রহস্য মাখা রাত—–
Writer: RejoNur
Part : 2+3
ঘুম ভাঙার পরে তানিশা লক্ষ্য করে আজও সে ধর্ষণের শিকার। কিন্তুক মিম গেল কোথায়?
– Where is Mim ?
পরে তানিশা ফ্লোর থেকে ওর জামা কাপড় তুলে গাঁয়ে জড়িয়ে নেয়। কিন্তুক চিন্তার বিষয় এটাই মিম হঠাৎই উধাও হয়ে গেল ক্যান ? কি করে উধাও হয়ে গেল? মিম তো ওর পাশেই নিদ্রাবিহীন গগনতলে প্রেমের আলাপ করছিল ফোনে আর ও ঘুমিয়ে গিয়েছিল। মিমকে সারাবাড়ি খোঁজার পরেও চরন পর্যন্ত মিলল না। তানিশা যেন ভয়ে জমে যাচ্ছে। একসাথে দুজন নিদ্রাহীন ভাবে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎই আমি নিদ্রায় তলিয়ে যাই। আগের দিনের মতো করে ধর্ষণের শিকার হলাম কিন্তুক মিম হঠাৎই হাওয়া হয়ে যাওয়ার কারণটা কি? হঠাৎই ছাদের দিকটায় তানিশা কারো পাঁয়ের আওয়াজ পায় ভীষণ ভাবে। আস্তে ধরে করে তানিশা গভীর ভয়ে আগাতে থাকে ছাঁদের দিকে। ছাদে গিয়ে তানিশা হতভম্ব। পুরো ছাঁদ একেবারে ফাঁকা। ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষন তানিশা। খুব ভয় জাগ্রত হয়েছে তানিশার ভিতরে কিন্তুক ধর্ষণের বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে এসব করতে হচ্ছে তানিশার। আর তানিশা বুঝতে পারে রাত এখনো অনেক রয়েছে। কারণ এখনো চারিদিকে ঝকঝক করছে জ্যোৎস্না আলোয়। তারমানে তাঁর কানে আসা আযান টা ভুল ছিল। ভুল ছিল মানে হয়তো সে ভুল শুনেছিল।
ততক্ষনে তানিশা দেখতে পাই কেউ একজন তাঁদের বাড়ির গেইট দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে চাদর মুরি দিয়ে। তানিশা তখন ভাবতে থাকে এই সেই ব্যাক্তি হয়তো যে আমাকে ধর্ষণ করে প্রতিটি রাতে। কিন্তুক কেন এমন করে? কি করেছি আমি তাঁর কাছে বিষয়টা আমার জানতে হবে।
তানিশা পিছু নিতে থাকে চাদরে মোড়ানো মানুষটার। হঠাৎই পিছু নিতে নিতে তানিশা হারিয়ে ফেলে মানুষটাকে।
তানিশা ততক্ষণে বুঝতে পারে সে একটা নদীর ঘাটে পৌঁছে গিয়েছে। এই ঘাট টায় তানিশার কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে। চোখের সামনে ঘাটের ভেসে আসা স্মৃতি মনে পরেও পড়ছে না। তবে তানিশা শিওর যে এর আগে ও এখানে কখনো আসেনি। কিন্তুক চেনা জায়গা, চেনা স্মৃতি এমনটা মনে হচ্ছে যেন তানিশার কাছে।
জ্যোৎস্না প্লাবিত নিশিরাত। তানিশা তাকিয়ে দেখল নদী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নদীর কোন কোলাহল কানে ভেসে আসছে না তানিশার কানে।
তানিশা নিজেকে আবিষ্কার করে সে জনমানবহীন ঘাটে এসে উপস্থিত। কোন প্রকার জিন মানুষ্য নেই। তানিশার খুব ইচ্ছে করছে নৌকা করে এখন ঘুরতে কিন্তুক কোন প্রকার ঘুরতে যাওয়ার ওয়ে না থাকায় নদী ভ্রমণ হলো না তানিশার।
জ্যোৎস্না রাতে নিরব ঘুমন্ত নদীতে ভ্রমণ করার মজা টাই আলাদা।
তানিশা উঠে যায় নৌকার ছইয়ের ভিতরে। তারপর নদীর শীতল হাওয়া গাঁয়ে জড়াতেই ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে যায় তানিশা।
।
সকালে ঘুম ভাঙাতে তানিশা নিজেকে আবিষ্কার করেন হাসপাতালে। তানিশা এটাও আবিষ্কার করে ফেলে কালকে ও ২ বার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। একবার নিজ ভবন থেকে আরেকবার খোলা আকাশের নীচে নৌকার ছইয়ের ভিতরে।
কতক্ষণ পরে ওর ভাইয়া ভাবি ওর কাছে এসে বলতে লাগল।
– কেমন লাগছে বোন তোর এখন?
