বইঃ হিজাব আমার পরিচয় লেখকঃ জাকারিয়া মাসুদ

(✍️ This article is collected from this book 📚

(All Credit To Go Real Hero The Author of this book 📖)
🙏 Please buy this book hardcopy from anyway.)

বই শিরোনামঃ
বইঃ হিজাব আমার পরিচয়
লেখকঃ জাকারিয়া মাসুদ
প্রকাশনায়ঃ সমর্পণ প্রকাশনী
ধরণঃ ইসলামে নারী, ইবাদত, আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা।
পৃষ্ঠাঃ ৯২
সর্বোচ্চ মূল্যঃ ১৪২টাকা
বই রিভিউঃ
“আমি হিজাব। বিস্তৃত দিগন্তে সগৌরবে উড়তে থাকা বিজয় নিশান। আমি একটি শ্যামল কানন। সুন্দর ফুল ও সুমিষ্ট সুবাসে মুখরিত আমার বাগিচা। সুনিবিড় ছায়ায় ঢাকা আমার প্রাঙ্গণ। আমার প্রাঙ্গণে যেই প্রবেশ করে, তাকেই আমি ছায়াবীতলে স্থান করে দেই। তোমাকে ও আহ্বান জানাচ্ছি। এসো আমার সুবিশাল প্রাঙ্গণে এসো। তোমার তৃষিত আকুল আঁখিকে একটু প্রশান্ত করে নাও।” —- হিজাবের আহ্বান।
মনের পর্দাই বড় পর্দা। আমার মনে পর্দা আছে,আমার ভাবনা পরিচ্ছন্ন। পর্দা মানে কি শুধু বোরখা পরা লাগে?’- এসব কথা আমাদের সমাজের মেয়েদের মুখে খুব শোনা যায়। কিন্তু আসলেই কি শুধু মনের পর্দা থাকাটাই যথেষ্ট? আবার অনেকে শারীরিক ভাবে হিজাব করেও ভার্সিটির ছেলে বন্ধু বা অন্যান্য নন -মাহরামদের সাথে অত্যন্ত সহজেই যোগাযোগ রেখে চলেন। তারাও দাবী করেন তারা উত্তমরূপে নিজেকে ঢেকে রেখেছেন, তাদের হিজাব পরিপূর্ণ হয়েছে। কথাটা কি ঠিক? অনেকে আবার মাথায় এক টুকরো কাপড় পেঁচিয়ে খেলাধূলা এমনকি মডেলিং ও করে বেড়ান। তাদেরও দাবী এটি হিজাব ।
হিজাব আসলে কি? কোনটি আসলে পরিপূর্ণ হিজাব? কেনই বা এই হিজাবের বিধান- চলুন জেনে আসি “হিজাব আমার পরিচয়” বইয়ের পাতা থেকে।
______\\সংক্ষেপে বিষয়বস্তু_____\\\
‘হিজাব’ কোন জামা বা পোশাকি আবরণের নাম নয়। হিজাব এক সিস্টেমের নাম, এক অনন্য জীবন-পদ্ধতি। হিজাব সেই জীবন পদ্ধতি যা আসমান থেকে রহমত স্বরূপ প্ররিত হয়েছে নারীকুলের জন্য।‌ আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা ইরশাদ করেন –
“হে নবি, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে ও কন্যাদেরকে এবং মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। ” (সূরা আহযাব: ৫৯)
এখানে, স্পষ্টরূপে দুইটি বিষয় উঠে এসেছে। প্রথমত, এই হিজাব একজন মুসলিমার লজ্জাশীলতা,উত্তম চরিত্র এবং আদর্শিক দিক তুলে ধরে সবার সামনে। যা তাকে অন্যান্য শ্রেণীর নারীদের থেকে আলাদা করে এবং তাকে সহজেই চেনা যায় সে কোন জীবন-দর্শনের অনুসারী। অন্যদিকে ,এই হিজাব নন মাহরামদের থেকে একজন নারীকে আড়ালে রাখে এবং উত্যক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে।
