বই : দ্য রোড অব প্রফেটস লেখক : আইনুল হক কাসিমী প্রকাশনায় : পথিক প্রকাশন – Pothik prokashon আগামী মাসের প্রথমদিকে আসছে ইনশা আল্লাহ। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ফিরআউনের ভয়ে পলায়ন করেছিলেন। ফলে তাঁর সঙ্গে কোনো সাথিও ছিল না, পথপ্রদর্শকও ছিল ...Read more
বই : দ্য রোড অব প্রফেটস
লেখক : আইনুল হক কাসিমী
প্রকাশনায় : পথিক প্রকাশন – Pothik prokashon
আগামী মাসের প্রথমদিকে আসছে ইনশা আল্লাহ।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ফিরআউনের ভয়ে পলায়ন করেছিলেন। ফলে তাঁর সঙ্গে কোনো সাথিও ছিল না, পথপ্রদর্শকও ছিল না। এমনকি কোনো পাথেয়ও তাঁর সঙ্গে ছিল না। আর দ্রুত চলার জন্য তাঁর পা দুটিও ছিল খালি। ইমাম তাবারি রহ. হজরত সাইদ বিন জুবাইর রা. থেকে রেওয়ায়েত করে লিখেছেন যে, এই গোটা সফরে মুসা আলাইহিস সালামের খাদ্য গাছের পাতা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। নগ্নপদ হওয়ার কারণে এই দীর্ঘ সফরে তাঁর পায়ের তলার চামড়া পর্যন্ত খুলে গিয়েছিল। এই অস্থির ও উদ্বিগ্ন অবস্থায় হজরত মুসা আলাইহিস সালাম মাদইয়ানের ভূমিতে প্রবেশ করলেন।
.
দীর্ঘ পথ ও পাহাড়-সাগর পেরিয়ে মাদইয়ান শহর। পথ চলতে চলতে মুসা আলাইহিস সালাম ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তৃষ্ণা নিবারণের জন্য তিনি একটি কূপের নিকট গেলেন। কিন্তু সেখানে প্রচণ্ড ভিড়। রাখালের দল ও অন্যরা নিজ নিজ পশুপালকে পানি পান করাচ্ছে। ভিড়ের মাঝে মুসা আলাইহিস সালাম দেখলেন, দুজন যুবতি একপাশে দাঁড়িয়ে আছেন। অপেক্ষা করছেন পুরুষের ভিড় কমে যাওয়ার। তাদের পশুদের পানি পান করানোর জন্য এসেছেন তারা।
মুসা আলাইহিস সালাম তাদের অবস্থা জানতে চাইলেন। তাদের উত্তর ছিল এ রকম যে, ‘আমরা পুরুষের ভিড়ে পানি পান করাতে সংকোচবোধ করছি। আমরা অপেক্ষা করছি, রাখালদল চলে গেলে পানি পান করাব। তা ছাড়া আমাদের পিতা একজন অতিশয় বৃদ্ধ। তিনি এ কাজ করতে অক্ষম। তাই আমরা বাধ্য হয়ে এখানটায় এসেছি।’
তাদের কথা শুনে মুসা আলাইহিস সালামের হৃদয় বিগলিত হয়ে গেল। কূপ থেকে পানি উত্তোলন করে তিনি তাদের পশুদের পানি করালেন। যুবতিদ্বয় খুশি মনে বাড়ির পথ ধরলেন। যুবতিদ্বয়ের খিদমত করে ক্লান্তশ্রান্ত মুসা পথের পাশেই ছায়াদার বৃক্ষের নিচে বসলেন। একটু জিরিয়ে নিলেন। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন। সফরে সূর্যতাপ তাঁকে তৃষ্ণার্ত ও ক্ষুধার্ত বানিয়ে দিয়েছে। সেখানে বসে তিনি মহান আল্লাহর নিকট দুআ করলেন, তিনি যেন উত্তম মেহমানদারির ব্যবস্থা করেন। পানাহারের ব্যবস্থা করেন।
কূপ থেকে পানি উত্তোলন করা চাট্টিখানি কথা ছিল না। কূপ ঢেকে রাখার জন্য একটা বিশাল পাথর রাখা হতো। যারা কূপ থেকে পানি উঠাত, তারা পানি নেওয়ার পর সে পাথর দিয়ে কূপ ঢেকে চলে যেত। পরে যে আসত, তাকে আগে সেই বিশাল পাথর সরাতে হতো, এরপর বালতি ও রশি ঠিকঠাক করেই পানি উঠাতে হতো। তাগড়া জোয়ান মুসার বদৌলতে সেই যুবতিদ্বয়ের এত কষ্ট পোহাতে হয়নি।
যাক, বৃদ্ধ পিতার কন্যাদ্বয় বাড়ি ফিরলেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় আগে বাড়ি ফেরায় পিতা খানিকটা বিস্মিত হলেন। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা পিতার নিকট সব ঘটনা খুলে বললেন। বৃদ্ধ ঘটনা শোনে দ্রুত এক মেয়েকে পাঠালেন—তাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে। অপরিচিত লোকটিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত। এ ব্যাপারটা কুরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন :
‘অতঃপর বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, ‘আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার প্রদান করেন। অতঃপর মুসা যখন তাঁর কাছে গেলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন, তখন তিনি বললেন, ভয় করো না, তুমি জালিম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।’[1]
[1] সুরা কাসাস : ২৫।
জি পেতে চাই
জি পেতে চাই
See less