”নিশ্চয়ই তোমাদের স্ত্রীর কাছে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রশান্তি”।
চল! ছুঁয়ে দেখি কিছু আলতো অনুভব; 
আর কিছু রাতের-নীরবতা! 
ভেঙেচুরে নামুক আজ 
হৃদয়ে-আবেগীর উষ্ণতা। 
থাকুক না, কিছু পাওয়ার 
পরম অনুনয়
 সাথে মূল্যহীন ব্যাকুলতা !
এ যে জীবন মাঝে এক অন্যরকম ভালোবাসা’ !
★★তোমাকে শুধু কল্পনায় পেয়েছি একান্তে বার বার খুব করে কাছে চেয়েছি। তোমার আঙ্গুল স্পর্শ করা হয় নি আমার, তোমার চোখে চোখ রাখা হয়নি কখনো আর হয়নি মুগ্ধতা নিয়ে তোমার হাসিতে বিলিন হওয়া।
তোমার অনুপস্থিতি এ হৃদয়ে অনুভূত হয়েছে লক্ষ কোটি বার। একবার খুব কাছে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা একটু একটু করে তীব্রতর হচ্ছে মনে।
এক অজানা অনিশ্চিয়তার ভর বাসা বেধেছে হৃদয়ে ! তোমাকে একবার দেখার ব্যাকুলতা নিয়ে যদি একদিন মরে যাই? সেদিন কী শূন্যতায় ছেয়ে যাবে তোমার হৃদ সুরের মানলা
তুমি আসবে, পাশেই বসবে কিন্তু আমার নিস্তেজ দেহ আর তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে
না। ছুঁয়ে দেখতে পারবে না আমার- তুমিটাকে।
এ শহরের অলিগলি অপেক্ষমান থেকেও আমাদের প্রেমের সাক্ষী হতে পারবে না, বাতাস ব্যর্থতায় ভারী হয়ে উঠবে।
সাক্ষী হবেনা এলোমেলো চুল ঠিক করার বাহানায় তোমার-আমার কাছে আসা!! কিছু আক্ষেপ বার বার হানা দেবে মনে; না পাওয়ার যন্ত্রণা দিনের সাথে সাথে তাঁর থেকে তীব্রতর হবে। হয়তো তোমার মন সংকেত দিবে তোমার কী যেনো নেই, পেয়েও পাওয়া হলো না তোমায় হে আমার ভালোবাসা”
★ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ১০/১০
 সবার ভালো লাগা একরকম না, আমার কাছে যেমন লেগেছে তেমনটা উপস্থাপন করেছি,
বিঃদ্রঃ আমি রিভিউ তেমন গুছিয়ে লিখতে পারিনা, তাই কোন ভুল হলে,ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।
“”ধন্যবাদ সবাইকে””
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?