এর সোজা অর্থ দাঁড়ায় হিজাব একটি বিকর্ষণ পদ্ধতি, যা নন মাহরাম নারী ও পুরুষের মধ্যে দেয়াল স্বরূপ দাঁড়াবে এবং বিকর্ষণ সৃষ্টি করবে। সুতরাং, মাথায় প্যাঁচানো এক টুকরো কাপড় কখনও হিজাব হতে পারে না। এমনকি , যে বোরখা বা পোশাকে আপাদমস্তক ঢাকার পরও নন মাহরামের কাছে একজন নারীকে আকর্ষণীয় দেখায় , সেটাকেও হিজাব বলা যাবে না।
মূলত, হিজাব হতে হয় এমন আবরণ যা পরিধান করলে শরীরের আকার আকৃতি নন মাহরামদের কাছে স্পষ্ট প্রতিয়মান হবে না এবং আকর্ষণীয় হবে না। এতো হলো হিজাবের পোশাকি একটি দিক। হিজাবের বিধান পরিপূর্ণ হবার জন্য আরও কিছু জিনিস মেনে চলতে হয়। যেমন: প্রয়োজন ব্যতিরেকে নারী ঘরের বাইরে বের হবে না। গেলেও নিজেকে জাহেলি যুগের মত প্রদর্শন করবে না। নন মাহরামদের সাথে কোমল স্বরে কথা বলবেনা। পুরুষরা নারীদের কাছে সরাসরি কিছু না চেয়ে আড়াল থেকে চাইবে।
মনে রাখতে হবে, নারী জাতিকে আল্লাহ এমনভাবে সৃজন করেছেন যে তার সৌন্দর্য্য শুধু দৈহিকই নয়। বরং চলাফেরা, বাচনভঙ্গি, বাহারি পোশাক সবকিছুতেই তার কোমল সৌন্দর্য্য প্রকাশিত হয়। আর সেজন্যই পরিপূর্ণ হিজাবের বিধান পালন করা একান্ত জরুরি।
______\\বইটি পড়া কেন প্রয়োজন?______\\
“হিজাব আমার পরিচয়” এমন একটি বই যার প্রয়োজনীয়তা বলে বোঝানো যাবে না। এই বইটি খুবই চমৎকার ভাষা শৈলীর মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক তথ্য দিয়ে যায়। সেই সাথে বর্তমান ফেতনাময় যুগের অনেক সমস্যার সমাধান রয়েছে বইটির পাতায়। উদ্ভ্রান্ত এবং চক্রান্তকারী ফেমিনিস্টরা যেসব প্রশ্ন দিয়ে বর্তমান সময়ে আমাদের কে ক্রমাগত হেনস্তা চলেছে সেসব প্রশ্নেরও দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে প্রিয় এই বইটি । বইটি পড়লে আমরা জানতে পারি কি করে ফেমিনিস্টরা হিজাব সম্পর্কে আমাদের চিন্তাকে ডাইভার্ট করে তাদের ভ্রান্ত মতবাদের জালে ফেলতে চায়।” হিজাব আমার পরিচয় ” আমাদের কে এই ধারণা দিয়ে যায় আমরা নারীরা কতটুকু মূল্যবান,নাজুক এবং আকর্ষণীয় । সেই সাথে এটাও বুঝায় নিজেদের কে হেফাজত করা কেবল নিজেদের জন্যই জরুরি নয়,বরং সমগ্র সমাজ ও উম্মাহের কল্যাণার্থেও জরুরি। যারা হিজাবের বিধান অমান্য করে তাদের কিরূপ কঠিন আযাবের মুখোমুখো হতে হবে সেটিও আলোচিত হয়েছে বক্ষ্যমান বইটিতে ।
______\\পাঠ্যানুভূতি_____\\\
বইটি পড়ার পর বইটির প্রতি যে ভালোবাসা বা অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে তা কলমের দুই শব্দে প্রকাশযোগ্য নয়। তবুও কিছুটা অবশ্যই ব্যক্ত করার সামান্য প্রয়াস করতে চাই। “হিজাব আমার পরিচয়” -এই নামকরণের কারণেই অনেক পাঠকের মত আমিও খুব আকৃষ্ট হয়েছিলাম। বইটি পড়ার পর এক ধরনের প্রশান্তি লাভ করেছি। দায়সারা ধর্ম ব্যবসায়ীদের মত সবাইকে খুশি করা কথা নেই বইটির পাতায়। আমার পাঠক জীবনে এটি সর্বাধিক প্রিয় এবং হৃদয়ছোঁয়া বই হিসেবে থাকবে সবসময়।
