ঐতিহ্যবাহী বাংলা সাহিত্যকে যে সকল ক্লাসিক বইগুলো নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়, তার মধ্যে “হেমেন্দ্রকুমার রায়”-এর “যকের ধন” অন্যতম। বইটি কিশোর অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার। এতো বছর পরও বইটি হারায়নি তার একরত্তি জৌলুস। বরং স্বমহিমায় নিজের মাথা উঁচু করে রেখেছে সেই বৃটিশ পিরিয়ড থেকে আজ অবধি।
🖌️মূলভাব –
ঠাকুরদাদার লোহার সিন্দুক থেকে পাওয়া গেল একটা ছোট চন্দন কাঠের বাক্স। সেখান থেকে মিলল একটা মড়ার মাথার খুলি আর পুরানো একটা ছোট্ট নোটবুক। খুলির অন্য পিঠে আবার কি-সব হিজিবিজি সংখ্যা লেখা।
এদিকে নোটবুকে ঠাকুরদাদা যে “যকের ধন” এর কথা লিখেছেন তা নাকি রাখা আছে কোন এক দুর্গম স্থানে। কিন্তু কিভাবে পৌঁছনো যায় সেখানে?
খুলির পিঠের ওই দুর্বোধ্য অঙ্কগুলোরই বা অর্থ কি?
কিংকর্তব্যবিমূঢ় কুমার শরণাপন্ন হলো, পাড়ার বছর তিনের বড় ভাই বিমলের কাছে। যাকে সে বন্ধুর মতো ভালোবাসে।
এরপর কি হল?
পেল কি তারা “যকের ধনে”র সন্ধান?
🖌️পাঠ অভিব্যক্তি –
খুব কম সংখ্যক ছেলে-মেয়ে-ই খোঁজে পাওয়া যাবে, যারা এই বই পড়েনি। কিশোর বয়সের অন্যতম সেরা অ্যাডভেঞ্চারের বই এটি।
সেই কলকাতা থেকে অবিভক্ত বাংলার পথে-প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে ভীতুর ডিম্ব কিশোর, সাহসি বিমল, কিশোরের কুকুর বাঘা আর বিমলের একান্ত চাকর রামহরি এসে পৌছালো সুনামগঞ্জের ছাতকে, তারপর শ্রীহট্ট (বর্তমান নাম সিলেট।) এর ভোলাগঞ্জ উপজেলায়। সেখান থেকে ময়মনসিংহের গারো পাহাড় হয়ে মেঘালয় পেরিয়ে আসামে।
এই বিচিত্র সফর যে নিঃকন্টক ছিলো এমন নয়, সেই কলকাতা থেকে সদলবলে পিছু নিলো করালী। বিমল কয়েকবার মরতে মরতে বাচঁলো। এতো বাধা-বিপত্তির পরও দমেনি অভিযাত্রীর দল।
সাপের ভয়, বাঘের তাড়া, ভূতের ভয়, গন্তব্যের পথহীন বাধা পেরিয়ে একসময় আসলো সেই কাঙ্খিত জায়গায়। এদিকে করালীও পিছু ছাড়ার পাত্র নয়। এস্পার-ওস্পার একটা করবেই এবার।
বইটি পড়তে গিয়ে আমি নিজেও হারিয়ে গিয়েছিলাম সুদূর অতীতে। এক পলকে পৌছে গিয়েছিলাম কৈশোরের প্রথম প্রহরে। যে প্রহর ছিলো বইয়ের পড়ায় লুকিয়ে, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কিশোর অ্যাডভেঞ্চারের।
🖌️এক পলকে –
🔶যকের ধন
🔶হেমেন্দ্রকুমার রায়
🔶অ্যাডভেঞ্চার / থৃলার
🔶বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র
🔶প্রথম প্রকাশ ১৯৩০
🔶বিশ্বসাহিত্য – ২০০৫
🔶মোট ৯৬ পৃষ্ঠা
Leave a comment