December 11, 2023

সায়েন্সভেঞ্চার বইটি পরেছেন কখনো? না পড়লে এই রিভিউটি দেখুন

সায়েন্সভেঞ্চার

সায়েন্সভেঞ্চার কালেক্টর এডিশন লে আউট করার স্বার্থে বইটা বেশ কয়েকবার পড়েছি। সেই সুবাদে ছোটখাটো একটা রিভিউ, এইখানে বিস্তর কিছু লিখি নি। 

কোনো বইয়ের রিভিউয়ের জন্যে যে বিশাল বড় করে পুরো বইয়ের লাইন ধরে ধরে রিভিউ লিখতে হবে তাদের সাথে আমি একমত নই। দুই পাঁচ লাইনে লিখলে সে যে বইটা পড়ে নি এমন ও কিন্তু ভেবে বসে থেকে নিজের মনে কিচ্চা সাজানো যাবে না। অবার কেউ দুই পাঁচ লাইন লিখে দিলেও সে যে বইটা পড়েছে এমন ও ধরে নেওয়া যায় না, তবে লেখার ভঙ্গিমা দেখলে বোঝা যায়।

 

সায়েন্সভেঞ্চার নাঈম হোসেন ফারুকীর লেখা বই। মিউটেশন কিভাবে হয়, বিবর্তিত হতে কী কী পরিবর্তন হতে হবে, সেল গুলোর কী ধরনের পরিবর্তন আসবে এসবের জন্যে এই বই না। ৪৬০ কোটি বছরের ধাপে ধাপে আসা যুগ গুলোয় যদি আপনি বর্তমান থাকতেন তবে কী হতো আর কী কী দেখতেন সেভাবে লেখা একটা বই। বইটা যদি আসলেই আপনি অনুভব করতে চান তবে নিজেকে বইয়ের সেই সার্ভাইভ করা মানুষের জায়গায় বসাতে হবে। 

বইয়ের শুরুতে কয়েকপাতা আপনাকে 🐜 ম্যান বানিয়ে পুকুরে লতাপাতা, ব্যাক্টেরিয়া সহ বেশ কিছু জীবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে।

এরপর হেডিয়ান যুগ থেকে শুরু হবে আপনার যাত্রা। বইয়ের ভালো দিক হচ্ছে বইয়ের শেষে রেফারেন্স আছে চাইলে আপনি সার্চ করে তথ্য যাচাই করতে পারেন, কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে এগুলো দেখতে পারবেন।

আপনার আসে পাশের অনেক কিছু কী থেকে বিবর্তিত হয়ে এসেছে, কবে পৃথিবীর বুকে এসেছে এসব বইয়ে আছে। যেমন ডেভোনিয়ান হচ্ছে মাছের যুগ। 

এই ডেভোনিয়ান যুগেই হাড়যুক্ত পাখনা সংবলিত মাছ অন্তর্ভুক্ত ছিল পরে প্রথম টেট্রাপড হতে ভূমিকা রেখেছিল।

আপনারা নিয়মিত খাওয়া মুরগি যে টিরেক্স থেকে আসে নি, কিংবা বিরাট ডাইনোসর থেকেও আসে নি, তাহলে মুরগির বিবর্তন কোথা থেকে? এসব বইয়ে আছে।

কর্বনিফেরাস হচ্ছে আমার পছন্দের যুগ। কখনো ভেবেছেন একটা ড্রাগন ফ্লাই, গ্রিফিন ফ্লাই এর উইংস্পান ২৮ ইঞ্চি? মানে প্রায় আড়াই হাত লম্বা। বইয়ে এই বিশাল বিশাল পোকামাকড় সম্পর্কে তুলনা আর আপনি থাকলে আরো কী কী নিজে সাক্ষী হতেন, এসব নিয়ে বিশাল বড় একটা গল্প আছে। সবার পছন্দের জুরাসিক, আর ক্রেটাসিয়াস ডাইনোসরদের শেষ সময় ও বাদ পড়ে নি।

 

বইয়ের কিছু বিষয় আমার খুব বেশি বিরক্তিকর লেগেছে। যেমন কাজিন, টাইপ, ইত্যাদি।

লেখাকে পাঠককে সহজে বোঝানোর স্বার্থে সহজ ভাষা ব্যাবহার করা ভালো, তবে এমন ভাষার ব্যাবহার একটু অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কাজিন এর পরিবর্তে নিকটাত্মীয়, টাইপ এর পরিবর্তে ধরনের ব্যাবহার করলে পড়তে ও ভালো লাগে, ‘ নিকটাত্মীয়’ আর ‘ ধরনের ‘ দুর্বোধ্য কোন শব্দ না।

_

রেটিং নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, .৭ কেনো, .৮ কিংবা .৬ কেনো হলো না। আসলে এভাবে কোনো কিছুর রেটিং করা যায় না। এই যে রেটিং দিয়েছি। এইটার ও পক্ষে না আমি। প্রত্যেক পাঠকের একদম ব্যাতিক্রমধর্মী মতামত ভালোলাগা থাকতে পারে।

কেমন বই, এইটা শুনলে আমার উত্তর হবে ৪৬০ কোটি বছরে কোন যুগে কী হয়েছে এসব জানার জন্যে নিঃসন্দেহে ভালো একটা বই।

2 thoughts on “সায়েন্সভেঞ্চার বইটি পরেছেন কখনো? না পড়লে এই রিভিউটি দেখুন

  1. Shadhin Sarker এইটা ধার নিতে চাই৷ আছে তোমার কাছে? মোহাম্মদপুর বা কলেজগেটের দিকে আসলে বইলোএকদিন?

  2. Reply
  3. একবার না, একাধিকবার পড়লাম, পুরো বই একবারই পড়েছি। কিছু যুগ দুই তিনবার পড়েছি। – মৌশ্রী দেবনাথ জ্যোতি

  4. Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *