বই রিভিউ: দ্য আলকেমিস্ট উপন্যাস
লেখক: পাউলো কোয়েলহো
পৃষ্ঠা :১৬১
অনুবাদ: অনেকেই অনুবাদ করেছেন
বইটি মূলত রচিত হয়েছে, একজন মেষপালক ছেলেকে নিয়ে। এই মেষপালক কিন্ত অন্য মেষপালকদের মতো নয় কারন সে পড়তে জানে এবং ভ্রমণপিপাসু যা সচরাচর অন্য মেষপালকদের মধ্যে দেখা যায়না। শুরুতে তার সাধারণ জীবনযাপনের কথা বলা হয় এবং এই সাধারণ জীবনযাপন অসাধারণ হয়ে ওঠে একটি স্বপ্ন দেখার মাধ্যমে।
মজার কথা হচ্ছে এই পুরো বইটি লেখা হয়েছে স্বপ্নকে কিভাবে বাস্তবে রুপ দিতে হবে তার ওপর ভিত্তি করে। আমরা স্বপ্ন দেখি ঠিকই কিন্তু সাহসের অভাবে, অলসতার অভাবে, ক্ষীন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হওয়ার কারনে আমরা আমাদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রুপ দেওয়ার চেস্টা করিনা যার উদাহরণস্বরুপ আমরা বইটিতে দুই ধরনের চরিত্রের সাথে পরিচিত হই। প্রথমজন মেষপালক সান্তিয়াগো যে তার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপদানের মাধ্যমে গুপ্তধনের মালিক হয় এবং দ্বিতীয়জন একজন লুটেরা যে তার স্বপ্নকে অবহেলা করার কারনে সারাজীবন লুটেরাই থেকে যায়।
সান্তিয়াগো গুপ্তধন খুঁজতে গিয়ে স্পেন থেকে মিশরের যাত্রাপথে অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হয়, একসময় আলকেমিস্টের সাথে পরিচিত হলে সান্তিয়াগো আলকেমিস্টকে বলে, ” ভেবেছিলাম আপনি কিছু শেখাবেন কিন্তু মরুভূমির পথ পাড়ি দিয়েও কিছু শিখতে পারিনি। উত্তরে আলকেমিস্ট বলেন, “শেখার একটাই পথ কর্মের মাধ্যমে ” আলকেমিস্ট হচ্ছে এমন একজন যে প্রকৃতি ও বিশ্ব বোঝে এবং আলকেমি হচ্ছে বিশ্বের আত্মায় প্রকাশ করা এবং তোমার সংরক্ষিত গুপ্তধন আবিষ্কার করা।
“আমরা আমাদের মন থেকে কখনও পালাতে পারিনা, বরং তুমি যখনই মন থেকে পালাতে যাবে এটা ততই তোমার পিছু নিবে, ততই বিরক্ত করবে, তার থেকে বরং নিজের মনেরটা শোনো, নিজের মনকে বোঝার চেস্টা করো, তাকে বন্ধু বানাও “– এগুলো হচ্ছে সেইসব কথা যেগুলো আলকেমিস্ট সান্তিয়াগোকে বলে।
আমরা অনেক সময় এটাই বুঝতে পারিনা যে আমাদের জীবনের গুপ্তধন কোনটা? যার কারনে অন্যের পাওয়া গুপ্তধনের সাথে নিজের জীবনের না পাওয়াগুলো তুলনা করে থাকি বারংবার। কেউ হয়তোবা গুপ্তধন হিসেবে ভালো কিছু বন্ধু পেয়ে থাকে, আবার কেউ পেয়ে থাকে অতি দামী একটি চাকরি।
বইটিতে কিছু সুন্দর উক্তি আছে যেগুলো নিজের ভেতর একধরণের অনুধাবন তৈরি করে এবং জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তেনে সহায়ক।
কিছু উক্তিঃ
১.যদি তুমি কিছু কায়মনোবাক্যে চাও, তাহলে গোটা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তা তোমাকে পাইয়ে দেওয়ার চক্রান্তে মাতে।
২.ভয় হচ্ছে তোমার জীবনের অন্যতম বাধা অন্য যেকোন দর্শনীয় বাধার চেয়েও ভয়ংকর বাধা হচ্ছে ভয়
৩.একঘেয়েমি বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলো
৪.বর্তমানকে আলিঙ্গন কর
৫.স্পষ্টবাদী হও
৬.শুধু কথা নয় বরং কাজ শুরু করবে এমন কেউ হওয়ার চেষ্টা করো