বই: দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল
লেখিকা: মেল রবিন্স
বইয়ের ধরন: আত্ম উন্নয়নমূলক
ব্যাক্তিগত রেটিং : ৮/১০
আপনার কী মনে হয়েছে যে, কোনো উপায় যদি বের করতে পারতাম যাতে সময়গুলো আমার সব ধ্যান জ্ঞানে কাজে লাগিয়ে দিতাম লক্ষ্য পূরণের জন্য। কখনো কী নিজের প্রতি আস্থাটাই কমে যাচ্ছে আপনার? যদি এমইনটাই হয় তাহলে আপনার জন্য মেল রবিন্স এর ‘The 5 second Rule’ বইটি অপেক্ষা করছে। ২০১৭ সালে আমেরিকায় প্রকাশিত হয় মেল রবিন্স এর লেখা বই “The 5 Second Rule: Transform Your Life, Work, and Confidence with Everyday Courage” । প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব বিখ্যাত জনপ্রিয় একটি মোটিভেশনাল ও লাইফ চেঞ্জিং এর বিষয় হয়ে ওঠে বইটি। ৫ টি পর্বে মোট ১৭টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত ২৫২ পাতার বইটির মধ্যে লেখক মেল রবিন্স খুব সুন্দরভাবে আলোচনা করেছেন যে 5 সেকেন্ড রুলের মাধ্যমে মানুষ কিভাবে তার অলসতা বা অপ্রোয়জনীয় কাজের মাধ্যমে সময় নষ্ট না করে তার জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত প্রোডাক্টিভ কাজের মাধ্যমে মুল্যবান করে জীবনে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হতে পারে।
লেখিকা পরিচিতি :রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নিজেদের সব টাকা ও সম্পদ বিনিয়োগ করে বিশাল লস হবার পর মেল ও তাঁর স্বামী ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজেদের সব টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি আত্মীয়-বন্ধুদের থেকেও ঋণ নিয়েছিলেন। তাঁর স্বামী যখন প্রতিদিন ভোর বেলা ঘর থেকে টাকার খোঁজে বের হয়ে যেতেন, রবিন্সকে তখন পাওনাদারদের ফোন ও বাসায় এসে ধমক দেয়া সামলাতে হত। তখন হটাৎ তিনি আবিষ্কার করলেন, তিনি জীবনের অনেক কিছু তার করার প্ল্যান থাকলেও তিনি অলসতায় করছেন। যার ফলে পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি সেই কাজটি করতে ব্যার্থ হচ্ছেন। তখন তিনি 5 সেকেন্ড রুলসটি আবিস্কার করে ফেললেন এবং তার পর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
পাঠ পরিচিতি : বইটির প্রধান আলোচ্য বিষয় 5 সেকেন্ড রুলস হচ্ছে, এটা চিন্তা করবার পদ্ধতি – যা আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরে তাৎক্ষণিক পরিবর্তন সাধন করে। এই পদ্ধতি আসলে নিজের অলস ও কর্মহীন অভ্যাসের বিরুদ্ধে এমন এক সাহসের সৃষ্টি করে যা আমাদের গতিশীল ও কর্মমুখী করে অর্থাৎ লক্ষ্য পূরণের দিকে যাত্রা শুরু করে। যদি কোনও কাজ করার কথা মনে আসে, তবে সেটা ৫ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে শুরু করতে না পারলে, আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে সেই কাজ থেকে বিরত রাখতে মনের মধ্যে নানান রকম অজুহাত তৈরি করবে। লেখিকা বলেন, “যদি কোনও জরুরী কাজের কথা মনে হয়, যেটা একটু কঠিন, আপনাকে ৫-৪-৩-২-১ গুনে সাথে সাথে কাজটি করার উদ্দেশ্যে জায়গা ছেড়ে নড়তে হবে – না হলে আপনার মস্তিষ্ক বেশিরভাগ সময়েই আপনাকে থামিয়ে দেবে।সাইকোলজির ভাষায় একে বলে “এ্যাসার্ট কন্ট্রোল” – আপনি যখন সামনে থেকে পেছনে গোনা শুরু করবেন – মস্তিষ্ক তখন সেই গোনার কাজে শক্তি নিয়োগ করতে বাধ্য হবে। এবং অজুহাত সৃষ্টি করার সুযোগ পাবে না। আর এই সুযোগে আপনি কাজ শুরু করে দিতে পারবেন, কোনওরকম ভয় বা দ্বিধা ছাড়া।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্বিধাদ্বন্দ, সন্দেহ, আত্মবিশ্বাসহীতা, অনিশ্চয়তা, ভয়, দীর্ঘসূত্রিতা – ইত্যাদির সাথে লড়াই করে জেতার একটি অভিনব পন্থা লেখিকা তাঁর বইয়ে তুলে ধরেছেন।
মন্তব্য : বইয়ের প্রতিটি পরিচ্ছেদে লেখিকা তার আবিস্কৃত সূত্র অনেক ব্যাখা সহ চমৎকার উদাহরণের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করেছেন। জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য সময়ের কাজ সময়ে করা এবং ভয়কে জয় করে সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই। অনেক জরুরী কাজ করার মানসিকতা না থাকলেও যদি আমরা তা করতে পারি, তাহলে আমাদের জীবন অনেক বেশি সাফল্যময় হতে পারে।
খালিদ বিন আলীম,
ভলেন্টিয়ার কন্টেন্ট রাইটার
Writers’ Club BD
Leave a comment