বইয়ের নামঃ রাত্রি শেষের গান
লেখকঃ শরিফুল হাসান
প্রকাশনীঃ বাতিঘর
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ১২৬
মুদ্রিত মূল্যঃ ১৫০৳
শুরুর_আগেঃ
————————
শুরু থেকেই আপনার মনোযোগ আটকে রাখতে সক্ষম “রাত্রি শেষের গান”। থ্রিলার বই এমনই হতে হয়, প্রথম এক কি দুই পাতা পড়লেই যেন এমন একটা অবস্থা হয়, পুরো বই শেষ না করে যেন আর শান্তি পাওয়া না যায়। প্রথম দুই পাতা পড়ে ফেলতে পারলে এই বই আর রাখতে পারবেন না।
কাহিনী_সংক্ষেপঃ
——————————-
সাদাসিধা মানুষ মাইনুল। খোঁড়া পা নিয়ে কাজ করে একটা গ্যারেজে। স্ত্রী আর একমাত্র মেয়ে ফুলিকে নিয়ে একটা বস্তিতে থাকে। ফুলির অনেক জ্বর, ডাক্তার দেখানো দরকার। কিন্তু মাইনুলের কাছে কোনো টাকাপয়সা নেই। কী হবে এখন? টাকার খোঁজে বের হল মাইনুল। ব্যস, পড়ে গেল ঝামেলায়।
এলাকার প্রাক্তন এমপি’র ছেলে কবির খানকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। এমপির মৃত্যুর পর ইলেকশনে কবির খানেরই দাঁড়ানোর কথা ছিল। শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে কবির খানকে। ব্যক্তিগত আক্রোশ নাকি রাজনৈতিক কোন্দল? রেকর্ড বলে পার্টি থেকেও কবির খানকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল আগামী নির্বাচনের। তাছাড়া কবির খানের ইলেকশন করা নিয়ে দলের আর কারো কোনো মাথাব্যথা নেই, তাদের চোখে কব্জ্র খানই যোগ্য লোক। তাহলে খুন হলো কেন?
লোকাল থানার ওসি আরিফ আর তার সহকারী হাফিজের চোখে ঘুম নেই। যে করেই হোক কবির খানের খুনিকে বের করতে হবে। উপর থেকে প্রেশার আসছে খুব। এদিকে এক খুনের তদন্তের কূল-কিনারা না হতেই আরেকটা খুন হয়ে গেল। কবির খান যেখানে খুন হয়েছিল ঠিক তার পাশেই। দুটো খুন কি একই সূতোয় বাঁধা?
পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ
————————–
কিছু ব্যাপার আমার কাছে ধোঁয়াটে মনে হয়েছে আমার। বইয়ের কাহিনীটা যে এলাকায় ঘটেছে, পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে সেটা ঢাকার মধ্যেই কোনো একটা এলাকায় ঘটেছে। আবার এক জায়গায় আজিমপুরের কথাও বলা হয়েছে। যেহেতু একটা বস্তির কথাও বলা হয়েছে এবং আজিমপুরকে বলা হয়েছে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি, সেহেতু লালবাগ বা পুরান ঢাকা হতে পারে, অথবা আজিমপুরও হতে পারে। কিন্তু আরেক ঘটনায় বলা হয়েছে, ঘটনা নিশ্চয় খুব গুরুতর, নয়তো ঢাকা থেকে ফোন আসতো না। এটা হলো থানার ওসির কথা। যে জায়গায় খুন হয়েছে তার পাশের থানাই তদন্ত করছে, কিন্তু বলা হচ্ছে ঢাকা থেকে ফোন এসেছে যেহেতু, কেসটা গুরুত্বপূর্ণ। তার মানে কী দাঁড়ালো? আমার মনে হয় লেখক এই জায়গায় কিছুটা গুলিয়ে ফেলেছেন। তাছাড়া যেহেতু মার্ডার মিস্ট্রি, আমার মনে হয় এখানে স্থানের উল্লেখ করাটা জরুরি ছিল।
সমালোচনাঃ
————————-
গল্পের প্লট ভালো ছিল। এক্সিকিউশন আরো ভালো হতে পারতো।
★খোড়াব্যক্তিদের খুনি হিসেবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে, ৫জনের মধ্যে হুট করে মইনুলকে বেছে নেওয়া হল৷ একজন পাগল, আরেকজন বেকার – এই যুক্তিতে সন্দেহভাজনদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়াটা বোধগম্য হয় নি।
★ফোনের মধ্যে পুলিশ শুনতে পায়, বাসের হেল্পার যাত্রী তুলার জন্য “নান্দাইল” বলে চিৎকার করছে। এই সুত্র থেকেই পুলিশ ধরে নেয় মাইনুল নান্দাইলই যাচ্ছে।
★সাজু এবং সুমনা এর ভূমিকা গল্পে ক্লিয়ার না। যুবক সাজুর মৃত্যুর ব্যাখাও পছন্দ হয় নি।
“সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল। সেই ঘুম আর ভাঙলো না।”
ব্যক্তিগত_মতামতঃ
——————————–
ছোট গোছানো লেখা। শুরুতেই যখন দেখেছি খুব সাধারণ একটা গল্প আর খুনি কে সেটাও সিম্পলি বোঝা গেছে, তখুনি বুঝেছি এখানে কোন ‘কিন্তু’ আছে। কিন্তু এ পর্যন্তই। ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারিনি আসল ঘটনাটা কোনদিকে যাচ্ছে। শরীফুল ভাইয়ের লিখনশৈলী আর সুন্দর প্লটটায়, সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লেগেছে।
যদি রহস্যের পাগল হয়ে থাকেন, থ্রিলার আপনার পছন্দের জনরা হয় তবে পড়তে পারেন!☺️
ভুলত্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি গ্রুপিং!!
Leave a comment