বইঃপিএইচডির গল্প
প্রকাশনীঃবাতিঘর
অধ্যাপক আসিফ নজরুলের “পিএইচডির গল্প” একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ,যেখানে একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী তরুণের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের ঘটনাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। পুরান ঢাকার একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করা এ শিক্ষার্থীর প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিলাতে উচ্চশিক্ষা অর্জনে বাঁধা সমূহ এবং উত্তরণের বাস্তবতা বলা হয়েছে।
আশির দশকে তিনি সাপ্তাহিক বিচিত্রায় সাংবাদিক ছিলেন।এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে চাকুরি করেছেন মাত্র এক মাস,পরবর্তীতে চবি হয়ে ঢাবিতে আইন বিভাগে অধ্যাপনার সাথে যুক্ত হয়েছেন।লেখালেখি করার সুবাদে তার মাঝে যে আত্নহংকার এসেছিল তা বেশিদিন টিকতে পারিনি।আমাদের দেশের কথিত মেধাবী শিক্ষার্থীরাও ইউরোপীয় শিক্ষাব্যবস্থায় যেভাবে খাবি খেতে থাকে তা নির্মমভাবে বর্ননা করা হয়েছে।
১২০ পৃষ্ঠার এ বইতে প্রথম ৭০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ব্যক্তিগত জীবনালাপ,পরবর্তী ৫০ পৃষ্ঠায় একাডেমির ডিগ্রি অর্জনের অভিজ্ঞতা বিবৃত হয়েছে।আন্তর্জাতিক পানি আইন বিষয়ে গবেষণা করতে কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়ে তিনি লন্ডন শহরে থিতু হন।তার সুপারভাইজার ছিলেন ফিলিপ নামের এক ব্রিটিশ ভদ্রলোক যিনি বাংলাদেশ-মায়ানমার সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির আমাদের পক্ষের একজন পরামর্শক।
এ বইয়ের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা এর কলেবর,কলেবর ছোট করতে গিয়ে স্যার তার একাডেমিক বিষয়বস্তু কম উল্লেখ করেছেন।তিনি যে তিনটি হাইপোথিসিস দাঁড় করিয়েছিলেন,পরবর্তীতে কি কি সংশোধনী আনতে হয়েছিল, এ বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই।বাংলাদেশ ও ভারতে তথ্য সংগ্রহ করতে তিনি কি কি প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হয়েছেন সেটিও অনুপস্থিত। তাঁর গবেষণার মেথডলজি কি ছিল,গঙ্গা পানি চুক্তিতে যেসব সীমাবদ্ধতা ছিল সেগুলি উল্লেখ থাকলে,যারা ভবিষ্যতে গবেষণা করতে ইচ্ছুক তারা উপকৃত হতে পারত।
“তুই তো একটা কুতুবউদ্দিন।তুই লন্ডনে আইলি ক্যামনে?” এমন উক্তি পাঠকতে হাসাতে বাধ্য।
“পড়তে পড়তে প্রায় পাগলের দশা হলো আমার।সপ্তার পর সপ্তা ঘরে থাকতাম বন্দী থাকতাম
খাওয়ার কথা ভুলে যেতাম কখনো কখনো” এমন অধ্যবসায় ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থী অনুপ্রাণিত করবে।
আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় গবেষণার প্রতি আগ্রহ অনেক কম।এ বইটি শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উৎসাহী করতে সক্ষম।
Leave a comment