বইঃ Harry Potter and The Cursed Child
লেখকঃ J. K. Rowling, John Tiffany & Jack Thorne
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৩৪৩
বইটা মূলত একটা স্ক্রিনপ্লে। থিয়েটারের জন্য লেখা নাটকের মতো। একটা অরিজিনাল স্টোরি যেটা তিন লেখক মিলে লেখে সেটার উপর ভিত্তি করে জ্যাক থোর্ন এটাকে নাটকের রূপ দেয়।
এখানে কাহিনিটা শুরু হয় ব্যাটেল অফ হগওয়ার্টসের অনেক পরে। হ্যারি এখন মিনিস্ট্রি অফ ম্যাজিকে কাজ করে, হারমোনি মিনিস্টার অফ ম্যাজিক। অবশ্য গল্পের মূল চরিত্র হলো আলবাস, হ্যারির ছেলে আর তার বন্ধু স্কোরপিয়াসের এডভ্যাঞ্চার।
আলবাসকে সবাই দেখে দ্যা চুজেন অন, দ্য বয় হু লিভড, হিরো অফ ব্যাটেল অফ হগওয়ার্টসের ছেলে হিসেবে। আর ম্যাজিকে তার অদক্ষতা, হগওয়ার্টসে খারাপ ছাত্র হওয়ায় তাকে নিয়ে অন্যরা হাশি তামাশা করে। সে কেন গ্রিফিন্ডরে না গিয়ে স্লিদারিনে গেলো এটা নিয়েও সবাই কথা বলতে থাকে। মানে তার ব্যক্তিসত্তাকে দেখা হয় হ্যারির ছেলে হিসেবে আর এটা তাকে তার বাবার প্রতি বিদ্বেষ এনে দেয়। দেখা যায় বাবা ছেলের টানা পোড়েন। হ্যারির যে নরম চরিত্র অন্যান্য বইগুলো এবং সিনেমায় আমরা দেখেছি সেটার থেকে ব্যতিক্রম এক হ্যারিকে এখানে পাওয়া যায়।
কাহিনির শুরুটা হয় এক টাইম টার্নার মিনিস্ট্রির হস্তগত হওয়ার পর। ট্রিউইযার্ড গেইমে হ্যারি আর সেড্রিক নামে এক ছেলে ভলডমর্টের কাছে চলে যায়। তো সেখানে ভলডমর্ট সেড্রিককে হত্যা করে। সেড্রিকের বাবা এই খবরটা শুনে হ্যারির কাছে আসে, যাতে সে টাইম টার্নার ব্যবহার করে তার ছেলেকে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু হ্যারি সেটা পারবে না, কারণ এতে করে টাইমলাইনে বড় ধরনের গড়বড় সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু তাদের এই কথপোকথন আলবাস শুনে ফেলে এবং ডেলফি নামে এক মেয়ের প্ররোচনায় পড়ে সে টাইম টার্নারটা চুরি করে। এরপর শুরু হয় আসল কাহিনি।
কাহিনিটার মধ্যে স্কোরপিয়স, যাকে কি না সবাই ভলডমর্টের ছেলে হিসেবে জানে এবং এই অস্বস্তিকর গুজব থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য তার বাবা ড্রেকো মেলফয় আপ্রাণ চেষ্টা করে। সবচেয়ে মজার ব্যাপারটা ছিলো এই ড্রেকো মেলফয়। হ্যারি যেখানে ক্রমে রূঢ় হতে থাকে ড্রেকো সেখানে তার সেই অহংকারি ভিলেন টাইপ চরিত্র থেকে ফিরে আসে একজন স্নেহশীল পিতা এবং হ্যারির বন্ধুরূপে। এ ছাড়াও গল্পে বিভিন্ন টাইম লাইন ক্রিয়েট হয়, সেসব জায়গায় প্রোফেসর সেভেরাস স্ন্যাপ, ডাম্বলডোর এদেরকেও দেখা যাবে।
বেশ কিছু টুইস্ট আছে বইটাতে। নাটক হওয়ার পরেও কাহিনিটা ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে আলাদাভাবে। যদিও বইটাতে সবকিছুই খুব সাদামাটা ছিলো। জে কে রাওলিংয়ের সেই ইমাজিনেশন, স্টোরি টেলিংয়ের যে ম্যাজিকাল পদ্ধতি তা অনেকাংশেই এই গল্পে নাই। তারপরেও কাহিনিটা ধরে রাখতে পারে এবং যথেষ্ঠ উপভোগ্যই মনে হয়েছে কাহিনিটা।
অনেকদিন পর এই বইটা কেমন শৈশবের কথা মনে করিয়ে দিলো। একটা ভাবালুতা কাজ করেছে বইটা পড়তে গিয়ে।
Leave a comment