– ভালো ভাইয়া।
– কি হয়েছিল তোর? তুই নদীতে ক্যান গিয়েছিলি?
– ভাইয়া মনটা খারাপ ছিল। তাই মনটা ফুরফুরা করতে নদীতে গিয়েছিলাম।
– তাই বলে এতো রাতে?
– হুমম।
– সেটা না হয় ভালো কথা কিন্তুক তুই মিমের সাথে ঘুমিয়ে ছিলি তারপর নাকি তুই ওকে গভীর রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে নিজে ড্রাইভ করে ওকে বাড়িতে রেখে এসেছিস। আর তুই ওকে বাড়িতে রেখে ক্যান আসলি আবার সাথে করে বাড়িতে ক্যান নিয়ে এসেছিলি? আর নদীতে একাকী না গিয়ে মিমকে সাথে করে নিয়ে যেতে পারতিস।
– কি বল ভাইয়া? এসব কথাগুলো আমি তো নিতে পারছি না। প্লিজ ভাইয়া চুপ করো।
– ওকে তুই এখন রেস্ট কর । আমি বরং ডাক্তার সাহেবের সাথে কথা বলে আসি।
– ওকে ভাইয়া।
তানিশা ভাবছে আজব তো আমি আবার কখন মিমকে বাড়িতে দিয়ে আসলাম। ও হয়তো ওর বয়ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়েছিল এখন বলছে আমি দিয়ে এসেছি ওকে বাড়িতে। নিজে বয়ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করার একটা সুযোগ ও পেয়ে যায় আবার দোষারোপ ও আমার উপরে চাপিয়ে দেয় যাতে ওর ফ্যামিলি ওকে সন্দেহ না করে।
তানিশা আবার ভাবছে সে কি সব ভাবছে মিম সম্পর্কে? মিম তো তাঁর বেস্টফ্রেন্ড। কলেজ লাইফে পরিচয় হলেও মিম তাঁর বেস্টফ্রেন্ড।
।
হাসপাতাল থেকে সেদিনই তানিশাকে রিলিজ করে দেওয়া হয়। তারপর মিম দেখতে আসে তানিশাকে।
ছাদে রেলিং ঘেঁষে দুজন দাঁড়িয়ে রয়েছে।
– তুই আমাকে আজকে একা ফেলে বাড়িতে ক্যান চলে গিয়েছিলি ?
– তুই আমাকে নিজে বাড়িতে রেখে এসেছিস জোর করে!!
– আমি এই কথাটা কোন ভাবেই বিশ্বাস করিতে পারব না?
– দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি তুই নিজে ড্রাইভ করে আমাকে বাড়ি দিয়ে এসেছিস।
তারপর মিম ওর ফোন বের করে তানিশার ড্রাইভিং করার ভিডিও দেখায় যে ও নিজে ড্রাইভিং করে বাসায় দিয়ে এসেছে। ভিডিও টা যেন বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তানিশার। তারপর ও বিশ্বাস করে নিলো । আর ড্রাইভিং করা অবস্থায় তানিশা খুব ক্ষিপ্ত ছিল মিমের উপর যার কারনে মিম তখন কিছু বলেনি। কারন ওর তখন তানিশার চেহারা দেখে খুব ভয় করছিল।
মিম স্বাভাবিক গলায় প্রশ্ন জুড়ে দেয় তানিশার দিকে।
– রাতে তোর কি হয়েছিল?
– জানিনা। তবে আজকেও আমি ধর্ষণের শিকার হয়েছি।
– সত্যিই?
– হুমম রে।
– তাও একবার না দুইবার।
– কিভাবে?
– তারপর তানিশা বর্ননা করল রাতের কাহিনি।
তানিশা তানিশা করে ডাকতে তানিশার ভাবি ছাদে চলে আসে।
– কি হয়েছে ভাবি ডাকছো ক্যান?
