বস ম্যানেজমেন্ট কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের উপায় – Short PDF
লেখক:- আবীর শওকত হায়াত
এই বইটি ভাল লাগার অন্যতম একটি কারণ ছিল বেশ কিছু self-assessment tools এর ব্যবহার। যা সচরাচর বাংলাদেশি লেখকদের বইয়ে দেখা যায় না। Tools এর স্কোরিং এর ভিত্তিতে সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব হয় যে-বস এবং কর্মীর মধ্যে সম্পর্ক কিরূপ, কোন কোন জায়গায় উন্নয়ন করা দরকার,কোন কোন বিষয়গুলো পরিহার করা দরকার, পাশাপাশি কোথায় ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উন্নয়ন প্রয়োজন।
পেশাগত জীবনে সবারই বস আছেন। এমনকি প্রধান নির্বাহী পর্যন্ত। বস গাইডলাইন, সিদ্ধান্ত এবং প্রয়োজনীয় রিসোর্স বণ্টনের মাধ্যমে আমাদের সফল হতে সহায়তা করেন। ম্যানেজার হিসেবে খুব কমসংখ্যক মানুষই বস ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অনুধাবন করেন। তারা ক্যারিয়ার ও ব্যক্তি জীবনে চরম অশান্তি নিয়ে দিনাতিপাত করেন। ম্যানেজারের কাজ হলো অন্যকে দিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করিয়ে নেয়া। অনেক ম্যানেজার এটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হন যে বসকে সর্বাত্মক সহায়তা এবং ম্যানেজ করতে পারলেই আসলে উন্নতি সম্ভব এবং তাতে যাপিত জীবন অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
বসকে ম্যানেজ করতে হলে বস ও সাব-অর্ডিনেট সম্পর্কিত কিছু মৌলিক অনুমিতিকে মেনে নিতে হবে যেমন-১) বস ইজ অলওয়েজ রাইট। ২) বসকে নতুনভাবে শিখানো যায় না। তার ম্যানেজমেন্ট ফিলোসফির জায়গাটাতেও প্রশ্ন করাও যায় না। ৩) বসের যোগ্যতা এবং মানবিক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। এগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবেনা। ৪) সব বস সমান বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক গুণাবলি সমৃদ্ধ হবেন না কেউ কেউ সাংগঠনিক স্তরে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থান এবং যোগ্যতাসম্পন্ন হবেন। sub-ordinate হিসেবে দায়িত্ব হবে মেনে নিয়ে যাওয়া।
সাধারণত বসরা রাইট-হ্যান্ড লোকদের সব ফোরামের উপস্থিত রাখেন এবং তাদের ক্যারিয়ারের উন্নতির প্রতি খেয়াল রাখেন। তাঁরা আশা করেন তার অবর্তমানে এদেরই কেউ একজন ডিপার্টমেন্টের নেতৃত্ব দেবেন। তিনি একদিন উচ্চতর দায়িত্ব নিয়ে চলে যাবেন এবং তার মনোনীত কেউ তার স্থান দখল করবেন। যাতে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে এবং বস তার হাতে তৈরি করা কারো হাতে দায়িত্ব দিয়ে যেতে পারেন।
অনেক বস নিজেই সর্বত্র দৃশ্যমান হতে চান। বস তার সাব-অর্ডিনেটকে পেছনে টেনে ধরেন। বস তার সাব-অর্ডিনেটের সহযোগিতা নিয়ে যে কাজ করেছেন তাতে স্বীকৃতি দিতে চান না।
জেনারেশন গ্যাপের সঙ্গে একটা নলেজ গ্যাপের ব্যাপার সব যুগেই থেকে যায়। টেকনোলজির আপডেট, শিক্ষা উপকরণের প্রাপ্যতা, ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, পড়ার ম্যাটারিয়ালের সহজলভ্যতা এখনকার তরুণদের অনেক বেশি প্রস্তুত করে দেয়। যুগে যুগে ব্রাইট মানুষেরা তাদের একাগ্রতা আর পরিশ্রম দ্বারা নিজের উন্নতির রাস্তা তৈরি করে দিয়েছেন। লাইন বস ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের সিইও কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজর থাকেন সব সময় একটি পাইপ লাইন তৈরি করার জন্য।