_____\\\কারা বইটি পড়বেন_____\\\
বইটি সকলের পড়া উচিত। মূলত যেসব বোনরা হিজাব পরিধান করা শুরু করবেন ভাবছেন বইটি তাদের সঠিক রাহা দেখাবে। আর আমরা যারা ইতিমধ্যেই হিজাবের মধ্যেই আছি, তাদের পরিপূর্ণ হিজাব হচ্ছে কিনা তা জানার জন্যও বইটি পড়া উচিত। শুধু যে বোনরা বইটি পড়বেন তা নয়। ভাইয়েরাও বইটি পড়া উচিত। এতে তারাও হিজাবের সুস্পষ্ট বিধান সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং শরীয়াহ অনুশাসন কায়েম করতে পারবেন ঘরের মা,বোন, স্ত্রী, কন্যার উপর। নিজেও মেনে চলতে পারবেন।
______\\সমালোচনা_____\\\
ভালো-মন্দ মিলিয়েই একটি বইয়ের সমালোচনা। কিন্তু আলোচ্য বইটির ভুলভ্রান্তি বা এরকম কোন দিক নেই উল্লেখযোগ্য। বইটির অত্যন্ত সুন্দর ও মোহনীয় একটি প্রচ্ছদ করা হয়েছে। ভাষাশৈলী এককথায় চমৎকার,প্রা ঞ্জল এবং সহজ। বইটির বিশেষ ভালো লাগার দিকটি হচ্ছে লেখক জাকারিয়া মাসুদের কলম দিয়ে বের হয়ে হিজাব নিজেই আমাদের সাথে কথা বলে এক অদৃশ্য, অথচ সবসময় পাশে থাকা আপনজনের মত। হিজাব যেভাবে তার অনুভূতিগুলো আমাদের বলে যায় আসলেই তাকে মানুষ বলে মনে হয়।
_____\\\প্রিয় উক্তি_____\\\
১) আমি হিজাব। বিস্তৃত দিগন্তে সগৌরবে উড়তে থাকা বিজয় – নিশান।
২) তোমার দেহ-মন সবই তাঁর মালিকানায়। তারপরও তুমি কেন নিজেকে শত্রুর কাছে বিক্রি করে দিচ্ছ?
৩) তুমি তো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর প্রতিনিয়ত জুলুম করে যাচ্ছ। ওদেরকে বানিয়েছ পরপুরুষের ভৌগ্যসামগ্রী। যেসব অঙ্গগুলো গায়রে মাহরামের কাছ থেকে আড়াল থাকতে চেয়েছিলো, ওগুলোকেও উন্মুক্ত করে দিয়েছ রাস্তাঘাটে। অহর্নিশি তোমার দেহ আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছে।
৪) আজ হোক বা কাল, পর্দা তো তোমাকে করতেই হবে। মৃত্যুর পর ঠিকই পুরো দেহ আবৃত করে দেওয়া হবে কাফনের কাপড় দিয়ে। তখন তোমার কিছু বলার থাকবে না। কিছু করার থাকবে না। ইচ্ছে না করলেও সাদা হিজাব গায়ে দিয়েই দুনিয়া ছাড়তে হবে। কিন্তু অন্তিম মুহূর্তে ওই অনিচ্ছাকৃত হিজাবের কোনো মূল্য নেই।
পরিশেষে বলতে চাই লেখক জাকারিয়া মাসুদ রচিত
‘ হিজাব আমার পরিচয়’ এর মত মূল্যবান বইটি উপহার দেয়ার জন্য সমর্পণ প্রকাশণের কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম। সেই সাথে লেখকের জন্য রইলো অশেষ দোআ। আল্লাহ যেন তার ইলম এবং হাতে বারাকাহ দান করেন। আর তার পরিশ্রম কে যেন কবুল করে নেন। আমিন।
বইপাও থেকে আপনি আর কি কি কন্টেন্ট পেতে চান?