– তোমার ভাইয়া নিচে ডাকছে তোমাদের ।
– ওকে ভাবি আমরা আসছি। তুমি যাও।
– ওকে ঠিক আছে।
আজকে রাতে তানিশা নিজে ওর রুমে গোপনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। যাতে কে তাঁকে প্রতিদিন রাতে ধর্ষন করে বিষয়টা জানতে। আজও প্রতিদিনের মতো করে ধর্ষণ হয়েছে তানিশা। গত কয়েকদিনের মতো করে ফ্লোরে আর প্রটেকশনের প্যাকেট পাওয়া যায়নি । তবে প্রতিদিনের মতো করে আজকেও ফ্লোরে জামা কাপড় পেয়েছে। তানিশা জামা কাপড় পড়ে নিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে ব্যাস্ত হয়ে পরে। কিন্তুক তানিশা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হতভম্ব। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে সে।
চলবে””
রহস্য মাখা রাত
Part : 3
তানিশা সেটুকু সময় ধরে ধর্ষনের শিকার হয়েছে সেই টাইম টুকু বাদে সকল কিছু সিসিটিভি ক্যামেরায় বন্দী। আর একটা বিষয় সেটা হচ্ছে তানিশা নিজে গিয়ে যে সিসিটিভি ক্যামেরা অফ করেছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে। তানিশা ভাবছে ফুটেছে দেখা যাচ্ছে আমি নিজেই ক্যামেরা অফ করে কিছু টা-ইম পরে আবার অন করলাম কিন্তুক আমি এমনটা কখন করলাম???
আর একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, গভীর রাতে কেউ একজনকে তানিশা নিজেই ফোন করে। সেটা সে তাঁর ডায়েল কল দেখে বুঝতে পেরেছে। সে ঠিক নিদিষ্ট সময়ে ফোন করে ওই নাম্বারে।
কিন্তুক ওই নাম্বারে পরে কন্টাক্ট করতে চাইলে তানিশা করতে পারে না। কারণ কল করলে বার বার একটা মহিলা কন্ঠে বলতে আপনার ডায়েল করা নাম্বারটা এই মুহুর্তে সুইচ অফ আছে।
– তানিশা তোর এক্সাম কবে থেকে শুরু হচ্ছে?
তানিশার ভাইয়া আদনান খাবার টেবিলে প্রশ্নটা ছুড়ে দেয় তানিশাকে উদ্দেশ্য করে।
– এইতো ভাইয়া আর কিছু দিন। ( কিছুটা নার্ভাস)
– এক্সামের প্রস্তুতি কেমন?
– ভালো ভাইয়া।
– না ওর প্রস্তুতি ভালো না। কয়েকদিন যাবত ও একটা অক্ষর ও পরে না। জাস্ট গোমড়া মুখি হয়ে থাকে। ( তানিশার ভাবি)
– ক্যান রে বোন তোর কি হয়েছে?
– ভাইয়া শরীরটা কিছুদিন যাবত ভালো যাচ্ছে না তাই একটু পড়াশোনা করতে পারছি না।
– ক্যান আবার কি হয়েছে ?
– জানিনা ভাইয়া।
– জানিনা মানে কি হুম? ( ধমকের গলায়)
– কিছু হয়নি ভাইয়া আমার ( করুণ গলায়)
– আজকে চল তোকে ডাক্তার দেখিয়ে তারপর কাজের উদ্দেশ্য রওনা দিব।
– আজ না ভাইয়া। অন্যকোন দিন যাব ।
– ভাইয়া আমার প্যাড শেষ হয়ে গিয়েছে।
– ওকে আমি ফেরার পথে নিয়ে আসব।
আসলে আমাদের সমাজে প্যাড, পিরিয়ড, এসকল কথা নিয়ে মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সমালোচনা। আবার অনেকেই দেখি বিষয়টা খারাপ চোখে নিয়ে হাসাহাসি করে। আর হয়তো আপনারাও খারাপ দিকে নিয়েছেন যে তানিশা বোন হয়ে ভাইয়ের কাছে প্যাড আনতে বলছে বিষয়টা কেমন হলো কিন্তুক বিষয়টা তেমন কিছুই হয়নি যেমনটা আপনি ভেবে নিয়েছেন। ভাইয়ার থেকে অন্য সকল আবদার যেভাবে বোন পূরণ করে আমি মনে করি সেভাবেই এই আবদার টাও পূরণ করে নেওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় দেখা যায় মেয়েরা প্যাড কোন দোকান থেকে কিনতে গেলে সংকোচ বোধ করে আবার লোকলজ্জার ভয়েও কিনতে গিয়েও ফিরে আসে। আবার অনেক ভিড়ে মাঝে লজ্জায় কিনতে পারে না। আবার মানুষ হয়তো কেনার সময় দেখে হাসাহাসি করবে এমনটা ভয় ও হয় মেয়েদের। তাই বলি কি সমাজের মানুষ গুলো কেমন যেন তাই আপনার ভাইয়া বা আব্বুকে কোন সংকোচ বাদেই বিষয়টা আবদার করবেন। এই কথা গুলোর মধ্যে ভুল হয়ে থাকলে বা কেউ খারাপ ভাবে নিলে আমার কিছু করার নেই। তবে খারাপ দিকে নিলে বা ভুল ভাবলে ক্ষমার আদর্শে দেখবেন। যাই হোক চলুন গল্পে ফেরা যাক।
।
রাতে তানিশা জোর করে পড়তে বসেছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে অন্তরালে পড়তে বসেছে। কিন্তুক পড়ায় কোন প্রকার মনোযোগ স্থাপন করতে পারছে না তানিশা। শুধু ভাবছে কি করেছি আমি যার জন্য ওই মানুষটা আমার সাথে এমনটা করছে? আমি তো হয়তো বড় কোন প্রকার অপরাধ করিনি। তাইলে ক্যান হচ্ছে আমার সাথে এমনটা?