ভবিষ্যতের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংয়ের মতো বিষয়গুলো চলে এলে অনেক ম্যানেজারিয়াল পজিশন হুমকির মুখে পড়ে যাবে। বিশ্বজুড়ে এখন প্রতিষ্ঠানগুলো কম লোক দ্বারা বেশি কাজ করিয়ে নেয়ার একটি প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এখন টল স্ট্রাকচার থেকে ফ্ল্যাট স্ট্রাকচারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যাতে ম্যানেজারিয়াল লেভেল কমে যাচ্ছে।।
মাইক্রো ম্যানেজিং বস: বসদের মধ্যে মাইক্রো ম্যানেজিং বস সবচাইতে বিরক্তিকর বস। সর্বত্র নিজেকে দৃশ্যমান করতে চান, প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে থাকেন। অনেক বস বুঝতে পারেন না- যে তিনি তার টিমমেটদের সঙ্গে অতিমাত্রার ক্রিটিক্যালআচরণ করছেন। তিনি হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করেন না বরং তার ম্যানেজমেন্ট ফিলোসফির কারণেই অন্যকে জটিলভাবে মূল্যায়ন করে থাকেন।
সেকেন্ড ইনিংস বস: ক্রিকেট খেলার প্রথম ইনিংস শেষ করার মত অনেক বস তাদের ক্যারিয়ারের প্রথম অংশ অন্যত্র শেষ করে আসেন। তা হতে পারে কোন বহুজাতিক কোম্পানিতে, কোন সরকারি অফিস-আদালতে।
উদাস বস: বসদের মধ্যে কেউ ডিপার্টমেন্ট ও নিজের ব্যাপারে উদাসীন হতে পারেন। নতুন প্রজেক্ট, পরিবর্তনের ইনিশিয়েটিভ, উৎপাদনশীলতা ও সর্বোপরি পারফরম্যান্স প্যারামিটারগুলোর বিষয়ে তিনি ড্যাম-কেয়ার দেখাতে পারেন।
দ্বন্দ্ব সৃষ্টিকারী বস: প্রতিষ্ঠান সবাই তাদের ইন্টারেস্ট কে সংরক্ষণ করার জন্য পরস্পরের সঙ্গে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকেন। কোন কোন বস প্রতিযোগিতা কে উস্কে দিয়ে এক ধরনের খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এ ধরনের পরিস্থিতি কে বলা হয় ডগ-ইট-ডগ এনভায়রনমেন্ট। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে বস তার অধীনস্থদের সকল তথ্য পেয়ে যান এবং তার নিজস্ব টার্গেট অর্জনে সফল হন।
তিন বসের অাপনি কোন বস: কোনো কোনো বস টেক্সট বই কেইসের মতো সুদর্শন, সুশিক্ষিত মার্জিত ও অমায়িক হয়ে থাকেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা ও গাইডলাইন দেখে আমরা লাভবান হই এবং কাজগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
কেউ আবার সাধারন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কঠোর পরিশ্রমের জুড়ে উঠে আসেন এবং কাজের দ্বারা নিজের অবস্থান তৈরি করে নেন। ভালো-মন্দ মিলিয়ে এরা মাঝারি মানের বস যারা ডিপার্টমেন্টকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন।
তৃতীয় ঘরানার বস হলেন বাজে বস। অফিস-আদালতে এদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও এরা আপনার স্মৃতি এবং মনোজগতের বড় অংশ দখল করে রাখবেন। খুব খারাপ কেইসে এরা আপনার আত্মার শান্তি নষ্ট করে ফেলবে। ফলে আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। আপনাকে হয় বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে অথবা চাকরিটি ছেড়ে দিতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে একজন মানুষের শৈশব ও তার বেড়ে ওঠা তার পরবর্তী জীবনের উপর প্রভাব ফেলে। আমরা আজকে যা হয়েছি বা হতে পেরেছি তার বীজ আমাদের শৈশবে কৈশোরে বপন করা হয়েছে।
আরো অনেক সুন্দর তথ্যের সমাহার বস ম্যানেজমেন্ট বইটি। অারো বিস্তারিত জানার জন্য বইটি পড়তে পারেন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?