জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়েনি বা শোনেনি এমন বাঙালী পাওয়া খুব মুশকিল। তবে জীবনানন্দের কবি হয়ে ওঠার গল্প, তার জীবনের চরম সত্যগুলো কজনই বা জানে???
জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে একটি গোটা উপন্যাস “একজন কমলালেবু”। নাম জীবনানন্দ হলেও তার জীবন ছিলো নিরানন্দে ভরপুর। কথাসাহিত্যিক শহিদুজ্জামান জীবনানন্দের নিরানন্দ জীবন, প্রেমে ব্যর্থতা, চাকরিবিহীন কপর্দকহীন যৌবন, স্ত্রীর সাথে বন্ধনহীন দাম্পত্য আর কবিগুরু সহ বিদগ্ধ সমাজের কাছ থেকে তীব্র অপমান সহ্য করা- এসব একে একে পাঠকের সামনে প্রামাণিক দলিলসহ উপস্থাপন করেছেন বইটিতে। শুধু কবি জীবনানন্দ নন, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক জীবনানন্দের সাথেও পরিচয় করিয়েছেন পাঠকদেরকে।
এই বইটির সমস্ত জুড়ে এক বিষন্নতা ভর করে আছে,বইটা পড়ার পুরোটা সময় এক বিষন্নতা ছেয়ে ছিলো। বইটা পড়তে পড়তে কখন যে গাল বেয়ে পানি পরছিলো টেরই পায়নি!!!
‘একজন কমলালেবু’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ
বরিশালের নদী, জোনাকি ছেড়ে তাঁকে পা রাখতে হয়েছে আদিম সাপের মতো ছড়িয়ে। থাকা কলকাতার ট্রামলাইনের ওপর । পৃথিবীর দিকে তিনি তাকিয়েছেন বিপন্ন বিস্ময়ে। বলেছেন সন্ধ্যায় সব নদী ঘরে ফিরলে থাকে অন্ধকার এবং মুখোমুখি। বসবার নাটোরের এক নারী। জানিয়ে দিয়েছেন জ্যোৎস্নায় ঘাই হরিণীর ডাকে ছুটে আসা, শিকারির গুলিতে নিহত হরিণের মতো আমরা সবাই। সস্তা বোর্ডিংয়ে।উপার্জনহীনভাবে দিনের পর দিন কুঁচো চিংড়ি খেয়ে থেকেছেন। তবু পশ্চিমের মেঘে দেখেছেন সোনার সিংহ। পিপড়ার মতো গুটি গুটি অক্ষরে হাজার হাজার পৃষ্ঠা। ভরেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ডায়েরি লিখে। সেগুলোর সামান্য শুধু জনসমক্ষে এনেছেন জাদুকরের রুমালের মতো, বাকিটা গোপনে তালাবন্দী করে রেখেছেন কালো ট্রাঙ্কে। বাংলা সাহিত্যের প্রহেলিকাময় এই মানুষ জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে এক নিবিড় বোঝাপড়ায় লিপ্ত হয়েছেন এ সময়ের। শক্তিমান কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান তার একজন কমলালেবু উপন্যাসে।
পৃথিবীর দিকে তিনি তাকিয়েছেন বিপন্ন বিস্ময়ে। জানিয়ে দিয়েছেন জ্যোৎস্নায় ঘাইহরিণীর ডাকে ছুটে আসা, শিকারির গুলিতে নিহত হরিণের মতো আমরা সবাই। হাজার হাজার পৃষ্ঠা লিখেছেন, প্রকাশ করেছেন সামান্য অংশ, বাকিটা তালাবন্দী করে রেখেছেন ট্রাঙ্কে। এই হলো জীবনানন্দ দাশ, এ উপন্যাসে তাঁর সঙ্গে নিবিড় বোঝাপড়ায় লিপ্ত হয়েছেন কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান।
Leave a comment