তানিশা ১০ টার দিকে নিদ্রাহীন ভাবে খাঁটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে। তানিশা ক্যান জানি ভেঙে পড়েছে। রোজ রোজ একজন অচেনা কেউ এসে ধর্ষণ করে যাচ্ছে। আর আমি তাঁর ধর্ষণে জ্বরজারিত হয়ে মরনের দিকে মর্দনকারী হয়ে যাচ্ছি।
তানিশা এটা বিশ্বাসী যে তাঁকে কোন অচেনা মানুষ ধর্ষণ করছেন। কোন প্রকার ভূত, প্রেত না।
কারন তানিশা জানে যে ভূত প্রেত নামে আসলে কিছুই নেই। অনেকেই বলে মানুষ মারা গেলে ভূত, প্রেত হয়ে যায় কিন্তুক কথাটা পুরোপুরি মিথ্যা। মানুষ মারা গেলে তাঁর আত্মা ঘোরাঘুরি করে কিন্তুক সেটার কোন ক্ষমতা নেই মানুষকে ধর্ষণ করবে। তবে হ্যাঁ পৃথিবীতে জ্বীন আছে। যাহ আল্লাহ পাক এর সৃষ্টি। তাঁরা আমাদের মতোই ই আল্লাহর গোলাম।
তবে আজকে তানিশা গভীর ভয়ে আছন্ন। কারন আজকে থেকে তানিশার পিরিয়ড শুরু হয়েছে। ভয় করছে আজকেও যদি আমি ধর্ষণের শিকার হই আর এই সাতদিন ই যদি ধর্ষণের শিকার হতে থাকি তাইলে আমি হয়তো চিরতরে মা হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলব। তানিশা আজকে ডিসিশন নিয়ে নিয়েছে যেভাবেই হোক সে আজকে ঘুমাবে না আবার ক্যামেরাও অফ করবে না।
তানিশা ঘুম না আসার কারণে তাঁর ডায়েরি টা মেলে ধরল চোখের সামনে। তবে আজকের তানিশা ১ বছর যাবত পরে ডায়েরি টা খুলছে। প্রচুর পরিমানে ধুলাবালি জায়গায় করে নিয়েছে ডায়েরিটার উপর।
আর ডায়েরি প্রথম পেজে তানিশার নামের সাথে একজনের নাম লেখা যার জন্য হতভম্ব তানিশা।
খুব বড় বড় অক্ষরে করে লেখা তানিশা লাভ রেজন।
তানিশা ভাবতে থাকে আমার ডায়েরি তে রেজনের নাম লেখা কিন্তুক এই রেজনটা আবার কে ??
রেজন নিয়ে ভাবতে ভাবতে তানিশা ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায়। আসলে তানিশা ঘুম পাগলী। তাঁর ঘুম না হলে পাগল হয়ে যায়।
।
খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায় তানিশার। আর আজকে যে ধর্ষণের শিকার হয়নি সেটা ও বুঝতে পারছে। কারন ও আজকে স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। কোন প্রকার ধকল যায়নি ওর শরীরের উপর দিয়ে। আর ওর শরীরের সম্পুর্ন কাপড় খোলা নেই আজকে। আজকে সালোয়ার কামিজ গাঁয়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিল তানিশা।
তবে আজকে তানিশার জাস্ট কামিজ পড়ে আছে ফ্লোরে কিন্তুক শরীরের সাথেই তাঁর সালোয়ার ছিল।
তানিশা কামিজ গাঁয়ে জড়িয়ে নিল। আর ভাবছে ওই ধর্ষণকারী জানলো কি করে যে আমার পিরিয়ড চলছে?
