ব্যক্তিত্ব মানুষের একটি বড় গুণ বা সম্পদ। কথায় আছে যে ব্যক্তিত্বহীন মানুষ পশুর সমান। যার ব্যক্তিত্ব নেই সে সমাজের কাছে মূল্যহীন। মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে তার ব্যক্তিত্বের জন্য। সুন্দর চেহারা নয় বরং ব্যক্তিত্বের মানবিক গুণাবলির কারণে মানুষ ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ব্যক্তিত্ব কে সঠিক ও সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে প্রত্যেক মানুষের উচিত তার ভেতরের খারাপ দিকগুলো বর্জন করা। তাই আজকে আমরা জানবো যে কীভাবে আমরা নিজের ব্যক্তিত্ব কে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে পারিঃ
ব্যক্তিত্বকে শক্তিশালী করতে প্রথমেই আপনার মধ্যে যে জিনিসটা প্রয়োজন তা হলো অন্য মানুষের কথা মনোযোগ সহকারে শোনার ক্ষমতা। সামনের মানুষটার থেকে প্রতি মুহূর্তে যে কতো কিছু শেখার আছে তা আপনি কখনোই বুঝবেন না যদি না তার কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন।
আপনার চালচলন ও ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিন। মোট যোগাযোগের ৯০% হয়ে থাকে আচার আচরণের মাধ্যমে। তাই আপনি কীভাবে হাঁটছেন, কীভাবে হাত নাড়ছেন – এগুলো আপনার ব্যক্তিত্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক সময় দেখবেন যে, অনেকের মতামতের সাথে আমরা শতভাগ একমত নই, কিন্তু তার বাচনভঙ্গি এতো চমৎকার যে কথাগুলো শুনতে ভালো লাগছে। তাই ব্যক্তিত্বের জন্য বাচনভঙ্গি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিদিন অবশ্যই নিজের জন্য কিছু সময় রাখুন। আপনি যা পছন্দ করেন, তা নিজের জন্য রাখা সময়টিতে করুন। এর ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পাবেন।
সপ্তাহে অন্তত একটি নতুন বই পড়ার অভ্যাস করুন। সম্পূর্ণ দুনিয়া আপনি কখনোই দেখতে বুঝতে পারবেন না। বই আপনার সেই সীমাবদ্ধতাকে অনেক খানি দূর করবে।
প্রতিদিন কিছু কাজ করুন —
– ৮ ঘন্টা ঘুমান
– পরিমিত ( অতিরিক্ত নয়) খাদ্য গ্রহণ করুন
– মেডিটেশন করুন
– পরিবারের সাথে কিছু সময় কাটান
– রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় অবশ্যই সারাদিনে আপনার প্রাপ্তি গুলোকে মনে করুন
– প্রতিদিন একজনকে সাহায্য করুন।
চমৎকার ব্যক্তিত্বের প্রায় সবার মাঝে একটি গুণ খুব সাধারণ। তাদের প্রত্যেকেরই জীবনের একটি লক্ষ্য ছিল বা আছে। তাই নিজের জীবনের একটি বা একাধিক লক্ষ্য ঠিক করে, সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করুন।
সবকিছুরই কিছু ইতিবাচক বা পজিটিভ দিক আছে। সেই পজিটিভ দিকগুলো নিজের মাঝে ধারণ করুন।
সবাইকে সম্মান করুন।
আত্নবিশ্বাস ও আত্নমর্যাদা ব্যক্তিত্বকে অনেক উপরে নিয়ে যায়। অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না। কারণ একটু ভেবে দেখুন, অন্য কেউ যদি আপনার ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে তাহলে কেমন খারাপ লাগবে?
সুন্দর ভাষার ব্যবহার ব্যক্তিত্ব অনেক ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। পোশাক ব্যক্তিত্ব কে ফুটিয়ে তোলে। ব্যক্তিত্ব কে তুলে ধরুন পোশাকের মাধ্যমে। পোশাক হতে হবে মার্জিত।
হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলুন। এতে আপনার আশপাশের মানুষ আপনার উপর আস্থা পাবে।
অতিরিক্ত কথা বলা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। যে কথাটি প্রয়োজনীয় শুধু সেই কথাটি বলুন। কাউকে কোনো কথা দিলে তা রাখার চেষ্টা করুন।
যখন যে পরিবেশে থাকবেন যেমন, অফিস, বাসা, বন্ধুদের আড্ডা সেখানেই নিজেকে মানিয়ে নিন। একটা কাজের ভিতরে অন্য কাজ করবেন না।
নিজেকে অন্যের থেকে আলাদাভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। অন্যের দেখাদেখি নয়, নিজেকে নিজের মতো করে তুলে ধরতে হবে।
অপরের ভালো কাজগুলোর জন্য সবসময় প্রশংসা করুন। কারো কিছু অর্জনকে কখনো হিংসার চোখে দেখবেন না। একজন ব্যক্তিত্ব বান মানুষই কেবল অন্যের কৃতিত্বকে স্বীকার করতে পারে।
কথা বলার সময় ইংরেজি নয় বরং মাতৃভাষা বাংলাকে প্রাধান্য দিন। অন্য ভাষা শেখা বা ব্যবহার করার আগে নিজের ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করে নিতে হবে। যে নিজের দেশের ভাষা ও আচার ব্যবহার জানে না সে কখনো একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হতে পারে না।
লেখাঃ ঐশ্বর্য্য বিজয়া দাস
— জুনিয়র কন্টেন্ট রাইটার, রাইটার্স ক্লাব বিডি
Leave a comment