বইঃ কথানক-২
প্রকাশকঃ নহলী
প্রথম প্রকাশঃ অমর একুশে বইমেলা ২০২২
ধরনঃ থ্রিলার,সাই-ফাই, পরাবাস্তব গল্প সংকলন
আমি তো একজন সাধারন পাঠক। আপাতত আমি শুধু পড়তেই জানি। লেখালেখি যে কতটা কঠিন এটা যারা লেখেন তারা যেমন বোঝেন, যারা পাঠক তারাও কিছুটা আঁচ করতে পারেন যেহেতু তারা পড়েন। সমসাময়িক লেখকের লেখা পড়লে বিষয়টা আরো ভালো করে টের পাই।
যাই হোক, আলোচ্য বইতে আসি। কথানক-২ বইটিতে মোট ১৪ টি গল্প। একেকটা গল্প একেকরকম। যেহেতু নবীনদের লেখা (শ্রদ্ধেয় বদরুল মিল্লাত স্যারের গল্পটি বাদে বাকি তেরোটি) সুতরাং চিরন্তন সাহিত্যকর্মে নিহিত মুন্সিয়ানা আশা করাটা বাড়াবাড়ি কিন্তু প্রত্যেকটি লেখায় যে পরিণতি ও পরিমিতিবোধ রয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। লেখালেখির প্রতি একাগ্রতা না থাকলে এটা সম্ভব নয়।
অবশ্যই সব গল্প আমার ভালো লাগেনি বা লাগাটা বাধ্যতামূলক তাও নয় (তার মানে এমন নয় যে গল্পগুলো খারাপ, এটা মনে করার কোন কারন নেই) একেকজনের রুচি একেকরকম। কিছু কিছু গল্প অনেকটাই সহজে অনুমানযোগ্য প্লটে লেখা। তাই গল্পের শেষে এসে বিস্মিত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি কিন্তু এইচ আর মিথেলের ‘ভাইজান’ থেকে বদরুল স্যারের “স্বপ্নের সমাধি” পর্যন্ত গল্পগুলোর কাহিনী রীতিমতো তেজি ঘোড়ার ন্যায় ছুটেছে। এটি পাঠক হিসেবে আমার জন্য আনন্দদায়ক তা তো বলা বাহুল্য।
মলাটেই লেখা রয়েছে গল্পগুলো কোন জনরার। সবথেকে ভালো লেগেছে যেই ব্যাপারটা তা হলো থ্রিলার, সাই-ফাই, পরাবাস্তবাদ ইত্যাদি বিষয়গুলোকে চাইলে যেকোন পটভূমিতে এনে চমৎকার সব গল্প লেখা যায় তা গ্রাম কিংবা শহর, বিদেশ অথবা দেশ, পারিবারিক কিংবা সামাজিক যেকোন পরিসরে তা সম্ভব। সেটাই এই নবীন লেখকবৃন্দ করে দেখিয়েছেন। আরেকটা ব্যাপার চোখে পড়ে তা হলো সুযোগ্য সম্পাদনা যা প্রশংসার দাবিদার।
প্রতিটা গল্পের ভাষা সহজ এবং প্রাঞ্জল। অতিলেখন চোখে পড়েনি, ঝরঝরে মেদহীন তাই একদিনেই ১১০ পৃষ্ঠার নাতিদীর্ঘ গল্পসংকলন শেষ করতে পেরেছি। আমার কাছে ৫-৭ এবং ৯-১৪ নম্বর গল্পগুলো অবশ্য পাঠ্য মনে হয়েছে।
অনেকদিন পর এমন কোন বই পড়ে আনন্দ পেলাম। পাঠক হিসেবে লেখকবৃন্দের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
Leave a comment