তারপর তানিশা তাঁর বালিশের নিচে একটা চিরকুট পায়। চিরকুটে জাস্ট লেখা, আজকে থেকে যে তোমার পিরিয়ড শুরু হয়েছে এটা আমার জানা ছিল। আমার ডায়েরিতে লেখা রয়েছে তোমার যাবতীয় তথ্যাদি ।
তানিশা বার বার চিরকুট টা পড়ছে। তানিশা ভাবল কে সে যে আমার বিষয়ে সকল কিছু জানে?
এভাবেই তানিশা সাতদিন কোন প্রকার ধর্ষণ থেকে মুক্ত। সে এখন আর কলেজে যায় না। সবসময় গোমড়া মুখি হয়ে বসে থাকে। আজকে কয়েকদিন পরে মিম তানিশার সাথে দেখা করতে এসেছে।
– তানিশা জানিস আমার এই কয়েকদিন কি হয়েছিল?
– কি হয়েছিল?? ( হতাশা নিয়ে)
– আমার ফোনে আসা একটা টেক্সটে আমি এই সাতদিন যাবত হাসপাতালে ছিলাম।
– তুই হাসপাতালে ছিলি সেটা আগে বলিস নাই ক্যান ? আর তোর ফ্যামিলির কেউ ও তো আমাকে কিছু জানাই নি।
– আসলে আমি মানা করেছিলাম যেন তোকে বিষয়টা জানানো না হয়।
কথাটা বলে মিম মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়ে আছে।
– তোর ফোনে কি এমন টেক্সট এসেছিল যার জন্য তোকে সাতদিন যাবত হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল?
– একচুয়েলি তোর ধর্ষণের বিষয়ে আমি মনে করছিলাম হয়তো এটা তোর মনের ভুল নয়তো কোন ভূত, প্রেত এমনটা করছে। কিন্তুক আসলে এমনটা না রে তোকে একজন মানুষ ই ধর্ষণ করেছে।
– সেটা আমিও জানি।
– তা তোর ফোনে কি এমন টেক্সট এসেছিল?
– টেক্সটে লেখা ছিল, তুই কিসের কারণে সেদিন তানিশার সাথে ছিলি? আর তুই কিসের জন্য তানিশার ধর্ষণের বিষয় বিশ্বাস করেছিলি না? আর তানিশা আমার বউ। ওর আমার মিলন নিয়ে হাসাহাসি করেছিলি ক্যান? আর তোর জন্য আমি একটা গিফট পাঠিয়ে দিয়েছি পার্সেল করে দেখে নিস। এতোক্ষণে হয়তো তোর রুমের সামনে গিফটটা রেখে এসেছে।
– তারপর?
– তারপর আমি গিফট দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
– কি ছিল গিফটে ?
– বিশাল একটা বক্সে মানুষের রক্তমাংসের মাথা।
– কিহহহহ?
– হুম রে।
– তবে ওইটা জাস্ট ভয় দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল। ওইটা রিয়েল মানুষের মাথা ছিল না।
– আর ওই ভয় পেয়েই আমি সাত দিন হাসপাতালে।
।
মাঝে মাঝে তানিশার এখন বুমি হওয়া শুরু হয়েছে। ওর পেট মাঝে মাঝে ব্যাথা করছে। আর পেটে কে যেন মাঝে মাঝে লাথি মারে।
মিমের পরামর্শে তানিশা আর মিম দুজন হাসপাতালে চেকাপ করাতে গেল। তানিশা খুব টেনশনের মধ্যে দিয়ে পার করছে কারন যদি রিপোর্ট পজেটিভ হয় তাইলে আমি মুখ দেখাবে কি করে সমাজে? কি পরিচয়ে মানুষ হবে? ওর তো কোন পিতার পরিচয় নেই। তাহলে কাকে পিতা বলবে? আমার কাছে যখন পিতার কথা জানতে চাইবে তখন আমি কি বলব?
তখন কি আমি বলব তোর বাবা অচেনা মানব?
তানিশা যেন কথা গুলো ভাবতেই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
– টেনশন করিস না তুই যেমনটা ভাবছিস আশাকরি তাঁর বিপরীত দিকটা হবে।
– তাই যেন হয় রে দোস্ত।
– হুম সেটাই হবে।
কতক্ষণ পরে রিপোর্ট টা আসল।
– রিপোর্ট টা দেখে মিম তানিশা দুজন ই হতভম্ব। যেন দুজনের মাথায় ই আকাশ ভেঙে পড়ল। রিপোর্ট positive। টুইন বেবি তানিশার গর্ভে।
চলবে”””””