“পয়েন্টস অ্যান্ড লাইন্স” – সেইচো মাতসুমোতো // কৌশিক জামান
প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৫৮
শান্ত ও স্নিগ্ধ একটি গোয়েন্দা গল্প; আর কী সুন্দরভাবে লেখা! আলোচ্য বইটি ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত একটি ক্লাসিক মার্ডার মিস্ট্রি যাতে মারাত্মক কোন চমক নেই বা মারামারি ও চেজিং সীন নেই। একজন নাছোড়বান্দা গোয়েন্দা যে কোন মূল্যে জোড়া খুনের রহস্য সমাধান করার চেষ্টা করছেন। গল্পে “কে খুন করেছে”-এর চেয়ে ফোকাস করা হয়েছে কীভাবে খুন করা হয়েছে এবং সেটাকে চাপা দিয়ে একটা পারফেক্ট ক্রাইমের রূপ দেওয়া হয়েছে।
আগাথা ক্রিস্টির গল্পের মতো স্বাদ আছে এতে; তবে পটভূমি জাপান। জাপানের কালচার খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বইটিতে। গল্পটি ১৯৫০ এর দশকে জাপানে টাইম ট্রাভেল করার একটি এক্সপেরিয়েন্স দিয়েছে।
জাপানের মফস্বলে সমুদ্রের তীরে এক জোড়া লাশ পাওয়া যায়, একজন পুরুষ ও আরেকজন নারীর। আপাতদৃষ্টিতে পারিপার্শ্বিক প্রমাণ দেখে পুলিশ ধরে নেয় যে এটি প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা। কিন্তু মফস্বল ও রাজধানীর দুইজন গোয়েন্দা সেটা মেনে নিতে পারেন না। তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রেখে ঘটনাটি খুন হিসাবে মনে করেই তদন্ত চালিয়ে যান।
গল্পটি কোন টানটান মারকাটারি রোমাঞ্চকর কোন থ্রিলার নয়। বরং স্লো কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর একটা গল্প। একের পর এক বাধা ও প্রতিকূলতা বেরিয়ে, হতাশার পাহাড় ডিঙিয়ে, নানারকম সীমাবদ্ধতা সত্বেও দুইজন সৎ পুলিশ অফিসার কীভাবে বাস্তবসম্মতভাবে রহস্য সমাধান করেন, সেটা দেখার মজাই আলাদা।
রহস্য সমাধান করতে গিয়ে নানা বিষয় উঠে এসেছে ট্রেনের টাইমটেবল, জাপানের ও ট্রেনলাইনের ম্যাপ, সরকারী অফিসারদের দুর্নীতি, নারী পুরুষের জটিল সম্পর্ক – সবগুলোই একেবারে বাস্তবসম্মত এবং যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। গল্পের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং দিক হলো – কীভাবে ফেক এলিবাই তৈরি করা হয়েছে এবং কীভাবে সেটাকে তদন্তকারী অফিসার সঠিকভাবে ভেঙে দিতে পেরেছেন।
সবদিক থেকে বিচার করতে গেলে একটা সলিড থ্রিলার বই।
-Miraj Gaji
Leave a comment